তিনজন ব্রাহ্মণ হত্যা হওয়াতে রাজা দশরথ খুবুই শোকার্ত ও দুঃখিত ছিলেন। বিশেষত তিনি যখন রাজ্যে অর্থ, জমি দিয়ে ব্রাহ্মণ গণকে তুষ্ট রাখেন । এই কথা জানলো মাত্র সুমন্ত্র সারথি ও দশরথের সু পরামর্শদাতা । এখন কি হবে উপায় ? ব্রহ্মহত্যার পাপে দেবতারা না অভিশাপ প্রদান করেন গোটা অযোধ্যা নগরী কে । তিনি বশিষ্ঠ মুনির আশ্রমে গেলেন । এখানে একটু আলোচনা করলে মন্দ হয় না । “ব্রাহ্মণ” কে ? এই ক্ষেত্রে জন্ম সূত্রে পৈতেধারী বংশের বিপ্র গণ বলবেন – “তাঁরাই ব্রাহ্মণ”। সাথে কিছু স্মৃতির বুলি আউরে দেবেন । প্রথমে বলে রাখা প্রয়োজন- স্মৃতি গুলি যুগানুসারে লেখা। ঐ যুগ শেষ, ঐ স্মৃতি গুলির প্রয়োজনীয়তা শেষ । “শ্রীমদ্ভগবতগীতায়” ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নিজ মুখে চতুর্বর্ণের সংজ্ঞা দিয়েছেন । এছাড়া সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর যুগে তপস্যার মাধ্যমে ব্রাহ্মণ হতে হতো। যেমন ছিলেন বিশ্বামিত্র বা শ্রীশ্রীচণ্ডীতে বর্ণিত সমাধি বৈশ্য । এঁনারা তপস্যার মাধ্যমে ব্রহ্মজ্ঞান প্রাপ্তি করেছিলেন । আর স্বয়ং নারায়ণ যখন অবতার ধারন করলেন তিনি এসে এই ব্রহ্মর্ষি বিশ্বামিত্র মুনিকে গুরুপদে বরণ করলেন। রামচন্দ্রের অপর গুরু ছিলেন বশিষ্ঠ ও অগ্যস্ত । শ্রীরাম ক্ষত্রিয় কূলের ছিলেন। বংশে নয়- সাধন ভজনেই শ্রেষ্ঠত্ব প্রাপ্তি সম্ভব , ভগবান রাম এই শিক্ষাই মানব জাতিকে দিয়েছেন । কিন্তু তাই বলে এটা ভাববেন না যে বর্তমানে যারা জন্মসূত্রে পৈতেধারী তাদের অসম্মান করবো । একটা উদাহরণ দেওয়া যাক। সব সাপের বিষ নেই। কিন্তু আমরা দাঁড়াশ, লাউডগা, ধরা ইত্যাদি নির্বিষ সাপ দেখলেও ভয় পাই। তাদের থেকে দূরে থাকি। তেমনি কলির বামুন তেজ, শক্তি, তপ শক্তি হীন। কিন্তু আমাদের কর্তব্য তাদের সম্মান করা ।
এই সম্মান বলতে কেউ ভাববেন না, বয়সে ছোটো ব্রাহ্মণ দের প্রনাম করা, তাঁদের পাদোদক পান, তাদের ছায়া না ডিঙানো, তাদের জুতা না ডিঙানো এগুলো। এগুলো চলে না। যেমন পূজা সকলেই করতে পারে। কিন্তু বারোয়ারী পূজা বা মন্দিরের পূজা বা বাৎসরিক পূজো, বিবাহ, শ্রাদ্ধ, অন্নপ্রাশন ইত্যাদি এই জন্মগত পৈতেধারীদের দিয়েই করাবেন । হিন্দু ধর্মে ব্রাহ্মণ , ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র সবারই অবদান আছে । ব্রাহ্মণ সমস্ত জাতিকে আধ্যাত্মিক জ্ঞান বিতরণ করবেন , ক্ষত্রিয় যুদ্ধ বিদ্যা দ্বারা গো- ব্রাহ্মণ- শাস্ত্র - নারী ও প্রজা রক্ষা করবেন । বৈশ্য ব্যবসা দ্বারা জাতির আর্থিক উন্নতি মজবুত করবেন আর শূদ্র সেবা দ্বারা সমাজ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করবেন । দেখতে গেলে শূদ্রের অবদান কিছু কম নয়। সে ময়লা, আবর্জনা পরিষ্কার করে আমাদের করছেন জীবানুমুক্ত । রামায়নেই আমরা দেখবো ভগবান ভক্তের ভালোবাসায় মোহিত হয়ে শূদ্র ভক্তিনীর মুখের উচ্ছিষ্ট ফল পরম তৃপ্তির সাথে খেয়েছিলেন । ভগবান ছুঁৎমার্গ করেন না। তিনি শুদ্ধ ভক্ত খুঁজে বেড়ান । যাকে তিনি ভালোবেসে নিজ শাশ্বত ধামে নিয়ে যাবেন । যাই হোক জন্মগত পৈতেধারী দেখলে আপনি শাস্ত্র নিয়ম মেনে তাকে সম্মান করবেন । পূজার পর দক্ষিণা দিবেন, খাওয়াবেন । আজকাল কার বিপ্ররা খুবুই দরিদ্র। আগের মতো অবস্থা নেই। সুতরাং হিন্দু হিসাবে আপনার কর্তব্য হিন্দুর পাশে দাঁড়ানো । যাই হোক রাজা দশরথ মহর্ষি বশিষ্ঠের আশ্রমে প্রায়শ্চিত্তের বিধান চাইতে গেলেন। বশিষ্ঠ মুনি সেসময় আশ্রমে ছিলেন না। তাঁর পুত্র বামদেব সব শুনে বললেন- “হে রাজন! দস্যু রত্নাকর পবিত্র ‘রাম’ নাম জপ করে মহর্ষি হয়েছেন। আপনি তিনবার রাম নাম জপ করুন । রাম নামে মহাপাপ খণ্ডন হয়।” রাজা দশরথ নদীতে স্নানাদি করে পবিত্র চিত্তে ‘রাম’ নাম জপ করে রাজ্যে ফিরে গেলেন । বশিষ্ঠ আশ্রমে ফিরে পুত্র বামদেবের মুখে সব শুনে ক্রোধিত হয়ে বললেন- “মূর্খ। তুই রাজাকে তিনবার রাম নাম নিতে কেন বললি?” বামদেব জানালেন- “রাজা তিনটি ব্রহ্মহত্যা করেছেন তাই।”
বশিষ্ঠ মুনি শুনে আরো অগ্নিশর্মা হয়ে বললেন- “ওরে মূর্খ । একবার ‘রাম’ নামে কোটি ব্রহ্মহত্যার পাপ নাশ হয়। তোর রাম নামে এত অবিশ্বাস যে রাজাকে তিনবার রাম নাম নিতে বললি ? যা গিয়ে নিষাদ কূলে জন্ম নে।” মুনিপুত্র বামদেব নিষাদ কূলে জন্ম নিয়েছিলেন। এর পেছনেও ভগবানের লীলা আছে । ভাবুন ‘রাম’ নামের কি মহিমা। রামায়ন বলেছে- “একবার ‘রাম’ নাম নিলেই কোটি ব্রহ্মহত্যার পাপ দূর হয়।” ভগবানের নামের এতই মহিমা । নিশ্চিন্ত হয়ে ভগবান রামের নাম করুন । যমের সাধ্যি নেই আপনাকে স্পর্শ করবার । তবে এখানে একটা কথা নাস্তিক ও ঘোর অদ্বৈতবাদী বলবেন- “তাহলে সমানে পাপ করবো আর রাম নাম জপে যাবো।” তেমন না। প্রতিদিন পাপ করে রাম নাম জপলে ভগবান রাম নিজেই শাস্তি দেবেন । ভগবান শুধরানোর সুযোগ সকলকেই দেন। আমাদের উচিৎ সেই শুধরানোর সুযোগ নিয়ে পাপ কর্ম থেকে বিরত হয়ে শাস্ত্র নির্দেশিত পথে চলা । তবেই এই রাম নাম কার্যকারী হবে। ব্রহ্মর্ষি হবার পর বাল্মিকী মুনি কিন্তু আর ডাকাতি করেন নি। জগাই মাধাই ভক্ত হবার পর আর কিন্তু পাপে নিমগ্ন হয়নি । সেই রকম । রোজ রোজ মহাপাপ করে কোটি কোটি নাম করলেও ভগবান আপনাকে ক্ষমা করবেন না ।
( ক্রমশঃ )
এই সম্মান বলতে কেউ ভাববেন না, বয়সে ছোটো ব্রাহ্মণ দের প্রনাম করা, তাঁদের পাদোদক পান, তাদের ছায়া না ডিঙানো, তাদের জুতা না ডিঙানো এগুলো। এগুলো চলে না। যেমন পূজা সকলেই করতে পারে। কিন্তু বারোয়ারী পূজা বা মন্দিরের পূজা বা বাৎসরিক পূজো, বিবাহ, শ্রাদ্ধ, অন্নপ্রাশন ইত্যাদি এই জন্মগত পৈতেধারীদের দিয়েই করাবেন । হিন্দু ধর্মে ব্রাহ্মণ , ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র সবারই অবদান আছে । ব্রাহ্মণ সমস্ত জাতিকে আধ্যাত্মিক জ্ঞান বিতরণ করবেন , ক্ষত্রিয় যুদ্ধ বিদ্যা দ্বারা গো- ব্রাহ্মণ- শাস্ত্র - নারী ও প্রজা রক্ষা করবেন । বৈশ্য ব্যবসা দ্বারা জাতির আর্থিক উন্নতি মজবুত করবেন আর শূদ্র সেবা দ্বারা সমাজ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করবেন । দেখতে গেলে শূদ্রের অবদান কিছু কম নয়। সে ময়লা, আবর্জনা পরিষ্কার করে আমাদের করছেন জীবানুমুক্ত । রামায়নেই আমরা দেখবো ভগবান ভক্তের ভালোবাসায় মোহিত হয়ে শূদ্র ভক্তিনীর মুখের উচ্ছিষ্ট ফল পরম তৃপ্তির সাথে খেয়েছিলেন । ভগবান ছুঁৎমার্গ করেন না। তিনি শুদ্ধ ভক্ত খুঁজে বেড়ান । যাকে তিনি ভালোবেসে নিজ শাশ্বত ধামে নিয়ে যাবেন । যাই হোক জন্মগত পৈতেধারী দেখলে আপনি শাস্ত্র নিয়ম মেনে তাকে সম্মান করবেন । পূজার পর দক্ষিণা দিবেন, খাওয়াবেন । আজকাল কার বিপ্ররা খুবুই দরিদ্র। আগের মতো অবস্থা নেই। সুতরাং হিন্দু হিসাবে আপনার কর্তব্য হিন্দুর পাশে দাঁড়ানো । যাই হোক রাজা দশরথ মহর্ষি বশিষ্ঠের আশ্রমে প্রায়শ্চিত্তের বিধান চাইতে গেলেন। বশিষ্ঠ মুনি সেসময় আশ্রমে ছিলেন না। তাঁর পুত্র বামদেব সব শুনে বললেন- “হে রাজন! দস্যু রত্নাকর পবিত্র ‘রাম’ নাম জপ করে মহর্ষি হয়েছেন। আপনি তিনবার রাম নাম জপ করুন । রাম নামে মহাপাপ খণ্ডন হয়।” রাজা দশরথ নদীতে স্নানাদি করে পবিত্র চিত্তে ‘রাম’ নাম জপ করে রাজ্যে ফিরে গেলেন । বশিষ্ঠ আশ্রমে ফিরে পুত্র বামদেবের মুখে সব শুনে ক্রোধিত হয়ে বললেন- “মূর্খ। তুই রাজাকে তিনবার রাম নাম নিতে কেন বললি?” বামদেব জানালেন- “রাজা তিনটি ব্রহ্মহত্যা করেছেন তাই।”
বশিষ্ঠ মুনি শুনে আরো অগ্নিশর্মা হয়ে বললেন- “ওরে মূর্খ । একবার ‘রাম’ নামে কোটি ব্রহ্মহত্যার পাপ নাশ হয়। তোর রাম নামে এত অবিশ্বাস যে রাজাকে তিনবার রাম নাম নিতে বললি ? যা গিয়ে নিষাদ কূলে জন্ম নে।” মুনিপুত্র বামদেব নিষাদ কূলে জন্ম নিয়েছিলেন। এর পেছনেও ভগবানের লীলা আছে । ভাবুন ‘রাম’ নামের কি মহিমা। রামায়ন বলেছে- “একবার ‘রাম’ নাম নিলেই কোটি ব্রহ্মহত্যার পাপ দূর হয়।” ভগবানের নামের এতই মহিমা । নিশ্চিন্ত হয়ে ভগবান রামের নাম করুন । যমের সাধ্যি নেই আপনাকে স্পর্শ করবার । তবে এখানে একটা কথা নাস্তিক ও ঘোর অদ্বৈতবাদী বলবেন- “তাহলে সমানে পাপ করবো আর রাম নাম জপে যাবো।” তেমন না। প্রতিদিন পাপ করে রাম নাম জপলে ভগবান রাম নিজেই শাস্তি দেবেন । ভগবান শুধরানোর সুযোগ সকলকেই দেন। আমাদের উচিৎ সেই শুধরানোর সুযোগ নিয়ে পাপ কর্ম থেকে বিরত হয়ে শাস্ত্র নির্দেশিত পথে চলা । তবেই এই রাম নাম কার্যকারী হবে। ব্রহ্মর্ষি হবার পর বাল্মিকী মুনি কিন্তু আর ডাকাতি করেন নি। জগাই মাধাই ভক্ত হবার পর আর কিন্তু পাপে নিমগ্ন হয়নি । সেই রকম । রোজ রোজ মহাপাপ করে কোটি কোটি নাম করলেও ভগবান আপনাকে ক্ষমা করবেন না ।
( ক্রমশঃ )
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন