বশিষ্ঠ মুনির আশ্রমে এভাবে বিদ্যা শিক্ষা অর্জন করছিলেন শ্রীরাম । মুনি নানা অস্ত্র বিদ্যার জ্ঞান দিলেন শ্রীরামচন্দ্রকে । দেবতারা অতীব প্রীত হলেন রামচন্দ্রের বিদ্যাশিক্ষা দেখে । গুরুগৃহে থাকাকালীন শিক্ষা লাভের পাশাপাশি আশ্রমের কাজ কর্ম করতে হত । সেখানে রাজকুমার আর সাধারণ শিক্ষার্থীকে এক ভাবেই রাখা হত । রাজার তনয় বলে বিশেষ কোন ছাড় বা সুবিধা দেওয়া হত না । এই আশ্রম গুলিকে “গুরুকুল” বলে । এখানে গার্হস্থ আশ্রম, সংসার ধর্ম পালনের শিক্ষা দেওয়া হত । বর্তমানে স্কুল কলেজগুলিতে এর কানাকড়িও দেওয়া হয় না । তাই সমাজ অমানুষে ছেয়ে গেছে । তেমনি মহর্ষি বশিষ্ঠের আশ্রমে থাকাকালীন রাম , ভরত, লক্ষণ, শত্রুঘ্ন চার ভ্রাতাই অনান্য শিক্ষার্থীর মত আশ্রমের নিয়মাবলী পালন করতেন । ব্রাহ্ম মুহূর্তে উত্থান, যোগাসন প্রানায়াম, পূজা, বনে গিয়ে কাষ্ঠ পুস্প ফলমূলাদি সংগ্রহ, নদী থেকে জল ভরে আনা, গো পালন, গোসেবার জন্য তৃন সংগ্রহ , আশ্রম পরিষ্কার ইত্যাদি এমন কর্ম করতে হত ।
একদিন রাম লক্ষণ বনে গেছেন । অপূর্ব প্রাকৃতিক শোভা সমগ্র বনে ছেয়ে গিয়েছিল । হরিণ শিশুর ইতিউতি ভ্রমণ, বিবিধ পক্ষীর মধুর কলরব , সুগন্ধি পুস্পের ঘ্রান, তরুলতা গুলি সূর্যের আলো মেখে সুন্দর প্রাকৃতিক শোভা বর্ধন করেছিল । রাম লক্ষণ এই মধুর দৃশ্য দেখে মোহিত হয়ে গেলেন । দানার লোভে পক্ষী গুলি শ্রীরামচন্দ্রের আশেপাশে এসে বিচরণ করতে লাগলেন । নবদূর্বাদল কান্তিময় রামচন্দ্রের মধুর মনোহর রূপ দেখে ময়ূর গুলি কেকা রবে ডাকতে লাগলো , বৃক্ষ গুলি যেনো পুস্পের ডালি দিয়ে ভগবানের চলার পথ কোমল করে দিয়েছিলো । রাম ও লক্ষণ এইগুলি দেখে অতীব প্রীত হলেন । কিন্তু উভয়ের ক্ষুধা তৃষ্ণা পেলো । দেবলোকে ইন্দ্রাদি দেবগণ ব্রহ্মা সহিত ভগবানের বাল্যলীলা দেখে আনন্দ প্রাপ্তি করতে লাগলেন । উভয়ে যখন ক্লান্ত তখন রামচন্দ্র একটি আমলকী বৃক্ষ দেখতে পেলেন । ভগবান সেই বৃক্ষে আরোহণ করে আমলকী ফল পেরে এনে ভ্রাতা লক্ষণকে দিয়ে কিছু নিজে সেবা নিলেন । সম্মুখে তাঁরা এক দীঘি দেখতে পেলেন । টলটলে দীঘির জলে পদ্ম ফুটে আছে । ব্রহ্মার আদেশে ইন্দ্রদেবতা পদ্মের মৃণালে ‘সুধা’ সৃষ্টি করলেন । রাম লক্ষণ সেই জলে নেমে পদ্ম পুস্প আরোহণ করে মৃণালের সেই সুধা গ্রহণ করলেন । অতঃ দীঘির শীতল মিষ্টি জল পান করে বনে ফিরলেন । বৃক্ষের ছায়ায় কোমোল পাতার ওপর শয্যা রচনা করে উভয়ে বিশ্রাম নিতে লাগলেন । পক্ষী গুলি মধুর কলরব করে যেনো তাহাদিগকে ঘুমপাড়ানি সঙ্গীত শ্রবন করাতে লাগলেন । ভ্রমরেরা গুনগুন করে সেই সঙ্গীতে সুরতাল দিল ।
এই অতীব সুন্দর লীলা দেখে স্বর্গের সুরেরা মর্তলোকে নেমে আসলেন । ইন্দ্রদেবতা দেখলেন গাছপালার মধ্যে মধ্যে সূর্য কিরণ এসে প্রভুর চোখে মুখে পড়ছে এবং তিনি তাতে বিরক্ত হচ্ছিল্লেন ঘুমের মধ্যে । এই দেখে ইন্দ্রদেবতা মেঘ দিয়ে আকাশে আচ্ছাদন করলেন। সমস্ত জায়গাতে সূর্যের কিরণ পৌছালেও প্রভুর উপরে কেবল মেঘের আচ্ছাদন থাকলো । অগ্নি দেবতা তাপ হরণ করে সেই স্থানকে শীতল মনোরম করলেন , পবন দেবতা মৃদু মৃদু বায়ু উৎপন্ন করে প্রভুকে বাতাস দিতে লাগলেন । বিবিধ কোমল, সুগন্ধি পুস্প কত জন্মের পুণ্যফলে তাঁরা এখানে পুস্প হয়ে ফুটেছিলো, তাঁরা শ্রীপ্রভুর অঙ্গে পতিত হতে লাগলো । বরুণ দেব সেই পুস্প গুলিতে শিশির বিন্দু সৃষ্টি করলেন যাতে গরমে প্রভুর নিদ্রার ব্যাঘাত না ঘটে । শিশিরসিক্ত পুস্প গুলি শ্রীরামের অঙ্গে পতিত হয়ে প্রভুকে গরমে শীতলতা প্রদান করছিল । এইভাবে দেবতাকূল ভগবান শ্রীরামচন্দ্রকে সেবা করে নিজেদের ধন্য করলেন । অতঃ সন্ধ্যাকাল উপস্থিত হতে উভয়ে আশ্রমে ফিরে গেলেন । গিয়ে দেখলেন তাঁহাদের বিদ্যা সমাপনে রাজবাড়ী থেকে দশরথ , রাজা কৈকয়ী এসেছেন। রাণী কৈকয়ী তাহাদের না দেখে অতীব চিন্তায় ছিলেন । পুত্র রামচন্দ্রকে ক্রোড়ে নিয়ে বাৎসল্য প্রদান করতে লাগলেন ।
( ক্রমশঃ )
একদিন রাম লক্ষণ বনে গেছেন । অপূর্ব প্রাকৃতিক শোভা সমগ্র বনে ছেয়ে গিয়েছিল । হরিণ শিশুর ইতিউতি ভ্রমণ, বিবিধ পক্ষীর মধুর কলরব , সুগন্ধি পুস্পের ঘ্রান, তরুলতা গুলি সূর্যের আলো মেখে সুন্দর প্রাকৃতিক শোভা বর্ধন করেছিল । রাম লক্ষণ এই মধুর দৃশ্য দেখে মোহিত হয়ে গেলেন । দানার লোভে পক্ষী গুলি শ্রীরামচন্দ্রের আশেপাশে এসে বিচরণ করতে লাগলেন । নবদূর্বাদল কান্তিময় রামচন্দ্রের মধুর মনোহর রূপ দেখে ময়ূর গুলি কেকা রবে ডাকতে লাগলো , বৃক্ষ গুলি যেনো পুস্পের ডালি দিয়ে ভগবানের চলার পথ কোমল করে দিয়েছিলো । রাম ও লক্ষণ এইগুলি দেখে অতীব প্রীত হলেন । কিন্তু উভয়ের ক্ষুধা তৃষ্ণা পেলো । দেবলোকে ইন্দ্রাদি দেবগণ ব্রহ্মা সহিত ভগবানের বাল্যলীলা দেখে আনন্দ প্রাপ্তি করতে লাগলেন । উভয়ে যখন ক্লান্ত তখন রামচন্দ্র একটি আমলকী বৃক্ষ দেখতে পেলেন । ভগবান সেই বৃক্ষে আরোহণ করে আমলকী ফল পেরে এনে ভ্রাতা লক্ষণকে দিয়ে কিছু নিজে সেবা নিলেন । সম্মুখে তাঁরা এক দীঘি দেখতে পেলেন । টলটলে দীঘির জলে পদ্ম ফুটে আছে । ব্রহ্মার আদেশে ইন্দ্রদেবতা পদ্মের মৃণালে ‘সুধা’ সৃষ্টি করলেন । রাম লক্ষণ সেই জলে নেমে পদ্ম পুস্প আরোহণ করে মৃণালের সেই সুধা গ্রহণ করলেন । অতঃ দীঘির শীতল মিষ্টি জল পান করে বনে ফিরলেন । বৃক্ষের ছায়ায় কোমোল পাতার ওপর শয্যা রচনা করে উভয়ে বিশ্রাম নিতে লাগলেন । পক্ষী গুলি মধুর কলরব করে যেনো তাহাদিগকে ঘুমপাড়ানি সঙ্গীত শ্রবন করাতে লাগলেন । ভ্রমরেরা গুনগুন করে সেই সঙ্গীতে সুরতাল দিল ।
এই অতীব সুন্দর লীলা দেখে স্বর্গের সুরেরা মর্তলোকে নেমে আসলেন । ইন্দ্রদেবতা দেখলেন গাছপালার মধ্যে মধ্যে সূর্য কিরণ এসে প্রভুর চোখে মুখে পড়ছে এবং তিনি তাতে বিরক্ত হচ্ছিল্লেন ঘুমের মধ্যে । এই দেখে ইন্দ্রদেবতা মেঘ দিয়ে আকাশে আচ্ছাদন করলেন। সমস্ত জায়গাতে সূর্যের কিরণ পৌছালেও প্রভুর উপরে কেবল মেঘের আচ্ছাদন থাকলো । অগ্নি দেবতা তাপ হরণ করে সেই স্থানকে শীতল মনোরম করলেন , পবন দেবতা মৃদু মৃদু বায়ু উৎপন্ন করে প্রভুকে বাতাস দিতে লাগলেন । বিবিধ কোমল, সুগন্ধি পুস্প কত জন্মের পুণ্যফলে তাঁরা এখানে পুস্প হয়ে ফুটেছিলো, তাঁরা শ্রীপ্রভুর অঙ্গে পতিত হতে লাগলো । বরুণ দেব সেই পুস্প গুলিতে শিশির বিন্দু সৃষ্টি করলেন যাতে গরমে প্রভুর নিদ্রার ব্যাঘাত না ঘটে । শিশিরসিক্ত পুস্প গুলি শ্রীরামের অঙ্গে পতিত হয়ে প্রভুকে গরমে শীতলতা প্রদান করছিল । এইভাবে দেবতাকূল ভগবান শ্রীরামচন্দ্রকে সেবা করে নিজেদের ধন্য করলেন । অতঃ সন্ধ্যাকাল উপস্থিত হতে উভয়ে আশ্রমে ফিরে গেলেন । গিয়ে দেখলেন তাঁহাদের বিদ্যা সমাপনে রাজবাড়ী থেকে দশরথ , রাজা কৈকয়ী এসেছেন। রাণী কৈকয়ী তাহাদের না দেখে অতীব চিন্তায় ছিলেন । পুত্র রামচন্দ্রকে ক্রোড়ে নিয়ে বাৎসল্য প্রদান করতে লাগলেন ।
( ক্রমশঃ )
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন