লক্ষ্মীদেবীর বাহনটি পেঁচা। লক্ষ্মী এমন সুন্দরী, আর বাহনটি এমন কদাকার। পেঁচা দিবান্ধ। ধনশালী হইলেই লোক প্রায়শঃ অন্ধ হইয়া যায়। ধনী হইবার পূর্বে ভাবে- ধন হইলে সকলের উপকার করিব। আত্মীয় স্বজনদের আর দুঃখকষ্টে থাকিতে দিব না। কিন্তু ধন পাওয়া মাত্র সে পেঁচক হইইয়া যায়।
লক্ষ্মীমান হইয়াও চক্ষুষ্মান এমন মানুষ কি নাই? আছে। লক্ষ্মীর বাহন পেঁচক তাঁহাদের প্রতি ভালকথা বলে- “ভাই অন্ধ হও। মিথ্যার পথে ধন আসিবে, চুরির পথে ধন আসিবে, ঘুষের পথে ধন আসিবে, এই সব বিষয়ে অন্ধ হইয়া যাও। যাহারা এই সব কুৎসিত পথে ধনশালী হইয়াছে তাহাদের দিকে তাকাইও না।”
পেঁচক বলে, “আমি যমের দূত । কুপথে যদি ধন অন্বেষণ কর, তবে যমের দণ্ড মাথায় পড়িবে। আমার প্রভু যমের চিন্তা কর। মৃত্যুর কথা ভাব। কিছুই সঙ্গে যাইবে না। সুতরাং হীন পথে ধন আনিও না, পবিত্র পথে ধন আয় কর। পবিত্র কার্য্যে ব্যয় কর।” যাহার মুক্তি পথের সাধক, পেঁচক তাহাদিগকে গীতার বাণী স্মরণ করাইয়া দেয়। শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে বলিয়াছেন-
যা নিশা সর্বভূতানাং তস্যাং জাগর্ত্তি সংযমী ।
যস্যাং জাগ্রতি ভূতানি সা নিশা পশ্যতো মুনেঃ ।।
যোগী আর ভোগী জীবের কথা বলিতেছেন । ভোগীর পক্ষে যা রাত্রি, যোগীর পক্ষে তা দিন। ভোগীর যা দিন, যোগীর তা রাত্রি। ভোগী আধ্যাত্মিক বহুবিষয়ে ঘুমন্ত, বিষয়সম্ভোগে সজাগ। কিন্তু সংযতেন্দ্রিয় যোগী আত্মিক বিষয়ে সজাগ, বিষয়ে ভোগে উদাসীন অচেতন তুল্য।
পেঁচক মুক্তিকামী সাধককে বলে, “সকলে যখন ঘুমায় তুমি আমার মত জাগিয়া থাক। আর সকলে যখন জাগ্রত তখন তুমি আমার মত ঘুমাইতে শিখ, তবেই সাধনে সিদ্ধি। কৈবল্যধন লাভ।”
পরমার্থধনাভিলাষী সাধক পেঁচার মত রাত্রি জাগিয়া সাধন করে। লোকচক্ষুর অন্তরালে নির্জনে থাকে। লক্ষ্মীমার বাহনরূপে আসন লইয়া পেঁচকের যে ভাষণ তাহা বিভিন্ন স্তরের বিভিন্ন প্রকার সাধকের উপাদেয় সম্পদ ।
( মা দুর্গার কাঠামো... ডঃ মহানামব্রত ব্রহ্মচারী )
Sumon Basak
লক্ষ্মীমান হইয়াও চক্ষুষ্মান এমন মানুষ কি নাই? আছে। লক্ষ্মীর বাহন পেঁচক তাঁহাদের প্রতি ভালকথা বলে- “ভাই অন্ধ হও। মিথ্যার পথে ধন আসিবে, চুরির পথে ধন আসিবে, ঘুষের পথে ধন আসিবে, এই সব বিষয়ে অন্ধ হইয়া যাও। যাহারা এই সব কুৎসিত পথে ধনশালী হইয়াছে তাহাদের দিকে তাকাইও না।”
পেঁচক বলে, “আমি যমের দূত । কুপথে যদি ধন অন্বেষণ কর, তবে যমের দণ্ড মাথায় পড়িবে। আমার প্রভু যমের চিন্তা কর। মৃত্যুর কথা ভাব। কিছুই সঙ্গে যাইবে না। সুতরাং হীন পথে ধন আনিও না, পবিত্র পথে ধন আয় কর। পবিত্র কার্য্যে ব্যয় কর।” যাহার মুক্তি পথের সাধক, পেঁচক তাহাদিগকে গীতার বাণী স্মরণ করাইয়া দেয়। শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে বলিয়াছেন-
যা নিশা সর্বভূতানাং তস্যাং জাগর্ত্তি সংযমী ।
যস্যাং জাগ্রতি ভূতানি সা নিশা পশ্যতো মুনেঃ ।।
যোগী আর ভোগী জীবের কথা বলিতেছেন । ভোগীর পক্ষে যা রাত্রি, যোগীর পক্ষে তা দিন। ভোগীর যা দিন, যোগীর তা রাত্রি। ভোগী আধ্যাত্মিক বহুবিষয়ে ঘুমন্ত, বিষয়সম্ভোগে সজাগ। কিন্তু সংযতেন্দ্রিয় যোগী আত্মিক বিষয়ে সজাগ, বিষয়ে ভোগে উদাসীন অচেতন তুল্য।
পেঁচক মুক্তিকামী সাধককে বলে, “সকলে যখন ঘুমায় তুমি আমার মত জাগিয়া থাক। আর সকলে যখন জাগ্রত তখন তুমি আমার মত ঘুমাইতে শিখ, তবেই সাধনে সিদ্ধি। কৈবল্যধন লাভ।”
পরমার্থধনাভিলাষী সাধক পেঁচার মত রাত্রি জাগিয়া সাধন করে। লোকচক্ষুর অন্তরালে নির্জনে থাকে। লক্ষ্মীমার বাহনরূপে আসন লইয়া পেঁচকের যে ভাষণ তাহা বিভিন্ন স্তরের বিভিন্ন প্রকার সাধকের উপাদেয় সম্পদ ।
( মা দুর্গার কাঠামো... ডঃ মহানামব্রত ব্রহ্মচারী )
Sumon Basak
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন