চার পুত্র পেয়ে সমস্ত অযোধ্যা নগরীতে আনন্দ বয়ে গেলো । পুত্রদের নামকরণ অনুষ্ঠান বা ছয়ষষ্ঠীর আয়োজন করলেন রাজা দশরথ । সেই উৎসব কে কেন্দ্র করে আবার এক মহা আয়োজন চলল। রাজা দশরথ কুলগুরু বশিষ্ঠ মুনিকে আমন্ত্রণ করে স্বাগত জানিয়ে করজোড়ে বললেন- “হে মুনিবর ! বলুন কি নাম রাখা যায় ?” মুনি বললেন- “ হে রাজন ! এঁদের অনেক সুন্দর অনুপম নাম আছে । তবুও আমি বিচার অনুসারে বলছি । আপনার পুত্রেরা সুখ রাশি সম্পন্ন ও আনন্দসাগর । এই সাগরের একবিন্দু সংসারকে সুখ দান করতে সক্ষম । সুখধাম ও বিশ্ব চরাচরের শান্তিদাতা আপনার জেষ্ঠপুত্র কৌশল্যা নন্দনের নাম হবে ‘রাম’। জগতের ভরন পোষণ কারী আপনার দ্বিতীয় পুত্র তথা কৈকয়ীর সন্তানের নাম ভরত । আর সর্ব সুলক্ষণ যুক্ত রামের প্রিয় যিনি , যিনি মস্তকে পৃথিবীর ভার বহন করে আছেন সুমিত্রার সেই পুত্রের নাম হবে লক্ষণ । আর যাঁকে স্মরণ করলে সর্ব শত্রু নাশ হয়, সুমিত্রার অপর পুত্রের নাম হবে শত্রুঘ্ন । ( রামচরিতমানস )
বাল্যকাল থেকেই সুমিত্রা নন্দন লক্ষণ , ভগবান রামের যেনো ছায়া ছিলেন। সর্বদা অগ্রজের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতেন । অপরদিকে ভরতের ছায়া ছিলেন সুমিত্রার অপর পুত্র শত্রুঘ্ন । অবশ্য চার ভ্রাতার মধ্যে ভাতৃত্ব বন্ধন ছিলো সুনিবিড় । রাজা দশরথের গৃহে বড় হতে লাগলেন চার ভাই । শ্রীরাম কে দেখে সকলেই মোহিত হতেন । তিনি হামাগুড়ি দিয়ে চলতেন , কোমোরে বন্ধনী , চরণের নূপুর ঝুমঝুম করে বাজতো । মাতা কৌশল্যা পুত্রকে ক্রোড়ে নিয়ে বাৎসল্য প্রদান করতেন । কৈকয়ী নিজেও রামকে অত্যাধিক স্নেহ করতেন । মন্থরা এসকল দেখে কৈকয়ীকে সর্বদা গাল মন্দ করে কুবুদ্ধি প্রদান করতো। কৈকয়ী এসকল এড়িয়ে চলতেন । কৌশল্যা দেবী সহ রাজবাড়ীতে দাস দাসীরা অদ্ভুদ দর্শন পেতেন । কখনো দেখতেন বালক রাম যেখানে যেখানে হাত পা ফেলছেন সেখানেই পদ্ম ফুটে উঠছে। কিংবা দেখতেন বালক রাম চন্দ্রের চরণ ছাপে ধ্বজা, পতাকা, চক্র, শঙ্খ আদি চিহ্ন । তাঁরা ভয় পেতেন । সন্ত তুলসী দাস গোস্বামী লিখেছেন- “তাঁর নীলকমল ( সদৃশ ) নবনীরদ ঘনশ্যাম তনুতে ছিল কোটি কামদেবের সৌন্দর্য । অরুনাভ শ্রীপাদপদ্মের নখের জ্যোতি দেখে মনে হচ্ছিল্ল রক্তকমল পত্র দলের উপর মুক্তা বিরাজিত । চরণ বজ্র, ধ্বজ, অঙ্কুশ চিহ্ন শোভিত ছিলো ।
তাঁর নূপুরের রুনুঝুনু মুনি মনকে মোহিত করেছিলো। তাঁর কটিতে ছিল কিঙ্কিনি আর উদরে ছিলো ত্রিবলী রেখা । সুবিশাল বাহু যুগল ছিল অতিশয় সুন্দর ; তাতে বিভিন্ন কর ভূষণ থাকাতে তা আরো সুন্দর লাগছিল । বুকে ব্যঘ্র নখের দ্যুতি ছিল । কণ্ঠে ছিল রত্নখচিত মণি হার । বক্ষে ভৃগু পদচিহ্ন দর্শন করলেই মন মুগ্ধ হয়ে যায় । তিনি ত্রিরেখাযুক্ত কম্বু কণ্ঠ সুশোভন চিবুকবিশিষ্ট । বদনে অসংখ্য অধরের মধ্যে দুটি অনুপম শোভা, নাসিকা গঠন সুচারু । মাতা কৌশল্যা শিশু রামকে নানা সাজে সজ্জিত করতেন ।”
( ক্রমশ: )
বাল্যকাল থেকেই সুমিত্রা নন্দন লক্ষণ , ভগবান রামের যেনো ছায়া ছিলেন। সর্বদা অগ্রজের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতেন । অপরদিকে ভরতের ছায়া ছিলেন সুমিত্রার অপর পুত্র শত্রুঘ্ন । অবশ্য চার ভ্রাতার মধ্যে ভাতৃত্ব বন্ধন ছিলো সুনিবিড় । রাজা দশরথের গৃহে বড় হতে লাগলেন চার ভাই । শ্রীরাম কে দেখে সকলেই মোহিত হতেন । তিনি হামাগুড়ি দিয়ে চলতেন , কোমোরে বন্ধনী , চরণের নূপুর ঝুমঝুম করে বাজতো । মাতা কৌশল্যা পুত্রকে ক্রোড়ে নিয়ে বাৎসল্য প্রদান করতেন । কৈকয়ী নিজেও রামকে অত্যাধিক স্নেহ করতেন । মন্থরা এসকল দেখে কৈকয়ীকে সর্বদা গাল মন্দ করে কুবুদ্ধি প্রদান করতো। কৈকয়ী এসকল এড়িয়ে চলতেন । কৌশল্যা দেবী সহ রাজবাড়ীতে দাস দাসীরা অদ্ভুদ দর্শন পেতেন । কখনো দেখতেন বালক রাম যেখানে যেখানে হাত পা ফেলছেন সেখানেই পদ্ম ফুটে উঠছে। কিংবা দেখতেন বালক রাম চন্দ্রের চরণ ছাপে ধ্বজা, পতাকা, চক্র, শঙ্খ আদি চিহ্ন । তাঁরা ভয় পেতেন । সন্ত তুলসী দাস গোস্বামী লিখেছেন- “তাঁর নীলকমল ( সদৃশ ) নবনীরদ ঘনশ্যাম তনুতে ছিল কোটি কামদেবের সৌন্দর্য । অরুনাভ শ্রীপাদপদ্মের নখের জ্যোতি দেখে মনে হচ্ছিল্ল রক্তকমল পত্র দলের উপর মুক্তা বিরাজিত । চরণ বজ্র, ধ্বজ, অঙ্কুশ চিহ্ন শোভিত ছিলো ।
তাঁর নূপুরের রুনুঝুনু মুনি মনকে মোহিত করেছিলো। তাঁর কটিতে ছিল কিঙ্কিনি আর উদরে ছিলো ত্রিবলী রেখা । সুবিশাল বাহু যুগল ছিল অতিশয় সুন্দর ; তাতে বিভিন্ন কর ভূষণ থাকাতে তা আরো সুন্দর লাগছিল । বুকে ব্যঘ্র নখের দ্যুতি ছিল । কণ্ঠে ছিল রত্নখচিত মণি হার । বক্ষে ভৃগু পদচিহ্ন দর্শন করলেই মন মুগ্ধ হয়ে যায় । তিনি ত্রিরেখাযুক্ত কম্বু কণ্ঠ সুশোভন চিবুকবিশিষ্ট । বদনে অসংখ্য অধরের মধ্যে দুটি অনুপম শোভা, নাসিকা গঠন সুচারু । মাতা কৌশল্যা শিশু রামকে নানা সাজে সজ্জিত করতেন ।”
( ক্রমশ: )
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন