কৃষ্ণের দুর্য্যোধনগৃহে গমন–আতিথ্য প্রত্যাখ্যান
বৈশম্পায়ন কহিলেন, ভূপাল! মহাত্মা গোবিন্দ এই রূপে স্বীয় পিতৃস্বসাকে আমন্ত্রণ ও প্রদক্ষিণ করিয়া অসামান্য শ্রীসম্পন্ন, পুরন্দরগৃহসদৃশ, বিচিত্রাসনযুক্ত দুর্য্যোধনের গৃহে গমন করিলেন। তিনি দ্বারবান্ কর্ত্তৃক অনিবারিত হইয়া ক্রমে ক্রমে তিন কক্ষা অতিক্রমপূর্ব্বক গিরিশৃঙ্গের ন্যায় সমুন্নত, সুধাধবল, পরম শোভাসম্পন্ন প্রাসাদে আরোহণ করিলেন এবং দেখিলেন, মহাবাহু দুর্য্যোধন বহুল ভূপাল ও কৌরবগণে পরিবেষ্টিত হইয়া মহার্হ আসনে উপবিষ্ট আছেন; দুঃশাসন, কর্ণ ও শকুনি তাঁহার সমীপে অত্যুৎকৃষ্ট আসনে সমাসীন রহিয়াছেন। মহাযশাঃ ধৃতরাষ্ট্রতনয় গোবিন্দকে অবলোকন করিবামাত্র অমাত্যগণ সমভিব্যাহারে আসন হইতে উত্থিত হইয়া তাঁহার অভ্যর্থনা করিলেন। বৃষ্ণিবংশাবতংস বাসুদেব এই রূপে দুর্য্যোধনের সহিত মিলিত হইয়া পরিশেষে বয়ঃক্রমানুসারে সমুদায় ভূপতিগণের সহিত আলাপ করিয়া বিবিধ আস্তরণে আস্তীর্ণ জাম্বূনদময় পর্য্যঙ্কে উপবিষ্ট হইলেন। দুর্য্যোধন তাঁহাকে গো, মধুপর্ক, জল, গৃহ ও রাজ্য সমর্পণ করিলে, অন্যান্য কৌরবগণ তাঁহাকে অর্চ্চনা করিতে লাগিলেন।
অনন্তর রাজা দুর্য্যোধন কৃষ্ণকে ভোজন করিতে নিমন্ত্রণ করিলে, তিনি তাহাতে সম্মত হইলেন না। তখন দুর্য্যোধন কর্ণের সমক্ষে শঠতাপূর্ণ হৃদয়ে মৃদুবাক্যে বাসুদেবকে কহিলেন, “হে জনার্দ্দন! এই সমুদায় অন্ন, পান, বসন ও শয়ন আপনার নিমিত্তই আনীত হইয়াছে; আপনি কি নিমিত্ত ইহা গ্রহণ করিতেছেন না? আপনি আমাদের উভয় পক্ষের সাহায্যকারী ও হিতানুষ্ঠানপরায়ণ এবং আমার পিতার আত্মীয় ও দয়িত। আপনি ধর্ম্মার্থের তত্ত্ব যথার্থ রূপে অবগত আছেন; অতএব আপনার নিকট উক্ত বিষয়ের কারণ অবগত হইতে ইচ্ছা করি।”
অনন্তর রাজা দুর্য্যোধন কৃষ্ণকে ভোজন করিতে নিমন্ত্রণ করিলে, তিনি তাহাতে সম্মত হইলেন না। তখন দুর্য্যোধন কর্ণের সমক্ষে শঠতাপূর্ণ হৃদয়ে মৃদুবাক্যে বাসুদেবকে কহিলেন, “হে জনার্দ্দন! এই সমুদায় অন্ন, পান, বসন ও শয়ন আপনার নিমিত্তই আনীত হইয়াছে; আপনি কি নিমিত্ত ইহা গ্রহণ করিতেছেন না? আপনি আমাদের উভয় পক্ষের সাহায্যকারী ও হিতানুষ্ঠানপরায়ণ এবং আমার পিতার আত্মীয় ও দয়িত। আপনি ধর্ম্মার্থের তত্ত্ব যথার্থ রূপে অবগত আছেন; অতএব আপনার নিকট উক্ত বিষয়ের কারণ অবগত হইতে ইচ্ছা করি।”
আতিথ্যপ্রত্যাখানের কারণ প্রদর্শন
মহামতি গোবিন্দ দুর্য্যোধনের বাক্য শ্রবণান্তর তাঁহার বিপুল বাহু গ্রহণ করিয়া মেঘগম্ভীর নিঃস্বনে স্পষ্টাক্ষর, অর্থপূর্ণ, হেতুগর্ভ বাক্য কহিতে লাগিলেন, “হে দুর্য্যোধন! দূতগণ কার্য্যসমাধানান্তেই ভোজন ও পূজা গ্রহণ করিয়া থাকে; অতএব আমি কৃতকার্য্য হইলেই আপনার পূজা গ্রহণ করিব।”
(অসম্পূর্ণ)
বিদুরগৃহে কৃষ্ণের অন্নভোজন
(অসম্পূর্ণ)
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন