কাশীপুরের বাগানে অবস্থানকালে পাশ্চাত্য- বিজ্ঞান, জ্যোতির্বিজ্ঞান , পাশ্চাত্য ন্যায় ও দর্শন প্রভৃতি পড়িবার বাসনা আমার অন্তরে বলবতী হইল। নাট্যাচার্য্য গিরিশচন্দ্র ঘোষ ‘সায়েন্স- এ্যাসেসিয়শন’ – এ ডাক্তার মহেন্দ্রলাল সরকারের বক্তৃতা শুনিতে যান জানিতে পারিয়া আমিও কাশীপুর হইতে পদব্রজে বৌবাজারে তথায় কয়েকবার গিয়েছিলাম। ক্রমে বিজ্ঞান, দর্শন প্রভৃতি পড়িবার ইচ্ছা আমার পূর্ণ হইয়াছিল। আমি পাশ্চাত্য দর্শন ও বিজ্ঞানাদি শাস্ত্রে ব্যুৎপন্ন লাভ করিবার জন্য অত্যন্ত আগ্রহের সহিত পাঠে মনোনিবেশ করিলাম। ক্রমে গ্যানোর পদার্থবিজ্ঞান , হার্সেলের জ্যোতির্বিজ্ঞান , জন স্টুয়ার্ট মিলের তর্কশাস্ত্র ও ধর্মের বক্তৃতাবলী , লুইসের দর্শনের ইতিহাস , হ্যামিল্টনের দর্শন প্রভৃতি গ্রন্থ আয়ত্ত করিলাম। একদিন সেই তর্কশাস্ত্র পড়িবার সময়ে পরমহংসদেব আমায় জিজ্ঞাসা করিলেনঃ ‘কিরে, কি বই পড়ছিস?’
আমি উত্তর দিলামঃ ‘ইংরাজী ন্যায়শাস্ত্র।’
পরমহংসদেব বলিলেনঃ ‘ওতে কি শেখায়?’
আমি বলিলামঃ ‘এতে ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমণাসম্বন্ধে তর্ক, যুক্তি ও বিচার শেখায়।’
পরমহংসদেব বলিলেনঃ ‘তুই তো দেখছি এখানে ছেলেদের মধ্যে বই পড়া ঢোকালি। তবে জানিস, বই – পড়া- বিদ্যা কিছু নয়। আপনাকে মারতে গেলে একটা নরুণ দিয়ে মারা যায়, কিন্তু অপরকে মারতে গেলে ঢাল তরোয়াল প্রভৃতি অস্ত্রশস্ত্রের দরকার হয়। বই পড়া তারই জন্য। যারা লোকশিক্ষা দেবে তাদের পড়ার দরকার আছে।’
এই বলিয়া তিনি নীরব থাকিলেন, কিন্তু আমাকে বই পড়তে নিষেধ করিলেন না। এখন বুঝিতে পারিতেছি যে, তিনি আমাকে সর্বশাস্ত্রবিশারদ করিয়া ভ্যবিষতে প্রচারকার্যে নিযুক্ত করিবেন – সেইজন্য আমাকে বই পড়িতে নিষেধ করেন নাই। তীক্ষ্ণবুদ্ধির প্রভাবে আমি সকলেরই প্রশংসা অর্জন করিয়াছিলাম । নরেন্দ্রনাথের সঙ্গে মাঝে মাঝে তুমুল তর্ক করিতাম । আমার বুদ্ধির প্রশংসা করিয়া একদিন পরমহংসদেব আমায় ডাকিয়া বলিলেনঃ ‘ ছেলেদের মধ্যে তুইও বুদ্ধিমান। নরেনের নীচেই তোর বুদ্ধি। নরেন যেমন একটা মত চালাতে পারে, তুইও সে রকম পারবি।’
( আমার জীবনকথা ১ম খণ্ড ... স্বামী অভেদানন্দ... শ্রীরামকৃষ্ণ বেদান্ত মঠ )
আমি উত্তর দিলামঃ ‘ইংরাজী ন্যায়শাস্ত্র।’
পরমহংসদেব বলিলেনঃ ‘ওতে কি শেখায়?’
আমি বলিলামঃ ‘এতে ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমণাসম্বন্ধে তর্ক, যুক্তি ও বিচার শেখায়।’
পরমহংসদেব বলিলেনঃ ‘তুই তো দেখছি এখানে ছেলেদের মধ্যে বই পড়া ঢোকালি। তবে জানিস, বই – পড়া- বিদ্যা কিছু নয়। আপনাকে মারতে গেলে একটা নরুণ দিয়ে মারা যায়, কিন্তু অপরকে মারতে গেলে ঢাল তরোয়াল প্রভৃতি অস্ত্রশস্ত্রের দরকার হয়। বই পড়া তারই জন্য। যারা লোকশিক্ষা দেবে তাদের পড়ার দরকার আছে।’
এই বলিয়া তিনি নীরব থাকিলেন, কিন্তু আমাকে বই পড়তে নিষেধ করিলেন না। এখন বুঝিতে পারিতেছি যে, তিনি আমাকে সর্বশাস্ত্রবিশারদ করিয়া ভ্যবিষতে প্রচারকার্যে নিযুক্ত করিবেন – সেইজন্য আমাকে বই পড়িতে নিষেধ করেন নাই। তীক্ষ্ণবুদ্ধির প্রভাবে আমি সকলেরই প্রশংসা অর্জন করিয়াছিলাম । নরেন্দ্রনাথের সঙ্গে মাঝে মাঝে তুমুল তর্ক করিতাম । আমার বুদ্ধির প্রশংসা করিয়া একদিন পরমহংসদেব আমায় ডাকিয়া বলিলেনঃ ‘ ছেলেদের মধ্যে তুইও বুদ্ধিমান। নরেনের নীচেই তোর বুদ্ধি। নরেন যেমন একটা মত চালাতে পারে, তুইও সে রকম পারবি।’
( আমার জীবনকথা ১ম খণ্ড ... স্বামী অভেদানন্দ... শ্রীরামকৃষ্ণ বেদান্ত মঠ )
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন