কিছু মহামানবের জ্ঞানতাত্ত্বিক অবদানের কারণেই আজকের এই সমৃদ্ধ মানবজীবন। এই মহামানবেরা আজন্মকাল তাদের চিন্তা ও চেতনা দিয়ে আমাদের জীবন ও জগৎ পরিপূর্ণ করার চেষ্টা করে গেছেন। ধর্ম, দর্শন, বিজ্ঞান সব শাখাই সমৃদ্ধ হয়েছে এই মহামানবদের হাতে। যাদের মমতার স্পর্শে মানুষে মানুষে রচিত হয়েছে বন্ধুত্বের সেতুবন্ধন। তাদেরই একজন হচ্ছেন শিখ ধর্মের প্রবর্তক গুরু নানক।
ভারতে তখন সুলতানী আমল। পশ্চিম পাঞ্জাবের তালওয়ান্দি (বর্তমান নাম নানকানা সাহেব) গ্রামে থাকতেন মেহেতা কল্যাণ বাই নামে এক সামন্য চাষী। সামান্য কিছু জমিজমা ছিল তার। গাঁয়ের লোক তাকে ডাকত মেহেতা কালু বলে। তার স্থীর নাম ছিল ত্রিপতা। এই ত্রিপতার গর্ভেই ১৪৬৯ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহন করেছিলন গুরু নানক। ছেলেবেলা থেকেই তাকে নিয়ে দুশ্চিন্তা ছিল পিতামাতার। একমাত্র সন্তান। তবু তার সবকিছুই যেন কেমন অদ্ভুত। আত্মভোলার মতো ঘুরে বেড়ান, সাধু-সন্ন্যাসীদের দেখলেই তাদের কাছে ছুটে যান। নির্জনে বসে থাকেন।
বাবা-মা ভেবেছিল লেখাপড়া করলেই হয়তো সব ঠিক হয়ে যাবে। ৬ বছর বয়সে তাই তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হলো গ্রামের পাঠশালায়। সেখানে মাতৃভাষা ছাড়াও শিখেছিলেন ফার্সি ভাষা। তিনবছর পর সংস্কৃত শিক্ষার জন্য তাকে পাঠানো হলো ব্রিজনাথ শর্মা নামে এক পন্ডিতের কাছে। কিন্ত নানকের পাঠ্যবিষয় বাদ দিয়ে ঈশ্বর, ধর্ম আধ্যাত্নিক বিষয়েই ছিল গভীর আগ্রহ। গতানুগতিক পড়াশুনাতে তার কোনো আগ্রহ নেই দেখে বাবা ঠিক করলেন নানককে বাড়ির গরু –ছাগল চরাবার ভার দেবেন।
একদিন নানক ঘুমিয়ে পড়লে তার গরুর পাল ঘুরতে ঘুরতে একজনের ক্ষেতে ঢুকে পড়ল। ক্ষেতের মালিক নালিশ জানালো জমিদারের কাছে। ডাক পড়লো নানকের। নানক জমিদারের কাছে গিয়ে বললেন, আমার গরু কোনো জমির ফসল নষ্ট করেনি। নানকের কথা শুনে জমিদারের লোকজন মাঠে গিয়ে দেখে জমির ফসল যেমন ছিল তেমনই আছে। ক্ষেতের মালিকতো বিস্ময়ে হতবাক।
নানককে এবার ভর্তি করা হলো ফার্সি ভাষার এক মৌলবীর স্কুলে। কিন্তু পড়ায় কোন মন নেই তার। বই-শ্লেট তুলে রেখে নানক মৌলবীকে জিজ্ঞাসা করে ঈশ্বরের কথা, ধর্মের কথা, এই জগৎ সৃষ্টির কথা। অধিকাংশ প্রশ্নেরই কোনো জবাব দিতে পারেন না মৌলবী। ছেলেকে বিষয়মুখী করতে না পেরে মহাভাবনায় পড়ে গেলেন বাবা। নানকের বোনের স্বামী জয়রাম ছিলেন সুলতান দৌলত খাঁ লোদীর দেওয়ান। অবশেষে তার সুপারিশে সুলতানের গুদাম ঘরের দেখাশুনার চাকরি পেলেন নানক। যখন কোনো দুঃখী মানুষ আসত তিনি গুদাম থেকে খাবার দান করতেন। নিজে যা মাইনে পেতেন তার অর্ধেকই গরিব-দুঃখী মানুষের পেছনে খরচ করতেন। কিন্তু নানকের এই সেবার কাজকে ভালোভাবে দেখত না কিছু মানুষ। তারা সুলতানের কাছে গিয়ে অভিযোগ জানাল, নানক গুদামের মাল বিলেয়ে দিচ্ছে। সুলতান কয়েকজন কর্মচারীর উপর তদন্তের ভার দিলেন। সবকিছু পরীক্ষা করে দেখা গেল গুদামের সব মাল হিসেব মতোই আছে।
এদিকে নানক কাজকর্মে মন দিয়েছে জেনে তার বাবা নানকের বিয়ের ব্যবস্থা করলেন। মেয়ের নাম সুলখানি। এই সুলখানির গর্ভে নানকের দুটি সন্তান জন্ম হয়-শ্রীচাঁদ ও লক্ষ্ণীদাস। একদিন খুব সকালে নানক নদীতে গেলেন গোসল করতে। গোসল শেষ করতেই তার অন্তরে এক অদ্ভুত অনুভূতি জেগে উঠল। নিজের অজান্তেই ছুটে গেলেন কিছুদূর একটি পাহাড়ের দিকে। সেখানে পাহাড়ের গুহায় বসে ধ্যানে মগ্ন হয়ে গেলেন। ভুলে গেলেন ঘর-বাড়ি, সংসার ও স্ত্রী-পুত্র। তিনদিন তিনরাত্রি কেটে গেল। অবশেষে তিনি ঈশ্বরের অস্তিত্ব উপলব্ধি করলেন নিজ অন্তরে।
প্রায় কুড়ি বছর ধরে নানক দেশে দেশে তার ধর্মপ্রচার করেছিলেন। পাঁয়ে হেটে, বনজঙ্গল, নদী-নালা, কত মরুভূমির রুক্ষ প্রান্তর, পাহাড়-পর্বত পেরিয়ে তাকে চলতে হতো। যেখানেই তিনি যেতেন, ফুলের সৌরভের মতো মানুষ তার প্রতি আকৃষ্ট হতো। তিনি তাদের বলতেন, ঈশ্বর এক অদ্বিতীয়। তিনি সকলকে বলতেন, সত্য পথে চল, সৎ জীবন যাপন কর, ঈশ্বরের নামকর। তিনি বলতেন, ঈশ্বর মানুষের ধর্ম দেখেন না। তার জাতি দেখেন না, ধনী –দরিদ্র দেখেন না, তার চোখে সকলেই সমান। তিনি শুধু বিচার করেন মানুষের কর্ম। যে মানুষ যেমন কাজ করবে সে তেমনি ফল ভোগ করবে। ধর্মের নামে কুসংস্কার, গোঁড়ামী, বাহ্যিক আচার-আচরণকে তিনি কঠোর ভাষায় নিন্দা করতেন।
একবার নানক স্থির করলেন, মুসলমানদের দুই পবিত্র তীর্থস্থান মক্কা আর মদিনায় যাবেন। নানকের সঙ্গী হন পীর সৈয়দ আহমেদ হাসান ও পীর জালালউদ্দীন। এরা মুসলামান হলেও নানকের আধ্যাত্বিক শক্তি দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন। নানকের পরনে মুসলমান দরবেশের পোষাক। মক্কা-মদিনা হয়ে নানক যান প্যালেষ্টাইন। বহু দিন নিজের স্বদেশভূমি ত্যাগ করে এসেছেন এবার ফেরার পথ ধরলেন নানক। পথ চলতে চলতে নানক নির্জন প্রান্তরে এসে পৌঁছলেন। দীর্ঘ পথশ্রমে তৃষ্ণার্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। এক শিষ্যকে বললেন, দেখতো কাছাকাছি কোথাও জল আছে কিনা। শিষ্য গিয়ে দেখে কাছের গ্রামে একটা পুকুর রয়েছে। কিন্তু পুকুরে এক ফোটা জল নেই। শিষ্য ফিরে এসে সব কথা বলতেই নানক বললেন, গুরুর নাম করে সেখানে আবার যাও জল পাবে। এবার পুকুরে যেতেই শিষ্য বিস্ময়ে হতবাক, সমস্ত পুকুর জল আর জল, কি অপূর্ব সে জলর স্বাদ। ঠিক যেন অমৃত। লোকে তার নাম দিল অমৃত সায়র। আর তার থেকেই অমৃতসর কথাটির উৎপত্তি। ১৮০২ সালে মহারাজ রঞ্জিত সিং ওই পুকুর সংস্কার করে স্বর্ণমন্দির স্থাপন করেন। এই স্বর্ণমন্দির শিখদের এক পবিত্র তীর্থ।
১৫৩৯ সালের কথা- নানক বুঝতে পেরেছিলেন তার জীবনের কাল শেষ হয়ে এসেছে। তিনি সে কথা বলতেই দলে দলে তার শিষ্যরা এসে উপস্থিত হলো। এদের মধ্যে যেমন ছিল হিন্দু তেমনি ছিল মুসলমান। নানক বুঝতে পেরেছিলেন তার দেহ সৎকার করা নিয়া হিন্দু মুসলমানের মধ্যে বিবাদ দেখা দেবে। তাই দুই দলের শিষ্যদের ডেকে বললেন, তোমরা ফুল নিয়ে এসে আমার দুপাশে রাখ। যাদের ফুল সতেজ থাকবে তারাই আমার দেহের সৎকারের অধিকারী হবে। এবার তোমরা প্রার্থনা শুরু কর।
সমস্ত রাত ধরে চলল প্রার্থনা, ভজন, নামগান। ভোরবেলায় দরজা খুলতেই সকলে দেখল নানকের দেহ নেই। সেখানে রয়েছে রাশিরাশি তাজাফুল। সব মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছে। এইভাবে মৃত্যুর মধ্যেও মানুষের মিলন ঘটিয়ে গেলেন গুরু নানক।
ভারতে তখন সুলতানী আমল। পশ্চিম পাঞ্জাবের তালওয়ান্দি (বর্তমান নাম নানকানা সাহেব) গ্রামে থাকতেন মেহেতা কল্যাণ বাই নামে এক সামন্য চাষী। সামান্য কিছু জমিজমা ছিল তার। গাঁয়ের লোক তাকে ডাকত মেহেতা কালু বলে। তার স্থীর নাম ছিল ত্রিপতা। এই ত্রিপতার গর্ভেই ১৪৬৯ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহন করেছিলন গুরু নানক। ছেলেবেলা থেকেই তাকে নিয়ে দুশ্চিন্তা ছিল পিতামাতার। একমাত্র সন্তান। তবু তার সবকিছুই যেন কেমন অদ্ভুত। আত্মভোলার মতো ঘুরে বেড়ান, সাধু-সন্ন্যাসীদের দেখলেই তাদের কাছে ছুটে যান। নির্জনে বসে থাকেন।
বাবা-মা ভেবেছিল লেখাপড়া করলেই হয়তো সব ঠিক হয়ে যাবে। ৬ বছর বয়সে তাই তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হলো গ্রামের পাঠশালায়। সেখানে মাতৃভাষা ছাড়াও শিখেছিলেন ফার্সি ভাষা। তিনবছর পর সংস্কৃত শিক্ষার জন্য তাকে পাঠানো হলো ব্রিজনাথ শর্মা নামে এক পন্ডিতের কাছে। কিন্ত নানকের পাঠ্যবিষয় বাদ দিয়ে ঈশ্বর, ধর্ম আধ্যাত্নিক বিষয়েই ছিল গভীর আগ্রহ। গতানুগতিক পড়াশুনাতে তার কোনো আগ্রহ নেই দেখে বাবা ঠিক করলেন নানককে বাড়ির গরু –ছাগল চরাবার ভার দেবেন।
একদিন নানক ঘুমিয়ে পড়লে তার গরুর পাল ঘুরতে ঘুরতে একজনের ক্ষেতে ঢুকে পড়ল। ক্ষেতের মালিক নালিশ জানালো জমিদারের কাছে। ডাক পড়লো নানকের। নানক জমিদারের কাছে গিয়ে বললেন, আমার গরু কোনো জমির ফসল নষ্ট করেনি। নানকের কথা শুনে জমিদারের লোকজন মাঠে গিয়ে দেখে জমির ফসল যেমন ছিল তেমনই আছে। ক্ষেতের মালিকতো বিস্ময়ে হতবাক।
নানককে এবার ভর্তি করা হলো ফার্সি ভাষার এক মৌলবীর স্কুলে। কিন্তু পড়ায় কোন মন নেই তার। বই-শ্লেট তুলে রেখে নানক মৌলবীকে জিজ্ঞাসা করে ঈশ্বরের কথা, ধর্মের কথা, এই জগৎ সৃষ্টির কথা। অধিকাংশ প্রশ্নেরই কোনো জবাব দিতে পারেন না মৌলবী। ছেলেকে বিষয়মুখী করতে না পেরে মহাভাবনায় পড়ে গেলেন বাবা। নানকের বোনের স্বামী জয়রাম ছিলেন সুলতান দৌলত খাঁ লোদীর দেওয়ান। অবশেষে তার সুপারিশে সুলতানের গুদাম ঘরের দেখাশুনার চাকরি পেলেন নানক। যখন কোনো দুঃখী মানুষ আসত তিনি গুদাম থেকে খাবার দান করতেন। নিজে যা মাইনে পেতেন তার অর্ধেকই গরিব-দুঃখী মানুষের পেছনে খরচ করতেন। কিন্তু নানকের এই সেবার কাজকে ভালোভাবে দেখত না কিছু মানুষ। তারা সুলতানের কাছে গিয়ে অভিযোগ জানাল, নানক গুদামের মাল বিলেয়ে দিচ্ছে। সুলতান কয়েকজন কর্মচারীর উপর তদন্তের ভার দিলেন। সবকিছু পরীক্ষা করে দেখা গেল গুদামের সব মাল হিসেব মতোই আছে।
এদিকে নানক কাজকর্মে মন দিয়েছে জেনে তার বাবা নানকের বিয়ের ব্যবস্থা করলেন। মেয়ের নাম সুলখানি। এই সুলখানির গর্ভে নানকের দুটি সন্তান জন্ম হয়-শ্রীচাঁদ ও লক্ষ্ণীদাস। একদিন খুব সকালে নানক নদীতে গেলেন গোসল করতে। গোসল শেষ করতেই তার অন্তরে এক অদ্ভুত অনুভূতি জেগে উঠল। নিজের অজান্তেই ছুটে গেলেন কিছুদূর একটি পাহাড়ের দিকে। সেখানে পাহাড়ের গুহায় বসে ধ্যানে মগ্ন হয়ে গেলেন। ভুলে গেলেন ঘর-বাড়ি, সংসার ও স্ত্রী-পুত্র। তিনদিন তিনরাত্রি কেটে গেল। অবশেষে তিনি ঈশ্বরের অস্তিত্ব উপলব্ধি করলেন নিজ অন্তরে।
প্রায় কুড়ি বছর ধরে নানক দেশে দেশে তার ধর্মপ্রচার করেছিলেন। পাঁয়ে হেটে, বনজঙ্গল, নদী-নালা, কত মরুভূমির রুক্ষ প্রান্তর, পাহাড়-পর্বত পেরিয়ে তাকে চলতে হতো। যেখানেই তিনি যেতেন, ফুলের সৌরভের মতো মানুষ তার প্রতি আকৃষ্ট হতো। তিনি তাদের বলতেন, ঈশ্বর এক অদ্বিতীয়। তিনি সকলকে বলতেন, সত্য পথে চল, সৎ জীবন যাপন কর, ঈশ্বরের নামকর। তিনি বলতেন, ঈশ্বর মানুষের ধর্ম দেখেন না। তার জাতি দেখেন না, ধনী –দরিদ্র দেখেন না, তার চোখে সকলেই সমান। তিনি শুধু বিচার করেন মানুষের কর্ম। যে মানুষ যেমন কাজ করবে সে তেমনি ফল ভোগ করবে। ধর্মের নামে কুসংস্কার, গোঁড়ামী, বাহ্যিক আচার-আচরণকে তিনি কঠোর ভাষায় নিন্দা করতেন।
একবার নানক স্থির করলেন, মুসলমানদের দুই পবিত্র তীর্থস্থান মক্কা আর মদিনায় যাবেন। নানকের সঙ্গী হন পীর সৈয়দ আহমেদ হাসান ও পীর জালালউদ্দীন। এরা মুসলামান হলেও নানকের আধ্যাত্বিক শক্তি দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন। নানকের পরনে মুসলমান দরবেশের পোষাক। মক্কা-মদিনা হয়ে নানক যান প্যালেষ্টাইন। বহু দিন নিজের স্বদেশভূমি ত্যাগ করে এসেছেন এবার ফেরার পথ ধরলেন নানক। পথ চলতে চলতে নানক নির্জন প্রান্তরে এসে পৌঁছলেন। দীর্ঘ পথশ্রমে তৃষ্ণার্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। এক শিষ্যকে বললেন, দেখতো কাছাকাছি কোথাও জল আছে কিনা। শিষ্য গিয়ে দেখে কাছের গ্রামে একটা পুকুর রয়েছে। কিন্তু পুকুরে এক ফোটা জল নেই। শিষ্য ফিরে এসে সব কথা বলতেই নানক বললেন, গুরুর নাম করে সেখানে আবার যাও জল পাবে। এবার পুকুরে যেতেই শিষ্য বিস্ময়ে হতবাক, সমস্ত পুকুর জল আর জল, কি অপূর্ব সে জলর স্বাদ। ঠিক যেন অমৃত। লোকে তার নাম দিল অমৃত সায়র। আর তার থেকেই অমৃতসর কথাটির উৎপত্তি। ১৮০২ সালে মহারাজ রঞ্জিত সিং ওই পুকুর সংস্কার করে স্বর্ণমন্দির স্থাপন করেন। এই স্বর্ণমন্দির শিখদের এক পবিত্র তীর্থ।
১৫৩৯ সালের কথা- নানক বুঝতে পেরেছিলেন তার জীবনের কাল শেষ হয়ে এসেছে। তিনি সে কথা বলতেই দলে দলে তার শিষ্যরা এসে উপস্থিত হলো। এদের মধ্যে যেমন ছিল হিন্দু তেমনি ছিল মুসলমান। নানক বুঝতে পেরেছিলেন তার দেহ সৎকার করা নিয়া হিন্দু মুসলমানের মধ্যে বিবাদ দেখা দেবে। তাই দুই দলের শিষ্যদের ডেকে বললেন, তোমরা ফুল নিয়ে এসে আমার দুপাশে রাখ। যাদের ফুল সতেজ থাকবে তারাই আমার দেহের সৎকারের অধিকারী হবে। এবার তোমরা প্রার্থনা শুরু কর।
সমস্ত রাত ধরে চলল প্রার্থনা, ভজন, নামগান। ভোরবেলায় দরজা খুলতেই সকলে দেখল নানকের দেহ নেই। সেখানে রয়েছে রাশিরাশি তাজাফুল। সব মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছে। এইভাবে মৃত্যুর মধ্যেও মানুষের মিলন ঘটিয়ে গেলেন গুরু নানক।
Courtesy by: Prithwish Ghosh
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন