রাবনের ত্রিভুবন বিজয়ের ইচ্ছা বেড়েই চলল। মহারাজ কার্ত্তবীর্য্যার্জুন সহস্র বাহু শক্তি হবার বর প্রাপ্তি করেছিলেন । তাঁর দেহে একশো মত্ত হস্তীর বল ছিলো। রাবণ তাঁর রাজ্য আক্রমণ করে শোচনীয় ভাবে পরাজিত হয় । শেষে মহর্ষি পুলস্ত্য পুনঃ এসে রাবণকে উদ্ধার করেন। মহর্ষি পুলস্ত্য বলেন- “হে রাবণ! তুমি আমার বংশজ। বারংবার কেন তুমি পূর্বপুরুষদের কলঙ্ক দিচ্ছ ? তোমার কৃত কর্মের জন্য আমি লজ্জা বোধ করছি। তুমি সৎ ধার্মিক হও। তুমি শাস্ত্রবিদ। আয়ুর্বেদের বহু ঔষধি তোমার করায়ত্ত । তুমি ধার্মিক হয়ে মানব কল্যাণ করো।” রাবণ কিন্তু মহর্ষির কথা শোনে নি । অপরদিকে কার্ত্তবীর্য্যার্জুন মহর্ষি জমদাগ্নির আশ্রম তছনছ করে জমদাগ্নিকে হত্যা করে , সর্ব অভীষ্ট প্রদায়ক কামধেনু গাভী হরণ করে। এরপর ভগবান পরশুরাম কার্ত্তবীর্য্যার্জুনকে বধ করে । রাবণের হাতে বহু কন্যা লাঞ্ছিত হয়েছিলো। কোনো এক কন্যা অভিশাপ দিয়েছিলো- “ দুরাচারী দশানন। আমার মতোই অপহৃতা নারীর জন্যই তুমি সবংশে নিহত হবে। তোমার কূলে কেউ বাঁচবে না।” রাবণ এসব অভিশাপকে মোটেও গুরুত্ব দিতো না ।
মাতা লক্ষ্মী দেবী ভগবান বিষ্ণুকে পতি রূপে প্রাপ্তির জন্য ব্রহ্মর্ষি কুশধ্বজের কন্যা রূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন । তাঁর নাম ছিলো বেদবতী । ভগবান বিষ্ণুকে প্রাপ্তি করবার জন্য তিনি অখন্ড ব্রহ্মচর্য পালন করে কঠোর উপাসনায় ব্রতী হয়েছিলেন । বেদবতী যজ্ঞাদি অনুষ্ঠান করছিলেন। ঠিক সেসময় রাবণ সেখানে উপস্থিত হল । বেদবতীর রূপে মোহিত হয়ে রাবণ বলল- “হে সুমুখী। তুমি কেন বৃথা তপস্যায় ক্লেশ ভোগ করছ ? তুমি আমাকে বিবাহ করো। আমি তোমাকে লঙ্কায় নিয়ে যাবো। তুমি লঙ্কায় ভোগ বিলাসে জীবন কাটাবে।” বেদবতী ঘৃনা ভরে সেই প্রস্তাব প্রত্যাখান করে জানালো- “দুষ্ট। ভগবান বিষ্ণু ব্যাতীত কেউ আমার পতি হতে পারেন না। আমি তাঁহাকেই পতি রূপে প্রাপ্তির জন্য এই যজ্ঞের আয়োজন করছি।” রাবণ ক্রোধিত হয়ে বেদবতীর কেশ আকর্ষণ করে বলল- “তুমি আমার সহিত না গমন করলে বল পূর্বক তোমাকে হরণ করে বিবাহ করবো।” বেদবতী অনেক বুঝালো রাবণ শুনলো না । অতঃ বেদবতী রাবণকে অভিশাপ দিয়ে বলল- “ হে রাবণ। আমি এই শরীর ত্যাগ করবো। তোমাকে অভিশাপ প্রদান করছি পরজন্মে তোমার কাল রূপে আবি আবার আবির্ভূত হব। আমি তোমার ধ্বংসের কারণ হব। আমার জন্যই রাক্ষস কূল ধ্বংস হবে। সেই ধ্বংসের আগুন তোমাকেউ গ্রাস করবে।” বেদবতী এই বলে অগ্নি দেবতাকে আহ্বান করে নিজেকে ভস্মীভুত করলেন । এই দৃশ্য দেখে শিউরে উঠেছিলো ত্রিলোক ।
রাবণ শুনেছিলো তাঁর বৈমাত্রেয় ভাইকে ভগবান শিব কৈলাসে আশ্রয় দিয়েছেন। কুবেরকে ধ্বংস করার প্রস্তাব রাবণের মাতা কেকসী রাবণকে দিয়েছিলো । পুস্পক রথে চড়ে রাবণ কৈলাসে আক্রমণ করলো । কৈলাসের বিশাল গিরিশৃঙ্গের সামনে নন্দী মহারাজ ছিলেন পাহারায় । রাবণের সাথে নন্দী মহারাজের যুদ্ধ হোলো। কিন্তু ব্রহ্মার বর প্রাপ্ত রাবণকে পরাজিত করতে পারলো না । নন্দীদেব রাবণের হাতে অর্ধমৃত হল । নন্দী মহারাজের বিশাল শিং, লম্ব কর্ণ দেখে রাবণ উপহাস করে বলতে লাগলো – “ওরে তুই নর না বানর ? তোর শরীর নরের আবার বানরের মতো লম্ফঝম্ফ করছ? তুমি আদতে কি?” রাবনের উপহাস শুনে নন্দী মহারাজ কুপিত হোলো। নন্দী মহারাজ রাবণকে অভিসম্পাত করে বলল- “তুমি আমাকে নর বানর বলে উপহাস করলে। তোমাকে শাপ দিচ্ছি হে দশগ্রীব, তুমি ঐ নর বানরের হাতেই বিনাশ প্রাপ্ত করবে।” রাবণ মোটেও ভীত না হয়ে বলল- “ওহে মূর্খ। নর জাতি আমার অনুচর রাক্ষসদের আহার্য, আর বানরকে পায়ে পিষে মারবার ক্ষমতা রাক্ষসদের আছে। তোমার অভিশাপ কোনোকালেই ফলবে না।” নন্দী মহারাজ শিবভক্ত। তিনি পূর্বে দক্ষ প্রজাপতিকে ছাগ মুণ্ড হবার বর দিয়েছিলেন । নন্দী মহারাজের অভিশাপ ফলেছিল ।
( ক্রমশঃ )
মাতা লক্ষ্মী দেবী ভগবান বিষ্ণুকে পতি রূপে প্রাপ্তির জন্য ব্রহ্মর্ষি কুশধ্বজের কন্যা রূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন । তাঁর নাম ছিলো বেদবতী । ভগবান বিষ্ণুকে প্রাপ্তি করবার জন্য তিনি অখন্ড ব্রহ্মচর্য পালন করে কঠোর উপাসনায় ব্রতী হয়েছিলেন । বেদবতী যজ্ঞাদি অনুষ্ঠান করছিলেন। ঠিক সেসময় রাবণ সেখানে উপস্থিত হল । বেদবতীর রূপে মোহিত হয়ে রাবণ বলল- “হে সুমুখী। তুমি কেন বৃথা তপস্যায় ক্লেশ ভোগ করছ ? তুমি আমাকে বিবাহ করো। আমি তোমাকে লঙ্কায় নিয়ে যাবো। তুমি লঙ্কায় ভোগ বিলাসে জীবন কাটাবে।” বেদবতী ঘৃনা ভরে সেই প্রস্তাব প্রত্যাখান করে জানালো- “দুষ্ট। ভগবান বিষ্ণু ব্যাতীত কেউ আমার পতি হতে পারেন না। আমি তাঁহাকেই পতি রূপে প্রাপ্তির জন্য এই যজ্ঞের আয়োজন করছি।” রাবণ ক্রোধিত হয়ে বেদবতীর কেশ আকর্ষণ করে বলল- “তুমি আমার সহিত না গমন করলে বল পূর্বক তোমাকে হরণ করে বিবাহ করবো।” বেদবতী অনেক বুঝালো রাবণ শুনলো না । অতঃ বেদবতী রাবণকে অভিশাপ দিয়ে বলল- “ হে রাবণ। আমি এই শরীর ত্যাগ করবো। তোমাকে অভিশাপ প্রদান করছি পরজন্মে তোমার কাল রূপে আবি আবার আবির্ভূত হব। আমি তোমার ধ্বংসের কারণ হব। আমার জন্যই রাক্ষস কূল ধ্বংস হবে। সেই ধ্বংসের আগুন তোমাকেউ গ্রাস করবে।” বেদবতী এই বলে অগ্নি দেবতাকে আহ্বান করে নিজেকে ভস্মীভুত করলেন । এই দৃশ্য দেখে শিউরে উঠেছিলো ত্রিলোক ।
রাবণ শুনেছিলো তাঁর বৈমাত্রেয় ভাইকে ভগবান শিব কৈলাসে আশ্রয় দিয়েছেন। কুবেরকে ধ্বংস করার প্রস্তাব রাবণের মাতা কেকসী রাবণকে দিয়েছিলো । পুস্পক রথে চড়ে রাবণ কৈলাসে আক্রমণ করলো । কৈলাসের বিশাল গিরিশৃঙ্গের সামনে নন্দী মহারাজ ছিলেন পাহারায় । রাবণের সাথে নন্দী মহারাজের যুদ্ধ হোলো। কিন্তু ব্রহ্মার বর প্রাপ্ত রাবণকে পরাজিত করতে পারলো না । নন্দীদেব রাবণের হাতে অর্ধমৃত হল । নন্দী মহারাজের বিশাল শিং, লম্ব কর্ণ দেখে রাবণ উপহাস করে বলতে লাগলো – “ওরে তুই নর না বানর ? তোর শরীর নরের আবার বানরের মতো লম্ফঝম্ফ করছ? তুমি আদতে কি?” রাবনের উপহাস শুনে নন্দী মহারাজ কুপিত হোলো। নন্দী মহারাজ রাবণকে অভিসম্পাত করে বলল- “তুমি আমাকে নর বানর বলে উপহাস করলে। তোমাকে শাপ দিচ্ছি হে দশগ্রীব, তুমি ঐ নর বানরের হাতেই বিনাশ প্রাপ্ত করবে।” রাবণ মোটেও ভীত না হয়ে বলল- “ওহে মূর্খ। নর জাতি আমার অনুচর রাক্ষসদের আহার্য, আর বানরকে পায়ে পিষে মারবার ক্ষমতা রাক্ষসদের আছে। তোমার অভিশাপ কোনোকালেই ফলবে না।” নন্দী মহারাজ শিবভক্ত। তিনি পূর্বে দক্ষ প্রজাপতিকে ছাগ মুণ্ড হবার বর দিয়েছিলেন । নন্দী মহারাজের অভিশাপ ফলেছিল ।
( ক্রমশঃ )
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন