এই বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টির পূর্বে সচ্চিদানন্দ ভগবান ছিলেন "একমেবাদ্বিতীয়াম্"। সৃষ্টির মূলে যেমন তিনিই সব আবার স্থিতি ও ধ্বংসের কারণও তিনি একাই। তাঁর লীলামধুর্য্য তথা হ্লাদিনী শক্তির আস্বাদনের নিমিত্তে তিনি বহু হলেন। মাধুর্য্যাবগাহনে তাঁর বিভুতি প্রকাশে আমরা প্রত্যক্ষ করি অবাক বিশ্ময়ে। সকল জীবের মধ্যেই তাঁর প্রকাশ জীবাত্মা রুপে। যদি কাউকে প্রশ্ন করা হয়, তার সবথেকে প্রিয় ব্যাক্তি কে, নিশ্চয়ই উত্তর আসবে সে নিজেই। কারণ মানুষ নিজেকে যতোটা ভালবাসে, ততোটা আর কাউকে নয়। এর পরই আসে মা-বাবা, ভাই-বোন, স্বামী-স্ত্রী, সন্তান তথা পরিবার। এর পর সেই ভালবাসার ক্ষেত্র ক্রমে পরিবর্ধিত হয়ে, পরিবার থেকে, আত্মীয়-স্বজন, সমাজ, গ্রাম, এলাকা, দেশ ছাড়িয়ে যায়। জাতীয় পর্যায় ছেড়ে ক্রমে এই ভালবাসা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পৌঁছায় যখন মতে ও পথে মিল হয়। এমনকি পরিচয় বা সম্পর্ক জনিত কারণেও ভালবাসা প্রকাশিত হয়। এটা আমাদের সম্পর্কোন্নয়ন বা চেনা জানা গন্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ। কিন্ত এই চেনা জানা বা সম্পর্কের বাইরে আর একটা কারণ আমরা চিন্তা করলেই বুঝতে পারবো।
এই যে ফেসবুকে কতজনের কত শত হাজার বন্ধু, হয়তো অনেকের সাথে অনেকের দেখাও হয়নি বা কোনোদিন হবে বলেও মনে হয় না। অথচ মনে হয় কেউ কেউ কতো আপন, যেন জন্ম জন্মান্তর ধরে পরিচিত। কেউ কি এর কারণ খোঁজার প্রয়াস করেছে? আমার মনে হয়, না। এটাই আমাদের সহজাত প্রবৃত্তি, যা ভগবান গীতায় বলেছেন। আত্মায় আত্মায় মিলন হলেই তো আত্মীয় হয়। এই যে আমার দেহের যে জীবাত্মা, সে তো পরমাত্মারই অংশ। ওই যে কুকুর, সাপ, কীট, পতঙ্গ সহ লক্ষ কোটি জীব, সবার দেহের ভেতরের জীবাত্মা ও তো সেই এক পরমাত্মার অংশ। তাহলে কি বিশ্বের সকল জীবই আমার আত্মার সাথে সম্পর্কিত হলো না? এযে পরমেশ্বরের অকৃত্রিম বিভুতি, একে অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। মানুষে মানুষে, অন্য প্রাণীতে যতোই হানাহানি হোক না কেন, সবাই যে সবার পরমাত্মীয়, একথা অস্বীকার করার কোনো কারণও নেই।
তাইতো শ্রীগীতায় ভগবান "সর্বভূতে সমদর্শন" নামে একটা কঠিন অথচ প্রাণ্জল ও সার্ব্বজনীন শব্দ বসিয়ে সবাইকে সবার সাথে বেঁধে রেখেছেন। ঈশ্বর সর্বদা সর্বভুতে বিরাজমান। সকল জীব, বস্তু তার বাইরে নয়। তিনি যেমন অনন্ত অসীম, তেমনি সুক্ষ্ম থেকে সুক্ষ্মতম। যেদিন আমরা পরস্পর পরস্পরকে সত্যিকার ভাবে আত্মীয় বা আপন ভেবে ভালবাসতে পারবো, সেদিন হবে আমাদের প্রকৃত ভক্তিতত্ত্বের প্রকাশ। আর তা যতদিন না হচ্ছে, যতোই আমরা ভগবদ্ ভক্ত বলে পরিচয় দেই বা আত্মশ্লাঘায় কালাতিপাত করি না কেন, আমাদের ভক্তি, "মদ্-ভক্ত" পর্যায়ে উঠতেই পারবে না। আমাদের পরম সৌভাগ্য যে আমরা 'গীতামৃত' রুপ ভগবদ্ বানী, যা সর্বোপনিষদ রুপী গাভীর দুগ্ধ, অমিয় তৃপ্তির সাথে আস্বাদন করতে পারছি। আমাদের প্রতি ভগবানের এটা বিশেষ কৃপা। আর এই অমৃতের উপভোগ তখনই সার্থক হবে, যখন তা' আমরা ব্যবহারিক জীবনের সর্বক্ষেত্রে সর্বক্ষণ প্রয়োগ ও অনুসরণ করতে সক্ষম হবো। তদুপরি শ্রীমন্ মহাপ্রভুর বাণী, "সর্ব ঘরে হরি নাম সঙ্কীর্তন" ধ্বনীত হবে অহর্নিশি। সকল মত পথ ভুলে মানুষ একে অপরকে কাছে টেনে নেবে আত্মীয়তার বন্ধনে। অন্য জীবদেরও দিবে যথার্থ মর্য্যাদা, তবেই না সার্থক মানব জন্ম আর প্রকৃত ভক্ত থেকে মদ্-ভক্ত হয়ে ওঠা। আর তখনই এই জীবাত্মা পরমাত্মায় বিলীন হতে আর হবে না বিলম্ব। অন্তরে এই আশা আছে অনেক দিন ধরেই। আরো অনেকের নিশ্চয়ই এমন ভাবনায় ভাবিত হয় প্রাণ। পরমকৃপাময় সচ্চিনানন্দ ভগবান সকল জীবের কল্যাণ আর মঙ্গল করুণ। শ্রীহরির চরণকমলে এ অধমের এই প্রার্থনা।
"হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে!!"
!!জয় শ্রীকৃষ্ণ!! জয় রাধে!!
!!জয় হোক সকল জীবের!!
কার্টেসীঃ দেবেন্দ্র
এই যে ফেসবুকে কতজনের কত শত হাজার বন্ধু, হয়তো অনেকের সাথে অনেকের দেখাও হয়নি বা কোনোদিন হবে বলেও মনে হয় না। অথচ মনে হয় কেউ কেউ কতো আপন, যেন জন্ম জন্মান্তর ধরে পরিচিত। কেউ কি এর কারণ খোঁজার প্রয়াস করেছে? আমার মনে হয়, না। এটাই আমাদের সহজাত প্রবৃত্তি, যা ভগবান গীতায় বলেছেন। আত্মায় আত্মায় মিলন হলেই তো আত্মীয় হয়। এই যে আমার দেহের যে জীবাত্মা, সে তো পরমাত্মারই অংশ। ওই যে কুকুর, সাপ, কীট, পতঙ্গ সহ লক্ষ কোটি জীব, সবার দেহের ভেতরের জীবাত্মা ও তো সেই এক পরমাত্মার অংশ। তাহলে কি বিশ্বের সকল জীবই আমার আত্মার সাথে সম্পর্কিত হলো না? এযে পরমেশ্বরের অকৃত্রিম বিভুতি, একে অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। মানুষে মানুষে, অন্য প্রাণীতে যতোই হানাহানি হোক না কেন, সবাই যে সবার পরমাত্মীয়, একথা অস্বীকার করার কোনো কারণও নেই।
তাইতো শ্রীগীতায় ভগবান "সর্বভূতে সমদর্শন" নামে একটা কঠিন অথচ প্রাণ্জল ও সার্ব্বজনীন শব্দ বসিয়ে সবাইকে সবার সাথে বেঁধে রেখেছেন। ঈশ্বর সর্বদা সর্বভুতে বিরাজমান। সকল জীব, বস্তু তার বাইরে নয়। তিনি যেমন অনন্ত অসীম, তেমনি সুক্ষ্ম থেকে সুক্ষ্মতম। যেদিন আমরা পরস্পর পরস্পরকে সত্যিকার ভাবে আত্মীয় বা আপন ভেবে ভালবাসতে পারবো, সেদিন হবে আমাদের প্রকৃত ভক্তিতত্ত্বের প্রকাশ। আর তা যতদিন না হচ্ছে, যতোই আমরা ভগবদ্ ভক্ত বলে পরিচয় দেই বা আত্মশ্লাঘায় কালাতিপাত করি না কেন, আমাদের ভক্তি, "মদ্-ভক্ত" পর্যায়ে উঠতেই পারবে না। আমাদের পরম সৌভাগ্য যে আমরা 'গীতামৃত' রুপ ভগবদ্ বানী, যা সর্বোপনিষদ রুপী গাভীর দুগ্ধ, অমিয় তৃপ্তির সাথে আস্বাদন করতে পারছি। আমাদের প্রতি ভগবানের এটা বিশেষ কৃপা। আর এই অমৃতের উপভোগ তখনই সার্থক হবে, যখন তা' আমরা ব্যবহারিক জীবনের সর্বক্ষেত্রে সর্বক্ষণ প্রয়োগ ও অনুসরণ করতে সক্ষম হবো। তদুপরি শ্রীমন্ মহাপ্রভুর বাণী, "সর্ব ঘরে হরি নাম সঙ্কীর্তন" ধ্বনীত হবে অহর্নিশি। সকল মত পথ ভুলে মানুষ একে অপরকে কাছে টেনে নেবে আত্মীয়তার বন্ধনে। অন্য জীবদেরও দিবে যথার্থ মর্য্যাদা, তবেই না সার্থক মানব জন্ম আর প্রকৃত ভক্ত থেকে মদ্-ভক্ত হয়ে ওঠা। আর তখনই এই জীবাত্মা পরমাত্মায় বিলীন হতে আর হবে না বিলম্ব। অন্তরে এই আশা আছে অনেক দিন ধরেই। আরো অনেকের নিশ্চয়ই এমন ভাবনায় ভাবিত হয় প্রাণ। পরমকৃপাময় সচ্চিনানন্দ ভগবান সকল জীবের কল্যাণ আর মঙ্গল করুণ। শ্রীহরির চরণকমলে এ অধমের এই প্রার্থনা।
"হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে!!"
!!জয় শ্রীকৃষ্ণ!! জয় রাধে!!
!!জয় হোক সকল জীবের!!
কার্টেসীঃ দেবেন্দ্র
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন