সনাতন ধর্মের বংশ রক্ষার ধারায় ছিলেন প্রথম সত্য যুগের শুরুতে ব্রহ্মার মানসখসন্তানদের মধ্যে অন্যতম ঋষিগণ। পরবর্তীতে অন্যান্য ঋষির বংশ পরম্পরাও পরিলক্ষত হয়। এই একেকজন ঋষির বংশ পরম্পরা তাঁদের নামে একেকটি গোত্র হিসেবে পরিচিত লাভ করে। সে হিসেবে একই গোত্রের বংশীয়গণ পরস্পর ভাইবোন। এমনকি একই বংশের স্বজনেরা পরবর্তীতে জীবিকা নির্বাহের প্রয়োজনে, সাধন-ভজন, পরমেশ্বর ভগবানের বাণী প্রচারের প্রয়োজনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়লে পিতার নামের সাথে গোত্র নামের গুরুত্ব প্রকাশ পায়। যেমন- ঋষি কশ্যপ মুনির বংশধরেরা নিজেদের “কাশ্যপ গোত্রস্য” বা কশ্যপ মুনির বংশ পরিচয় দিয়ে থাকেন।
এভাবে পর্যায়ক্রমে আরো অনেক গোত্রের নাম পাওয়া যায়। সনাতন ধর্মে প্রকট আছে, অহরহ যেসব গোত্র দেখা যায় তা হলো,
কাশ্যপ গোত্র,
জামদগ্ন্য গোত্র,
শিব গোত্র,
মৌদগল্য গোত্র,
ভার্গব গোত্র,
শান্ডিল্য গোত্র,
আলম্বায়ন গোত্র ইত্যাদি।
একই গোত্রের লোকজনকে সমগোত্র বলা হয়। সোজা কথা এরা পরস্পর নিকট-আত্মীয়। আর অন্যান্য গোত্রের লোক জনের সাথে তাঁরা পরস্পর আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ এই কারণে যে, আমরা সবাই প্রপিতামহ ব্রহ্মা থেকে এসেছি যদিও আমাদের আদি পিতা-মাতা যথাক্রমে মনু ও শতরূপা।
সমগোত্র:-
সমগোত্র মানে একই পিতৃ বংশ। যেমন কাশ্যপ গোত্র। মুনি কশ্যপ ঋষির বংশধর। ব্রহ্মার মানস পুত্রগণের থেকে আগত প্রতিটি বংশ এক একটি গোত্র বা রক্তের ধারায় প্রবাহিত। একই গোত্র চারটি বর্ণে থাকতে দেখা যায়। কারণ, একই ঋষির সন্তানরা একেক সময়ে একেক কাজে মনোযোগী হয়ে থাকে। যে শাস্ত্র অধ্যয়ণ বা বুদ্ধিভিত্তিক বা আধুনিক সমাজে যাকে বুদ্ধিজীবি বলা হয়, জীবিকা অবলম্বন করে সে ব্রাহ্মণ হিসেবে, রাজধর্ম পালনকারী ক্ষত্রিয়, ব্যবসা-বাণিজ্যে মনোযোগী হলে সে বৈশ্য আর এসব পেশাগত লোকদের সেবা করেই সন্তুষ্ট অর্জনে আগ্রহীরা শুদ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করে থাকে। এ গুণাবলী সমূহ কেউ জন্মে প্রাপ্ত হয় না, অর্জন করতে হয়।
তাই বর্নাশ্রম সঠিক কিন্তু বর্ণপ্রথা ভুল ও মিথ্যা যা ক্ষত্রিয় ধর্ম পালনে পুরোপুরি অপারগ রাজা বল্লাল সেন, তার রাজ অপকর্ম ঢাকতে শুরু করেছেন। ধার্মিক ও পন্ডিতদের অত্যাচার করে রাজ্য থেকে বিতাড়িত করে। আর এটা পুরোপুরি কার্যকর করেছেন তারই পুত্র রাজা লক্ষ্মণ সেন।
অবশ্য বিষ্ণুপূরাণ ও ভবিষ্য পূরাণে উল্লেখিত অপকর্ম করার সাজা হিসেবে যথারীতি পরবর্তীতে শোচনীয় পরাজয় পুর্বক রাজ্য হারাতে হয়েছ তাকে! সনাতন ধর্মে নিকটাত্মীয় বা সমগোত্রে বিবাহ নিষিদ্ধ। কারণ হিসেবে বৈদিক শাস্ত্রসমূহ বিশেষ করে মনুসংহিতায় বলা হচ্ছে, একই রক্তের সম্পর্কের কারো সাথে বিবাহ হলে সন্তান বিকলাঙ্গ, শারীরিক বা মানসিক প্রতিবন্ধী, মেধা ও বুদ্ধিহীন হয়। শিশু নানা রোগে জরাজীর্ণ হয়ে থাকে। তবে একান্তই প্রয়োজন হলে, পাত্র-পাত্রী না পাওয়া গেলে ১৪ জ্ঞাতি-গোষ্ঠি পেরিয়ে গেলে তখন বিবাহ করা যেতে পারে। তবে তা যথাসম্ভব এড়িয়ে চললেই ভালো।
চিকিৎসা বিজ্ঞানও এটি স্বীকার করেছে। তারা বলছেন, নিকটাত্মীয় বা কাজিন যেমন, কাকাতো, মামাতো, মাসতুতো, পিসতুতো ভাই বোনদের মধ্যে বিয়ের পরিণামে যে সন্তান হয়, তার মধ্যে জন্মগত ত্রুটি দেখা দেয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। ”দ্য ল্যানসেট” সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণা নিবন্ধে বিজ্ঞানীরা এ তথ্য জানিয়েছেন।
জয় বৈদিক সভ্যতার জয়
পরমকরুণাময় গোলোকপতি সচ্চিদানন্দ ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ও তাঁর একান্ত হ্লাদিনী শক্তি শ্রীমতী রাধারাণী আর সকল বৈষ্ণব ভক্ত পার্ষদদের শ্রীচরণকমলে নিরন্তর প্রার্থনা করি, সকলের জীবন যেনো রাধা-কৃষ্ণময়তায় পূর্ণ হয়ে, মঙ্গলময়, কল্যাণময়, প্রেমময়, ভক্তিময়, মুক্তিময়, শান্তিময়, সুন্দরময় এবং আনন্দময় হয়ে ওঠে সর্বদা।
"হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ
কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে
হরে রাম হরে রাম
রাম রাম হরে হরে!!"
!!জয় হোক সকল ভক্তদের!!