দীর্ঘকাল পূর্বে সরস্বতী নদীর তীরে মহান ঋষিগনের এক সভা বসেছিল যারা সত্ৰ নামে এক যজ্ঞ করেছিলেন। এধরণের সভায় উপস্থিত মহান ঋষিগন সাধারণত বৈদিক বিষয় আর দার্শনিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন, আর এই বিশেষ সভায় নিম্নোক্ত প্রশ্ন গুলো উঠলো: এই জড় জগতের ত্রিদেব, ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং শিব, যাঁরা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সমস্ত ব্যাপার পরিচালনা করছেন, কিন্তু তাঁদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ কে? এই প্রশ্নের ওপর দীর্ঘ আলোচনার পর ব্রহ্মার পুত্র মহর্ষি ভৃগুকে ত্রিদেব কে পরীক্ষা করে তাঁদের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম কে তা এই সভাকে জানানোর দায়িত্বে নিযুক্ত করা হলো।
এভাবে নিযুক্ত হয়ে মহর্ষি ভৃগু প্রথমে তাঁর পিতার নিবাস ব্রহ্মলোকে গেলেন। ত্রিদেব তিন পার্থিব গুণ যাদের নাম সত্ব, রজ আর তম গুণের নিয়ন্ত্রা।ঋষিগনের মহর্ষি ভৃগুকে পরীক্ষা করতে নিযুক্ত করার উদ্দেশ্য ছিল জানা এই যে কে সাত্বিক গুনে পরিপূর্ণ। সুতরাং ভৃগু মুনি তাঁর পিতা ব্রহ্মার কাছে যখন পৌঁছলেন, যেহেতু পরীক্ষা করতে ইচ্ছুক ছিলেন, তিনি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই প্রণাম বা প্রার্থনা করে সম্মান জ্ঞাপন করলেন না। পুত্র বা শিষ্যের কর্তব্য পিতা বা গুরুর কাছে গেলে সম্মান জ্ঞাপন করা ও যথাযথ প্রার্থনা করা। কিন্তু ভৃগু মুনি ব্রহ্মাকে অবহেলার প্রতিক্রিয়া দেখার জন্য ইচ্ছা করেই এমন করলেন না। ব্রহ্মা তাঁর পুত্রের ধৃষ্টতায় খুব ক্রোধান্বিত হলেন, এবং তাঁর ভাব ভঙ্গিমায় এটা বোঝা গেল। তিনি এমনকি অভিশাপ দিয়ে দণ্ডাদেশ দেওয়ার জন্যও উদ্যত হলেন, কিন্তু যেহেতু ভৃগু তাঁর পুত্র ছিল, তিনি তাঁর মহৎ বুদ্ধিমত্তার দ্বারা নিজের রাগ সম্বরন করলেন। এর অর্থ যদিও রাজসিক গুন তাঁর মধ্যে সর্বাত্মক ছিল, কিন্তু তাঁর এটা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা ছিলো। ব্রহ্মার ক্রোধ আর তাঁর ক্রোধ নিয়ন্ত্রণ করা আগুন আর জলের সাথে সম্পর্কিত। সৃষ্টির শুরুতে আগুন থেকে জল তৈরি হয়, কিন্তু জল দিয়েই আগুন নেভানো যায়। অনুরূপ ভাবে রাজসিক গুণের কারণে ব্রহ্মা যদিও রেগে গিয়েছিলেন, তবুও তিনি তাঁর আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেন কারণ ভৃগু ছিলেন তাঁর পুত্র।
ব্রহ্মদেব কে পরীক্ষা করার পর, ভৃগু মুনি সরাসরি কৈলাশ পর্বতে গেলেন, যেখানে শিব বাস করেন। ঘটনাচক্রে ভৃগু মুনি ছিলেন শিবের ভাই। তাই ভৃগু মুনি যেতেই শিব খুব খুশি হয়ে তাঁকে আলিঙ্গন করতে নিজেই উঠে দাঁড়ালেন। কিন্তু যখন শিব এগিয়ে এলেন, ভৃগু মুনি তাঁকে আলিঙ্গন করতে অস্বীকার করলেন। তিনি বললেন "আমার প্রিয় ভ্রাতা, তুমি সব সময় খুব অপবিত্র থাকো। যেহেতু তুমি অঙ্গে ভস্ম লেপন করে থাকো, তুমি খুব পরিষ্কার নও। তাই দয়া করে আমায় স্পর্শ কোরো না।" শিব অপবিত্র একথা বলে যখন ভৃগুমুনি তার ভ্রাতাকে আলিঙ্গন করতে অস্বীকার করলেন, শিব খুব রেগে গেলেন। বলা হয় যে শরীর, মন বা বাক্য দ্বারা অপরাধ করা হয়। ভৃগুমুনির প্ৰথম অপরাধ যা তিনি ব্রহ্মদেবের কাছে করেছিলেন, তা ছিলো মনের দ্বারা কৃত অপরাধ। তাঁর দ্বিতীয় অপরাধ যা তিনি শিবের কাছে করেছিলেন তাঁকে অপমান করে, তা ছিলো বাক্যের দ্বারা কৃত অপরাধ। যেহেতু তামস গুন শিব এর মধ্যে প্রধাণ, ভৃগুর অপমানসূচক বাক্য শুনে তৎক্ষণাৎ ক্রোধে তাঁর চক্ষু লাল হয়ে গেলো। অনিয়ন্ত্রিত উষ্মায় তিনি ত্রিশূল নিয়ে ভৃগুমুনিকে হত্যা করতে উদ্যত হলেন। সেই সময় শিবপত্নী পার্বতী উপস্থিত ছিলেন। শিবের মতোই তাঁর ব্যক্তিত্বও তিন গুণের সংমিশ্রণ, তাই তাঁকে ত্রিগুনময়ী বলা হয়। এক্ষেত্রে তিনি শিবের সাত্বিক গুন জাগিয়ে তুলে পরিস্থিতি সামলালেন। তিনি তাঁর স্বামীর চরণে পড়লেন আর তাঁর মধুর বচনের দ্বারা ভৃগু মুনির হত্যার বিবেচনা মুক্ত করালেন।
----জয় শ্রীJরাধে গৌবিন্দ---
(C) Bishojit Das
এভাবে নিযুক্ত হয়ে মহর্ষি ভৃগু প্রথমে তাঁর পিতার নিবাস ব্রহ্মলোকে গেলেন। ত্রিদেব তিন পার্থিব গুণ যাদের নাম সত্ব, রজ আর তম গুণের নিয়ন্ত্রা।ঋষিগনের মহর্ষি ভৃগুকে পরীক্ষা করতে নিযুক্ত করার উদ্দেশ্য ছিল জানা এই যে কে সাত্বিক গুনে পরিপূর্ণ। সুতরাং ভৃগু মুনি তাঁর পিতা ব্রহ্মার কাছে যখন পৌঁছলেন, যেহেতু পরীক্ষা করতে ইচ্ছুক ছিলেন, তিনি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই প্রণাম বা প্রার্থনা করে সম্মান জ্ঞাপন করলেন না। পুত্র বা শিষ্যের কর্তব্য পিতা বা গুরুর কাছে গেলে সম্মান জ্ঞাপন করা ও যথাযথ প্রার্থনা করা। কিন্তু ভৃগু মুনি ব্রহ্মাকে অবহেলার প্রতিক্রিয়া দেখার জন্য ইচ্ছা করেই এমন করলেন না। ব্রহ্মা তাঁর পুত্রের ধৃষ্টতায় খুব ক্রোধান্বিত হলেন, এবং তাঁর ভাব ভঙ্গিমায় এটা বোঝা গেল। তিনি এমনকি অভিশাপ দিয়ে দণ্ডাদেশ দেওয়ার জন্যও উদ্যত হলেন, কিন্তু যেহেতু ভৃগু তাঁর পুত্র ছিল, তিনি তাঁর মহৎ বুদ্ধিমত্তার দ্বারা নিজের রাগ সম্বরন করলেন। এর অর্থ যদিও রাজসিক গুন তাঁর মধ্যে সর্বাত্মক ছিল, কিন্তু তাঁর এটা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা ছিলো। ব্রহ্মার ক্রোধ আর তাঁর ক্রোধ নিয়ন্ত্রণ করা আগুন আর জলের সাথে সম্পর্কিত। সৃষ্টির শুরুতে আগুন থেকে জল তৈরি হয়, কিন্তু জল দিয়েই আগুন নেভানো যায়। অনুরূপ ভাবে রাজসিক গুণের কারণে ব্রহ্মা যদিও রেগে গিয়েছিলেন, তবুও তিনি তাঁর আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেন কারণ ভৃগু ছিলেন তাঁর পুত্র।
ব্রহ্মদেব কে পরীক্ষা করার পর, ভৃগু মুনি সরাসরি কৈলাশ পর্বতে গেলেন, যেখানে শিব বাস করেন। ঘটনাচক্রে ভৃগু মুনি ছিলেন শিবের ভাই। তাই ভৃগু মুনি যেতেই শিব খুব খুশি হয়ে তাঁকে আলিঙ্গন করতে নিজেই উঠে দাঁড়ালেন। কিন্তু যখন শিব এগিয়ে এলেন, ভৃগু মুনি তাঁকে আলিঙ্গন করতে অস্বীকার করলেন। তিনি বললেন "আমার প্রিয় ভ্রাতা, তুমি সব সময় খুব অপবিত্র থাকো। যেহেতু তুমি অঙ্গে ভস্ম লেপন করে থাকো, তুমি খুব পরিষ্কার নও। তাই দয়া করে আমায় স্পর্শ কোরো না।" শিব অপবিত্র একথা বলে যখন ভৃগুমুনি তার ভ্রাতাকে আলিঙ্গন করতে অস্বীকার করলেন, শিব খুব রেগে গেলেন। বলা হয় যে শরীর, মন বা বাক্য দ্বারা অপরাধ করা হয়। ভৃগুমুনির প্ৰথম অপরাধ যা তিনি ব্রহ্মদেবের কাছে করেছিলেন, তা ছিলো মনের দ্বারা কৃত অপরাধ। তাঁর দ্বিতীয় অপরাধ যা তিনি শিবের কাছে করেছিলেন তাঁকে অপমান করে, তা ছিলো বাক্যের দ্বারা কৃত অপরাধ। যেহেতু তামস গুন শিব এর মধ্যে প্রধাণ, ভৃগুর অপমানসূচক বাক্য শুনে তৎক্ষণাৎ ক্রোধে তাঁর চক্ষু লাল হয়ে গেলো। অনিয়ন্ত্রিত উষ্মায় তিনি ত্রিশূল নিয়ে ভৃগুমুনিকে হত্যা করতে উদ্যত হলেন। সেই সময় শিবপত্নী পার্বতী উপস্থিত ছিলেন। শিবের মতোই তাঁর ব্যক্তিত্বও তিন গুণের সংমিশ্রণ, তাই তাঁকে ত্রিগুনময়ী বলা হয়। এক্ষেত্রে তিনি শিবের সাত্বিক গুন জাগিয়ে তুলে পরিস্থিতি সামলালেন। তিনি তাঁর স্বামীর চরণে পড়লেন আর তাঁর মধুর বচনের দ্বারা ভৃগু মুনির হত্যার বিবেচনা মুক্ত করালেন।
----জয় শ্রীJরাধে গৌবিন্দ---
(C) Bishojit Das
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন