৩০ জুন ২০১৫

মহাবিশ্ব সৃষ্টি রহস্য কি ? মহাবিশ্ব আসছে কোথা থেকে এবং যাচ্ছে বা কোথায় ? মহাবিশ্বের কি কোন শুরু ছিল ? যদি থাকে তবে তার আগে কি ঘটেছিল ? কালের চরিত্র কি ? কাল কি কখনও শেষ হবে ? আমি কে ? কোথা থেকে এসেছি ? কোথায় যাব ?

মহাবিশ্ব সৃষ্টি রহস্য কি ?
মহাবিশ্ব আসছে কোথা থেকে এবং যাচ্ছে বা কোথায় ?
মহাবিশ্বের কি কোন শুরু ছিল ?
যদি থাকে তবে তার আগে কি ঘটেছিল ?
কালের চরিত্র কি ?
কাল কি কখনও শেষ হবে ?
আমি কে ?
কোথা থেকে এসেছি ?
কোথায় যাব ?

এ সকল মানুষের শাশ্বত প্রশ্ন এর সঠিক উত্তর জানবার জন্য বিজ্ঞানীরা বহুদিন যাবৎ গবেষণা করছেন। তারা ইতিমধ্যে মহাবিশ্ব সৃষ্টি রহস্য বিষয়ে অনেক তত্ত্ব, মতবাদ, হাইপোথিসিস, সূত্র আবিষ্কার করেছেন। বিজ্ঞানীদের অনেক আবিষ্কার আছে পরস্পর বিরোধী একটির সাথে অন্যটির মিল নেই। কিন্তু 'চিন্ময়' জগত বা আত্মা সম্পর্কে তারা নীরব। আসুন দেখি Spirutual Science কি বলে -------
================)(=====================
চিন্ময় জগতে কালের প্রভাব নাই -------
'প্রবর্ততে যত্র রজস্তমস্তয়োঃ সত্ত্বং চ মিশ্রং ন চ কালবিক্রমঃ।
ন য্ত্র মায়া কিমুতাপরে হরে- রনুব্রতা যত্র সুরাসুরার্চিতাঃ।।' ----(ভাগবত ২/৯/১০)
-
অনুবাদ -- ভগবানের সেই ধামে রজো তমোগুণ নাই, এমনকি সেখানে সত্ত্বগুনেরও প্রভাব নাই। সেখানে বহিরঙ্গা মায়াশক্তির প্রভাব তো দূরের কথা, কালেরও প্রভাব নাই। মায়া সেখানে প্রবেশ করিতে পারে না। সুর এবং অসুর উভয়ে কোনরম ভেদবুদ্ধি না করিয়াই ভগবানের পূজা করেন।
-
এই শ্লোকে বর্ণনা করা হয়েছে, চিন্ময় জগতে কালের কোন প্রভাব নেই। কাল এক প্রকার শক্তি, এই শক্তির দ্বারা ভগবান জড় জগতসহ সবকিছু সৃষ্টি, ধ্বংস এবং নিয়ন্ত্রন করেন, কালের প্রভাবে সব কিছু পরিবর্তিত হয়, আজকের যুবক ৫০ বছর পর বৃদ্ধে পরিণত হয় কালের প্রভাবে। যেহেতু চিন্ময় জগতে কালের কোন প্রভাব নাই, তাই সেখানে সবকিছু অপরিবর্তিত অবস্থায় থাকে। চিন্ময় জগতে সব কিছু জীবন্ত যেখানে জড় বা প্রাণহীন কোন বস্তু নেই। আমরা জড় জগতে প্রানীর দেহে যে আত্মার প্রভাব অনুভব করি, সেই আত্মা জড় জগত থেকে সৃষ্টি হয়নি। আত্মা চিন্ময় বস্তু, এর কোন সৃষ্টি বা ধ্বংস নেই। সেজন্য আত্মা চিন্ময় জগতের বস্তু অর্থাৎ আত্মা চিন্ময় জগত থেকে এই জড় জগতে এসেছে। আত্মাকে সাধারণ ভাষায় জীবন বা প্রাণ বলে। কিছু বিজ্ঞানীরা মত প্রকাশ করেছেন গভীর সমুদ্রে সূর্যলোকের প্রভাবে কতগুলি জড় বস্তুর সম্মিলনে প্রাণ বা জীবন বা আত্মা সৃষ্টি হয়েছে। আবার কেউ বলছেন পানি থেকে জীবন সৃষ্টি হয়ছে। আমাদের মনে রাখতে হবে, জড় বা প্রাণহীন বস্তু থেকে জীবন সৃষ্টি হতে পারে না। জীবন বা আত্মা হল উৎকৃষ্ট উচ্চ স্তরের বস্তু সেটা কখনও নিম্নস্তরের জড় বস্তু থেকে সৃষ্টি হতে পারে না। বিজ্ঞানীরা বহুদিন যাবৎ গবেষণা করছে এই মহাবিশ্বে জীবন বা আত্মা কোথা থেকে এসেছে। সেই প্রশ্নের উত্তরে ভাগবত বলছে আত্মা চিন্ময় জগত থেকে এসেছে। চিন্ময় জগতের 'চিন্ময়' ব অপ্রাকৃত বস্তু, এর সৃষ্টি বা ধ্বংস নেই চিন্ময় জগত থেকে আত্মার আগমন হয়েছে এবং চিন্ময় জগতে ফিরে যাওয়া ইহার মূল লক্ষ্য-এই জন্য মানব জীবনের মূল লক্ষ্য হল শ্বাশত জীবন অর্থাৎ চিন্ময় জগতে ফিরে যাওয়া। আত্মা চিন্ময় জগত থেকে আসে ---
'অপরেয়মিতস্ত্বন্যাং প্রকৃতিং বিদ্ধি মে পরাম্।
জীবভূতাং মহাবাহো যয়েদং ধার্যতে জগৎ।।' ----- (গীতা ৭/৫)
-
অনুবাদ ---- হে মহাবহো, এই নিকৃষ্টা প্রকৃতি ব্যতীত আমার আর একটি উৎকৃষ্টা প্রকৃতি রয়েছে। সেই প্রকৃতি চৈতন্য স্বরূপা ও জীবভূতা; সেই শক্তি থেকে সমস্ত জীব নিঃসৃত হইয়া এই জড় জগতকে ধারণ করে আছে।
-
এ শ্লোকে বর্ণনা করা হয়েছে ভগবানের অন্য একটি উৎকৃষ্টা চৈতন্য স্বরূপা অর্থাৎ চিন্ময় জগত আছে যা জীবভূত অর্থাৎ সেখান থেকে জীবন বা আত্মা এসেছে। চিন্ময় জগতকে আলোকিত করার জন্য জড় জগতের মত সূর্যালোকের প্রয়োজন নেই। সূর্যালোকের যে উৎস ব্রহ্মজ্যোতি, তার দ্বারা চিন্ময় জগত আলোকিত হয়। চিন্ময় জগতে সূর্যোলোক বা চন্দ্রালোকের প্রয়োজন নেই
'ন তদ্ ভাসয়তে সূর্যো না শশাঙ্কো ন পাবকঃ।
যদ্ গত্বা ন নিবর্তন্তে তদ্ধাম পরমং মম।। ---- (গীতা ১৫/৬)
-
অনুবাদ ------ আমার সেই রম ধাম সূর্য, চন্দ্র অথবা বিদুৎ আলোকিত করিতে পারে না। সেখানে গেলে আর এই জড় জগতে ফিরিয়া আসিতে হয় না।
-
এ শ্লোকে বর্ণনা করা হয়েছে পরমধাম বা চিন্ময় জগত সূর্য, চন্দ্র বা বিদুৎ আলোকিত করতে পারে না । চিন্ময় জগতের জলও জীবন্ত বস্তুর মত ক্রিয়া করে ।

Written by:  Prithwish Ghosh 
Share:

Total Pageviews

বিভাগ সমুহ

অন্যান্য (91) অবতারবাদ (7) অর্জুন (4) আদ্যশক্তি (68) আর্য (1) ইতিহাস (30) উপনিষদ (5) ঋগ্বেদ সংহিতা (10) একাদশী (10) একেশ্বরবাদ (1) কল্কি অবতার (3) কৃষ্ণভক্তগণ (11) ক্ষয়িষ্ণু হিন্দু (21) ক্ষুদিরাম (1) গায়ত্রী মন্ত্র (2) গীতার বানী (14) গুরু তত্ত্ব (6) গোমাতা (1) গোহত্যা (1) চাণক্য নীতি (3) জগন্নাথ (23) জয় শ্রী রাম (7) জানা-অজানা (7) জীবন দর্শন (68) জীবনাচরন (56) জ্ঞ (1) জ্যোতিষ শ্রাস্ত্র (4) তন্ত্রসাধনা (2) তীর্থস্থান (18) দেব দেবী (60) নারী (8) নিজেকে জানার জন্য সনাতন ধর্ম চর্চাক্ষেত্র (9) নীতিশিক্ষা (14) পরমেশ্বর ভগবান (25) পূজা পার্বন (43) পৌরানিক কাহিনী (8) প্রশ্নোত্তর (39) প্রাচীন শহর (19) বর্ন ভেদ (14) বাবা লোকনাথ (1) বিজ্ঞান ও সনাতন ধর্ম (39) বিভিন্ন দেশে সনাতন ধর্ম (11) বেদ (35) বেদের বানী (14) বৈদিক দর্শন (3) ভক্ত (4) ভক্তিবাদ (43) ভাগবত (14) ভোলানাথ (6) মনুসংহিতা (1) মন্দির (38) মহাদেব (7) মহাভারত (39) মূর্তি পুজা (5) যোগসাধনা (3) যোগাসন (3) যৌক্তিক ব্যাখ্যা (26) রহস্য ও সনাতন (1) রাধা রানি (8) রামকৃষ্ণ দেবের বানী (7) রামায়ন (14) রামায়ন কথা (211) লাভ জিহাদ (2) শঙ্করাচার্য (3) শিব (36) শিব লিঙ্গ (15) শ্রীকৃষ্ণ (67) শ্রীকৃষ্ণ চরিত (42) শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু (9) শ্রীমদ্ভগবদগীতা (40) শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা (4) শ্রীমদ্ভাগব‌ত (1) সংস্কৃত ভাষা (4) সনাতন ধর্ম (13) সনাতন ধর্মের হাজারো প্রশ্নের উত্তর (3) সফটওয়্যার (1) সাধু - মনীষীবৃন্দ (2) সামবেদ সংহিতা (9) সাম্প্রতিক খবর (21) সৃষ্টি তত্ত্ব (15) স্বামী বিবেকানন্দ (37) স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (14) স্মরনীয় যারা (67) হরিরাম কীর্ত্তন (6) হিন্দু নির্যাতনের চিত্র (23) হিন্দু পৌরাণিক চরিত্র ও অন্যান্য অর্থের পরিচিতি (8) হিন্দুত্ববাদ. (83) shiv (4) shiv lingo (4)

আর্টিকেল সমুহ

অনুসরণকারী

" সনাতন সন্দেশ " ফেসবুক পেজ সম্পর্কে কিছু কথা

  • “সনাতন সন্দেশ-sanatan swandesh" এমন একটি পেজ যা সনাতন ধর্মের বিভিন্ন শাখা ও সনাতন সংস্কৃতিকে সঠিকভাবে সবার সামনে তুলে ধরার জন্য অসাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে গঠন করা হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য নিজের ধর্মকে সঠিক ভাবে জানা, পাশাপাশি অন্য ধর্মকেও সম্মান দেওয়া। আমাদের লক্ষ্য সনাতন ধর্মের বর্তমান প্রজন্মের মাঝে সনাতনের চেতনা ও নেতৃত্ত্ব ছড়িয়ে দেওয়া। আমরা কুসংষ্কারমুক্ত একটি বৈদিক সনাতন সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এ পথচলায় আপনাদের সকলের সহযোগিতা কাম্য । এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। সনাতন ধর্মের যে কেউ লাইক দিয়ে এর সদস্য হতে পারে।