ইক্ষাকু বংশীয় রাজা ভগীরথ স্বর্গ থেকে পতিত পাবনী গঙ্গাকে মর্তে এনেছিলেন পূর্বপুরুষ দের মুক্তি প্রদান করবার জন্য। এই মহান ইক্ষাকু বংশে ভগবান রাম আবির্ভূত হয়েছিলেন। ভগীরথ ছিলেন ভগবান রামচন্দ্রের পূর্বপুরুষ । ইক্ষাকু বংশীয় রাজা ছিলেন মহারাজ সগর । তাঁর দুই স্ত্রী ছিল- কেশিনী ও সুমতি। কেশিনীর গর্ভে অসমঞ্জ নামক পুত্র জন্মায়। পৌরানিক গাঁথা অনুসারে সুমতির ৬০ হাজার পুত্র ( এখানে বলা প্রয়োজন কোনো মানবীর পক্ষে ৬০ হাজার সন্তান জন্ম দেওয়া সম্ভব নয়। হয়তো রাজার ৬ টি সন্তান ছিলো, বাকীরা ছিলো সেনা। রাজা হলেন প্রজার পিতা। তিনি সেনাদেরও পিতা। কারন সেনারাও একভাবে রাজার প্রজা। তাই সব মিলিয়ে ৬০ হাজার বলা হয়েছে। একটা রাজ্যে ৬০ হাজার সেনা থাকা অস্বাভাবিক নয়।) সন্তান জন্মায় । একদা রাজা সগর অশ্বমেধ যজ্ঞের আয়োজন করেন। অশ্ব দিগবিদিক পরিক্রমা করলো- ৬০ হাজার রাজপুত্র তাঁর পেছন পেছন গিয়ে নানা রাজ্য জয় করে রাজধানীর থেকে ফিরতে লাগলো। এমন সময় দেবতাদের রাজা ইন্দ্রদেবতা যজ্ঞের অশ্ব চুরি করে কপিল মুনির আশ্রমে রেখে আসেন চুপিসারে। অশ্বের খোঁজে ৬০ হাজার রাজপুত্র খুঁজতে খুঁজতে কপিল মুনির আশ্রমে অশ্ব দেখতে পেয়ে মুনিকে চোর, বদমাশ, ভণ্ড বলে গালাগালি করতে লাগলেন। কপিল মুনি শাপ দিয়ে ৬০ হাজার রাজপুত্রকে ভস্ম করলে ৬০ হাজার রাজপুত্র প্রেতযোনি প্রাপ্ত হয়ে মুক্তির জন্য ছটফট করতে লাগলো। রাজবাড়ীতে খবর গেলো। অসমঞ্জের ছেলে অংশুমান গিয়ে মুনির আশ্রম থেকে অশ্ব নিয়ে এসে কোনো রকমে যজ্ঞ সম্পন্ন করলেন। ৬০ হাজার রাজপুত্রের আত্মার মুক্তির জন্য কুলগুরু বশিষ্ঠ স্বর্গ থেকে গঙ্গা কে মর্তে আনার পরামর্শ দিলেন ।
গঙ্গাকে মর্তে আনার জন্য তপস্যা করতে করতে রাজা সগর, অসমঞ্জ, অংশুমান, দিলীপ রাজা মারা গেলেন, তবুও ব্রহ্মা দর্শন দিলেন না। অন্তিমে রাজা দিলীপের পুত্র ভগীরথ তপস্যা করে ব্রহ্মাকে সন্তুষ্ট করলেন। ব্রহ্মার কাছে গঙ্গাকে মর্তে আনার বর চাইলেন । পরমপিতা ব্রহ্মা জানালেন – “গঙ্গা সরাসরি মর্তে আসলে পৃথিবী রসাতলে প্রবেশ করবে, গঙ্গার প্রচণ্ড বেগ ধরিত্রী দেবী সহ্য করতে পারবেন না।তুমি ভগবান শিবের তপস্যা করো। তিনি আধার রূপে গঙ্গাকে ধারন করে পতন উম্মুখ গঙ্গার বেগ রোধ করতে পারেন।” ভগীরথ ভগবান শিবের তপস্যা করে সন্তুষ্ট করলেন ভগবান শিবকে । স্বয়ং গঙ্গা দেবী যখন স্বর্গ থেকে মর্তে প্রবাহিত হচ্ছিল্ল, হিমালয়ে ভগবান শিব গঙ্গা কে জটায় আবদ্ধ করলেন। ভগবান শিবের এক নাম তাই গঙ্গাধর । তারপর তিনি গঙ্গাকে মুক্ত করলেন। ভগীরথ আগে আগে যেতে লাগলো, গঙ্গা তার পিছে, পথে এক হস্তী গঙ্গা দেবীকে কুপ্রস্তাব দিলে, গঙ্গার ভীষন স্রোতে তার প্রান ওষ্ঠাগত হলে, ক্ষমা চাইলে মা গঙ্গা তাকে জীবন দান করলেন। জহ্নু মুনির আশ্রম গঙ্গা দেবী ভাসিয়ে দিলে মুনি ক্রোধে গঙ্গাকে পান করেন, পুনরায় কর্ণ দ্বারা বের করেন। তাই গঙ্গার এক নাম জাহ্নবী। অন্তিমে কপিল মুনির আশ্রমের কাছে গঙ্গা দেবী এসে ৬০ হাজার রাজপুত্রের অস্থি ভাসিয়ে দিলেন। গঙ্গার পবিত্র স্পর্শে ৬০ হাজার প্রেতাত্মার সদ্গতি হল। সেখানেই তিনি সাগরে বিলীন হলেন। গঙ্গাকে ভগীরথ এনেছিলেন, তাই গঙ্গার নাম ভাগীরথী ।
ভোগোলিক তথ্যে গঙ্গার উৎপত্তি গোমুখী শৃঙ্গ থেকে। আকাশ ( স্বর্গ ) থেকে পতিত মেঘের জল ও তুষার গলিত জল একত্রিত হয়ে গঙ্গা নদীর সৃষ্টি। গঙ্গা যেখানে অলকানন্দার সহিত মিলিত হয়েছেন সে স্থানের নাম দেবপ্রয়োগ । যেখানে যমুনা ও গপ্তা সরস্বতীর সাথে মিলিত হয়েছেন সে স্থানের নাম ‘প্রয়োগ’ বা ‘ত্রিবেনীসঙ্গম’। গঙ্গার সহিত গোমতী, ঘর্ঘরা, শোন, বরুণা, অসি, গণ্ডকী, কুশী, রূপনারায়ন ইত্যাদি বহু নদ নদী মিলিত হয়েছে । ভগীরথ কিন্তু কেবল নিজ পূর্বপুরুষ দের মুক্তির কথাই ভাবেন নি। প্রজা কল্যাণের জন্য তথা পূর্বপুরুষদের মুক্তির জন্য ইক্ষাকু বংশীয় সগর, অসমঞ্জ, অংশুমান, দিলীপ রাজারা ভোগবিলাস ত্যাগ করে তপস্যা করতে করতেই প্রান ত্যাজেছিলেন । এমনই মহান বংশ ইক্ষাকু রাজবংশ । অন্তিমে ভগীরথ কাজটি সম্পূর্ণ করেছিলেন । এই বংশের রাজারা প্রতিজ্ঞার জন্য, প্রজা কল্যাণের জন্য নিজের সুখ স্বাচ্ছন্দ্য বিসর্জন দিতেও পিছপা হতেন না । গঙ্গা এনে সমগ্র মানবজাতির মুক্তির দ্বার উন্মোচন করার জন্য ইক্ষাকু রাজবংশ খ্যাতনামা হয়ে আছেন ।
দেবি সুরেশ্বরি ভগবতি গঙ্গে,
ত্রিভুবনতারিণি তরলতরঙ্গে ।
শঙ্করমৌলিনিবাসিনি বিমলে,
মম মতিরাস্তাং তব পদকমলে ।।
( ক্রমশঃ )
গঙ্গাকে মর্তে আনার জন্য তপস্যা করতে করতে রাজা সগর, অসমঞ্জ, অংশুমান, দিলীপ রাজা মারা গেলেন, তবুও ব্রহ্মা দর্শন দিলেন না। অন্তিমে রাজা দিলীপের পুত্র ভগীরথ তপস্যা করে ব্রহ্মাকে সন্তুষ্ট করলেন। ব্রহ্মার কাছে গঙ্গাকে মর্তে আনার বর চাইলেন । পরমপিতা ব্রহ্মা জানালেন – “গঙ্গা সরাসরি মর্তে আসলে পৃথিবী রসাতলে প্রবেশ করবে, গঙ্গার প্রচণ্ড বেগ ধরিত্রী দেবী সহ্য করতে পারবেন না।তুমি ভগবান শিবের তপস্যা করো। তিনি আধার রূপে গঙ্গাকে ধারন করে পতন উম্মুখ গঙ্গার বেগ রোধ করতে পারেন।” ভগীরথ ভগবান শিবের তপস্যা করে সন্তুষ্ট করলেন ভগবান শিবকে । স্বয়ং গঙ্গা দেবী যখন স্বর্গ থেকে মর্তে প্রবাহিত হচ্ছিল্ল, হিমালয়ে ভগবান শিব গঙ্গা কে জটায় আবদ্ধ করলেন। ভগবান শিবের এক নাম তাই গঙ্গাধর । তারপর তিনি গঙ্গাকে মুক্ত করলেন। ভগীরথ আগে আগে যেতে লাগলো, গঙ্গা তার পিছে, পথে এক হস্তী গঙ্গা দেবীকে কুপ্রস্তাব দিলে, গঙ্গার ভীষন স্রোতে তার প্রান ওষ্ঠাগত হলে, ক্ষমা চাইলে মা গঙ্গা তাকে জীবন দান করলেন। জহ্নু মুনির আশ্রম গঙ্গা দেবী ভাসিয়ে দিলে মুনি ক্রোধে গঙ্গাকে পান করেন, পুনরায় কর্ণ দ্বারা বের করেন। তাই গঙ্গার এক নাম জাহ্নবী। অন্তিমে কপিল মুনির আশ্রমের কাছে গঙ্গা দেবী এসে ৬০ হাজার রাজপুত্রের অস্থি ভাসিয়ে দিলেন। গঙ্গার পবিত্র স্পর্শে ৬০ হাজার প্রেতাত্মার সদ্গতি হল। সেখানেই তিনি সাগরে বিলীন হলেন। গঙ্গাকে ভগীরথ এনেছিলেন, তাই গঙ্গার নাম ভাগীরথী ।
ভোগোলিক তথ্যে গঙ্গার উৎপত্তি গোমুখী শৃঙ্গ থেকে। আকাশ ( স্বর্গ ) থেকে পতিত মেঘের জল ও তুষার গলিত জল একত্রিত হয়ে গঙ্গা নদীর সৃষ্টি। গঙ্গা যেখানে অলকানন্দার সহিত মিলিত হয়েছেন সে স্থানের নাম দেবপ্রয়োগ । যেখানে যমুনা ও গপ্তা সরস্বতীর সাথে মিলিত হয়েছেন সে স্থানের নাম ‘প্রয়োগ’ বা ‘ত্রিবেনীসঙ্গম’। গঙ্গার সহিত গোমতী, ঘর্ঘরা, শোন, বরুণা, অসি, গণ্ডকী, কুশী, রূপনারায়ন ইত্যাদি বহু নদ নদী মিলিত হয়েছে । ভগীরথ কিন্তু কেবল নিজ পূর্বপুরুষ দের মুক্তির কথাই ভাবেন নি। প্রজা কল্যাণের জন্য তথা পূর্বপুরুষদের মুক্তির জন্য ইক্ষাকু বংশীয় সগর, অসমঞ্জ, অংশুমান, দিলীপ রাজারা ভোগবিলাস ত্যাগ করে তপস্যা করতে করতেই প্রান ত্যাজেছিলেন । এমনই মহান বংশ ইক্ষাকু রাজবংশ । অন্তিমে ভগীরথ কাজটি সম্পূর্ণ করেছিলেন । এই বংশের রাজারা প্রতিজ্ঞার জন্য, প্রজা কল্যাণের জন্য নিজের সুখ স্বাচ্ছন্দ্য বিসর্জন দিতেও পিছপা হতেন না । গঙ্গা এনে সমগ্র মানবজাতির মুক্তির দ্বার উন্মোচন করার জন্য ইক্ষাকু রাজবংশ খ্যাতনামা হয়ে আছেন ।
দেবি সুরেশ্বরি ভগবতি গঙ্গে,
ত্রিভুবনতারিণি তরলতরঙ্গে ।
শঙ্করমৌলিনিবাসিনি বিমলে,
মম মতিরাস্তাং তব পদকমলে ।।
( ক্রমশঃ )
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন