মা লক্ষ্মী “শীল”, “সদাচার”, “সৌন্দর্য”, “পরিছন্নতা”, “পবিত্রতা”এর দেবী। যেখানে অপরিষ্কার, মাকড়সার জ্বাল, যেখানে সর্বদা ঝগড়া- অশান্তি- পরনিন্দা – অন্যের সমালোচনা, মারামারি হয় সেখানে দেবী লক্ষ্মী বিরাজ করেন না । এই সব স্থান অলক্ষ্মী দেবীর পছন্দের জায়গা । লক্ষ্মীর পাঁচালী যারা পড়েন তারা দেখবেন মা লক্ষ্মী কিভাবে বর্ণনা দিয়েছেন – যেখানে সর্বদা মারামারি, ঝগড়া, হাতাহাতি, চিৎকার কোলাহল হয় সেই সব স্থান থেকে দেবী কমলা বিদায় নেন । যে সব নর নারী শাস্ত্র বহির্ভূত কাজ করে, অবাধে সঙ্গম করে, অখাদ্য কুখাদ্য ভোজন করে দেবী সেই সকল নর নারীর ওপরে কদাপি কৃপাদৃষ্টি প্রদান করেন না । যদি দেখা যায় সমস্ত পরিবারে গৃহকর্ত্রী বা স্ত্রীরাই হলেন “গৃহলক্ষ্মী”। দেবী হরিপ্রিয়া বৈকুণ্ঠনিবাসিনী এই গৃহলক্ষ্মীদের মাধ্যমেই সংসারে কল্যাণ করেন। কিন্তু সেজন্য গৃহলক্ষ্মী মানে প্রতি গৃহের স্ত্রীদের সেই কৃপা প্রাপ্তির জন্য তৈরী করতে হয়। যেমন সকলকে নিমন্ত্রণ করে খাওয়ানোর আগে সকলের জন্য নানা ব্যাঞ্জন রন্ধন করে আহারের তৈরী করতে হয়- তেমনি সমস্ত কর্মের জন্য নিজেকে তৈরী করতে হয় ।
নারী ধর্মের আদর্শ স্থাপনের জন্য পৌরাণিক যুগ হতে আধুনিক যুগ পর্যন্ত কত মহীয়সী নারীর আবির্ভাব ঘটেছে- যেমন সীতা, সাবিত্রী, গার্গী, অপালা, মৈত্রেয়ী আধুনিক কালে মা সারদাকেই দেখুন। যে সব নারী অগ্রে খেয়ে পরে স্বামীকে খেতে দেয়, যে সব নারী গুরু- ব্রাহ্মণ- শাস্ত্রকে অবহেলা করে, যে সব স্ত্রী সকালে আঙিনা পরিষ্কার না করে, গৃহ পরিষ্কার না করে, যে সব বিবাহিতা নারী আলতা – সিঁদূর – শাঁখা- পলা- শাড়ী না পরে আধুনিক বস্ত্র পড়ে, যে সব নারী স্বর্ণ অলঙ্কার না পরে লোহার গয়না পড়ে- লক্ষ্মী দেবী সেই সব নারীর সংসারের থেকে বিদায় লন । গুরু – ব্রাহ্মণ আর শাস্ত্র নিন্দুকদের সর্ব অগ্রে দেবী লক্ষ্মী ত্যাগ করেন । যে সব নারী পিতামাতা- প্রতিবেশীর সাথে ঝগড়া করে- গুরুজনের সামনে ঘোমটা না দেয়, অভুক্তকে আহার না দেয়, গুরুজন- শ্বশুর শাশুড়ীর সাথে ঝগড়া করে , বার- ব্রত না করে, অতিথি দেখলেই ক্ষিপ্ত হয়- দেবী লক্ষ্মী এদেরও ত্যাগ করেন। এছাড়া কালো রক্তচক্ষু পায়রা যেখানে থাকে সেই স্থানে দেবী লক্ষ্মী থাকেন না। সাদা পায়রা যেই স্থানে থাকে সেই স্থান দেবীর প্রিয়। এছারা যে সব নারী সন্ধ্যাকালে ধূপ দীপ ঈশ্বরকে না দেখায় তথা শঙ্খ না বাজায় – দেবী লক্ষ্মী সেই স্থানেও থাকেন না। মলিন বস্ত্রে, ছিন্ন বস্ত্রে এমনকি যে নারী কেশ যত্ন করে না কিংবা লোহার গয়না পড়ে ( লোহার গয়না অলক্ষ্মী দেবীর প্রিয় ) , ঝগড়াটে এমন নারীকে দেবী কৃপা করেন না।
দেবীর কৃপা পেতে হলে নারীকে দেবীর মতোই সুপ্রসন্না , পরিষ্কার বস্ত্র পরিধান, কেশ বিন্যাস, মৃদুভাষিনী, লজ্জাশীলা , গুরু- ব্রাহ্মণ- শাস্ত্রে ভক্তিমতী, অভুক্তকে অন্ন প্রদায়িনী, সাধ্যমতো স্বর্ণ অলঙ্কার ভূষিতা, উদার মন, যত্নশীলা, সকলের সাথে মিষ্ট ব্যবহারকারিনী, পতিভক্তিপরায়ণা হতে হবে। “পতি পরম গুরু”- ইহা মানতে হবে । বার ব্রত উপবাস, গৃহ পরিষ্কার , সন্ধ্যাকালে তুলসী তলায় ধূপ দীপ দেওয়া, অতিথির প্রতি যত্নশীলা হতে হবে। শুধু নারীদের দায়িত্ব না , পুরুষদেরও আছে। “লজ্জা” নারীর ভূষণ আর “সংযম” হল পুরুষের অলঙ্কার । যে সব পুরুষ , স্ত্রীকে ধরে নির্যাতন করে, জুয়া- মদ্য- বেশ্যায় আসক্ত সেই সব পুরুষেরাও মা লক্ষ্মীর কৃপা পায় না । যে সব পুরুষ গুরু - ব্রাহ্মণ( এই পেজেই একটা পোষ্টে কিছুকাল আগে কমেন্ট এ অনেকেই ব্রাহ্মণ কে গালাগালি করেছিলেন) – শাস্ত্রকে অমর্যাদা করে তারাও দেবীর কৃপা পান না। যে সব পুরুষ বার- ব্রত- উপবাস পালন করে না তারাও কৃপা পান না। সুতরাং পুরুষকেও মর্যাদাশীল হতে হবে । মনে রাখবেন দেবী লক্ষ্মী যেই স্থান থেকে বিদায় নেন সেখানে অলক্ষ্মী দেবী প্রবেশ করে। আর অলক্ষ্মী দেবীর প্রবেশ মাত্রই নবগ্রহ কুপিত হয়, হাহাকার- মৃত্যু- জরা- মারন রোগে গ্রাস করে, দরিদ্র হয়- দুর্ভাগ্য আসতেই থাকে। সুতরাং বিধিবিধানে নিয়ম পালন করে লক্ষ্মী দেবীর পূজা করে পাঁচালিতে যেমন লেখা আছে সেই ভাবে জীবন পালন করবেন নর ও নারী দুজনেই।
এবার বৃহস্পতিবারে লক্ষ্মী পূজা পড়েছে। এখন সবার প্রশ্ন তবে কি দুবার লক্ষ্মী পূজো করতে হবে ? উত্তর- হ্যাঁ। প্রতি বৃহস্পতিবার ত আমরা ঘট বসিয়ে পূজো করি। সেই নিয়ম মেনে “নিত্যলক্ষ্মী” র পূজা ঘট পেতে করে নেবেন। এবার যখন কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা করবেন- তখন কিন্তু আলাদা ঘট স্থাপন করতে হবে। বৃহস্পতিবারে বসানো ঘটে কোজাগরী লক্ষ্মী দেবীর পূজা হবে না। আর একটা কথা বৃহস্পতিবারে কখনো ঘট তুলবেন না। বুধবার করে রাত্রে ঠাকুর শয়নের পর ঘট তুলবেন। যদি কখনো ভুল হয় তবে বৃহস্পতিবার করে ঘট তুলবেন না, পুরানো ঘটেই পূজা করবেন। ঘট গঙ্গামাটির ওপর স্থাপন করবেন। ঘটে পুত্তলিকা আঁকবেন, জলপূর্ণ করে আমের পল্লব দেবেন ( অভাবে দুটো বোটা শুদ্ধো পান ) তার ওপর সশীষ পুত্তলিকা অঙ্কিত কচি ডাব ( অভাবে কলা বা হরিতকি বা যেকোনো গোটা ফল ) দিয়ে নতুন গামছা দিয়ে ঢেকে একটা ফুলের মালা দেবেন। চাইলে নতুন বস্ত্র বা লাল শালু দিয়ে ঘট ঢেকে দেবেন। লক্ষ্মী পূজায় তুলসী পত্র, ঝিঁন্টি পুস্প, কাঁসর বা ঘণ্টা বাদন নিষেধ। লক্ষ্মী পূজার উপযুক্ত সময় যখন সন্ধ্যায় আকাশে পূর্ণিমার পূর্ণচন্দ্র দেখা দেবে। গোলাঘরে, লাঙলে, ট্রাক্টরে , আলমারি, পয়সা জমানোর ঘটে মা লক্ষ্মীর পায়ের চিহ্ন আল্পনা দিয়ে আঁকবেন। লোহার বাসন অলক্ষ্মী দেবীর প্রিয়, তাই লোহার বাসন বা লোহার কিছু লক্ষ্মী পূজায় ব্যবহার করবেন না। মা লক্ষ্মীর ঘট মাটির বা পিতল বা তামার দেবেন। ভক্তিচিত্ত হয়ে মা লক্ষ্মীর ও ভগবান শ্রীনারায়নের পূজা করেন। লক্ষ্মী দেবীর সাথে ভগবান নারায়নের অবশ্যই পূজা করবেন।
লাইক দিনঃ www.facebook.com/shonatonsondesh
⚠ ভালো লাগলে লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার করে আরো বেশী মানুষের কাছে পৌছাতে সাহায্য করবেন ।
নারী ধর্মের আদর্শ স্থাপনের জন্য পৌরাণিক যুগ হতে আধুনিক যুগ পর্যন্ত কত মহীয়সী নারীর আবির্ভাব ঘটেছে- যেমন সীতা, সাবিত্রী, গার্গী, অপালা, মৈত্রেয়ী আধুনিক কালে মা সারদাকেই দেখুন। যে সব নারী অগ্রে খেয়ে পরে স্বামীকে খেতে দেয়, যে সব নারী গুরু- ব্রাহ্মণ- শাস্ত্রকে অবহেলা করে, যে সব স্ত্রী সকালে আঙিনা পরিষ্কার না করে, গৃহ পরিষ্কার না করে, যে সব বিবাহিতা নারী আলতা – সিঁদূর – শাঁখা- পলা- শাড়ী না পরে আধুনিক বস্ত্র পড়ে, যে সব নারী স্বর্ণ অলঙ্কার না পরে লোহার গয়না পড়ে- লক্ষ্মী দেবী সেই সব নারীর সংসারের থেকে বিদায় লন । গুরু – ব্রাহ্মণ আর শাস্ত্র নিন্দুকদের সর্ব অগ্রে দেবী লক্ষ্মী ত্যাগ করেন । যে সব নারী পিতামাতা- প্রতিবেশীর সাথে ঝগড়া করে- গুরুজনের সামনে ঘোমটা না দেয়, অভুক্তকে আহার না দেয়, গুরুজন- শ্বশুর শাশুড়ীর সাথে ঝগড়া করে , বার- ব্রত না করে, অতিথি দেখলেই ক্ষিপ্ত হয়- দেবী লক্ষ্মী এদেরও ত্যাগ করেন। এছাড়া কালো রক্তচক্ষু পায়রা যেখানে থাকে সেই স্থানে দেবী লক্ষ্মী থাকেন না। সাদা পায়রা যেই স্থানে থাকে সেই স্থান দেবীর প্রিয়। এছারা যে সব নারী সন্ধ্যাকালে ধূপ দীপ ঈশ্বরকে না দেখায় তথা শঙ্খ না বাজায় – দেবী লক্ষ্মী সেই স্থানেও থাকেন না। মলিন বস্ত্রে, ছিন্ন বস্ত্রে এমনকি যে নারী কেশ যত্ন করে না কিংবা লোহার গয়না পড়ে ( লোহার গয়না অলক্ষ্মী দেবীর প্রিয় ) , ঝগড়াটে এমন নারীকে দেবী কৃপা করেন না।
দেবীর কৃপা পেতে হলে নারীকে দেবীর মতোই সুপ্রসন্না , পরিষ্কার বস্ত্র পরিধান, কেশ বিন্যাস, মৃদুভাষিনী, লজ্জাশীলা , গুরু- ব্রাহ্মণ- শাস্ত্রে ভক্তিমতী, অভুক্তকে অন্ন প্রদায়িনী, সাধ্যমতো স্বর্ণ অলঙ্কার ভূষিতা, উদার মন, যত্নশীলা, সকলের সাথে মিষ্ট ব্যবহারকারিনী, পতিভক্তিপরায়ণা হতে হবে। “পতি পরম গুরু”- ইহা মানতে হবে । বার ব্রত উপবাস, গৃহ পরিষ্কার , সন্ধ্যাকালে তুলসী তলায় ধূপ দীপ দেওয়া, অতিথির প্রতি যত্নশীলা হতে হবে। শুধু নারীদের দায়িত্ব না , পুরুষদেরও আছে। “লজ্জা” নারীর ভূষণ আর “সংযম” হল পুরুষের অলঙ্কার । যে সব পুরুষ , স্ত্রীকে ধরে নির্যাতন করে, জুয়া- মদ্য- বেশ্যায় আসক্ত সেই সব পুরুষেরাও মা লক্ষ্মীর কৃপা পায় না । যে সব পুরুষ গুরু - ব্রাহ্মণ( এই পেজেই একটা পোষ্টে কিছুকাল আগে কমেন্ট এ অনেকেই ব্রাহ্মণ কে গালাগালি করেছিলেন) – শাস্ত্রকে অমর্যাদা করে তারাও দেবীর কৃপা পান না। যে সব পুরুষ বার- ব্রত- উপবাস পালন করে না তারাও কৃপা পান না। সুতরাং পুরুষকেও মর্যাদাশীল হতে হবে । মনে রাখবেন দেবী লক্ষ্মী যেই স্থান থেকে বিদায় নেন সেখানে অলক্ষ্মী দেবী প্রবেশ করে। আর অলক্ষ্মী দেবীর প্রবেশ মাত্রই নবগ্রহ কুপিত হয়, হাহাকার- মৃত্যু- জরা- মারন রোগে গ্রাস করে, দরিদ্র হয়- দুর্ভাগ্য আসতেই থাকে। সুতরাং বিধিবিধানে নিয়ম পালন করে লক্ষ্মী দেবীর পূজা করে পাঁচালিতে যেমন লেখা আছে সেই ভাবে জীবন পালন করবেন নর ও নারী দুজনেই।
এবার বৃহস্পতিবারে লক্ষ্মী পূজা পড়েছে। এখন সবার প্রশ্ন তবে কি দুবার লক্ষ্মী পূজো করতে হবে ? উত্তর- হ্যাঁ। প্রতি বৃহস্পতিবার ত আমরা ঘট বসিয়ে পূজো করি। সেই নিয়ম মেনে “নিত্যলক্ষ্মী” র পূজা ঘট পেতে করে নেবেন। এবার যখন কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা করবেন- তখন কিন্তু আলাদা ঘট স্থাপন করতে হবে। বৃহস্পতিবারে বসানো ঘটে কোজাগরী লক্ষ্মী দেবীর পূজা হবে না। আর একটা কথা বৃহস্পতিবারে কখনো ঘট তুলবেন না। বুধবার করে রাত্রে ঠাকুর শয়নের পর ঘট তুলবেন। যদি কখনো ভুল হয় তবে বৃহস্পতিবার করে ঘট তুলবেন না, পুরানো ঘটেই পূজা করবেন। ঘট গঙ্গামাটির ওপর স্থাপন করবেন। ঘটে পুত্তলিকা আঁকবেন, জলপূর্ণ করে আমের পল্লব দেবেন ( অভাবে দুটো বোটা শুদ্ধো পান ) তার ওপর সশীষ পুত্তলিকা অঙ্কিত কচি ডাব ( অভাবে কলা বা হরিতকি বা যেকোনো গোটা ফল ) দিয়ে নতুন গামছা দিয়ে ঢেকে একটা ফুলের মালা দেবেন। চাইলে নতুন বস্ত্র বা লাল শালু দিয়ে ঘট ঢেকে দেবেন। লক্ষ্মী পূজায় তুলসী পত্র, ঝিঁন্টি পুস্প, কাঁসর বা ঘণ্টা বাদন নিষেধ। লক্ষ্মী পূজার উপযুক্ত সময় যখন সন্ধ্যায় আকাশে পূর্ণিমার পূর্ণচন্দ্র দেখা দেবে। গোলাঘরে, লাঙলে, ট্রাক্টরে , আলমারি, পয়সা জমানোর ঘটে মা লক্ষ্মীর পায়ের চিহ্ন আল্পনা দিয়ে আঁকবেন। লোহার বাসন অলক্ষ্মী দেবীর প্রিয়, তাই লোহার বাসন বা লোহার কিছু লক্ষ্মী পূজায় ব্যবহার করবেন না। মা লক্ষ্মীর ঘট মাটির বা পিতল বা তামার দেবেন। ভক্তিচিত্ত হয়ে মা লক্ষ্মীর ও ভগবান শ্রীনারায়নের পূজা করেন। লক্ষ্মী দেবীর সাথে ভগবান নারায়নের অবশ্যই পূজা করবেন।
লাইক দিনঃ www.facebook.com/shonatonsondesh
⚠ ভালো লাগলে লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার করে আরো বেশী মানুষের কাছে পৌছাতে সাহায্য করবেন ।
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন