দেবীর মন্দিরের বলতে জানা যায়- চারকোণা অগভীর গর্তের মধ্যে একটি চৌকো পাথরের মধ্যে দেবীর পীঠ। অনেকের মতে দেবী জয়ন্তী তাঁর ভৈরব ক্রমদীশ্বরের সাথে এই কুণ্ডে বিরাজ করেন । মন্দিরের অনতিদূরে আর একটি কুণ্ড আছে। এখানে জল অল্প হলেও স্বচ্ছ। এই জল দিয়ে দেবীর পূজো হয় । মন্দিরের থেকে অল্প দূরে আর একটি শিবলিঙ্গ দেখা যায়। সেখানকার মন্দির জয়ন্তীর রাজা বানান । প্রথমে স্বপ্নাদেশ পেয়ে স্থানীয় আদিবাসী মেয়েরা খড় বাঁশের মন্দির নির্মাণ করে ভগবান শিবের পূজা করতো। রাজা এখানে মন্দির নির্মাণ করেন । “অসমের ইতিহাসের” রচয়িতা জৈনেক ব্রিটিশ সাহেব তাঁর লেখনীতে জানিয়েছেন- জয়ন্তী পীঠ জয়ন্তীয়া পরগণার ফাজলপুরে অবস্থিত । এখানে দেবীর বাম চরণের নিম্নাংশ পড়েছিল ।
এমন শোনা যায় শ্রীহট্টের এই মন্দিরে জয়ন্তী রাজা শারদীয়া নবমীর দিন নরবলি দ্বারা মায়ের পূজো করতেন । ১৮৩২ সালে এই রাজ্যের শেষ রাজা রাজেন্দ্র সিংহ অসমের নঁগাও থেকে এক মানুষকে এনে নরবলি দিলে ব্রিটিশ সরকারের কাছে খবর যায় । তৎকালীন বড়লাট এতে ক্রুদ্ধ হয়ে রাজ্য দখল করে জয়ন্তীকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত করেন । সেই থেকে মন্দিরে নরবলি উঠে যায় । তবে ঘাট বলি ( পশু বলি) হয় । প্রথম পর্বে বলেছিলাম এই পীঠের অবস্থান নিয়ে ভিন্ন মত আছে । হাওড়ার আমতায় অনেকে এই পীঠ এছাড়া পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ার সংলগ্ন ভূটান পাহারে এই পীঠ অবস্থিত বলে মানা হয় । ভারত পর্যটক ভূপতিরঞ্জণ দাস তাঁর রচনাতে পশ্চিমবঙ্গের উত্তরে রাজাভাতখাওয়া জঙ্গলের কাছে ভূটান পর্বতে এই পীঠ বলে ধরেন । জ্ঞানার্ণব তন্ত্র ও বিশ্বসার তন্ত্রে এই স্থানের উল্লেখ আছে । রাজাভাতখাওয়া স্টেশনে নেমে ১৬ কিমি দূরে জয়ন্তী স্টেশন । সেখানে থেকে হাটা পথে মাইল পাঁচেক গেলে জয়ন্তী। পাশ দিয়ে একটি ছোট্ট নদী বয়ে গেছে । অরন্য এখানে নিবির । হাতী, হরিণ, বিষাক্ত সাপ এমনকি কপালে থাকলে মায়ের বাহন বাঘকেও দেখা যেতে পারে । এই পথ খুব দুর্গম । ভূটান বাসীদের কাছে সহজ। কারন তারা পাহার দিয়ে আসেন। ভূটানী রাই বেশী পূজো দেন এখানে ।
পাহাড়ে তিনটি গুহা । খুব সরু প্রবেশ পথ । এখানে অল্প পাহাড়ে উঠলে তিনটি গুহা দেখা যায় । একটি হল মহাকাল ভৈরবের গুহা। একটি জয়ন্তী রূপী মহাকালী মায়ের গুহা। অপর একটি গুহাতে ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ দেখা যায় । এই মহাকালী হল একান্ন পীঠের দেবী জয়ন্তী । গুহাতে অনেক প্রাকৃতিক ভাবে নির্মিত লিঙ্গ দেখা যায় । পুরোহিত এখানে পূজা করে সন্ধ্যার আগে চলে যান । কারন এই স্থান খুব দুর্গম । যানবাহন খুব একটা নেই । পাহাড়ের মধ্যে জঙ্গলে ঘেরা পরিবেশ – সন্ধ্যার পর নিস্তব্ধ হয়ে যায় । মহাকালীর গুহাতে প্রাকৃতিক ভাবে নির্মিত শিলাঝুরির মহাকালী বিগ্রহ দেখা যায় । ইদানীং ভারতীয় সাধু সন্ন্যাসী রা এখানে এসে যাগ যজ্ঞ পূজা করেন । কারন বাংলাদেশে যাবার ভিসা সহজে মেলে না। আর বাংলাদেশে হিন্দু দের উপর যে আক্রমণ ও উৎপাত শুরু হয়েছে তাতে সাধু সন্ন্যাসী গন ওখানে গিয়ে নিজেদের বাঁচাবেন নাকি মায়ের সাধনা করবেন । এমন কোনো দিন নেই যেদিন হিন্দু নির্যাতনের খবড় পাওয়া যায় না । তাই সাধু সন্ন্যাসী গন কিছু তন্ত্র সমর্থিত এই পশ্চিমবঙ্গের জয়ন্তী পীঠে এসে সাধনা করেন ।
( চলবে )
Courtesy by: Sajal Chowdhury Manik
এমন শোনা যায় শ্রীহট্টের এই মন্দিরে জয়ন্তী রাজা শারদীয়া নবমীর দিন নরবলি দ্বারা মায়ের পূজো করতেন । ১৮৩২ সালে এই রাজ্যের শেষ রাজা রাজেন্দ্র সিংহ অসমের নঁগাও থেকে এক মানুষকে এনে নরবলি দিলে ব্রিটিশ সরকারের কাছে খবর যায় । তৎকালীন বড়লাট এতে ক্রুদ্ধ হয়ে রাজ্য দখল করে জয়ন্তীকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত করেন । সেই থেকে মন্দিরে নরবলি উঠে যায় । তবে ঘাট বলি ( পশু বলি) হয় । প্রথম পর্বে বলেছিলাম এই পীঠের অবস্থান নিয়ে ভিন্ন মত আছে । হাওড়ার আমতায় অনেকে এই পীঠ এছাড়া পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ার সংলগ্ন ভূটান পাহারে এই পীঠ অবস্থিত বলে মানা হয় । ভারত পর্যটক ভূপতিরঞ্জণ দাস তাঁর রচনাতে পশ্চিমবঙ্গের উত্তরে রাজাভাতখাওয়া জঙ্গলের কাছে ভূটান পর্বতে এই পীঠ বলে ধরেন । জ্ঞানার্ণব তন্ত্র ও বিশ্বসার তন্ত্রে এই স্থানের উল্লেখ আছে । রাজাভাতখাওয়া স্টেশনে নেমে ১৬ কিমি দূরে জয়ন্তী স্টেশন । সেখানে থেকে হাটা পথে মাইল পাঁচেক গেলে জয়ন্তী। পাশ দিয়ে একটি ছোট্ট নদী বয়ে গেছে । অরন্য এখানে নিবির । হাতী, হরিণ, বিষাক্ত সাপ এমনকি কপালে থাকলে মায়ের বাহন বাঘকেও দেখা যেতে পারে । এই পথ খুব দুর্গম । ভূটান বাসীদের কাছে সহজ। কারন তারা পাহার দিয়ে আসেন। ভূটানী রাই বেশী পূজো দেন এখানে ।
পাহাড়ে তিনটি গুহা । খুব সরু প্রবেশ পথ । এখানে অল্প পাহাড়ে উঠলে তিনটি গুহা দেখা যায় । একটি হল মহাকাল ভৈরবের গুহা। একটি জয়ন্তী রূপী মহাকালী মায়ের গুহা। অপর একটি গুহাতে ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ দেখা যায় । এই মহাকালী হল একান্ন পীঠের দেবী জয়ন্তী । গুহাতে অনেক প্রাকৃতিক ভাবে নির্মিত লিঙ্গ দেখা যায় । পুরোহিত এখানে পূজা করে সন্ধ্যার আগে চলে যান । কারন এই স্থান খুব দুর্গম । যানবাহন খুব একটা নেই । পাহাড়ের মধ্যে জঙ্গলে ঘেরা পরিবেশ – সন্ধ্যার পর নিস্তব্ধ হয়ে যায় । মহাকালীর গুহাতে প্রাকৃতিক ভাবে নির্মিত শিলাঝুরির মহাকালী বিগ্রহ দেখা যায় । ইদানীং ভারতীয় সাধু সন্ন্যাসী রা এখানে এসে যাগ যজ্ঞ পূজা করেন । কারন বাংলাদেশে যাবার ভিসা সহজে মেলে না। আর বাংলাদেশে হিন্দু দের উপর যে আক্রমণ ও উৎপাত শুরু হয়েছে তাতে সাধু সন্ন্যাসী গন ওখানে গিয়ে নিজেদের বাঁচাবেন নাকি মায়ের সাধনা করবেন । এমন কোনো দিন নেই যেদিন হিন্দু নির্যাতনের খবড় পাওয়া যায় না । তাই সাধু সন্ন্যাসী গন কিছু তন্ত্র সমর্থিত এই পশ্চিমবঙ্গের জয়ন্তী পীঠে এসে সাধনা করেন ।
( চলবে )
Courtesy by: Sajal Chowdhury Manik
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন