০৬ এপ্রিল ২০২১

সহজ কালী 'পূজা পদ্ধতি'

 সৃষ্টিকর্তা একজন আছেন এবং তিনি নিরাকার, তিনি সর্বত্রই বিরাজমান এ বিশ্বাস সকল মানুষই পোষণ করে। তিনি করুনাময় জীব-জগতের পালন কর্তা। কিন্তু মানুষের মন অতি চঞ্চল, কল্পনায় অবগাহন করে চোখের নিমিষে কেউ বিশ্বব্রহ্মানন্ড ঘুরে আসে, কেউ গাড়ি, বাড়ি, বিত্ত, বৈভব বৃত্তি গড়ে তোলে, আবার কেউ সেই নিরাকারের নির্দিষ্ট রুপ কল্পনার মধ্য দিয়ে গুনসম্পন্ন দেব-মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলে। অন্তরের খাঁটি বিশ্বাস দ্বারা ধর্ম জেগে ওঠে কর্মের মাধ্যমে। সেক্ষেত্রে নিরাকার সৃষ্টিকর্তার আরাধনার লক্ষ্যে তাঁর একটি রূপ বা মুর্তি স্থাপনের মাধ্যমে শ্রদ্ধাভরে পূজো অর্চনা, গুনগান করে সাধনায় সিদ্ধি লাভের উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে সাধারণ ভক্তগণ প্রতিমা পূজা করে থাকেন। ঈশ্বর, ভগবান বা পরমপিতার শক্তি সর্বত্রই বিরাজমান। অদৃশ্য সেই মহাশক্তিকে নিরাকার ভাবনা ধ্যান বা যজ্ঞের দ্বারা আয়ত্ব করা সাধারণ ভক্তের জন্য দুসাধ্য ব্যাপার। কেননা সংসারে স্বাত্ত্বিক রাজষিক, তামসিক এই তিন গুণের মানুষ আছেন। বর্তমান সময়ে তামসিক ও রাজষিক মানুষের সংখ্যা বেশি। তাই দেব-দেবীর মুর্তি বা প্রতিমা স্থাপনের মাধ্যমে সাধন ভজনে দ্রুততার সাথে নিবিষ্ট হওয়া বা মনোনিবেশ করা সম্ভব। তন্ত্রশাস্ত্র বলেছে, ‘ গাভীর দুগ্ধ তাহার রক্ত হইতে সম্ভুত। রক্ত গাভীর সর্বাঙ্গেই বিরাজিত তাই বলিয়া গাভীর যে কোন অঙ্গে হস্থার্পণ করিলেই দুগ্ধ পাওয়া যায় না। একমাত্র স্তন হইতেই উহা ক্ষরিত হয়। সেই শ্রী ভগবানের উপস্থিতি সর্বত্র সকল সময়ে থাকিলেও তাঁহার স্বরূপ উপলদ্ধি প্রতিমাতেই সর্বাঙ্গসুন্দররূপে হইয়া থাকে।’.

সনাতনী হিন্দু সংস্কৃতিতে তন্ত্রশাস্ত্র মত প্রবলভাবে প্রভাব বিস্তার করে আছে। তান্ত্রিক মতে পূজায় প্রতীক বা প্রতিমা থাকা আবশ্যক। এক্ষেত্রে পূজার সকল অর্ঘ প্রতিমা বা মুর্তিকে অবলম্বন করে আবর্তমান। আর বৈদিক মতে, অগ্নিকে সকল শক্তি বা দেবতার উৎস বিশ্বাস ধারণ করে অগ্নিতে দেবতার উদ্দেশ্যে যজ্ঞাহুতি প্রদান করা হয়। আগুন বা অগ্নিকে পবিত্র বা নির্মল শক্তি হিসেবে গন্য করা হয়। অগ্নিতে সকল মোহ দ্বেষ, কাম-ক্রোধ বিসর্জ্জন দিলে আত্মশুদ্ধি ঘটে।

শ্রীমদ্ভাগবত শাস্ত্র অষ্ট প্রকার বিগ্রহের কথা বলেছে ----

‘শৈলী দারুময়ী লৌহ লেপ্যা লেখ্যা সৈকতী।

মনোময়ী মনিময়ী প্রতিমাষ্টবিধা স্মৃতা॥’

.


------- শিলাময়ী, কাষ্ঠময়ী, লৌহ (সুবর্ণাদিময়ী) লেপ্যা, (মৎচন্দনাদিময়ী) লেখ্যা (চিত্রপটময়ী) বালুকাময়ী, মনোময়ী ও মনিময়ী এই আট প্রকার প্রতিমা হইতে পারে।’

তাই মানবজীবনকে স্বার্থক করে তুলতে স্ব স্ব আরাধ্য দেবতা, ঈশ্বর, ভগবান, পরমপিতা যে যে নামেই সম্বোধন করুন না কেন সেই নিরাকার অসীমকে একটি রূপকল্পের গন্ডিতে এনে নিয়মতান্ত্রিক ভাবে সাধন-ভজন করলে তাঁকে পাওয়ার উচ্ছাসে জীবন আন্দময় হয়ে ওঠে এবং সেখানেই প্রতিমা পূজা বা যজ্ঞের সার্থকতা।

ভগবদ্ গীতায় বলা হয়েছে ----

‘ময়া তশুমিদং সবং জগদব্যক্ত মুর্তিন।’ ----- অর্থাৎ আমি অব্যক্তরূপে জগৎ সংসার ব্যপিয়া আছি। যিনি ব্যক্ত সাকার; তিনিই অবতার, আবার অব্যক্ত অবস্থায় নিরাকার। অর্থাৎ প্রতীক বা প্রতিমা অব্যক্ত নিরাকার ব্রহ্ম বা আরাধ্য দেবতার প্রতিনিধি।

আর কয়েকদিন বাদেই দীপান্বিতা, মনের অন্ধকার দূর করতে প্রদীপ জ্বালিয়ে আলোকিত করে সেখানে কালীমুর্তি স্থাপন করা এই দিনের মুখ্যকর্ম। আর সেই কর্মেই ভৌতিক জীবনের সাফল্যতা।

এই কালীপূজা বাংলায় প্রগৈতিহাসিক কাল থেকেই চলে আসছে। রাজা থেকে প্রজা, ধনী থেকে দরিদ্র, কেউই বাদ নেই, শক্তিমান হতে সবাই আশা করে। তাই দেখি -- বার ভূইয়াদের অন্যতম যশোহরের রাজা প্রতাপাদিত্য স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে 'যশোরেশ্বরী' কালিকা মায়ের মন্দির প্রতিষ্ঠা করে এবং শক্তিমন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে প্রতাপশালী হয়ে ওঠেন। ভারতচন্দ্র রায় গুনকর তাঁর অন্নদামঙ্গল কাব্যে প্রতাপাদিত্য সম্পর্কে লিখেছেন ---

'যশোর নগর ধাম .... প্রতাপ আদিত্য নাম

মহারাজা বঙ্গজ কায়স্থ ।

নাহি মানে বাদশায় .... কেহন নাহি আটে তায়

ভয়ে সব ভূপতি দ্বারস্থ ।।

বরপুত্র ভবানীর .... প্রিয়তম পৃথিবীর

বাহান্ন হাজার যার ঢালী ।

ষোড়ষ হলকা হাতি .... অযুত তুরঙ্গ সাতি

যুদ্ধকালে সেনাপতি কালী ॥

.

এই আদ্যাশক্তি পরমাপ্রকৃতি যদিও তত্ত্বত অসঙ্গা নির্বিকারা ব্রহ্মচৈতন্যস্বরূপা তবুও নিজ শক্তিবলে তিনিই জগৎ রূপে প্রকাশিত হয়েছেন। সেই আদ্যাশক্তি সূক্ষ্মা, স্থূলা, ব্যক্ত ও অব্যক্ত স্বরূপিণী। নিরাকারা হয়েও সাকারা। তিনি কৃপা না করলে কে তাঁকে জানতে পারে?

একজন তান্ত্রিক প্রাকৃতিক শক্তিকে চৈতন্যময়ী মনে করে এবং সেই চৈতন্যময়ী শক্তিকে বাঙালি হিন্দুর মানবীয় উপলব্ধির সীমানায় নিয়ে এসে সেই চৈতন্যময়ী শক্তির সঙ্গে মাতাপিতার সর্ম্পক স্থাপন করে, সেই চৈতন্যময়ী শক্তিকে দেবীরূপে কল্পনা করে পূজা করে। তন্ত্রের প্রধান একটি সিদ্ধান্তই হল এই যে প্রাকৃতিক শক্তিকে চৈতন্যময়ী মনে করা। কিন্তু, বিশ্বজগতে সবই তো শক্তির সমাহার। যে শক্তিকে জড়বিজ্ঞান নিয়ন্ত্রণে আনতে চায়। আধুনিক সভ্যতা এই মূলতত্ত্বের ওপরই প্রতিষ্ঠিত।

প্রকৃতির সূত্র আবিস্কার করে এই শক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করা কতটা যৌক্তিক এই প্রশ্নও তো আজকাল উঠছে । এই দৃষ্টিভঙ্গি হটকারী কিনা, পরিবেশ বিপর্যয়ের মূলে এই দর্শন সক্রিয় কিনা- এসব প্রশ্নও নিয়েও তো আমরা আজ উদ্বিগ্ন।

তন্ত্র কিন্তু প্রাকৃতিক শক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায় না। তার কারণ, তন্ত্র প্রাকৃতিক শক্তিকে চৈতন্যময়ী জেনেছে, 'মা' বলে জেনেছে, মায়ের দেবীপ্রতিমা কল্পনা করেছে; দেবী মা (প্রকৃতি) কে একজন তান্ত্রিক নিষ্ঠাভরে ভজনা করতে চায়, আরাধনা করতে চায়, পূজা করতে চায়। পাশাপাশি একজন তান্ত্রিক মনে করেন, একজন ভক্ত চৈতন্যময়ী শক্তির অনুগত থাকলে চৈতন্যময়ী শক্তির কৃপায় তার অশেষ কল্যাণ সাধিত হতে পারে।

..............

আসুন অনেক মন্ত্রের মধ্যে উচ্চারনে সহজ এবং সরল একটি সহজ প্রক্রিয়া এবং ধ্যান মন্ত্র জেনে নিই -----

৺রী মায়ের ছবি/মূর্ত্তি/ঘট/পটের সামনে শুদ্ধাসন পেতে বসুন ------------

ভক্তিযুক্ত মনে ----------

-

১ম ধাপ --- (করজোড়ে নীচের ধ্যান মন্ত্র পাঠ করুন)

ওঁ শবারুঢ়াং মহাভীমাং ঘোরদংস্ট্রাং বরপ্রদাম।

হাস্যযুক্তাং ত্রিনেত্রাঞ্চ কপালকর্ত্তৃকাকরাম।।

মুক্তকেশীং লোলজিহ্বাং পিবন্তীং রুধিরং মুহু।

চতুর্ব্বাহু যুতাং দেবীং বরাভয়করাং স্মরেৎ।।


২য় ধাপ ----- (গায়ত্রী দ্বারা মাতৃমন্ত্র জাগ্রত বা শক্তিশালী করুন)

মায়ের গায়ত্রী মন্ত্র -- ওঁ কালিকায়ৈ বিদ্মহে শশ্মানবাসিন্যৈ ধিমহি তন্নো ঘোরে প্রচোদয়াৎ ……… (১০ বার জপ করুন)

এর পর নিচের মন্ত্রে হাতে একটু জল নিয়ে জপ বিসর্জন করুন ----

ওঁ গুহ্যাতিগুহ্য গোপ্তৃীং ত্বং গৃহানস্মতং কৃতং জপো,

সিদ্ধির্ভবতু মে দেবি তৎ প্রসাদৎ সুরেশ্বরী৷৷


৩য় ধাপ ------ এবার পঞ্চোপচারে দেবীর পূজা করুন -----

ক্রীং এষ গন্ধঃ শ্রীমৎ দক্ষিণা কালিকায়ৈ নমঃ

ক্রীং এতানি পুষ্পানি শ্রীমৎ দক্ষিণা কালিকায়ৈ নমঃ

ক্রীং এষ ধূপঃ শ্রীমৎ দক্ষিণা কালিকায়ৈ নমঃ

ক্রীং এষ দীপঃ শ্রীমৎ দক্ষিণা কালিকায়ৈ নমঃ

ক্রীং এতৎ নৈবেদ্যং শ্রীমৎ দক্ষিণা কালিকায়ৈ নমঃ


৪র্থ ধাপ ------ এবার প্রণাম করুন ------


মা কালীর প্রণাম মন্ত্র

---------------------------------

ওঁ সর্বমঙ্গল মঙ্গল্যে শিবে সর্বার্থসাধিকে।

শরণ্যে ত্র্যম্বকে গৌরী নারায়ণি নমোহস্তুতেঃ।।

ওঁ সৃষ্টি-স্থিতি বিনাশানাং শক্তিভৃতে সনাতনী।

গুণাশ্রয়ে গুণময়ী নারায়ণি নমোহস্তুতেঃ।।

ওঁ শরণাগত দীনার্ত পরিত্রাণ পরায়ণে।

সর্বস্যার্তি হরে দেবী নারায়ণি নমোহস্তুতে।।

ওঁ জয়ন্তী মঙ্গলা কালী ভদ্রকালী কপালিনী।

দুর্গা শিবা ক্ষমা ধাত্রী স্বহা স্বধা নমোঽস্তুতে।।


৫ম ধাপ ------- (মায়ের কবচ পাঠ করুন)


কালীকবচম

========

ভৈরব উবাচ --

কালিকা যা মহাবিদ্যা কথিতা ভুবি দুর্ল্লভা।

তথাপি হৃদয়ে শল্যমস্তি দেবি কৃপাং কুরু।।

কবচন্ত মহাদেবী কথয়সানুকম্পা।

যদি নো কথ্যতে মাতব্বিমুঞ্চামি তদা তনুম।।


দেব্যুবাচ --

শংকাপি জায়তে বৎস তব স্নেহাৎ প্রকাশিতম।

ন বক্তব্যং ন দ্রষ্টব্যমতি গুহ্যতমং মহৎ।।

কালিকা জগতাং মাতা শোকদুঃখাদি বিনাশিনী।

বিশেষত কলি যুগে, মহাপাতকহারিণী।।

কালী মে পুরুতঃ পাঠু পৃষ্ঠতশ্চ কপালিনী।

কুল্বা মে দক্ষিনে পাতু করণৌ চগ্রোপ্রভামতা।।

বদনং পাতু মে দীপ্তা নীলা চ চিবুকং সদা।

ঘনা গ্রীবাং সদা পাতু বলাকা বাহুযুগ্মকম।।

মাত্রা পাতু করদ্বন্দং বক্ষো মুদ্রা সদাবতু।

মিতা পাতু স্তনদ্বন্দং যোনিং মন্ডল দেবতা।

ব্রাম্মী মে জঠরং পাতু, নাভিং নারায়ণীং তথা।

ঊরু মাহেশ্মরী নিত্যং চামুন্ডা পাতু লিঙ্গকম।

কৌমারী চ কটিং পাতু তথৈব জানুযুগ্মকম।

অপরাজিতা পাদৌ মে বারাহী পাতু চাঙ্গুলীঃ।

সন্ধিস্থানং নারসিংহী পত্রস্থা দেবতাবতু

রক্ষাহীনঞ্চ যৎ স্থানং বর্জ্জিতং কবচেন তু।

তৎ সর্ব্বং রক্ষ মে দেবী কালিকে ঘোর দক্ষিণে।

ঊর্দ্ধং-মধ্যস্তথা দিক্ষু পাতু দেবী স্বয়ং বপুঃ।।

হিংস্রেভ্যঃ সর্ব্বদা পাতু সাধকঞ্চ জলাধিকাৎ।

দক্ষিণা কালিকে দেবী ব্যাপকত্তে সদাবতু।

ইদং কবচমজ্ঞাতা যো জপেদ্দেবদক্ষিনাম

ন পুজাফলমাপ্নোতি বিঘ্নস্তস্য পদে পদে।

কবচেনাবৃতো নিত্যং যত্র তত্রৈব গচ্ছতি

তত্র তত্রভয়ং তস্য ন ক্ষোভং বিদ্যতে ক্কচিৎ।

----------- দক্ষিনকালিকা কবচং সম্পূর্ণম্ -----


৬ষ্ঠ ধাপ ------ এর পর আবার জপ, নিচে জপ মন্ত্র দেওয়া ----- জপ করুন

*** ক্রীং কালিকায়ৈ নমঃ


এর পর নিচের মন্ত্রে হাতে একটু জল নিয়ে জপ বিসর্জন করুন ----

ওঁ গুহ্যাতিগুহ্য গোপ্তৃ ত্বং গৃহানস্মতং কৃতং জপং,

সিদ্ধির্ভবতু মে দেবি তৎ প্রসাদৎ সুরেশ্বরী৷৷


৭ম ধাপ ------ এরপর শ্রীশ্রীদক্ষিণকালিকা স্তোত্রম্ পাঠ করুন ----


শ্রীশ্রীদক্ষিণকালিকা স্তোত্রম্

======================

ওঁ কৃশোদরি মহাচণ্ডী মুক্তকেশিং বলীপ্রিয়ে।

কুলাচারপ্রসন্নাস্যে নমস্তে শঙ্করপ্রিয়ে।।

ঘোরদংষ্ট্রে কোটোরাক্ষি কিটিশব্দ প্রসাধিনী।

ঘুরঘোররাবাস্ফারে নমস্তে চিতাবাসিনী।।

বন্ধুকপুষ্পসঙ্কাশে ত্রিপুরে ভয়নাশিনী।

ভাগ্যোদয়সমুৎপন্নে নমস্তে বরবন্দিনী।।

জয় দেবি জগদ্ধাত্রী ত্রিপুরাদ্যে ত্রিদেবতে।

ভক্তেভ্যো বরদে দেবি মহষঘ্নি নমোহস্তুতে।।

ঘোরবিঘ্নবিনাশায় কুলাচারসমৃদ্ধয়ে।

নমমি বরদে দেবি মুণ্ডমালা বিভূষনে।।

রক্তধারাসমাকীর্ণে করকাঞ্চীবিভূষিতে।

সর্ব্ববিঘ্নহরে কালী নমস্তে ভৈরবপ্রিয়ে।।

নমস্তে দক্ষিণামূর্ত্তে কালী ত্রিপুরভৈরবী।

ভিন্নাঞ্জনচয়প্রক্ষে প্রবীণশবসংস্থিতে।।

গলচ্ছ্রোণিতধারাভিঃ স্মেরাননসরোরুহে।

পীনোন্নতকুচদ্বন্দ্বো নমস্তে ঘোরদক্ষিণে।।

আরক্তমুখশান্তাভির্নেত্রালিভির্বিরাজিতে।

শবদ্বয় কৃতোত্তংসে নমস্তে মদবিহ্বলে।।

পঞ্চাশন্মুণ্ডঘটিতমালা লোহিত লোহিতে।।

নানামণিবিশোভাঢ্যে নমস্তে ব্রহ্মসেবিতে।।

শবাস্থিকৃতকেয়ুর, শঙ্খ-কঙ্কন-মণ্ডিতে।

শববক্ষঃ সমারুঢ়ে নমস্তে বিষ্ণুপূজিতে।।

শবমাংস কৃতগ্রাসে অট্টহাসে মুহুর্মুহু।

মুখশীঘ্রস্মিতামোদে নমস্তে শিববন্দিতে।।

খড়্গমুণ্ডধরে বামে সব্যে (অ) ভয়বরপ্রদে।

দন্তুরে চ মহারৌদ্রে নমস্তে চণ্ডনাদিতে।।

ত্বং গতিঃ পরমা দেবি ত্বং মাতা পরমেশ্বরী।

ত্রাহি মাং করুণাসাদ্রে নমস্তে চণ্ডনায়িকে।।

নমস্তে কালিকে দেবি নমস্তে ভক্তবৎসলে।

মুর্খতাং হর মে দেবি প্রতিভা জয়দায়িনী।।

গদ্যপদ্যময়ীং বাণীং তর্কব্যাকরণাদিকম্।

অনধীতগতাং বিদ্যাং দেহি দক্ষিণকালিকে।।

জয়ং দেহি সভামধ্যে ধনং দেহি ধনাগমে।

দেহি মে চিরজীবিত্বং কালিকে রক্ষ দক্ষিণে।।

রাজ্যং দেহি যশো দেহি পুত্রান্ দারান্ ধনং তথা।

দেহান্তে দেহি মে মুক্তিং জগন্মাতঃ প্রসীদ মে।।

ওঁ মঙ্গলা ভৈরবী দুর্গা কালিকা ত্রিদশেশ্বরী।

উমা হৈমবতীকন্যা কল্যাণী ভৈরবেশ্বরী।।

কালী ব্রাহ্মী চ মাহেশী কৌমারী বৈষ্ণবী তথা।

বারাহী বাসলী চণ্ডী ত্বাং জগুর্ম্মুনয়ঃ সদা।।

উগ্রতারেতি তারেতি শিবত্যেকজটেতি চ।

লোকোত্তরেতি কালেতি গীয়তে কৃতিভিঃ সদা।।

যথা কালী তথা তারা তথা ছিন্না চ কুল্লকা।

একমূর্ত্তিশ্চতুর্ভেদ দেবি ত্বং কালিকা পুরা।।

একত্রিবিধা দেবী কোটিধানন্তরূপিনী।

অঙ্গাঙ্গিকৈর্নামভেদৈঃ কালিকেতি প্রগীয়তে।

শম্ভুঃ পঞ্চমুখেনৈব গুণান্ বক্তুং ন তে ক্ষমঃ।

চাপল্যৈর্যৎ কৃতং স্তোত্রং ক্ষমস্ব বরদা ভব।।

প্রাণান্ রক্ষ যশো রক্ষ পুত্রান্ দারান্ ধনং তথা।

সর্ব্বকালে সর্ব্বদেশে পাহি মাং দক্ষিণকালিকে।।

যঃ সংপূজ্য পঠেৎ স্তোত্রং দিবা বা রাত্রিসন্ধ্যায়োঃ।

ধনং ধান্যং তথা পুত্রং লভতে নাত্র সংশয়।।


শ্রীমন্মহাকালবিরচিত শ্রীমদ্দক্ষিণকালিকাস্তোত্রং সম্পূর্ণম্।।


৮ম ধাপ ------ এবার বন্দনা করুন ---

ওঁ মহামায়ে জগন্মাত কালিকে ঘোর দক্ষিণে ৷

গৃহাণ্ বন্দনে দেবী নমস্তে শংকর প্রিয়ে ৷৷

ওঁ প্রচন্ডে পুত্রদে নিত্যং সুপ্রীতে সুর নায়িকে ৷

কুলদ্যোতকরে চোগ্রে জয়ং দেহী নমোহস্তুতে ৷৷


৯ম ধাপ ----------- এর পর অপরাধ ক্ষমা প্রার্থনা করে নিচের মন্ত্র পড়ে কাজ শেষ করে আপনার সমস্যা বা মনোবাসনা মায়ের চরণে নিবেদন করুন -----

ওঁ যদক্ষরং পরিভ্রষ্টং মাত্রাহীনঞ্চ য়দ্ ভবেৎ ৷

পুরনং ভবতু যৎ সর্ব, তৎ প্রসাদৎ সুরেশ্বরী ৷৷


(কৃতজ্ঞতা স্বীকার -- শ্রী গুরুদেব)

লিখেছেনঃ Prithwish Ghosh

Share:

Total Pageviews

বিভাগ সমুহ

অন্যান্য (91) অবতারবাদ (7) অর্জুন (4) আদ্যশক্তি (68) আর্য (1) ইতিহাস (30) উপনিষদ (5) ঋগ্বেদ সংহিতা (10) একাদশী (10) একেশ্বরবাদ (1) কল্কি অবতার (3) কৃষ্ণভক্তগণ (11) ক্ষয়িষ্ণু হিন্দু (21) ক্ষুদিরাম (1) গায়ত্রী মন্ত্র (2) গীতার বানী (14) গুরু তত্ত্ব (6) গোমাতা (1) গোহত্যা (1) চাণক্য নীতি (3) জগন্নাথ (23) জয় শ্রী রাম (7) জানা-অজানা (7) জীবন দর্শন (68) জীবনাচরন (56) জ্ঞ (1) জ্যোতিষ শ্রাস্ত্র (4) তন্ত্রসাধনা (2) তীর্থস্থান (18) দেব দেবী (60) নারী (8) নিজেকে জানার জন্য সনাতন ধর্ম চর্চাক্ষেত্র (9) নীতিশিক্ষা (14) পরমেশ্বর ভগবান (25) পূজা পার্বন (43) পৌরানিক কাহিনী (8) প্রশ্নোত্তর (39) প্রাচীন শহর (19) বর্ন ভেদ (14) বাবা লোকনাথ (1) বিজ্ঞান ও সনাতন ধর্ম (39) বিভিন্ন দেশে সনাতন ধর্ম (11) বেদ (35) বেদের বানী (14) বৈদিক দর্শন (3) ভক্ত (4) ভক্তিবাদ (43) ভাগবত (14) ভোলানাথ (6) মনুসংহিতা (1) মন্দির (38) মহাদেব (7) মহাভারত (39) মূর্তি পুজা (5) যোগসাধনা (3) যোগাসন (3) যৌক্তিক ব্যাখ্যা (26) রহস্য ও সনাতন (1) রাধা রানি (8) রামকৃষ্ণ দেবের বানী (7) রামায়ন (14) রামায়ন কথা (211) লাভ জিহাদ (2) শঙ্করাচার্য (3) শিব (36) শিব লিঙ্গ (15) শ্রীকৃষ্ণ (67) শ্রীকৃষ্ণ চরিত (42) শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু (9) শ্রীমদ্ভগবদগীতা (40) শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা (4) শ্রীমদ্ভাগব‌ত (1) সংস্কৃত ভাষা (4) সনাতন ধর্ম (13) সনাতন ধর্মের হাজারো প্রশ্নের উত্তর (3) সফটওয়্যার (1) সাধু - মনীষীবৃন্দ (2) সামবেদ সংহিতা (9) সাম্প্রতিক খবর (21) সৃষ্টি তত্ত্ব (15) স্বামী বিবেকানন্দ (37) স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (14) স্মরনীয় যারা (67) হরিরাম কীর্ত্তন (6) হিন্দু নির্যাতনের চিত্র (23) হিন্দু পৌরাণিক চরিত্র ও অন্যান্য অর্থের পরিচিতি (8) হিন্দুত্ববাদ. (83) shiv (4) shiv lingo (4)

আর্টিকেল সমুহ

অনুসরণকারী

" সনাতন সন্দেশ " ফেসবুক পেজ সম্পর্কে কিছু কথা

  • “সনাতন সন্দেশ-sanatan swandesh" এমন একটি পেজ যা সনাতন ধর্মের বিভিন্ন শাখা ও সনাতন সংস্কৃতিকে সঠিকভাবে সবার সামনে তুলে ধরার জন্য অসাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে গঠন করা হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য নিজের ধর্মকে সঠিক ভাবে জানা, পাশাপাশি অন্য ধর্মকেও সম্মান দেওয়া। আমাদের লক্ষ্য সনাতন ধর্মের বর্তমান প্রজন্মের মাঝে সনাতনের চেতনা ও নেতৃত্ত্ব ছড়িয়ে দেওয়া। আমরা কুসংষ্কারমুক্ত একটি বৈদিক সনাতন সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এ পথচলায় আপনাদের সকলের সহযোগিতা কাম্য । এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। সনাতন ধর্মের যে কেউ লাইক দিয়ে এর সদস্য হতে পারে।