এভাবে অযোধ্যায় শ্রীরাম বয়োঃবৃদ্ধি পাচ্ছিলেন । তিনি নিত্য বাগানে খেলা করতেন । সখা দের সাথে ভ্রাতার সাথে মিলে কুল ধর্ম মেনে বনে গিয়ে মৃগয়া করতেন । সন্ত তুলসীদাস গোস্বামী লিখেছেন-
বন্ধু সখা সঁগ লেহিঁ বোলাঈ ।
বন মৃগয়া নিত খেলহিঁ জাঈ ।।
পাবন মৃগ মারহিঁ জিয়ঁ জানী ।
দিন প্রতি নৃপহি দেখাবহিঁ আনী ।।
অর্থাৎ- ভ্রাতা সখা পরিবৃত হয়ে শ্রীরামচন্দ্র নিত্য মৃগয়ায় যেতেন ( ক্ষত্রিয় ধর্ম অনুসারে ) । পূত মৃগ শিকার করতেন এবং তা এনে দশরথকে দেখাতেন ।
প্রাচীন কালে ক্ষত্রিয় গণ বনে গিয়ে মৃগয়া করতেন । এমন বহু দৃষ্টান্ত আছে । এক আহার্য হিসাবে মৃগ মাংস সেই যুগে প্রসিদ্ধ ছিল এবং ক্ষত্রিয় গণ তা খেতেন । দ্বিতীয়ত মৃগ চর্ম পবিত্র আসন । এছাড়া শিকাড় করাকে বীরত্ব মানা হত । অবশ্য রামচন্দ্রের হাতে নিহত মৃগ অবশ্যই মুক্তি পেয়েছিলেন । অপরদিকে রাজা জনকের গৃহে সীতা দেবী বৃদ্ধি পেতে লাগলেন । রাজা জনকের রাজ্যে শ্রীবৃদ্ধি ঘটলো । উপযুক্ত পরিমাণে বর্ষণ হল । মাঠগুলি সিক্ত হলে প্রজারা চাষাবাদ করে ধনধান্যে ফুলে উঠলেন । এসবই হয়েছে মাতা লক্ষ্মীর কৃপায়। তিনি নিজেই সীতা রূপে জনক রাজা ও সুনয়নার কোল আলো করে বড় হতে লাগলেন । সীতা দেবী ভগবতী উমামাতার ভক্ত ছিলেন । অপরদিকে রামচন্দ্র ছিলেন শিবভক্ত । রামচন্দ্রের মনোহর রূপ দেখে অযোধ্যার আবালবৃদ্ধবনিতা সকলেই মোহিত হয়ে রামচন্দ্রকে ক্রোড়ে নিয়ে আদর করতেন । এমনই ছিলো রামচন্দ্রের রূপ । পাঁচ বছর বয়স হতে রামচন্দ্রকে ভ্রাতাদের সহিত গুরু বশিষ্ঠের আশ্রমে বিদ্যা শিক্ষার জন্য পাঠানো হল । বশিষ্ঠ মুনির আশ্রমে রামচন্দ্র ও তাঁহার ভ্রাতারা চতুর্বেদ , উপনিষদ, কাব্য, অলংকার, ব্যাকারন, জ্যোতির্বিদ্যা, দর্শন বিদ্যা আদি সব শাস্ত্র শিখলেন ।
এরপর অস্ত্র বিদ্যা শুরু হল । প্রথমে মল্ল বিদ্যা শিখলেন। তারপর গদা, তরবারি, বর্শা, লাঠি, ছোড়া ইত্যাদি অস্ত্র শিক্ষা গ্রহণ করলেন । এরপর মহর্ষি বশিষ্ঠ ধনুর্বিদ্যা দিলেন চার রাজকুমারকে । চার ভ্রাতাকে অনেক দিব্যাস্ত্রের জ্ঞান দিলেন। এই অস্ত্র গুলি জগত ধ্বংস করবার শক্তি রাখে । রামচন্দ্রের তীব্র বেগে বাণ নিক্ষেপ, অব্যর্থ নিশানা দেখে দেবতাবৃন্দ আনন্দ প্রাপ্তি করেন । কারন এবার রাবণ অনায়েসে মরবে । একদিন মারীচ রাক্ষস মায়া দ্বারা হরিণ সেজে খোঁজ করতে আসেন । হরিণ রূপী মারীচ বনে ঘুরছিলো। সেসময় রাম লক্ষণ ধনুক হাতে বনে ঘুরছিলেন । মৃগ দেখে রামচন্দ্র বাণ নিক্ষেপ করেন । কৃত্তিবাস পণ্ডিত লেখেছেন-
মৃগ দেখি রামের কৌতুক হৈল মন ।
ধনুকে অব্যর্থ বাণ যুড়িল তখন ।।
ছুটিল রামের বাণ তারা যেন খসে ।
মহাভীত মারীচ পলায় মহাত্রাসে ।।
শ্রীরামের বাণশব্দে ছাড়িল সে বন ।
জনকের দেশে গেল মিথিলা ভুবন ।।
রামচন্দ্রের বাণে ভীত হয়ে মারীচ রাক্ষস অযোধ্যার সীমা ছেড়ে সোজা মিথিলায় পলায়ন করলো ।
( ক্রমশঃ )
বন্ধু সখা সঁগ লেহিঁ বোলাঈ ।
বন মৃগয়া নিত খেলহিঁ জাঈ ।।
পাবন মৃগ মারহিঁ জিয়ঁ জানী ।
দিন প্রতি নৃপহি দেখাবহিঁ আনী ।।
অর্থাৎ- ভ্রাতা সখা পরিবৃত হয়ে শ্রীরামচন্দ্র নিত্য মৃগয়ায় যেতেন ( ক্ষত্রিয় ধর্ম অনুসারে ) । পূত মৃগ শিকার করতেন এবং তা এনে দশরথকে দেখাতেন ।
প্রাচীন কালে ক্ষত্রিয় গণ বনে গিয়ে মৃগয়া করতেন । এমন বহু দৃষ্টান্ত আছে । এক আহার্য হিসাবে মৃগ মাংস সেই যুগে প্রসিদ্ধ ছিল এবং ক্ষত্রিয় গণ তা খেতেন । দ্বিতীয়ত মৃগ চর্ম পবিত্র আসন । এছাড়া শিকাড় করাকে বীরত্ব মানা হত । অবশ্য রামচন্দ্রের হাতে নিহত মৃগ অবশ্যই মুক্তি পেয়েছিলেন । অপরদিকে রাজা জনকের গৃহে সীতা দেবী বৃদ্ধি পেতে লাগলেন । রাজা জনকের রাজ্যে শ্রীবৃদ্ধি ঘটলো । উপযুক্ত পরিমাণে বর্ষণ হল । মাঠগুলি সিক্ত হলে প্রজারা চাষাবাদ করে ধনধান্যে ফুলে উঠলেন । এসবই হয়েছে মাতা লক্ষ্মীর কৃপায়। তিনি নিজেই সীতা রূপে জনক রাজা ও সুনয়নার কোল আলো করে বড় হতে লাগলেন । সীতা দেবী ভগবতী উমামাতার ভক্ত ছিলেন । অপরদিকে রামচন্দ্র ছিলেন শিবভক্ত । রামচন্দ্রের মনোহর রূপ দেখে অযোধ্যার আবালবৃদ্ধবনিতা সকলেই মোহিত হয়ে রামচন্দ্রকে ক্রোড়ে নিয়ে আদর করতেন । এমনই ছিলো রামচন্দ্রের রূপ । পাঁচ বছর বয়স হতে রামচন্দ্রকে ভ্রাতাদের সহিত গুরু বশিষ্ঠের আশ্রমে বিদ্যা শিক্ষার জন্য পাঠানো হল । বশিষ্ঠ মুনির আশ্রমে রামচন্দ্র ও তাঁহার ভ্রাতারা চতুর্বেদ , উপনিষদ, কাব্য, অলংকার, ব্যাকারন, জ্যোতির্বিদ্যা, দর্শন বিদ্যা আদি সব শাস্ত্র শিখলেন ।
এরপর অস্ত্র বিদ্যা শুরু হল । প্রথমে মল্ল বিদ্যা শিখলেন। তারপর গদা, তরবারি, বর্শা, লাঠি, ছোড়া ইত্যাদি অস্ত্র শিক্ষা গ্রহণ করলেন । এরপর মহর্ষি বশিষ্ঠ ধনুর্বিদ্যা দিলেন চার রাজকুমারকে । চার ভ্রাতাকে অনেক দিব্যাস্ত্রের জ্ঞান দিলেন। এই অস্ত্র গুলি জগত ধ্বংস করবার শক্তি রাখে । রামচন্দ্রের তীব্র বেগে বাণ নিক্ষেপ, অব্যর্থ নিশানা দেখে দেবতাবৃন্দ আনন্দ প্রাপ্তি করেন । কারন এবার রাবণ অনায়েসে মরবে । একদিন মারীচ রাক্ষস মায়া দ্বারা হরিণ সেজে খোঁজ করতে আসেন । হরিণ রূপী মারীচ বনে ঘুরছিলো। সেসময় রাম লক্ষণ ধনুক হাতে বনে ঘুরছিলেন । মৃগ দেখে রামচন্দ্র বাণ নিক্ষেপ করেন । কৃত্তিবাস পণ্ডিত লেখেছেন-
মৃগ দেখি রামের কৌতুক হৈল মন ।
ধনুকে অব্যর্থ বাণ যুড়িল তখন ।।
ছুটিল রামের বাণ তারা যেন খসে ।
মহাভীত মারীচ পলায় মহাত্রাসে ।।
শ্রীরামের বাণশব্দে ছাড়িল সে বন ।
জনকের দেশে গেল মিথিলা ভুবন ।।
রামচন্দ্রের বাণে ভীত হয়ে মারীচ রাক্ষস অযোধ্যার সীমা ছেড়ে সোজা মিথিলায় পলায়ন করলো ।
( ক্রমশঃ )
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন