পুজো করার যত পদ্ধতি আছে, তারমধ্যে যজ্ঞ সর্ব্বশ্রেষ্ঠ। যে কোন ধরনের পূজা সম্পূর্ণ হয় যজ্ঞ সম্পদানের মাধ্যমে। অনেকেই বাড়িতে পুজো করেন সাথে বিশেষ যজ্ঞের আয়োজনও করেন। তাতে নাকি বিশেষ ফল লাভ করা যায়। বলা হয়, যজ্ঞ হিন্দুধর্মের অন্যতম কৃত্যানুষ্ঠান। দেবতার অনুগ্রহ লাভের উদ্দেশ্যে বেদমন্ত্র উচ্চারণ করে অগ্নিতে আহুতি প্রদান অনুষ্ঠানই যজ্ঞ। এর মাধ্যমে সম্পদ বা সমৃদ্ধি লাভ, শত্রুর বিনাশ, যুদ্ধ জয়, রোগারোগ্য ও স্বর্গ লাভ ইত্যাদি কামনা করা হয়। বৈদিক যুগে এর উদ্ভব ঘটে এবং ক্রমশ তা সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়।
বৈদিক শাস্ত্রানুসারে, যজ্ঞের মাধ্যমে যা অগ্নাহুতি দেওয়া হয় তা সম্পূর্ণরূপে দেবতার কাছে পৌছায়। এজন্যই বৈদিক ঋষিরা যজ্ঞের কথা বার বার বলে গেছেন বেদের মাধ্যমে।
বিভিন্ন ধরনের সমসার সরল সমাধান যজ্ঞের মাধ্যমে সম্ভব, তা সে অর্থ, কর্ম, শারীরিক বা বশীকরণ যাই হোক না কেন।
নব-গ্রহের সমসার জন্য নব-গ্রহ যজ্ঞ , সন্তান সমসার জন্য গোপাল-হোম , আর্থিক সমসস্যার জন্য মহা-লক্ষ্মীর যজ্ঞ ইত্যাদি করার বিধান দেওয়া আছে আমাদের শাস্ত্রাগুলোতে।
কিন্তু যজ্ঞ করার সাথে সাথে বা একবার করার পরপরই ফলপ্রসু হবে এমন তা নয়। যজ্ঞ সাধারণত নির্দিষ্ট সময় পরপর বা প্রতিদিন করার বিধান দেওয়া আছে শাস্ত্রে এবং তাহলেই ফলের আশা করা যেতে পারে।
যজ্ঞ করার সময় শুধু কয়েকটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে ---
★ যজ্ঞের আগুন যেন নিভে না যায়।
★ আহুতি-মন্ত্র শুদ্ধ উচ্চারণ করতে হবে।
★ শুদ্ধ ঘি হতে হবে গরুর দুধের।
★ প্রতিটা যজ্ঞের নির্দিষ্ট কাঠ আছে, সে খেয়াল রাখতে হবে।
★ ভক্তিযুক্ত চিত্তে মন্ত্রেচ্চারণ করতে হবে। এছাড়াও আরও কিছু নিয়ম আছে।
যজ্ঞ করতে গেলে ভুল হবে, তাহলে অনিষ্ট হবে ---- এই ধারনাকে সম্পূর্ণরূপে ত্যাগ করতে হবে।
শুদ্ধ মনে ভক্তিভাবে মন্ত্র উচ্চারণ করে অগ্নিতে আহুতি দিলে সরাসরি দেবতার কাছে পৌছাবে, এই ভেবে করলেই ফলপ্রসু হবে যজ্ঞ। তাই যজ্ঞ শেষে বলা হয় -- ভোঃ ভোঃ বহ্নে মহাশক্তে সর্বকামপ্রদায়ক। কর্মান্তেওপি সংপ্রাপ্তে সান্নিধ্যং কুরু সাদরম্।।
যাইহোক, যজ্ঞ করলে ফল অবশ্যই হবে এবং যে কোনও সমস্যার সমাধান সম্ভব এ কথা শাস্ত্রে সুন্দর ও পরিষ্কার ভাবে লেখা আছে।
-------------------------------------------------------------------
ছবি ★ তারকেশ্বরের তোতাপুরী আশ্রমে স্বামী কাশিকানন্দ যজ্ঞ করছেন।
লিখেছেনঃ Prithwish Ghosh
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন