ভগবান শ্রীকৃষ্ণ শুধুমাত্র একজন ভাল বংশীবাদক নয়, একজন সফল কূটনীতিবিদ, যোদ্ধা এবং একজন সাহসী বীরপুরুষ হিসেবে চিন্তুা করতে, জানতে ও বলতে শিখুন।
আমরা জানি যে শুধু মাত্র ভাগবত পুরাণে কৃষ্ণকে প্রায়শই বংশী-বাদনরত এক কিশোরের রূপে বর্ণনা করা হয়েছে কিন্তু ভগবদ্গীতায় তিনি এক পথপ্রদর্শক এবং সহায়ক তরুণ রাজপুত্র। এছাড়া সমগ্র মহাভারত কাব্যে তিনি একজন কূটনীতিজ্ঞ হিসাবে পাণ্ডবপক্ষে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে অর্জুনের রথের সারথিরূপে অবতীর্ণ হয়েছেন। হিন্দু দর্শন ও ধর্মতাত্ত্বিক ঐতিহ্যে কৃষ্ণ-সংক্রান্ত উপাখ্যানগুলি বহুধা পরিব্যাপ্ত যেখানে তাঁকে কল্পনা করা হয়ে থাকে বিভিন্ন রূপে: কখনো শিশুদেবতা, কখনো রঙ্গকৌতুকপ্রিয়, কখনো আদর্শ প্রেমিক, কখনো দিব্য নায়ক, আবার কখনো বা সর্বোচ্চ ঈশ্বর যার কয়েকটি গুনের বাস্তবিক উদাহরণ বিশ্লেষণ সহ নিম্নে আলোচনা করা হয়েছে।
শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন সু-পরামর্শ ও উপদেশ প্রদানকারী, শান্তি স্থাপনকারী একজন আদর্শ পুরুষ। তিনি পাণ্ডব এবং কৌরবদের মধ্যে শান্তি স্থাপন করতে যথাসম্ভব উদ্যোগী হয়েছিলেন। যুদ্ধক্ষেত্রে অবতীর্ণ হয়ে তৃতীয় পাণ্ডব অর্জুন যখন উপলব্ধি করলেন যে যাঁরা তাঁর প্রতিপক্ষ তাঁরা তাঁর আত্মীয়বর্গ এবং অত্যন্ত প্রিয়জন তখন তিনি যুদ্ধের বিষয়ে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়লেন। তিনি সমস্ত আশা ত্যাগ করে তাঁর ধনুক গাণ্ডীব নামিয়ে রাখলেন। তখন অর্জুনের মোহ দূর করার জন্য কৃষ্ণ অর্জুনকে সেই ধর্মযুদ্ধের প্রয়োজনীয়তা সম্বন্ধে উপদেশ দেন যা ভগবদ্গীতা নামে খ্যাত।
#শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন একজন প্রখর কূটবুদ্ধিসম্পন্ন পুরুষ এবং মহাভারতের যুদ্ধ ও তার পরিণতিতে তাঁর অস্বাভাবিক প্রগাঢ় প্রভাব ছিল। ধৃষ্টদ্যুম্ন দ্রোণের শিরশ্ছেদ করতে তিনি ভীমকে নির্দেশ দিয়েছিলেন অশ্বত্থামা নামক একটি হাতিকে বধ করতে এবং তাৎপর্যপূর্ণভাবে দ্রোণাচার্যের পুত্রের নামও অশ্বত্থামা। এরপর কৃষ্ণের নির্দেশে যুধিষ্ঠির দ্রোণাচার্যকে গিয়ে চতুরতার সাথে বলেন যে অশ্বত্থামা নিহত হয়েছেন এবং তারপর খুব মৃদুস্বরে বলেন যে সেটি একটি হাতি। কিন্তু যেহেতু যুধিষ্ঠির কখনও মিথ্যাচার করতেন না তাই দ্রোণাচার্য তাঁর প্রথম কথাটি শুনেই মানসিক ভাবে অত্যন্ত আহত হন ও অস্ত্র পরিত্যাগ করেন। এরপর কৃষ্ণের নির্দেশে ধৃষ্টদ্যুম্ন দ্রোণের শিরশ্ছেদ করেন।
#শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন একজন তেজী যোদ্ধা ও সাহসী বীরপুরুষ। কুরুক্ষেত্রে যুদ্ধকালে পিতৃ-পিতামহের বিরুদ্ধে সঠিক মনোবল নিয়ে যুদ্ধ না করার জন্য তিনি অর্জুনের উপর ক্রুদ্ধ হন। একবার তাঁকে আঘাত করার অপরাধে কৃষ্ণ একটি রথের চাকাকে চক্রে পরিণত করে ভীষ্মকে আক্রমণ করতে উদ্যত হন। তখন ভীষ্ম সমস্ত অস্ত্র পরিত্যাগ করে কৃষ্ণকে বলেন তাঁকে হত্যা করতে। কিন্তু এরপর অর্জুন কৃষ্ণের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন এবং পূর্ণ উদ্যম নিয়ে যুদ্ধ করার প্রতিজ্ঞা করেন।
আর এই সবকিছুর পরিপ্রেক্ষিত তাইতো তিনি গীতার চতুর্থ অধ্যায়ের (জ্ঞানযোগ) ৭ ও ৮ নং শ্লোকে উদাত্ত স্বরে বলেছিলেন-
যদা যদা হি ধর্মস্য গ্লানির্ভবতি ভারত ।
অভ্যুত্থানমধর্মস্য তদাত্মানং সৃজাম্যহম্ ।।৭।।
পরিত্রাণায় সাধূনাং বিনাশায় চ দুষ্কৃতাম্।
ধর্মসংস্থাপনার্থায় সম্ভবামি যুগে যুগে।।৮।।
হে ভারত ! যখনই ধর্মের অধঃপতন হয় এবং অধর্মের অভ্যূত্থান হয়, তখন আমি নিজেকে প্রকাশ করে অবতীর্ণ হই। সাধুদের পরিত্রাণ করার জন্য এবং দুষ্কৃতকারীদের বিনাশ করার জন্য এবং ধর্ম সংস্থাপনের জন্য আমি যুগে যুগে অবতীর্ণ হই।
বাপ্পী চন্দ্র কুরী।
৩০.০৮.২০১৭
আমরা জানি যে শুধু মাত্র ভাগবত পুরাণে কৃষ্ণকে প্রায়শই বংশী-বাদনরত এক কিশোরের রূপে বর্ণনা করা হয়েছে কিন্তু ভগবদ্গীতায় তিনি এক পথপ্রদর্শক এবং সহায়ক তরুণ রাজপুত্র। এছাড়া সমগ্র মহাভারত কাব্যে তিনি একজন কূটনীতিজ্ঞ হিসাবে পাণ্ডবপক্ষে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে অর্জুনের রথের সারথিরূপে অবতীর্ণ হয়েছেন। হিন্দু দর্শন ও ধর্মতাত্ত্বিক ঐতিহ্যে কৃষ্ণ-সংক্রান্ত উপাখ্যানগুলি বহুধা পরিব্যাপ্ত যেখানে তাঁকে কল্পনা করা হয়ে থাকে বিভিন্ন রূপে: কখনো শিশুদেবতা, কখনো রঙ্গকৌতুকপ্রিয়, কখনো আদর্শ প্রেমিক, কখনো দিব্য নায়ক, আবার কখনো বা সর্বোচ্চ ঈশ্বর যার কয়েকটি গুনের বাস্তবিক উদাহরণ বিশ্লেষণ সহ নিম্নে আলোচনা করা হয়েছে।
শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন সু-পরামর্শ ও উপদেশ প্রদানকারী, শান্তি স্থাপনকারী একজন আদর্শ পুরুষ। তিনি পাণ্ডব এবং কৌরবদের মধ্যে শান্তি স্থাপন করতে যথাসম্ভব উদ্যোগী হয়েছিলেন। যুদ্ধক্ষেত্রে অবতীর্ণ হয়ে তৃতীয় পাণ্ডব অর্জুন যখন উপলব্ধি করলেন যে যাঁরা তাঁর প্রতিপক্ষ তাঁরা তাঁর আত্মীয়বর্গ এবং অত্যন্ত প্রিয়জন তখন তিনি যুদ্ধের বিষয়ে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়লেন। তিনি সমস্ত আশা ত্যাগ করে তাঁর ধনুক গাণ্ডীব নামিয়ে রাখলেন। তখন অর্জুনের মোহ দূর করার জন্য কৃষ্ণ অর্জুনকে সেই ধর্মযুদ্ধের প্রয়োজনীয়তা সম্বন্ধে উপদেশ দেন যা ভগবদ্গীতা নামে খ্যাত।
#শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন একজন প্রখর কূটবুদ্ধিসম্পন্ন পুরুষ এবং মহাভারতের যুদ্ধ ও তার পরিণতিতে তাঁর অস্বাভাবিক প্রগাঢ় প্রভাব ছিল। ধৃষ্টদ্যুম্ন দ্রোণের শিরশ্ছেদ করতে তিনি ভীমকে নির্দেশ দিয়েছিলেন অশ্বত্থামা নামক একটি হাতিকে বধ করতে এবং তাৎপর্যপূর্ণভাবে দ্রোণাচার্যের পুত্রের নামও অশ্বত্থামা। এরপর কৃষ্ণের নির্দেশে যুধিষ্ঠির দ্রোণাচার্যকে গিয়ে চতুরতার সাথে বলেন যে অশ্বত্থামা নিহত হয়েছেন এবং তারপর খুব মৃদুস্বরে বলেন যে সেটি একটি হাতি। কিন্তু যেহেতু যুধিষ্ঠির কখনও মিথ্যাচার করতেন না তাই দ্রোণাচার্য তাঁর প্রথম কথাটি শুনেই মানসিক ভাবে অত্যন্ত আহত হন ও অস্ত্র পরিত্যাগ করেন। এরপর কৃষ্ণের নির্দেশে ধৃষ্টদ্যুম্ন দ্রোণের শিরশ্ছেদ করেন।
#শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন একজন তেজী যোদ্ধা ও সাহসী বীরপুরুষ। কুরুক্ষেত্রে যুদ্ধকালে পিতৃ-পিতামহের বিরুদ্ধে সঠিক মনোবল নিয়ে যুদ্ধ না করার জন্য তিনি অর্জুনের উপর ক্রুদ্ধ হন। একবার তাঁকে আঘাত করার অপরাধে কৃষ্ণ একটি রথের চাকাকে চক্রে পরিণত করে ভীষ্মকে আক্রমণ করতে উদ্যত হন। তখন ভীষ্ম সমস্ত অস্ত্র পরিত্যাগ করে কৃষ্ণকে বলেন তাঁকে হত্যা করতে। কিন্তু এরপর অর্জুন কৃষ্ণের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন এবং পূর্ণ উদ্যম নিয়ে যুদ্ধ করার প্রতিজ্ঞা করেন।
আর এই সবকিছুর পরিপ্রেক্ষিত তাইতো তিনি গীতার চতুর্থ অধ্যায়ের (জ্ঞানযোগ) ৭ ও ৮ নং শ্লোকে উদাত্ত স্বরে বলেছিলেন-
যদা যদা হি ধর্মস্য গ্লানির্ভবতি ভারত ।
অভ্যুত্থানমধর্মস্য তদাত্মানং সৃজাম্যহম্ ।।৭।।
পরিত্রাণায় সাধূনাং বিনাশায় চ দুষ্কৃতাম্।
ধর্মসংস্থাপনার্থায় সম্ভবামি যুগে যুগে।।৮।।
হে ভারত ! যখনই ধর্মের অধঃপতন হয় এবং অধর্মের অভ্যূত্থান হয়, তখন আমি নিজেকে প্রকাশ করে অবতীর্ণ হই। সাধুদের পরিত্রাণ করার জন্য এবং দুষ্কৃতকারীদের বিনাশ করার জন্য এবং ধর্ম সংস্থাপনের জন্য আমি যুগে যুগে অবতীর্ণ হই।
বাপ্পী চন্দ্র কুরী।
৩০.০৮.২০১৭
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন