বাংলাদেশে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং সাংবিধানিক পদসহ প্রশাসনিক কাঠামোর সর্বস্তরে তাঁদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানানো হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের আয়োজনে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সম-অধিকার ও সমমর্যাদা প্রতিষ্ঠার দাবিতে অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, বিদ্যমান সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতায় সংখ্যালঘুরা আজ বঞ্চনা, বৈষম্য ও নিপীড়নের শিকার। রাজনীতির মাঠে তাঁরা দাবার ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছেন। দেশত্যাগেও বাধ্য হচ্ছেন কেউ কেউ। সংখ্যালঘু অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে তা হবে গণতান্ত্রিক চেতনার পরিপন্থী।
গতকাল দুপুরের পর থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু মানুষের ঢল নামে। খোল-করতাল বাজিয়ে পৃথক মিছিল নিয়ে তাঁরা সমাবেশস্থলে পৌঁছান। শিশু-নারীসহ সব বয়সী মানুষের অংশগ্রহণে সমাবেশ হয়ে ওঠে বর্ণিল ও উৎসবমুখর। আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশ শুরুর আগে থেকেই মঞ্চে পরিবেশিত হতে থাকে স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের গান।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘এই দেশের সংখ্যালঘুর ওপর বহু নির্যাতন, বহু নিপীড়ন করা হচ্ছে। রাষ্ট্র জানে না, সরকার জানে না, রাজনৈতিক দল জানে না এমন নয়—আমরা সবাই জানি।’ তিনি আরও বলেন, ‘এইটা কল্পনা করা যায়? বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার কেবিনেটে একজন সংখ্যালঘুকে কেবিনেট মিনিস্টার করা গেল না। পৌরসভা নির্বাচনে ২৩৬ জনের মধ্যে কয়জন দিছি আমরা? নয়জন। এইটা বিচার হইল?’
সুরঞ্জিত বলেন, ‘ভেবে দেখেন, ’৪৭-এর দেশভাগের সময় দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু ছিল মোট জনসংখ্যার ৩৭ ভাগ। ’৭১-এ ২১ ভাগ, এখন হইছে ১০ ভাগ। আর তিন বছর পরে এই ১০-এর শূন্য চলে যাবে। তখন এই গণতন্ত্র আফগানিস্তানের গণতন্ত্রে রূপ নেবে।’
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, ‘রাষ্ট্রের কোনো জনগোষ্ঠীকে যখন ইচ্ছে হবে আমি ভোটব্যাংক হিসেবে ব্যবহার করব, যখন ইচ্ছে হবে হুমকি দেব, এটা হতে পারে না। কোনো জনগোষ্ঠীর প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্যমূলক আচরণ করতে পারবে না, এই নিশ্চয়তা রাষ্ট্রকে দিতে হবে।’
ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত বলেন, পাকিস্তানি আমলের মতো স্বাধীন বাংলাদেশেও সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর অস্তিত্ব আজ বহুমুখী সংকটের মুখোমুখি। এ সংকট থেকে উত্তরণে রাষ্ট্রের সর্বস্তরে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়ন ও প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার জন্য সাত দফা দাবি পেশ করেন তিনি। বলেন, ‘এ দাবি পূরণ না হলে আমরা ভিন্ন চিন্তা করতে বাধ্য হব।’
দাবিগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু এবং সমতলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর উন্নয়নে একটি সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয়সহ তাঁদের মানবাধিকার সুরক্ষায় একটি জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন।
এ সাত দফা দাবির প্রতি সহমত পোষণ করে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমার পক্ষে তাঁর লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন একজন।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন সাংসদ ঊষাতন তালুকদার, ঐক্য পরিষদের সাবেক নেতা নিম চন্দ্র ভৌমিক, বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব নির্মল রোজারিও প্রমুখ।
Collected from: http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/703060/%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%96%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%98%E0%A7%81%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%85%E0%A6%A7%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%9A%E0%A6%BF%E0%A6%A4-%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A6%BF
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের আয়োজনে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সম-অধিকার ও সমমর্যাদা প্রতিষ্ঠার দাবিতে অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, বিদ্যমান সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতায় সংখ্যালঘুরা আজ বঞ্চনা, বৈষম্য ও নিপীড়নের শিকার। রাজনীতির মাঠে তাঁরা দাবার ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছেন। দেশত্যাগেও বাধ্য হচ্ছেন কেউ কেউ। সংখ্যালঘু অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে তা হবে গণতান্ত্রিক চেতনার পরিপন্থী।
গতকাল দুপুরের পর থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু মানুষের ঢল নামে। খোল-করতাল বাজিয়ে পৃথক মিছিল নিয়ে তাঁরা সমাবেশস্থলে পৌঁছান। শিশু-নারীসহ সব বয়সী মানুষের অংশগ্রহণে সমাবেশ হয়ে ওঠে বর্ণিল ও উৎসবমুখর। আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশ শুরুর আগে থেকেই মঞ্চে পরিবেশিত হতে থাকে স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের গান।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘এই দেশের সংখ্যালঘুর ওপর বহু নির্যাতন, বহু নিপীড়ন করা হচ্ছে। রাষ্ট্র জানে না, সরকার জানে না, রাজনৈতিক দল জানে না এমন নয়—আমরা সবাই জানি।’ তিনি আরও বলেন, ‘এইটা কল্পনা করা যায়? বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার কেবিনেটে একজন সংখ্যালঘুকে কেবিনেট মিনিস্টার করা গেল না। পৌরসভা নির্বাচনে ২৩৬ জনের মধ্যে কয়জন দিছি আমরা? নয়জন। এইটা বিচার হইল?’
সুরঞ্জিত বলেন, ‘ভেবে দেখেন, ’৪৭-এর দেশভাগের সময় দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু ছিল মোট জনসংখ্যার ৩৭ ভাগ। ’৭১-এ ২১ ভাগ, এখন হইছে ১০ ভাগ। আর তিন বছর পরে এই ১০-এর শূন্য চলে যাবে। তখন এই গণতন্ত্র আফগানিস্তানের গণতন্ত্রে রূপ নেবে।’
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, ‘রাষ্ট্রের কোনো জনগোষ্ঠীকে যখন ইচ্ছে হবে আমি ভোটব্যাংক হিসেবে ব্যবহার করব, যখন ইচ্ছে হবে হুমকি দেব, এটা হতে পারে না। কোনো জনগোষ্ঠীর প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্যমূলক আচরণ করতে পারবে না, এই নিশ্চয়তা রাষ্ট্রকে দিতে হবে।’
ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত বলেন, পাকিস্তানি আমলের মতো স্বাধীন বাংলাদেশেও সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর অস্তিত্ব আজ বহুমুখী সংকটের মুখোমুখি। এ সংকট থেকে উত্তরণে রাষ্ট্রের সর্বস্তরে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়ন ও প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার জন্য সাত দফা দাবি পেশ করেন তিনি। বলেন, ‘এ দাবি পূরণ না হলে আমরা ভিন্ন চিন্তা করতে বাধ্য হব।’
দাবিগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু এবং সমতলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর উন্নয়নে একটি সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয়সহ তাঁদের মানবাধিকার সুরক্ষায় একটি জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন।
এ সাত দফা দাবির প্রতি সহমত পোষণ করে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমার পক্ষে তাঁর লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন একজন।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন সাংসদ ঊষাতন তালুকদার, ঐক্য পরিষদের সাবেক নেতা নিম চন্দ্র ভৌমিক, বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব নির্মল রোজারিও প্রমুখ।
Collected from: http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/703060/%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%96%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%98%E0%A7%81%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%85%E0%A6%A7%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%9A%E0%A6%BF%E0%A6%A4-%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A6%BF
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন