পাণিনির জন্মকাল সম্পর্কে মতভেদ আছে। এই সকল মতভেদ অনুসারে ধরা যায়, খ্রিষ্টপূর্ব ৮০০-৪০০ অব্দের মধ্যে পাণিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। গান্ধার রাজ্যের শালাতুর পল্লীকে তাঁর জন্মগ্রহণ জন্মস্থান হিসাবে বিবেচনা করা হয়। তাঁর পিতার নাম ছিল শলঙ্ক ও পাণিনির মায়ের নাম ছিল দাক্ষী।
পাণিনির জীবনের বেশির ভাগ সময় কেটেছে মগধের রাজধানী পাটলীপুত্রে। তাই কিছু পণ্ডিতের মতে পাণিনির পূর্বপুরুষেরা শালাতুর গ্রামের হলেও পাণিনির জন্ম হয়েছিল, পাটলীপুত্রে। পাণিনি ছিলেন একজন শিষ্ট। শিষ্টেরা ছিলেন এক ধরণের ব্রাহ্মণ। শাস্ত্রের ওপর ছিল তাঁদের অসামান্য অধিকার। পার্থিব সুখ, স্বাচ্ছন্দ বিসর্জন দিয়ে তাঁরা একটি বিশেষ অঞ্চলে বসবাস করতেন। বাসস্থানের উত্তরে ছিল হিমালয়, দক্ষিণে বিন্ধ্য পর্বতমালা, পূর্বে বঙ্গভূমি এবং পশ্চিমে আরাবল্লী পাহাড়ের রেখা।
পাণিনি পারিবারিক সূত্রে বেদোত্তর সনাতন পৌরাণিক ধর্মে বিশ্বাসী ছিলেন। মূলত তিনি ছিলেন অহিগলমালার (শিব) উপাসক। সেইজন্য তাঁকে আহিক বলা হয়েছে। তাঁর শিক্ষকের নাম ছিল উপবত্স। তাঁর রচিত ব্যাকরণের নাম– অষ্টাধ্যায়ী। কথিত আছে, পাণিনি হিমালয়ে গিয়ে ১৮ দিন ধরে শিবের তপস্যা করে শিবকে সন্তুষ্ট করেন। নৃত্যের ভঙ্গীতে শিব ১৪ বার ঢক্কা বা ঢাক বাজান।প্রতিবার ঢাক বাজানোর সাথে এক একটি নতুন শব্দের সৃস্টি হলো। প্রসঙ্গত বলা যেতে পারে, নটরাজ মূর্ত্তি শিবের আর একটি প্রতিরূপ। নটরাজ মূর্ত্তি পৃথিবীর ছন্দ এবং তালের রূপক। ঢাকের শব্দ ছন্দ এবং তালের সমার্থক। তালবাদ্যের বোল অথবা বাণীর মাধ্যমে সমস্ত বর্ণকে প্রকাশ করা যায়। এবার, নৃত্যের ভঙ্গীতে শিব ১৪ বার ঢক্কা বা ঢাক বাজানর পর এক একটি নতুন শব্দের সৃষ্টি হলো। প্রতিটি শব্দ বিভিন্ন বর্ণের সমষ্টি। শিবসূত্রের প্রত্যেকটির নাম সংজ্ঞা বা সংজ্ঞাসূত্র। এই ১৪টি শিবসূত্র হলো—
১. অ ই উ ণ্
২. ঋ ৯ ক্
৩. এ ও ঙ্
৪. ঐ ঔ চ্
৫. হ য ৱ র ট্
৬. ল ণ্
৭. ঞ্ ম ঙ্ ণ ন ম্
৮. ঝ ভ ঞ
৯. ঘ ঢ ধ ষ্
১০. জ ব গ ড দ শ্
১১. খ র্ফ ছ ঠ থ চ ট ত ৱ্
১২. ক প য্
১৩. শ ষ স র্
১৪. হ ল্
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন