মুকুটমণিপুরে কংসাবতী জলাধারে বছরের অধিকাংশ সময় ডুবে থাকে শতাব্দী প্রাচীন লক্ষ্মী জনার্দনের মন্দির। মার্চের শেষে জলস্তর কিছুটা কমলে দেখা মেলে ইঁট-সুরকির তৈরি এই মন্দিরটি। তাই গরমের মধ্যেও শুধু এই মন্দিরের টানে এখানে ছুটে আসেন রাজ্য ও তার বাইরের পর্যটকরা।
১৯৫০ সালের মাঝামাঝি সময়ে কেন্দ্রীয় নদী কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ঠিক হয় খাতড়া ব্লকে নির্মাণ করা হবে জলাধারটি। কিন্তু পরে এই প্রকল্পের বাস্তুকার জওহরলাল দাসের নেতৃত্বে মুকুটমণিপুর সংলগ্ন চিটগিরি-অম্বিকানগরের মাঝে কাঁসাই ও কুমারী নদীর সঙ্গমস্থলে এই প্রকল্পের স্থান নির্বাচন হয়। ১৯৫৯ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধানচন্দ্র রায় কংসাবতী প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এই প্রকল্পে ১৭৩টি মৌজার মধ্যে বাঁকুড়ার খাতড়ার ৩০টি, রানিবাঁধের ৩৩টি ও পুরুলিয়ার মানবাজার ব্লকের ১১০টি মৌজা অন্তর্ভুক্ত হয়।
কুমারী অববাহিকায় থাকা সারেঙ্গগড়, চিয়াদা, কাটাকুমারী, ঘোলকুড়ি, পুড্ডি গ্রামের সঙ্গে বড্ডি গ্রামটিও জলের তলায় নিমজ্জিত হয়। এই বড্ডি গ্রামের সুবুদ্ধি পদবিধারী উৎকল ব্রাহ্মণদের কুলদেবতা লক্ষ্মী জনার্দন। এই প্রকল্পের ফলে বাস্তুচ্যুত হলে কুলদেবতা লক্ষ্মী জনার্দনকে সঙ্গে নিয়ে বর্তমান হিড়বাঁধ ব্লকের দিঘি-ভগড়া আমবাগানে চলে যান সুবুদ্ধিরা। বর্তমানে সেখানে নতুন মন্দির নির্মাণ করা হয়েছে। আর কংসাবতী প্রকল্পের মধ্যে পড়ে থাকে বিগ্রহশূন্য লক্ষ্মী জনার্দনের মন্দিরটি।
সুবুদ্ধি পরিবারের বর্তমান সদস্য দয়াময় সুবুদ্ধি বলেন, তাঁদের পূর্বপুরুষ কৃষ্ণচন্দ্র পতি ছিলেন অম্বিকানগরের রাজার সভাপণ্ডিত। অম্বিকানগরের তৎকালীন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র পতির বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পেয়ে তাঁকে সুবুদ্ধি উপাধি দেন। এবং একই সঙ্গে ঝরিয়া, পরেশনাথ ও পূর্ণাপানি এই তিনটি মৌজা নিষ্কর দান করেন। তখন কৃষ্ণচন্দ্র পতি (সুবুদ্ধি) ইন্দপুরের ফুলকুসমার আদি বাসস্থান ছেড়ে কুমারী নদী সংলগ্ন রানিবাঁধের বড্ডি গ্রামে বসতি স্থাপন করেন। সেখানে লক্ষ্মী জনার্দনকে একটি মাটির বাড়িতে প্রতিষ্ঠা করে পূজা শুরু করেন। পরে বাংলা এই বংশের হরগোপাল সুবুদ্ধি ইঁট-সুরকি দিয়ে নতুন মন্দির নির্মাণ করেন।
কিন্তু কংসাবতী প্রকল্পের মধ্যে এই এলাকাটি পড়ায় মন্দির ও বাসস্থান ছেড়ে দিতে বাধ্য হন তাঁরা। মন্দির সংলগ্ন এলাকায় বাঁধ নির্মাণের জন্য খোঁড়াখুড়ি হলেও প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত কর্মী ও ইঞ্জিনিয়ারদের সৌজন্যে অক্ষত থেকে যায় মন্দিরটি। যদিও স্থানীয়দের অভিযোগ, মন্দিরে ব্যবহৃত কড়ি-বরগা চুরি করে নিয়ে গেছে দুষ্কৃতীরা।
সারা বছর জলের নীচে থাকা লক্ষ্মী জনার্দনের মন্দির দেখতে এই গ্রীষ্মেও কলকাতার বেহালা থেকে ছুটে এসেছেন ইমন ভট্টাচার্য, দুর্গাপুরের তিথি মল্লিকরা। তাঁদের কথায়, এর আগেও এখানে এসেছেন তাঁরা। তখনই জলে ডুবে থাকা এই মন্দিরের কথা শোনেন। তাই এই প্রাচীন মন্দিরটি দেখতে চড়া গরমেও এখানে ছুটে আসা।
বিশিষ্ট গবেষক সৌমেন রক্ষিত বলেন, ইঁট-সুরকি নির্মিত প্রাচীন এই মন্দিরটির সংরক্ষণ জরুরি। মুকুটমণিপুরের পর্যটন মানচিত্রে এটিও একটি অন্যতম দ্রষ্টব্য হতে পারে। একই দাবি জানিয়েছেন, সুবুদ্ধি পরিবারের বর্তমান সদস্যরাও। দীপ সুবুদ্ধি ও হিমাংশু সুবুদ্ধি বলেন, মন্দিরের প্রাচীনতা ও মুকুটমণিপুরে আসা পর্যটকদের কথা ভেবে সরকারের উচিত লক্ষ্মী জনার্দনের ভগ্নপ্রায় মন্দিরটি দ্রুত সংস্কার করে সংরক্ষণ করা।
১৯৫০ সালের মাঝামাঝি সময়ে কেন্দ্রীয় নদী কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ঠিক হয় খাতড়া ব্লকে নির্মাণ করা হবে জলাধারটি। কিন্তু পরে এই প্রকল্পের বাস্তুকার জওহরলাল দাসের নেতৃত্বে মুকুটমণিপুর সংলগ্ন চিটগিরি-অম্বিকানগরের মাঝে কাঁসাই ও কুমারী নদীর সঙ্গমস্থলে এই প্রকল্পের স্থান নির্বাচন হয়। ১৯৫৯ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধানচন্দ্র রায় কংসাবতী প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এই প্রকল্পে ১৭৩টি মৌজার মধ্যে বাঁকুড়ার খাতড়ার ৩০টি, রানিবাঁধের ৩৩টি ও পুরুলিয়ার মানবাজার ব্লকের ১১০টি মৌজা অন্তর্ভুক্ত হয়।
কুমারী অববাহিকায় থাকা সারেঙ্গগড়, চিয়াদা, কাটাকুমারী, ঘোলকুড়ি, পুড্ডি গ্রামের সঙ্গে বড্ডি গ্রামটিও জলের তলায় নিমজ্জিত হয়। এই বড্ডি গ্রামের সুবুদ্ধি পদবিধারী উৎকল ব্রাহ্মণদের কুলদেবতা লক্ষ্মী জনার্দন। এই প্রকল্পের ফলে বাস্তুচ্যুত হলে কুলদেবতা লক্ষ্মী জনার্দনকে সঙ্গে নিয়ে বর্তমান হিড়বাঁধ ব্লকের দিঘি-ভগড়া আমবাগানে চলে যান সুবুদ্ধিরা। বর্তমানে সেখানে নতুন মন্দির নির্মাণ করা হয়েছে। আর কংসাবতী প্রকল্পের মধ্যে পড়ে থাকে বিগ্রহশূন্য লক্ষ্মী জনার্দনের মন্দিরটি।
সুবুদ্ধি পরিবারের বর্তমান সদস্য দয়াময় সুবুদ্ধি বলেন, তাঁদের পূর্বপুরুষ কৃষ্ণচন্দ্র পতি ছিলেন অম্বিকানগরের রাজার সভাপণ্ডিত। অম্বিকানগরের তৎকালীন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র পতির বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পেয়ে তাঁকে সুবুদ্ধি উপাধি দেন। এবং একই সঙ্গে ঝরিয়া, পরেশনাথ ও পূর্ণাপানি এই তিনটি মৌজা নিষ্কর দান করেন। তখন কৃষ্ণচন্দ্র পতি (সুবুদ্ধি) ইন্দপুরের ফুলকুসমার আদি বাসস্থান ছেড়ে কুমারী নদী সংলগ্ন রানিবাঁধের বড্ডি গ্রামে বসতি স্থাপন করেন। সেখানে লক্ষ্মী জনার্দনকে একটি মাটির বাড়িতে প্রতিষ্ঠা করে পূজা শুরু করেন। পরে বাংলা এই বংশের হরগোপাল সুবুদ্ধি ইঁট-সুরকি দিয়ে নতুন মন্দির নির্মাণ করেন।
কিন্তু কংসাবতী প্রকল্পের মধ্যে এই এলাকাটি পড়ায় মন্দির ও বাসস্থান ছেড়ে দিতে বাধ্য হন তাঁরা। মন্দির সংলগ্ন এলাকায় বাঁধ নির্মাণের জন্য খোঁড়াখুড়ি হলেও প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত কর্মী ও ইঞ্জিনিয়ারদের সৌজন্যে অক্ষত থেকে যায় মন্দিরটি। যদিও স্থানীয়দের অভিযোগ, মন্দিরে ব্যবহৃত কড়ি-বরগা চুরি করে নিয়ে গেছে দুষ্কৃতীরা।
সারা বছর জলের নীচে থাকা লক্ষ্মী জনার্দনের মন্দির দেখতে এই গ্রীষ্মেও কলকাতার বেহালা থেকে ছুটে এসেছেন ইমন ভট্টাচার্য, দুর্গাপুরের তিথি মল্লিকরা। তাঁদের কথায়, এর আগেও এখানে এসেছেন তাঁরা। তখনই জলে ডুবে থাকা এই মন্দিরের কথা শোনেন। তাই এই প্রাচীন মন্দিরটি দেখতে চড়া গরমেও এখানে ছুটে আসা।
বিশিষ্ট গবেষক সৌমেন রক্ষিত বলেন, ইঁট-সুরকি নির্মিত প্রাচীন এই মন্দিরটির সংরক্ষণ জরুরি। মুকুটমণিপুরের পর্যটন মানচিত্রে এটিও একটি অন্যতম দ্রষ্টব্য হতে পারে। একই দাবি জানিয়েছেন, সুবুদ্ধি পরিবারের বর্তমান সদস্যরাও। দীপ সুবুদ্ধি ও হিমাংশু সুবুদ্ধি বলেন, মন্দিরের প্রাচীনতা ও মুকুটমণিপুরে আসা পর্যটকদের কথা ভেবে সরকারের উচিত লক্ষ্মী জনার্দনের ভগ্নপ্রায় মন্দিরটি দ্রুত সংস্কার করে সংরক্ষণ করা।
সংগৃহিত
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন