সাধকের পক্ষে গুরু-বৈষ্ণবের সাক্ষাৎ সঙ্গ ও তার ফলে হরিকথা শ্রবণ মাধ্যমে যে মঙ্গল উদয় হয়, জড়বুদ্ধি হয়ে বহু জন্ম বিগ্রহ অর্চন করেও তা হয় না। শ্রীগুরু-বৈষ্ণব কথার মাধ্যমে যে ভাব প্রকাশ করেন, শ্রীবিগ্রহ কৃপা করে আমাদের দর্শন দিয়েও তা করেন না। যিনি অন্তর্যামী ভগবান, তিনিও আমাদের সঙ্গে কথা বলেন না।
শ্রদ্ধা যদি না হয়, তা হলে সাধু দর্শন বা ভগবৎ দর্শন হয় না। বরং মৎসরতা বা হিংসা এসে উপস্থিত হয়। হিংসা আসে কেন? অন্য লোক আমার উপরে উঠে যাচ্ছে, এ জন্যই হিংসা হয়। তাই শ্রীমদ্ভাগবতের গোড়ায়ই ভাগবত-ধর্মকে নির্মৎসর সাধুদের ধর্ম বলে বলা হয়েছে।
‘আমি সেবা করবো, আমি সেব্য নই’ -এই সুবুদ্ধি যদি উদিত হয়, তাহলে যেসব দুর্বুদ্ধি মাতা-পিতা বা লৌকিক আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে পেয়ে এসেছি বা শিখে এসেছি, সেগুলি কেটে যেতে পারে। তা না হলে ওই দুর্বুদ্ধিগুলি আরও পুষ্ট হতে থাকবে।
হরিকথা প্রসঙ্গ ও হরিসেবা থেকে বিমুখ হলেই সংসার ভোগ বাসনায় আবদ্ধই থাকতে হবে। কৃষ্ণসেবা বাদ দিয়ে অন্য অভিলাষ চরিতার্থ করা, পর চর্চা করা, পরস্পর কলহ প্রভৃতি কাজে দিন কেটে যাবে। বিশেষত মঠবাসীরা বৈষ্ণবসেবাকে সর্বপ্রধান মঙ্গল কাজ বলে বুঝতে না পারলে ভজন রাজ্যে দিন দিন অগ্রসর হতে পারবেন না। নিষ্কপটভাবে অকপট বৈষ্ণবগণের প্রীতির জন্য কায়-মনো বাক্যে অনুশীলন করতে হবে।
শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী গোস্বামী ঠাকুর
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন