মানুষ
কর্ম করলে আবদ্ধ হয় না , প্রত্যুত " অন্যত্র কর্ম " করলে
অর্থাৎ নিজের জন্য কর্ম করলে আবদ্ধ হয় । মানুষ
কর্মবন্ধন থেকে তখনই মুক্ত হতে সক্ষম হয় , যখন সে জগৎসংসার
থেকে প্রাপ্ত শরীর , বস্তু , যোগ্যতা এবং সামর্থ্য জগতেরই
সেবায় নিয়োজিত করে এবং তার পরিবর্তে কোনো কিছু আশা
না করে , কেননা আমরা প্রকৃতপক্ষে যা চাই জগৎ আমাদের তা দিতেই পারে না ।
আমরা সুখ চাই , অমরত্ব চাই , নিশ্চিন্ততা চাই , নির্ভয় হতে চাই , স্বাধীনতা চাই । কিন্তু এসব সংসার থেকে পাওয়া সম্ভব নয় । সংসার থেকে সম্পর্ক ছেদ হলেই তা পাওয়া সম্ভব । সংসারের সঙ্গে সম্পর্ক বিছিন্ন করার জন্য আমাদের উচিত সংসার থেকে প্রাপ্ত বস্তু সংসারের সেবাতেই নিয়োগ করা ।
সৎ - অসৎ - এর বিচার করায় অসমর্থ পশু - পক্ষী - বৃক্ষ ইত্যাদির দ্বারা স্বাভাবিক পরোপকার ( কর্তব্য ) পালিত হয় । কিন্তু মানুষ ভগবৎ - কৃপায় বিশেষভাবে বিবেচনা করার শক্তি ( বিবেক ) লাভ করেছে । সুতরাং সে যদি নিজ বিবেচনাকে ( বিবেককে ) গুরুত্ব দিয়ে কোনোরূপ অকর্তব্য না করে , তবে তার দ্বারা স্বাভাবিকভাবেই লোক - হিতার্থ কর্ম হওয়া সম্ভব ।
ব্রহ্মা মানুষকে বললেন , " তোমরা নিজেদের কর্তব্য পালন দ্বারা সবকিছুর বৃদ্ধিতে সহায়তা করো , উন্নতিতে সাহায্য করো । এরূপ করলে তোমরা কর্তব্যকর্ম করার উপযোগী সামগ্রী পেতে থাকবে , কখনো তার অভাব হবে না । " ভগবানের নির্দেশে এবং তাঁর শক্তিতে ব্রহ্মা প্রজা সৃষ্টি করেন । সুতরাং মূল স্রষ্টা প্রকৃতপক্ষে ভগবান শ্রীকৃষ্ণই । নিষ্কামভাবে অর্থাৎ শ্রীকৃষ্ণের জন্য কর্ম করলে মানুষ মুক্ত হয়ে যায় এবং সকামভাবে অর্থাৎ শুধুমাত্র নিজের জন্য করলে মানুষ বন্ধন দ্বারা আবদ্ধ হয়ে পড়ে । কেননা সকামকর্মে ফলের আশায় থাকায় সেই ফল ভোগ করতে হয় তাই সকামকর্ম বন্ধনের কারণ ।
প্রকৃতপক্ষে চিন্তা করলে দেখা যায় , বর্তমান মানব সমাজে আমাদের উন্নতি থেকে অবনতি বেশি হয় । কেননা প্রথমত মিথ্যা কথা বলা , হিংসা , লোভ - লালসা , অহংকার , ক্রোধ ইত্যাদির বিভিন্ন কারণে আমরা অপরকে কষ্ট দিয়ে থাকি । ফলে অপরের তো ক্ষতি হয়ই বরং নিজের বেশি ক্ষতি হয়ে যায় । আমরা চিন্তা না করে কর্ম করি । পরে অনুশোচনা করতে হয় ।
মানুষের শরীর প্রকৃতপক্ষে ভোগসুখের জন্য নয় । তাই " সাংসারিক সুখভোগ করো " -- এরূপ নির্দেশ বা বিধান কোনো সৎ - শাস্ত্রে নেই । সমাজও যেমন সুখ ভোগ করার নির্দেশ দেয় না । শাস্ত্র এবং সমাজ অপরকে সুখী করার নির্দেশই দিয়ে থাকে । কিন্তু আমরা কতটা করতে পারি সেটা আমাদের উপর নির্ভর করে । অপরের উপকার করলে নিজের কোন ক্ষতি হয় না । যতটুকু সম্ভব সকলের সেবা করার কর্তব্য ।
কর্মযোগী সর্বদা দেওয়ার ভাবই পোষণ করেন , গ্রহণ করার নয় । শুধু টাকা দিয়ে সাহায্য করতে হবে এমন নয় , কত কর্ম আছে যা টাকা ছাড়াও করা যায় । যদি আমাদের অপরকে কিছু দেওয়ার পরিবর্তে নিজের স্বার্থের জন্য কিছু গ্রহণ করার ইচ্ছা থাকে তাহলে তা কল্যানপ্রাপ্তিতে বাধা দেয় এবং তার সঙ্গে সাংসারিক বস্তুসামগী প্রাপ্তিতেও অন্তরায়ের সৃষ্টি হয় । প্রায় সকলেই অনুভব করে যে সংসারে যারা চাহিদা পোষণ করে তাদের কেউই কিছু দিতে চায় না । তাই ব্রহ্মা বলেছেন যে , কোনো কিছুর আশা না করে নিঃস্বার্থভাবে কর্তব্যপালন করলেই মানুষ নিজ উন্নতি ( কল্যাণ ) সাধন করতে সক্ষম হয় ।
কেউ আমার উপকার করুক বা না করুক , আমার কর্তব্য হল তাকে সেবা করা । এখানে শুধু পদসেবার কথা বলা হয়নি , অনেক রকম সেবা করা যায় । অন্যে কী করে , কী করে না , আমাকে সুখ দেয় , না দেয় দুঃখ দেয় এসব আমার দেখার দরকার নেই , কারণ অপরের কর্তব্যের খোঁজ যে করে সে নিজ কর্তব্য হতে বিচ্যুত হয় । পরিণামে তার পতন ঘটে । অন্যকে দিয়ে কর্তব্যপালন করানো আমার অধিকার নয় । সকলের হিতার্থে শুধু আমাদের নিজের নিজের কর্তব্যপালন করতে হবে যাতে সবাই সুখী হয় । সেবা করার সময় নিজের বুদ্ধি , সামর্থ্য , সময় এবং বস্তুসামগ্রী পুরোপুরিভাবে অপরের হিতার্থে নিয়োগ করা চাই অর্থাৎ যৎকিঞ্চিৎও নিজের জন্য অবশিষ্ট রূপে রাখা উচিত নয় ।
🌹🌹 জয় শ্রীরাধে 🌺🌺
==============
(c) Joy Shree Radha Madhav
আমরা সুখ চাই , অমরত্ব চাই , নিশ্চিন্ততা চাই , নির্ভয় হতে চাই , স্বাধীনতা চাই । কিন্তু এসব সংসার থেকে পাওয়া সম্ভব নয় । সংসার থেকে সম্পর্ক ছেদ হলেই তা পাওয়া সম্ভব । সংসারের সঙ্গে সম্পর্ক বিছিন্ন করার জন্য আমাদের উচিত সংসার থেকে প্রাপ্ত বস্তু সংসারের সেবাতেই নিয়োগ করা ।
সৎ - অসৎ - এর বিচার করায় অসমর্থ পশু - পক্ষী - বৃক্ষ ইত্যাদির দ্বারা স্বাভাবিক পরোপকার ( কর্তব্য ) পালিত হয় । কিন্তু মানুষ ভগবৎ - কৃপায় বিশেষভাবে বিবেচনা করার শক্তি ( বিবেক ) লাভ করেছে । সুতরাং সে যদি নিজ বিবেচনাকে ( বিবেককে ) গুরুত্ব দিয়ে কোনোরূপ অকর্তব্য না করে , তবে তার দ্বারা স্বাভাবিকভাবেই লোক - হিতার্থ কর্ম হওয়া সম্ভব ।
ব্রহ্মা মানুষকে বললেন , " তোমরা নিজেদের কর্তব্য পালন দ্বারা সবকিছুর বৃদ্ধিতে সহায়তা করো , উন্নতিতে সাহায্য করো । এরূপ করলে তোমরা কর্তব্যকর্ম করার উপযোগী সামগ্রী পেতে থাকবে , কখনো তার অভাব হবে না । " ভগবানের নির্দেশে এবং তাঁর শক্তিতে ব্রহ্মা প্রজা সৃষ্টি করেন । সুতরাং মূল স্রষ্টা প্রকৃতপক্ষে ভগবান শ্রীকৃষ্ণই । নিষ্কামভাবে অর্থাৎ শ্রীকৃষ্ণের জন্য কর্ম করলে মানুষ মুক্ত হয়ে যায় এবং সকামভাবে অর্থাৎ শুধুমাত্র নিজের জন্য করলে মানুষ বন্ধন দ্বারা আবদ্ধ হয়ে পড়ে । কেননা সকামকর্মে ফলের আশায় থাকায় সেই ফল ভোগ করতে হয় তাই সকামকর্ম বন্ধনের কারণ ।
প্রকৃতপক্ষে চিন্তা করলে দেখা যায় , বর্তমান মানব সমাজে আমাদের উন্নতি থেকে অবনতি বেশি হয় । কেননা প্রথমত মিথ্যা কথা বলা , হিংসা , লোভ - লালসা , অহংকার , ক্রোধ ইত্যাদির বিভিন্ন কারণে আমরা অপরকে কষ্ট দিয়ে থাকি । ফলে অপরের তো ক্ষতি হয়ই বরং নিজের বেশি ক্ষতি হয়ে যায় । আমরা চিন্তা না করে কর্ম করি । পরে অনুশোচনা করতে হয় ।
মানুষের শরীর প্রকৃতপক্ষে ভোগসুখের জন্য নয় । তাই " সাংসারিক সুখভোগ করো " -- এরূপ নির্দেশ বা বিধান কোনো সৎ - শাস্ত্রে নেই । সমাজও যেমন সুখ ভোগ করার নির্দেশ দেয় না । শাস্ত্র এবং সমাজ অপরকে সুখী করার নির্দেশই দিয়ে থাকে । কিন্তু আমরা কতটা করতে পারি সেটা আমাদের উপর নির্ভর করে । অপরের উপকার করলে নিজের কোন ক্ষতি হয় না । যতটুকু সম্ভব সকলের সেবা করার কর্তব্য ।
কর্মযোগী সর্বদা দেওয়ার ভাবই পোষণ করেন , গ্রহণ করার নয় । শুধু টাকা দিয়ে সাহায্য করতে হবে এমন নয় , কত কর্ম আছে যা টাকা ছাড়াও করা যায় । যদি আমাদের অপরকে কিছু দেওয়ার পরিবর্তে নিজের স্বার্থের জন্য কিছু গ্রহণ করার ইচ্ছা থাকে তাহলে তা কল্যানপ্রাপ্তিতে বাধা দেয় এবং তার সঙ্গে সাংসারিক বস্তুসামগী প্রাপ্তিতেও অন্তরায়ের সৃষ্টি হয় । প্রায় সকলেই অনুভব করে যে সংসারে যারা চাহিদা পোষণ করে তাদের কেউই কিছু দিতে চায় না । তাই ব্রহ্মা বলেছেন যে , কোনো কিছুর আশা না করে নিঃস্বার্থভাবে কর্তব্যপালন করলেই মানুষ নিজ উন্নতি ( কল্যাণ ) সাধন করতে সক্ষম হয় ।
কেউ আমার উপকার করুক বা না করুক , আমার কর্তব্য হল তাকে সেবা করা । এখানে শুধু পদসেবার কথা বলা হয়নি , অনেক রকম সেবা করা যায় । অন্যে কী করে , কী করে না , আমাকে সুখ দেয় , না দেয় দুঃখ দেয় এসব আমার দেখার দরকার নেই , কারণ অপরের কর্তব্যের খোঁজ যে করে সে নিজ কর্তব্য হতে বিচ্যুত হয় । পরিণামে তার পতন ঘটে । অন্যকে দিয়ে কর্তব্যপালন করানো আমার অধিকার নয় । সকলের হিতার্থে শুধু আমাদের নিজের নিজের কর্তব্যপালন করতে হবে যাতে সবাই সুখী হয় । সেবা করার সময় নিজের বুদ্ধি , সামর্থ্য , সময় এবং বস্তুসামগ্রী পুরোপুরিভাবে অপরের হিতার্থে নিয়োগ করা চাই অর্থাৎ যৎকিঞ্চিৎও নিজের জন্য অবশিষ্ট রূপে রাখা উচিত নয় ।
🌹🌹 জয় শ্রীরাধে 🌺🌺
==============
(c) Joy Shree Radha Madhav
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন