পৌরাণিক সাহিত্যে আমরা দেখতে পাই , দুইজন মহীয়সী নারী অতুল বৈভরের মধ্যে জীবনযাপন করেও ব্রহ্মজ্ঞান লাভ করেছিলেন । একজন ঋতধ্বজ রাজার পত্নী মদালসা , আর একজন মালবরাজ শিখিধ্বজের পত্নী চূড়ালা । গৃহসংসারের সহস্র প্রলোভনের মধ্যে থেকেও অবিচলিতভাবে আধ্যাত্মিক সাধনা যে কত বড় তপস্যা , তা মদালসার মত চূড়ালাও দেখিয়েছেন ।
চূড়ালা তপস্বিনী হলেও রাজমহিষীর নিত্য কর্ম্মসাধনে তাঁর বিন্দুমাত্র ক্রটি ছিল না । স্বামীর সহিত সর্ববিষয়ে সহযোগিতাতেও তাঁর কোন ভুলভ্রান্ত্রি হত না । চূড়ালার সাধনা ছিল নিভৃতে - এই সাধনার সন্ধান তাঁর স্বামীও রাখতেন না । চূড়ালা যে দিব্যজ্ঞান লাভ করেছিলেন - তাঁর অঙ্গে দিব্যজ্যোতিতে তা প্রতিফলিত হত । অঙ্গের অসামান্য জ্যোতি কোথা হতে আসল , শিখিধ্বজ তা বুঝতে পারতেন না । তিনি ভাবতেন - বুঝি রাজভোগেই ঐ কান্তি তাঁর অঙ্গে সঞ্চারিত হয়েছে ।
চূড়ালা অবশ্য রাজভোগ্য উপকরণ কিছুই বর্জ্জন করেন নাই - অনাসক্তভাবে তিনি ভোগ করতেন । তাঁর কাছে স্বর্ণপাত্র ও মাটির পাত্র কোন প্রভেদ ছিল না । রাজর্ষি জনক যেভাবে রাজৈশ্বর্য্যের মধ্যেই সাধনা করেছিলেন , চূড়ালাও সেইভাবেই যোগ , ধ্যান , তপ - জপ ইত্যাদি অনুষ্ঠানে সাধনা করতেন ।
পরম সাধিকা মীরাবাঈ চরম প্রেমভক্তি লাভ করলে ভোগাসক্ত স্বামীর অনুবর্ত্তিনী হয়ে থাকতে পারেন নি । কিন্তু চূড়ালা ব্রহ্মজ্ঞান লাভ করেও তা পেরেছিলেন । অরুন্ধতী , অনসূয়া , লোপামুদ্রা ইত্যাদি ঋষিপত্নীর জীবনে এইরূপ সমস্যাই ঘটে নি ।
চূড়ালার সহিত ধর্ম্মপথে শিখিধ্বজের কোন যোগ ছিল না । আশ্চর্য্যের বিষয় , তবু কেবল চূড়ালার সংসর্গেই শিখিধ্বজের মনে ক্রমে বৈরাগ্যের উদয় হল । মনে বৈরাগ্যের উদয় হওয়ামাত্র শিখিধ্বজ রাজসংসার ত্যাগ করে নিকটবর্ত্তী এক আশ্রমে চলে গেলেন ।
চূড়ালা দেখলেন - বিনা সাধনায় সহসা যে বৈরাগ্যের উদয় হয়েছে , তা স্থায়ী হয় না । অথচ রাজার মনে পরম ধনের জন্য যে পিপাসা জন্মেছে , তা নষ্ট হয়ে যায় , তাও বাঞ্ছনীয় নয় ।
চূড়ালা রাজ্যমধ্যে প্রচার করলেন , রাজা তীর্থপরিক্রমায় যাত্রা করেছেন । যতদিন না ফিরেন , ততদিন তিনিই রাজ্যপালন করবেন । চূড়ালা সারাদিন নিয়মমত ধর্ম্মানুসারে রাজকার্য্য করতেন । রাত্রিকালে পুরুষবেশে রাজার আশ্রমে গিয়ে রাজাকে জ্ঞান ও উপদেশ দিতেন । পুরুষবেশী চূড়ালাই রাজার গুরু হলেন । ক্রমে রাজা সংসারের অসারতা সম্যক্- রূপে বুঝতে লাগলেন । চূড়ালা গুরুরূপে রাজাকে রাজসংসারে ফিরে যেতে আদেশ দিলেন , কিন্তু রাজা আর ফিরতে চাইলেন না ।
চূড়ালি এইবার রাজাকে ব্রহ্মবিদ্যা সম্বন্ধে উপদেশ দিতে লাগলেন । ক্রমে রাজার ব্রহ্মজ্ঞান জন্মে । এই ব্রহ্মজ্ঞান লাভ করে রাজা বুঝতে পারলেন - রাজধর্ম্মপালন ব্রহ্মজ্ঞানের বিরোধী নয় , ব্রহ্মজ্ঞানীর পক্ষে সংসারে আর সন্ন্যাসে কোন প্রভেদ নাই , বনে ও ভবনে কোন পার্থক্য নাই , স্বর্ণ ও শিখাখণ্ডে কোন তফাৎ নেই ।
তখন চূড়ালা আত্মপ্রকাশ করে রাজাকে আবার রাজসংসারে ফিরে আনলেন । শিখিধ্বজও রাজর্ষি জনকের মত রাজধর্ম্ম পালন করতে লাগলেন ।
( যোগবাশিষ্ঠ রামায়ণ ও বিষ্ণুপুরাণ )
চূড়ালা তপস্বিনী হলেও রাজমহিষীর নিত্য কর্ম্মসাধনে তাঁর বিন্দুমাত্র ক্রটি ছিল না । স্বামীর সহিত সর্ববিষয়ে সহযোগিতাতেও তাঁর কোন ভুলভ্রান্ত্রি হত না । চূড়ালার সাধনা ছিল নিভৃতে - এই সাধনার সন্ধান তাঁর স্বামীও রাখতেন না । চূড়ালা যে দিব্যজ্ঞান লাভ করেছিলেন - তাঁর অঙ্গে দিব্যজ্যোতিতে তা প্রতিফলিত হত । অঙ্গের অসামান্য জ্যোতি কোথা হতে আসল , শিখিধ্বজ তা বুঝতে পারতেন না । তিনি ভাবতেন - বুঝি রাজভোগেই ঐ কান্তি তাঁর অঙ্গে সঞ্চারিত হয়েছে ।
চূড়ালা অবশ্য রাজভোগ্য উপকরণ কিছুই বর্জ্জন করেন নাই - অনাসক্তভাবে তিনি ভোগ করতেন । তাঁর কাছে স্বর্ণপাত্র ও মাটির পাত্র কোন প্রভেদ ছিল না । রাজর্ষি জনক যেভাবে রাজৈশ্বর্য্যের মধ্যেই সাধনা করেছিলেন , চূড়ালাও সেইভাবেই যোগ , ধ্যান , তপ - জপ ইত্যাদি অনুষ্ঠানে সাধনা করতেন ।
পরম সাধিকা মীরাবাঈ চরম প্রেমভক্তি লাভ করলে ভোগাসক্ত স্বামীর অনুবর্ত্তিনী হয়ে থাকতে পারেন নি । কিন্তু চূড়ালা ব্রহ্মজ্ঞান লাভ করেও তা পেরেছিলেন । অরুন্ধতী , অনসূয়া , লোপামুদ্রা ইত্যাদি ঋষিপত্নীর জীবনে এইরূপ সমস্যাই ঘটে নি ।
চূড়ালার সহিত ধর্ম্মপথে শিখিধ্বজের কোন যোগ ছিল না । আশ্চর্য্যের বিষয় , তবু কেবল চূড়ালার সংসর্গেই শিখিধ্বজের মনে ক্রমে বৈরাগ্যের উদয় হল । মনে বৈরাগ্যের উদয় হওয়ামাত্র শিখিধ্বজ রাজসংসার ত্যাগ করে নিকটবর্ত্তী এক আশ্রমে চলে গেলেন ।
চূড়ালা দেখলেন - বিনা সাধনায় সহসা যে বৈরাগ্যের উদয় হয়েছে , তা স্থায়ী হয় না । অথচ রাজার মনে পরম ধনের জন্য যে পিপাসা জন্মেছে , তা নষ্ট হয়ে যায় , তাও বাঞ্ছনীয় নয় ।
চূড়ালা রাজ্যমধ্যে প্রচার করলেন , রাজা তীর্থপরিক্রমায় যাত্রা করেছেন । যতদিন না ফিরেন , ততদিন তিনিই রাজ্যপালন করবেন । চূড়ালা সারাদিন নিয়মমত ধর্ম্মানুসারে রাজকার্য্য করতেন । রাত্রিকালে পুরুষবেশে রাজার আশ্রমে গিয়ে রাজাকে জ্ঞান ও উপদেশ দিতেন । পুরুষবেশী চূড়ালাই রাজার গুরু হলেন । ক্রমে রাজা সংসারের অসারতা সম্যক্- রূপে বুঝতে লাগলেন । চূড়ালা গুরুরূপে রাজাকে রাজসংসারে ফিরে যেতে আদেশ দিলেন , কিন্তু রাজা আর ফিরতে চাইলেন না ।
চূড়ালি এইবার রাজাকে ব্রহ্মবিদ্যা সম্বন্ধে উপদেশ দিতে লাগলেন । ক্রমে রাজার ব্রহ্মজ্ঞান জন্মে । এই ব্রহ্মজ্ঞান লাভ করে রাজা বুঝতে পারলেন - রাজধর্ম্মপালন ব্রহ্মজ্ঞানের বিরোধী নয় , ব্রহ্মজ্ঞানীর পক্ষে সংসারে আর সন্ন্যাসে কোন প্রভেদ নাই , বনে ও ভবনে কোন পার্থক্য নাই , স্বর্ণ ও শিখাখণ্ডে কোন তফাৎ নেই ।
তখন চূড়ালা আত্মপ্রকাশ করে রাজাকে আবার রাজসংসারে ফিরে আনলেন । শিখিধ্বজও রাজর্ষি জনকের মত রাজধর্ম্ম পালন করতে লাগলেন ।
( যোগবাশিষ্ঠ রামায়ণ ও বিষ্ণুপুরাণ )
Courtesy by: Joy Shree Radha Madhav
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন