কিছু কিছু জনের মতে তারাপীঠকে শক্তিপীঠ ধরা হয় । দশমহাবিদ্যার দ্বিতীয়জন হলেন দেবী তারা । ভগবতী সতী মায়ের তিনটি নয়নের মণি বিন্দু বত্রিশ যোজন অন্তর ত্রিকোনাকারে তিনটি স্থানে পতিত হয়েছিলো । মিথিলার পূর্ব- দক্ষিণ কোণে ভাগীরথীর উত্তরদিকে ত্রিমুখী নদীর পূর্বে সতী দেবীর বাম নয়নের মণি পতিত হয়েছিলো । সেজন্য এই স্থানের নাম “নীল সরস্বতী তারাপীঠ” । বগুড়া জেলায় করতোয়া নদীর পশ্চিমে সতীর দক্ষিণ নয়নের মণি পতিত হয়েছিলো এইস্থান কে বলা হয় “মহাদেবী ভবানী তারাপীঠ” । বক্রেশ্বরের ঈশান কোনে উত্তর বাহিনী দ্বারকা নদীর পূর্ব তীরে মহা শ্মশানে শ্বেত শিমূল বৃক্ষ তলে দেবী সতীর ঊর্ধ্ব নয়ন তারা পতিত হয় । এই স্থানকে “শিলাময়ী দেবী চণ্ডী ভগবতী উগ্র তারা” বলা হয় । ব্রহ্মার মানসপুত্র মহর্ষি বশিষ্ঠ বহু যুগ ধরে নীলাচলে তারাদেবীর সাধনা করে সিদ্ধিলাভে ব্যর্থ হয়েছিলেন । এরপর পিতা ব্রহ্মার আদেশে বশিষ্ঠ মুনি কামাখ্যা শক্তিপীঠে গিয়ে তারা উপাসনায় ব্রতী হয়ে সেখানেও নিস্ফল হলেন। তখন ক্রোধে বশিষ্ঠ মুনি তারাবীজকে অভিশাপ দিতে উদ্যত হলে দেবী দৈববাণী করে জানালেন- “তুমি আমার সাধনার আচার পদ্ধতি জানো না, তাই ব্যর্থ হয়েছো। তুমি মহাচীনে বিষ্ণু অবতার বুদ্ধের নিকট যাও। তিনি তোমাকে আমার সাধনার পথ বলে দেবেন।”
বশিষ্ঠ মুনি এরপর ভগবান বুদ্ধের কাছে সাধনার আচার পদ্ধতি শিখলেন । ভগবান বুদ্ধ তাঁকে বক্রেশ্বরের ঈশাণ কোনে বৈদ্যনাথ ধামের পূর্ব দিকে দ্বারকা নদীর পূর্ব তীরে শ্বেত শিমূল বৃক্ষ তলে সাধনার আদেশ দিলেন । এই সাথে বলে দিলে সেখানেই তোমার আরাধিতা দেবী শিলাময়ী রূপে আছেন। ভগবান বুদ্ধের নির্দেশ মেনে মহামুনি বশিষ্ঠ সেই স্থানে এসে তারা সাধনা শুরু করলেন । কোজাগোরী লক্ষ্মী পূজার পূর্ব দিন অর্থাৎ শুক্লা চতুর্দশী তে মুনি তাঁর আরাধ্য তারা দেবীর দর্শন পেলেন । বশিষ্ঠ মুনির সাধনার সেই পঞ্চমুণ্ডি আসনে পরবর্তী কালে নাটোরের রাজা রামকৃষ্ণ, আনন্দনাথ , পণ্ডিত মোক্ষদানন্দ , সাধক বামাক্ষ্যাপা এই আসনে বসে সিদ্ধ হয়েছিলেন ।
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন