“মানুষ যে রূপে রথের ব্যবহার করে,
আত্মা সেই রূপে শরীর নামক এই দেহ ব্যবহার করে” আপনি যতক্ষণ রথে বিরাজমান থাকবেন ততক্ষণ আপনার সেই রথ সচল থাকবে কিন্তু আপনি রথ ত্যাগের পর সেই রথ স্থির হয়ে যাবে। তেমনি মানুষের দেহে যতক্ষণ আত্মা বিরাজমান ততক্ষণ সেই দেহ সচল থাকবে। আর আত্মা দেহ ত্যাগ করলে এই দেহরথ নিথর হয়ে পড়বে। তাইতো সরস্বতী গোস্বামী মহারাজ বলেছিলেন আমাদের এই দেহ রথ আর জগন্নাথ দেবের রথ এক এক এক......।।
ধারাবাহিক পর্বঃ- ৬৬
“ আমার জীবনে লোভিয়া জীবন
জাগরে সকল দেশ ” ।
আমি জগতে এসেছিলাম, আমি একটা জীবন তোমাদের সামনে আদর্শ হিসাবে রেখে গেলাম।
সেই জীবন অনুসরণ করে তোমরাও জেগে ওঠো ।
হ্যাঁ, ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সেই আদর্শকে জানতে হলে শ্রীকৃষ্ণ মানেই একজন বংশী বাদক/প্রেমিক/রাখালবালক ও যুগলমূর্তি শুধু এই ধারণা মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে আমাদের জানা উচিত শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন বিরাট যোদ্ধা, রাজনীতিবিদ, কূটনৈতিক, ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা এবং পরোপকারী।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ১২৫ বছর জগতে প্রকট ছিলেন। বৃন্দাবনে কাটিয়েছিলেন বড়জোর ১২ বছর। বাকি ১১৩ বছর ভারত বর্ষের বিরাট প্রেক্ষাপটে যিনি মানুষের কাছে আদর্শ মানুষরূপে গৃহীত এবং পরবর্তীকালে পূজিত হয়েছেন; সেই ১১৩ বছরের আলোচনা আমাদের মধ্যে হয় না বললেই চলে। যার জন্যে আমাদের বেশিরভাগের কাছে শ্রীকৃষ্ণ মানেই একজন বংশী বাদক/প্রেমিক/রাখালবালক ও যুগলমূর্তির প্রকাশ এবং আমরা সেটাই ভাবতে অভ্যস্ত।
তাই আমরা ভগবান কৃষ্ণচন্দ্রের শুধু ব্রজ লীলা নয় তার যে একটা বিরাট রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট রয়েছে; যে রাজনীতিবিদ হিসেবে ভারতবর্ষের মানুষের কাছে পূজিত, যে কূটনীতিবিদ হিসেবে পূজিত এবং বিরাট যোদ্ধা হিসেবে ভারতবর্ষের মানুষের কাছে আদ্রিত, সেই কৃষ্ণকে আমরা কিন্তু অনেকেই জানি না। আমরা এমনি মুখে মুখে বলি তাঁর পাঞ্চজন্য শঙ্খ ছিল, কৌমদখি গদা ছিল, খর্গ ছিল, এই জায়গাটাই এসেই আমাদের জানার সীমাবদ্ধতা। কিন্তু শ্রীকৃষ্ণ কত যুদ্ধ যে করেছিলেন, তাঁর সময় কত রাজন্যবর্গ তার বিরুদ্ধে আচরণ করেছিলেন এই বিষয়টি আমাদের অনেকেই জানা নাই কারণ এসব বিষয় বৈষ্ণব জগতে খুব কম আলোচনা হয়।
★ পরোপকারীর ভূমিকায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণঃ- শ্রীকৃষ্ণ এমনি একজন পরম পুরুষ ছিলেন যার বাল্যকাল থেকে দুষ্টের দমন শিষ্টের পালন এবং পরোপকারে নিজেকে সর্বদাই সম্পৃক্ত রেখেছিলেন। তাঁর জন্মের পরই কংসের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য তাঁর পিতা বসুদেব তাঁকে গোকুলে নন্দ-যশোদার ঘরে রেখে আসেন। কিন্তু কংস এ কথা জানতে পেরে গোকুলের সব শিশুকে হত্যার নির্দেশ দেয়। কংসের নির্দেশে পূতনা রাক্ষসী বিষাক্ত স্তন্য পান করিয়ে একের পর এক শিশুদের হত্যা করতে থাকে। একদিন শিশু কৃষ্ণকে (গোপাল) হত্যা করতে গেলে তাঁর হাতে সে নিজেই নিহত হয়। এভাবে তিনি বাল্য বয়সে গোকুলের শিশুদের রক্ষা করেন। তিনি বৎসাসুর, অঘাসুর, বকাসুর প্রভৃতি অপশক্তিকে বিনাশ করেন। এছাড়াও তিনি কালীয়দহে কালীয় নাগ দমন, বৃন্দাবনকে রক্ষার জন্য দাবাগ্নি পান, ইন্দ্রের কোপ হতে গোপগণকে রক্ষার জন্য গোবর্ধনগিরি ধারণ ইত্যাদির মাধ্যমে বাল্যকাল থেকে দুষ্টের দমন শিষ্টের পালন এবং পরোপকারে নিজেকে সর্বদাই সম্পৃক্ত রেখেছিলেন।
★ কিশোর বয়সে শ্রীকৃষ্ণঃ- অত্যাচারী কংস ছিল মথুরার রাজা। সে নিজের পিতা উগ্রসেনকে কারাগারে আটক রেখে সিংহাসন অধিকার করে। এমনকি ভবিষ্যদ্বাণীতে জ্ঞাত তার মৃত্যুর কারণ কৃষ্ণের আবির্ভাব ঠেকাতে সে নিজের বোন-ভগ্নীপতি অর্থাৎ কৃষ্ণের মাতা-পিতা দেবকী-বসুদেবকেও কারাগারে আটক রাখে এবং নিজের হাতে বোনের সন্তানদের হত্যা করে। তাই শ্রীকৃষ্ণ মথুরায় এসে এই পাপাচারীকে হত্যা করে মাতামহ এবং পিতা-মাতাকে কারাগার থেকে উদ্ধার করেন এবং মথুরায় শান্তি স্থাপন করেন। এমনিভাবে অপশক্তির হাত থেকে শুভশক্তিকে রক্ষার জন্য কৃষ্ণ পরবর্তীকালে আরও অনেক দুর্বৃত্তকে হত্যা করেন।
★ রাজনীতিবিদ, কূটনৈতিক, ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা ভগবান শ্রীকৃষ্ণঃ- ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সবচেয়ে আলোচিত দিক হল তিনি ছিলন একজন বিরাট যোদ্ধা, রাজনীতিবিদ, কূটনৈতিক, সর্বোপরি ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা যেটি দৃশ্যমান হয় মহাভারতে। এখানে তাকে একজন রাজা (দ্বারকার রাজা), রাজনীতিক, কূটনীতিক, যোদ্ধা এবং দার্শনিক রূপে দেখা যায়। পান্ডবদের পক্ষে দৌত্য-ক্রিয়া ও তাঁদের প্রাপ্য রাজ্য ফিরিয়ে দেওয়ার সুপারিশ করা, কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে পান্ডবদের পরামর্শ দান ও বিজয়ী করা, দুর্যোধনাদি দুর্জনদের বিনাশ ও যুধিষ্ঠিরকে রাজ্যে প্রতিষ্ঠিত করা, সর্বোপরি অধর্মের বিনাশ করে ধর্মকে প্রতিস্থাপন করা ইত্যাদি কাজ তিনি এখানে সমাপ্ত করেন। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে তিনি নিজে যদিও অস্ত্র চালনা করেননি বটে, কিন্তু যুদ্ধ পরিচালনা করেছেন মূলত তিনিই স্বয়ং। দুর্বৃত্ত জরাসন্ধ বধ ও শিশুপাল বধও এ পর্বেরই ঘটনা। মহাভারতের ভীষ্মপর্বে কৃষ্ণ অর্জুনকে ক্ষাত্রধর্ম এবং আত্মা সম্পর্কে যে উপদেশ দিয়েছেন তা ভগবদ্গীতা বা সংক্ষেপে গীতা নামে খ্যাত। এভাবে কৃষ্ণ অধর্মের বিনাশ ও দুষ্টের দমন করে ধর্ম স্থাপন ও শিষ্টের পালন করেছেন।
“ আমার জীবনে লোভিয়া জীবন
জাগরে সকল দেশ ” ।
আমি জগতে এসেছিলাম, আমি একটা জীবন তোমাদের সামনে আদর্শ হিসাবে রেখে গেলাম।
সেই জীবন অনুসরণ করে তোমরাও জেগে ওঠো ।
হ্যাঁ, ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সেই আদর্শকে জানতে হলে শ্রীকৃষ্ণ মানেই একজন বংশী বাদক/প্রেমিক/রাখালবালক ও যুগলমূর্তি শুধু এই ধারণা মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে আমাদের জানা উচিত শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন বিরাট যোদ্ধা, রাজনীতিবিদ, কূটনৈতিক, ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা এবং পরোপকারী।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ১২৫ বছর জগতে প্রকট ছিলেন। বৃন্দাবনে কাটিয়েছিলেন বড়জোর ১২ বছর। বাকি ১১৩ বছর ভারত বর্ষের বিরাট প্রেক্ষাপটে যিনি মানুষের কাছে আদর্শ মানুষরূপে গৃহীত এবং পরবর্তীকালে পূজিত হয়েছেন; সেই ১১৩ বছরের আলোচনা আমাদের মধ্যে হয় না বললেই চলে। যার জন্যে আমাদের বেশিরভাগের কাছে শ্রীকৃষ্ণ মানেই একজন বংশী বাদক/প্রেমিক/রাখালবালক ও যুগলমূর্তির প্রকাশ এবং আমরা সেটাই ভাবতে অভ্যস্ত।
তাই আমরা ভগবান কৃষ্ণচন্দ্রের শুধু ব্রজ লীলা নয় তার যে একটা বিরাট রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট রয়েছে; যে রাজনীতিবিদ হিসেবে ভারতবর্ষের মানুষের কাছে পূজিত, যে কূটনীতিবিদ হিসেবে পূজিত এবং বিরাট যোদ্ধা হিসেবে ভারতবর্ষের মানুষের কাছে আদ্রিত, সেই কৃষ্ণকে আমরা কিন্তু অনেকেই জানি না। আমরা এমনি মুখে মুখে বলি তাঁর পাঞ্চজন্য শঙ্খ ছিল, কৌমদখি গদা ছিল, খর্গ ছিল, এই জায়গাটাই এসেই আমাদের জানার সীমাবদ্ধতা। কিন্তু শ্রীকৃষ্ণ কত যুদ্ধ যে করেছিলেন, তাঁর সময় কত রাজন্যবর্গ তার বিরুদ্ধে আচরণ করেছিলেন এই বিষয়টি আমাদের অনেকেই জানা নাই কারণ এসব বিষয় বৈষ্ণব জগতে খুব কম আলোচনা হয়।
★ পরোপকারীর ভূমিকায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণঃ- শ্রীকৃষ্ণ এমনি একজন পরম পুরুষ ছিলেন যার বাল্যকাল থেকে দুষ্টের দমন শিষ্টের পালন এবং পরোপকারে নিজেকে সর্বদাই সম্পৃক্ত রেখেছিলেন। তাঁর জন্মের পরই কংসের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য তাঁর পিতা বসুদেব তাঁকে গোকুলে নন্দ-যশোদার ঘরে রেখে আসেন। কিন্তু কংস এ কথা জানতে পেরে গোকুলের সব শিশুকে হত্যার নির্দেশ দেয়। কংসের নির্দেশে পূতনা রাক্ষসী বিষাক্ত স্তন্য পান করিয়ে একের পর এক শিশুদের হত্যা করতে থাকে। একদিন শিশু কৃষ্ণকে (গোপাল) হত্যা করতে গেলে তাঁর হাতে সে নিজেই নিহত হয়। এভাবে তিনি বাল্য বয়সে গোকুলের শিশুদের রক্ষা করেন। তিনি বৎসাসুর, অঘাসুর, বকাসুর প্রভৃতি অপশক্তিকে বিনাশ করেন। এছাড়াও তিনি কালীয়দহে কালীয় নাগ দমন, বৃন্দাবনকে রক্ষার জন্য দাবাগ্নি পান, ইন্দ্রের কোপ হতে গোপগণকে রক্ষার জন্য গোবর্ধনগিরি ধারণ ইত্যাদির মাধ্যমে বাল্যকাল থেকে দুষ্টের দমন শিষ্টের পালন এবং পরোপকারে নিজেকে সর্বদাই সম্পৃক্ত রেখেছিলেন।
★ কিশোর বয়সে শ্রীকৃষ্ণঃ- অত্যাচারী কংস ছিল মথুরার রাজা। সে নিজের পিতা উগ্রসেনকে কারাগারে আটক রেখে সিংহাসন অধিকার করে। এমনকি ভবিষ্যদ্বাণীতে জ্ঞাত তার মৃত্যুর কারণ কৃষ্ণের আবির্ভাব ঠেকাতে সে নিজের বোন-ভগ্নীপতি অর্থাৎ কৃষ্ণের মাতা-পিতা দেবকী-বসুদেবকেও কারাগারে আটক রাখে এবং নিজের হাতে বোনের সন্তানদের হত্যা করে। তাই শ্রীকৃষ্ণ মথুরায় এসে এই পাপাচারীকে হত্যা করে মাতামহ এবং পিতা-মাতাকে কারাগার থেকে উদ্ধার করেন এবং মথুরায় শান্তি স্থাপন করেন। এমনিভাবে অপশক্তির হাত থেকে শুভশক্তিকে রক্ষার জন্য কৃষ্ণ পরবর্তীকালে আরও অনেক দুর্বৃত্তকে হত্যা করেন।
★ রাজনীতিবিদ, কূটনৈতিক, ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা ভগবান শ্রীকৃষ্ণঃ- ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সবচেয়ে আলোচিত দিক হল তিনি ছিলন একজন বিরাট যোদ্ধা, রাজনীতিবিদ, কূটনৈতিক, সর্বোপরি ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা যেটি দৃশ্যমান হয় মহাভারতে। এখানে তাকে একজন রাজা (দ্বারকার রাজা), রাজনীতিক, কূটনীতিক, যোদ্ধা এবং দার্শনিক রূপে দেখা যায়। পান্ডবদের পক্ষে দৌত্য-ক্রিয়া ও তাঁদের প্রাপ্য রাজ্য ফিরিয়ে দেওয়ার সুপারিশ করা, কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে পান্ডবদের পরামর্শ দান ও বিজয়ী করা, দুর্যোধনাদি দুর্জনদের বিনাশ ও যুধিষ্ঠিরকে রাজ্যে প্রতিষ্ঠিত করা, সর্বোপরি অধর্মের বিনাশ করে ধর্মকে প্রতিস্থাপন করা ইত্যাদি কাজ তিনি এখানে সমাপ্ত করেন। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে তিনি নিজে যদিও অস্ত্র চালনা করেননি বটে, কিন্তু যুদ্ধ পরিচালনা করেছেন মূলত তিনিই স্বয়ং। দুর্বৃত্ত জরাসন্ধ বধ ও শিশুপাল বধও এ পর্বেরই ঘটনা। মহাভারতের ভীষ্মপর্বে কৃষ্ণ অর্জুনকে ক্ষাত্রধর্ম এবং আত্মা সম্পর্কে যে উপদেশ দিয়েছেন তা ভগবদ্গীতা বা সংক্ষেপে গীতা নামে খ্যাত। এভাবে কৃষ্ণ অধর্মের বিনাশ ও দুষ্টের দমন করে ধর্ম স্থাপন ও শিষ্টের পালন করেছেন।
Courtesy By: Bappy Kuri
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন