০৫ জানুয়ারী ২০১৮

সামবেদঃ প্রথম অধ্যায়ঃ আগ্নেয় কাণ্ডঃ অগ্নিস্তুতি) - খণ্ডঃ ০১-০৭

সামবেদ
পুর্বার্চিকঃ ছন্দ আর্চিকঃ
প্রথম অধ্যায়ঃ
আগ্নেয় কাণ্ডঃ অগ্নিস্তুতি
প্রথম খণ্ড : মন্ত্র সংখ্যা ১০ ॥
মন্ত্রের দেবতা অগ্নি ॥ মন্ত্রের ছন্দ গায়ত্রী ॥
মন্ত্রের ঋষিঃ ১।২।৪।৭।৯ ভরদ্বাজ বার্হস্পত্য
৩ মেধাতিথি কান্ব;
৫ তশনা কাব্য;
৬ সুদীতি পুরুমীঢ় আঙ্গিরস;
৮ বৎস কান্ব;
১০ বামদেব॥
মন্ত্রঃ- (০১) ‌অগ্ন আ যাহি বীতয়ে গৃণানো হব্যদাতয়ে। নি হোতা সৎসি বর্হিষি ॥ ১ ॥
অর্থঃ- (০১) হে অগ্নি, আনন্দের জন্য এস; স্তবযুক্ত হয়ে দেবলোকে আহূতিভার বহনের জন্য এস; হে দেবগণের আহ্বাতা; যজ্ঞাসনে উপবেশন কর॥
মন্ত্রঃ- (০২) ত্বমগ্নে যজ্ঞানাং হোতা বিশ্বেষাং হিতঃ। দেবেভির্মানুষে জনে ॥ ২ ॥
অর্থঃ- (০২) তুমি হে অগ্নি, সকল যজ্ঞের হোতা। দেবতাদের সঙ্গে যুক্তভাবে প্রতি মানুষে, প্রতি জীবে হিতকারী।
মন্ত্রঃ- (০৩) অগ্নিং দূতং বৃণীমহে হোতারা বিশ্ববেদসম্। অস্য যজ্ঞস্য সুক্রতুম্ ॥ ৩ ॥
অর্থঃ- (০৩) এই যজ্ঞের সকর্মা (মঙ্গলসম্পাদক), দেবগণের দূত, হোতা, বিশ্বধন অগ্নিকে বরণ করি।
মন্ত্রঃ- (০৪) অগ্নির্বৃত্রাণি জঙ্ঘনদ্ দ্রবিণস্যুর্বিপন্যয়া। সমিদ্ধঃ শুক্র আহূতঃ ॥ ৪ ॥
অর্থঃ- (০৪) আবরকশক্তিকে পুনঃ পুনঃ বিনাশের জন্য অগ্নি মেধাশক্তি দ্বারা সতত গমনস্বভাবযুক্ত। তিনি প্রাণসন্দীপ্ত, জ্যোতিষ্মান্, সকল কামনায় আহূত।
মন্ত্রঃ- (০৫) প্রেষ্ঠং বো অতিথিং স্তুষে মিত্রমিব প্রিয়ম্। অগ্নে রথং ন বেদ্যম্ ॥ ৫ ॥
অর্থঃ- (০৫) প্রিয়তম অতিথিকে, মিত্রের ন্যায় প্রিয় অগ্নিকে তোমাদের জন্য তোষণ করি। হে অগ্নি, তুমি সূর্যের মত জ্ঞেয়।
মন্ত্রঃ- (০৬) ত্বং নো অগ্নে মহোভিঃ পাহি বিশ্বস্যা অরাতেঃ। উত দ্বিষো মর্ত্যস্য ॥ ৬ ॥
অর্থঃ- (০৬) তুমি আমাদের, হে অগ্নি মহাধনে পালন কর। সকল শত্রু হতে আর মর্ত্যের দ্বেষ হতে রক্ষা কর।
মন্ত্রঃ- (০৭) এহ্যূ ষু ব্রবাণি তেহগ্ন ইত্থেতরা গিরঃ। এভির্বর্ধাস ইন্দুভিঃ ॥ ৭ ॥
অর্থঃ- (০৭) এস হে অগ্নি, তোমাকে এ ভাবেই স্তুতি করবো। এ ভাবেই সকল যজ্ঞের দ্বারা তুমি বর্ধিত হও।
মন্ত্রঃ- (০৮) আ তে বৎসো মনো যমৎ পরমাচ্চিৎ সধস্থাৎ। অগ্নে ত্বাং কাময়ে গিরা ॥ ৮ ॥
অর্থঃ- (০৮) এস হে অগ্নি পরমলোক থেকে। বৎস ঋষি তোমাকে কামনা করে স্তবমালায় তোমার মন আকর্ষণ করে।
মন্ত্রঃ- (০৯) ত্বামগ্নে পুস্করাদধ্যথর্বা মূর্ধ্নো বিশ্বস্য বাঘতঃ ॥ ৯ ॥
অর্থঃ- (০৯) তোমাকে, হে অগ্নি, স্বকর্মে অবিচল আদিত্য (=অথর্ব) যিনি বিশ্বের ঋত্বিক, তিনি শীর্ষে অবস্থান করে অন্তরিক্ষ হতে মন্থন করে আনেন।
মন্ত্রঃ- (১০) অগ্নে বিবস্বদা ভরাস্মভ্যমূতয়ে মহে। দেবো হ্যসি নো দৃশে ॥ ১০ ॥
অর্থঃ- (১০) হে অগ্নি, তমোনাশক তুমি, আমাদের পালনের জন্য মহাধন আন আর আমাদের দর্শনের জন্য তুমিই দেবতা।

দ্বিতীয় খণ্ড : মন্ত্র সংখ্যা ১০ ॥
মন্ত্রের দেবতা অগ্নি ॥ মন্ত্রের ছন্দ গায়ত্রী ॥
মন্ত্রের ঋষিঃ ১ আয়ুঙ্ ক্ষ্বাহি, বিরূপা আঙ্গিরস,
২ বামদেব গৌতম,
৩।৮।৯ প্রয়োগ ভার্গব,
৮ মধুচ্ছন্দা বৈশ্বামিত্র,
৫।৭ শূ্নঃশেপ আজীগর্তি,
৬ মেধাতিথি কান্ব,
১০ বৎস কান্ব॥
মন্ত্র : (১১) নমস্তে অগ্ন ওজসে গৃণন্তি দেব কৃষ্টয়ঃ। অমৈরমিত্রমর্দয় ॥১॥
অর্থঃ- (১১) হে অগ্নি, মানুষেরা ওজঃশক্তির জন্য নত হয়ে তোমার স্তব করে। হে দেব, বলপ্রভাবে অমিত্রকে (=শত্রুকে) পীড়িত কর॥
মন্ত্র : (১২) দূতং বো বিশ্ববেদসং হব্যবাহমমর্ত্যম্। যজিষ্ঠমৃঞ্জসে গিরা ॥২॥
অর্থঃ- (১২) হে জনগণ, তোমাদের মঙ্গলের জন্য দেবদূত বিশ্বধন হব্যবাহী অমৃত যাজ্ঞিকশ্রেষ্ঠ অগ্নিকে স্তবের দ্বারা শোভিত কর॥
মন্ত্র : (১৩) উপ ত্বা জাময়ো গিরো দেদিশতীর্হবিষ্কৃতঃ। বায়োরনীকে অস্থিরন্ ॥৩॥
অর্থ : (১৩) হে অগ্নি, যজ্ঞনিস্পাদকের বারবার উচ্চারিত দীপ্ত স্তবমালা তোমাকে প্রাপ্ত হবার জন্য মুখ্যপ্রাণ বায়ুর নিকটে অবস্থান করে॥
মন্ত্র : (১৪) উপ ত্বাগ্নে দিবে দিবে দোষাবস্তর্ধিয়া বয়ম্। নমো ভরন্ত এমসি ॥৪॥
অর্থঃ- (১৪) হে তমোনাশক অগ্নি, প্রতিদিন আমরা প্রজ্ঞাদ্বারা নত হয়ে নমস্কার করতে করতে তোমাকেই কাছে পাই॥
মন্ত্র : (১৫) জরাবোধ তদ্বিবিড্ ঢি বিশেবিশে যজ্ঞিয়ায়। স্তোমং রুদ্রায় দৃশীকম্ ॥৫॥
অর্থঃ- (১৫) হে স্তুতিদ্বারা প্রবুদ্ধ অগ্নি, ভিন্ন ভিন্ন মানুষের প্রয়োজনে যজ্ঞযোগ্য রুদ্রের উদ্দেশ্যে যে অলোকসামান্য স্ত্রোত্র তা তুমিই জান॥
মন্ত্র : (১৬) প্রতি ত্যং চারুমধ্বরং গোপীথায় প্র হূয়সে। মরুদ্যভিরগ্ন আ গহি ॥৬॥
অর্থ : (১৬) আমাদের রক্ষণের জন্য যে শোভন যজ্ঞে তুমি আহূত হও সেখানে তুমি হে অগ্নি, সকল প্রাণশক্তির সঙ্গে এস॥
মন্ত্র: (১৭) অশ্বং ন ত্বা বারবন্তং বন্দধ্যা অগ্নিং নমোভিঃ। সম্রাজন্তমদ্বরাণাম্ ॥৭॥
অর্থ : (১৭) সকল যজ্ঞের সম্রাট্ অশ্বপুচ্ছের মত শিখাবিশিষ্ট অগ্নি তোমাকে নমস্কারের দ্বারা বন্দনা করতে প্রবৃত্ত হই॥
মন্ত্র : (১৮) ঔর্বভৃণ্ডবচ্ছুচিমপ্নবানবদা হুবে। অগ্নিং সমুদ্রবাসসম্॥৮॥
অর্থ : (১৮) পৃথিবীজাত অগ্নিশিখাসম্ভূত রূপবানের ন্যায় অন্তরিক্ষে নিবাসকারী শুচি অগ্নিকে সকল দিক্ হতে আহ্বান করি॥
মন্ত্র : (১৯) অগ্নিমিন্ধানো মনসা ধিয়ং সচেত মর্ত্যঃ। অগ্নিমিন্ধে বিবস্বভিঃ ॥৯॥
অর্থ: (১৯) মর্ত্যের মানুষ অগ্নিকে প্রজ্বলিত করে মনের সহায়তায় কর্মে মিলিত হয়; জ্ঞানের দ্বারাও অগ্নিদেবকে প্রজ্বালিত করে॥
মন্ত্র : (২০) আদিৎ প্রত্নস্য রেতসো জ্যোতিঃ পশ্যন্তি বাসরম্। পরো যদিধ্যতে দিবি ॥১০॥
অর্থ : (২০) ঊর্ধ্বে দ্যুলোকে যা দীপ্তিলাভ করে তা স্বর্গীয় বারি হতে জ্যোতি আহরণ করে দিনের আলো দেখে॥


তৃতীয় খণ্ড : মন্ত্র সংখ্যা ১৪ ॥
মন্ত্রের দেবতা অগ্নি ॥ মন্ত্রের ছন্দ গায়ত্রী ॥
মন্ত্রের ঋষিঃ
১ প্রয়োগ ভার্গব;
২।৫ ভরদ্বাজ বার্হস্পত্য;
৩।১০ বামদেব গৌতম;
৪।৬ বসিষ্ঠ মেত্রাবরুণি;
৭ বিরূপ আঙ্গিরস;
৮ শূনঃশেপ আজীগর্তি;
৯ গোপবন আত্রেয়;
১১ প্রস্কন্ব কাণ্ব;
১২মেধাতিথি কাণ্ব
১৩ সিন্ধুদ্বীপ আন্বরীষ বা ত্রিত আপ্ত্য;
১৪ উশনা কাব্য॥
মন্ত্রঃ- (২১) অগ্নিং বো বৃধন্তমধ্বরাণাং পুরুতমম্। অচ্ছা নপ্ত্রে সহস্বতে ॥১॥
অর্থঃ- (২১) তোমাদের সন্তানের জন্য, বলের জন্য অহিংসিত যজ্ঞের বধর্নকারী অতিব্যাপ্ত অগ্নিকে প্রাপ্ত হও।
মন্ত্রঃ- (২২) অগ্নিস্তিগ্মেন শোচিষা যংসদ্বিশ্বং ন্যত্ত্রিণম্। অগ্নির্নো বৎসতে রয়িম্ ॥২॥
অর্থঃ- (২২) অগ্নি তীক্ষ্ণ জ্যোতিশিখাদ্বারা বিশ্বধন নিয়ন্ত্রণ করেন। অগ্নি আমাদের ধনদাতা॥
মন্ত্রঃ- (২৩) অগ্নে মৃড় মহাঁ অস্যয আ দেবয়ুং জনম্। ইয়েথ বর্হিরাসদম্ ॥৩॥
অর্থঃ- (২৩) হে অগ্নি, আমাদের সুখী কর; তুমি মহান। দেবকাম ব্যক্তিকে অনুগ্রহের জন্য যজ্ঞাসনে উপবেশন কর॥
মন্ত্রঃ- (২৪) অগ্নে রক্ষা ণো অংহসঃ প্রতি স্ম দেব রীষতঃ। তপিষ্ঠৈরজরো দহ ॥৪॥
অর্থঃ- (২৪) হে অগ্নি, আমাদের পাপ হতে রক্ষা কর। হে দেব, হিংসকদের হাত থেকে রক্ষা কর। তোমার তপের তাপে স্তুতিহীনদের দহন কর॥
মন্ত্রঃ- (২৫) অগ্নে যুঙ্ ক্ষ্বা হি যে তবাশ্বাসো দেব সাধবঃ। অরং বহন্ত্যাশবঃ ॥৫॥
অর্থঃ- (২৫) হে অগ্নি, তোমার যে সকল সৎকর্মপরায়ণ আলোকরশ্মিদের নিজরথে যুক্ত কর যে ক্ষিপ্রকর্মকুশলেরা তোমাকে সর্বত্র বহন করে॥
মন্ত্রঃ- (২৬) নি ত্বা নক্ষ্য বিশ্‌পতে দ্যুমন্তং ধীমহে বয়ম্। সুধীরমগ্ন আহুত॥৬॥
অর্থঃ- (২৬) তোমার প্রতি গমনশীল আমরা, হে জনগণপালক সুবীর আহূত অগ্নি, দীপ্যমান তোমাকেই ধ্যান করি॥
মন্ত্রঃ- (২৭) অগ্নির্মুর্ধা দিবঃ ককুৎপতিঃ পৃথিব্যা অয়ম্। অপাং রেতাংসি জিনবতি ॥৭॥
অর্থঃ- (২৭) অগ্নি দ্যুলোকের মস্তক, এক পৃথিবীরও শীর্ষস্থানীয়। তিনি বারিধারায় সকলকে প্রীত করেন॥
মন্ত্রঃ- (২৮) ইমমু ষু ত্বম্ স্মাকং সনিং গায়ত্রং নব্যাংসম্। অগ্নে দেবেষু প্র বোচঃ॥৮॥
অর্থঃ- (২৮) হে অগ্নি, গায়ত্রীছন্দে রচিত নবতর স্তুতি আমাদের এ উপহার তুমি দেবগণের মধ্যে প্রচার কর॥
মন্ত্রঃ- (২৯) যং ত্বা গোপবনো গিরা জনিষ্ঠদগ্নে অঙ্গিরঃ। স পাবক শ্রুধী হবম্ ॥৯॥
অর্থঃ- (২৯) যে তোমাকে গোপবন ঋষি স্তবে তুষ্ট করলো সেই তুমি হে অগ্নি, হে অঙ্গির, হে পাবক, আমাদের আহ্বান শোন॥
মন্ত্রঃ- (৩০) পরি বাজপতিঃ কবিরগ্নির্হব্যান্যক্রমীৎ। দধদ্ রত্নানি দাশুষে ॥১০॥
অর্থঃ- (৩০) অন্নবলপতি কবি অগ্নি সকল হব্য বহন করেন; হব্যদাতার জন্য রত্নধারণ করেন॥
মন্ত্রঃ- (৩১) উদূ ত্যং জাতবেদসং দৈবং বহন্তি কেভবঃ। দৃশে বিশ্বায় সূর্যমা ॥১১॥
অর্থঃ- (৩১) যিনি প্রাণিমাত্রকেই জানেন সেই সূর্যরূপী অগ্নিদেবকে বিশ্বের দর্শনের জন্য রশ্মিগণ ঊর্ধ্বে বহন করেন॥
মন্ত্রঃ- (৩২) কবিমগ্নিমুপ স্তুহি সত্যধর্মাণমধ্বরে। দেবমমীবচাতনম্ ॥১২॥
অর্থঃ- (৩২) হে স্তোতা, অহিংসিত যজ্ঞে কবি সত্যধর্মা ব্যাধিনাশক দ্যোতমান অগ্নিকে স্তব কর॥
মন্ত্রঃ- (৩৩) শং নো দেবীরভিষ্টয়ে শং নো ভবন্তু পীতয়ে। শং যোরভিস্রবন্তু নঃ ॥১৩॥
অর্থঃ- (৩৩) আমাদের অভিলাষ পূরণের জন্য আমাদের সুখকর পালনের জন্য সকল জলদা-শক্তি কল্যাণবারি বর্ষণের দ্বারা আমাদের সুখী করেন॥
মন্ত্রঃ- (৩৪) কস্য নূনং পরীণসি ধিয়ো জিন্বসি সৎপতে। গোষাতা যস্য তে গিরঃ॥
অর্থঃ- (৩৪) কার বহুকর্মকে পুরণ কর হে সৎপতি? ‒তোমার উদ্দেশ্যে যার স্তুতি সর্বধনকর॥


চতুর্থ খণ্ড : মন্ত্র সংখ্যা ১০ ॥
মন্ত্রের দেবতা অগ্নি ॥ মন্ত্রের ছন্দ বৃহতী ॥
মন্ত্রের ঋষিঃ
১।৩।৭ শংযু বার্হস্পত্য, তৃণপাণি;
২।৫।৮।৯ ভর্গ প্রাগাথ, বশিষ্ঠ মৈত্রাবরুণি;
৬ প্রস্কন্ব কাণ্ব,
১০ সৌভরি কাণ্ব॥
মন্ত্রঃ- (৩৫) যজ্ঞাযজ্ঞা বো অগ্নয়ে গিরাগিরা চ দক্ষসে। প্রপ্র বয়মমৃতং জাতবেদসং প্রিয়ং মিত্রং ন শংসিষম্॥১॥
অর্থঃ- (৩৫) যজ্ঞে যজ্ঞে মন্ত্রে মন্ত্রে তোমাদের জন্য আমরা অমৃতসমান, সর্বজ্ঞ, প্রিয়, মিত্র, প্রশংসনীয় অগ্নির উদ্দেশ্যে সেই পবিত্রবলের উদ্দেশ্যে স্তব করি।।
মন্ত্রঃ- (৩৬) পাহি নো অগ্র একয়া পাহ্যূতত দ্বিতীয়রা। পাহি গীর্ভিস্তিসৃভিরূর্জাম্পতে পাহি চতসৃভির্বসো॥২॥
অর্থঃ- (৩৬) হে অগ্নি, আমাদের প্রথমের দ্বারা ( ‒ঋগ্বেদের দ্বারা পালন কর। আমাদের দ্বিতীয়ের দ্বারা ( ‒যজূর্বেদের দ্বারা) পালন কর; হে বলপতি, আমাদের তৃতীয় স্তবমালার দ্বারা ( ‒সামবেদের দ্বারা) পালন কর; হে ধনী, আমাদের চতুর্থের দ্বারা ( ‒অথর্ববেদের দ্বারা) পালন কর॥
মন্ত্রঃ- (৩৭) বৃহদ্ভিরগ্নে অর্চিভিঃ শুক্রেণ দেব শোচিষা। ভরদ্বাজে সমিধানো যবিষ্ঠা রেবৎপাবক দীদিহি॥৩॥
অর্থঃ- (৩৭) হে অগ্নি, প্রবল দীপ্তিসহায়ে, হে দেব, শুভ্রজ্যোতি সহায়ে যেমন ভরদ্বাজের কাছে সন্দীপ্ত হও তেমনি হে চিরযুবা, ধনাধীশ, হে পাবক, আমার কাছে প্রকাশিত হও।।
মন্ত্রঃ- (৩৮) ত্বে অগ্নে স্বাহূত প্রিয়াসঃ সন্তু সূরয়ঃ। যন্তারো যে মঘবানো জনানামুর্বং দয়ন্ত গোনাম্॥৪॥
অর্থঃ- (৩৮) সুষ্ঠরূপে আহূত হে অগ্নি, শ্রেষ্ঠদের মধ্যে তাঁরাই তোমার প্রিয় যাঁরা ধনের নিয়ামক হয়ে মানুষ ও পশুর মধ্যে তোমার সম্পদ সম্যক বিভাগ করে দেন॥
মন্ত্রঃ- (৩৯) অগ্নে জরিতর্বিশ্‌পপতিস্তপানো দেব রক্ষসঃ। অপ্রোষিবান্ গৃহপতে মহাঁ অসি দিবস্পায়ুর্দুরোণষুঃ॥৫॥
অর্থঃ- (৩৯) হে অগ্নি, হে স্তুত্য, হে জনগণপতি, হে দুষ্টসন্তাপক, হে দেব, হে অচঞ্চল গৃহপতি, তুমি মহান্, দ্যুলোকের পালক, তুমি গৃহপালনের অভিলাষী॥
মন্ত্রঃ- (৪০) অগ্নে বিবস্বদুষশ্চিত্রং রাধো অমর্ত্য। আ দাশষে জাতবেদো বহা ত্বমদ্যা দেবাঁ ঊষবুর্ধঃ॥৬॥
অর্থঃ- (৪০) হে অগ্নি, তমোনাশক তুমি; নিয়ে এস তার জন্য ঊষা হতে বিচিত্র সর্বার্থধন যে তোমাকে চায়; হে অমর্ত্য, হে জাতপ্রজ্ঞান, আজ আন সেই দেবদের যাঁরা ঊষাকালে জাগরিত॥
মন্ত্রঃ- (৪১) ত্বঃ নশ্চিত্র ঊত্যা বসো রাধাংসি চোদয়। অস্য বায়স্তমগ্নে রথীরসি বিদা গাধং তুচে তু নঃ॥৭॥
অর্থঃ- (৪১) হে বিচিত্রধন অগ্নি, আমাদের পালন ইচ্ছা করে সর্বার্থসাধক ধন দান কর; হে অগ্নি, এ ধনের তুমিই চালক যা আমাদের সন্তানদের প্রতিষ্ঠিত করবে।
মন্ত্রঃ- (৪২) ত্বমিৎ সপ্রথা অস্যগ্নে ত্রাতর্ঋতঃ কবিঃ। ত্বাং বিপ্রাসঃ সমিধান দীদিব আ বিবাসন্তি বেধসঃ॥৮॥
অর্থঃ- (৪২) তুমিই সর্বত্র বিস্তৃত হও হে অগ্নি, তুমিই ত্রাতা, তুমিই ঋত (সত্য), তুমিই কবি; হে সন্দীপ্ত, হে দেদীপ্যমান, তোমাকে জ্ঞানবৃদ্ধ স্তোতাগণ, সর্বত্র পরিচর্যা করেন।।
মন্ত্রঃ- (৪৩) আ নো অগ্নে বয়োবৃধং রয়িং পাবক শংস্যম্। রাস্বা চ ন উপমাতে পুরুস্পৃহং সুনীতি সুযশস্তরম্॥৯॥
অর্থঃ- (৪৩) হে অগ্নি, আমাদের জন্য আয়ুকারক প্রশংসনীয় ধন আন; হে পাবক, হে কাছের দেবতা, সুনীতিযুক্ত সুযশ বহস্পৃহ ধন দাও॥
মন্ত্রঃ- (৪৪) যো বিশ্বা দয়তে বসু হোতা মন্দ্রো জনানাম্। মঘোর্ন পাত্রা প্রথমান্যস্মৈ প্র স্তোমা যন্ত্বগ্নয়ে॥১০॥
অর্থঃ- (৪৪) যিনি বিশ্বধন, বসু, হোতা, জনগণের আনন্দদায়ক, সেই অগ্নির উদ্দেশ্যে সব স্তুতিমন্ত্র মধুপূর্ণ পাত্রের মত যাচ্ছে॥

                                                         পঞ্চম খণ্ড : মন্ত্র সংখ্যা ১০ ॥
                                                মন্ত্রের দেবতা অগ্নি ॥ মন্ত্রের ছন্দ বৃহতী ॥
                                                             মন্ত্রের ঋষিঃ
                                                     ১ বশিষ্ঠ মৈত্রাবরুণি;
                                                     ২ ভর্গ প্রাগাথ;
                                                   ৩।৭ সৌভরি কাণ্ব;
                                                   ৪ মনু বৈবস্বতি;
                                             ৫ সুদীতিপুরমীঢ় আঙ্গিরস;
                                                      ৬ প্রস্কন্ব কাণ্ব;
                                          ৮ কাণ্ব মেধাতিথি ও মেধ্যাতিথি;
                                                    ৯ গাথি বিশ্বামিত্র;
                                                      ১০ ঘৌর কণ্ব ॥

মন্ত্রঃ- (৪৫) এনা বো অগ্নিং নমসোর্জো নপাতমা হূবে। প্রিয়ং চেতিষ্ঠমরতিং স্বধ্বরং বিশ্বস্য দূতমমৃতম্॥১॥
অর্থঃ- (৪৫) তোমাদের জন্য বলপুত্র প্রিয় উত্তমচৈতন্য ভ্রমণশীল সুযজ্ঞ বিশ্বদূত অমৃতসমান অগ্নিকে স্তবের দ্বারা আহ্বান করি॥
মন্ত্রঃ- (৪৬) শেষে বনেষু মাতৃষু সং ত্বা মর্তাস ইন্ধতে। অতন্দো হব্যং বহসি হবিস্কৃত আদিদ্দেবেষু রাজসি॥২॥
অর্থঃ- (৪৬) হে অগ্নি, বনে মাতৃরূপা কাষ্ঠমধ্যে তুমি নিদ্রা যাও, মানুষেরা তোমাকে প্রজ্বালিত করে, তুমি হব্যদাতার হব্য অনলস অতন্দ্র হয়ে বহন করে থাক, তারপর দেবজ্যোতির মধ্যে দীপ্তিলাভ কর॥
মন্ত্রঃ- (৪৭) অদর্শি গাতুবিত্তমো যস্মিন্ ব্রতান্যাদধুঃ। উপো ষু জাতমার্যস্য বর্ধনমগ্নিং নক্ষন্তু নো গিরঃ॥৩॥
অর্থঃ- (৪৭) সকল পথের সন্ধান যিনি জানেন, যাঁর মধ্যে সকল ব্রত ধৃত আছে সেই অগ্নি দেখা দিলেন। আর্যগণের জন্য জাত জ্ঞানবৃদ্ধিকর অগ্নি আমাদের সকল স্তুতি গ্রহণ করুন।
মন্ত্রঃ- (৪৮) অগিরুক্ থে পুরোহিতো গ্রাবাণো বর্হিরধ্বরে। ঋচা যামি মরুতো ব্রহ্মণস্পতে দেবা অবো বরেণ্যম্।।৪।।
অর্থঃ- (৪৮) অগ্নি দ্যুলোকাগ্নির মধ্যে প্রধান, আকাশে মেঘের মধ্যে জলের সাথে বর্তমান। হে ব্রহ্মের পালক অগ্নি, প্রাণবায়ু মরুদগণের কাছে বর্ষমিরূপ বরণীয় পালন ঋক্ মন্ত্রের দ্বারা যাচ্ঞা করি।
মন্ত্রঃ- (৪৯) অগ্নিমীড়িম্বাবসে গাথাভিঃ শীরশোচিষম্। অগ্নিং রায়ে পুরুমীঢ় শ্রুতং নরোহগ্নিঃ সুদীহয়ে ছর্দিঃ॥৫॥
অর্থঃ- (৪৯) যে পুরুমীঢ়, তেনু আত্মরক্ষার জন্য পবিত্র শিখা অগ্নিকে গাথাদ্বারা স্তর কর, খ্যাত অগ্নিকে ধনের জন্য স্তব কর, সুদীতির জন্য কামনা কর, অন্য লোকেও এইভাবে অগ্নিকে স্তব কর।
মন্ত্রঃ- (৫০) শ্রুধি শ্রুৎকর্ণ বহ্নিভি-র্দেবৈরগ্নে সয়াবভিঃ। আসীদতু বর্হিষি মিত্রো অর্যমা প্রাতর্যাবভিরধ্বরে॥৬॥
অর্থঃ- (৫০) শোন হে অগ্নি, হে শ্রবণসমর্থ, আমার বচন; যে দেবেরা তোমার সঙ্গে হব্য বহন করেন তাঁদের নিয়ে এবং মিত্র অর্যমা ও প্রাতর্যাগে আগমনকারী অন্যদেবতাদের সঙ্গে নিয়ে এই অহিংসিত যজ্ঞে এসে যজ্ঞাসনে বোসো।
মন্ত্রঃ- (৫১) প্রে দৈবদাসো অগ্নির্দেব ইন্দ্রো ন মজ্‌মনা। অনু মাতরং পৃথিবীং বি বাবৃতে তস্থৈ নাদন্য শর্মণি॥৭॥
অর্থঃ- (৫১) ইন্দ্রের মত বলবান দৈবকর্মা অগ্নিদেব মাতা পৃথিবীকে আবৃত করে দ্যুলোকের আশ্রয়ে অবস্থিত থাকেন।
মন্ত্রঃ- (৫২) অধ জূমো অধ বা দিবো বৃহতো রোচনাদধি। অয়া বর্ধস্ব তন্বা গিরা মমা জাতা সুক্রতো পৃণ॥৮॥
অর্থঃ- (৫২) পৃথিবী হতে, দ্যুলোক হতে, অথবা বিশাল আলোকলোক হতে এস হে, সুক্রতু (সুকর্মা), আমার স্তুতিতে বেড়ে ওঠ, আমার সন্তানদের কামনা পূর্ণ কর।
মন্ত্রঃ- (৫৩) কায়মানো বনা ত্বং যন্মাতুরঞ্জগন্নপঃ। ন তত্তে অগ্নে প্রমৃষে নিবর্তনং যদ্ দূরে সন্নিথা ভুবঃ॥৯॥
অর্থঃ- (৫৩) হে অগ্নি, যখন তোমার নিজের উৎপত্তিস্থান বনকাষ্ঠমধ্যে ও সকলজীবের স্রষ্টা জলরাশিকে কামনা করে তাদের মধ্যে প্রবেশ কর তখন তুমি চিরতরে হারিয়ে যাও না তুমি আমাদের থেকে দূরে গেলেও আবার ফিরে আস।
মন্ত্রঃ- (৫৪) মি ত্বামগ্নে মনূর্দধে জ্যোতির্জনায় শশ্বতে। দীদেথ কণ্ব ঋতজাত উক্ষিতো যং নমস্যন্তি কৃষ্টয়ঃ॥১০॥
অর্থঃ- (৫৪) জ্যোতিস্বরূপ্ তোমাকে হে অগ্নি, মানুষের হিতের জন্য সূর্যদেব সদাই ধারণ করেন; মেধাবী সত্যজাত সদা বর্ধমান তুমি দীপ্তিলাভ কর, যে তোমাকে মানুষেরা নমস্কার জানায়।


ষষ্ঠ খণ্ড : মন্ত্র সংখ্যা ১০ ॥
মন্ত্রের দেবতা অগ্নি ॥ মন্ত্রের ছন্দ বৃহতী ॥
মন্ত্রের ঋষিঃ
১ বশিষ্ঠ মৈত্রাবরুণি;
২ ভর্গ প্রাগাথ;
৩।৭ সৌভরি কাণ্ব;
৪ মনু বৈবস্বতি;
৫ সুদীতিপুরমীঢ় আঙ্গিরস;
৬ প্রস্কন্ব কাণ্ব;
৮ কাণ্ব মেধাতিথি ও মেধ্যাতিথি;
৯ গাথি বিশ্বামিত্র;
১০ ঘৌর কণ্ব ॥
মন্ত্রঃ- (৪৫) এনা বো অগ্নিং নমসোর্জো নপাতমা হূবে। প্রিয়ং চেতিষ্ঠমরতিং স্বধ্বরং বিশ্বস্য দূতমমৃতম্॥১॥
অর্থঃ- (৪৫) তোমাদের জন্য বলপুত্র প্রিয় উত্তমচৈতন্য ভ্রমণশীল সুযজ্ঞ বিশ্বদূত অমৃতসমান অগ্নিকে স্তবের দ্বারা আহ্বান করি॥
মন্ত্রঃ- (৪৬) শেষে বনেষু মাতৃষু সং ত্বা মর্তাস ইন্ধতে। অতন্দো হব্যং বহসি হবিস্কৃত আদিদ্দেবেষু রাজসি॥২॥
অর্থঃ- (৪৬) হে অগ্নি, বনে মাতৃরূপা কাষ্ঠমধ্যে তুমি নিদ্রা যাও, মানুষেরা তোমাকে প্রজ্বালিত করে, তুমি হব্যদাতার হব্য অনলস অতন্দ্র হয়ে বহন করে থাক, তারপর দেবজ্যোতির মধ্যে দীপ্তিলাভ কর॥
মন্ত্রঃ- (৪৭) অদর্শি গাতুবিত্তমো যস্মিন্ ব্রতান্যাদধুঃ। উপো ষু জাতমার্যস্য বর্ধনমগ্নিং নক্ষন্তু নো গিরঃ॥৩॥
অর্থঃ- (৪৭) সকল পথের সন্ধান যিনি জানেন, যাঁর মধ্যে সকল ব্রত ধৃত আছে সেই অগ্নি দেখা দিলেন। আর্যগণের জন্য জাত জ্ঞানবৃদ্ধিকর অগ্নি আমাদের সকল স্তুতি গ্রহণ করুন।
মন্ত্রঃ- (৪৮) অগিরুক্ থে পুরোহিতো গ্রাবাণো বর্হিরধ্বরে। ঋচা যামি মরুতো ব্রহ্মণস্পতে দেবা অবো বরেণ্যম্।।৪।।
অর্থঃ- (৪৮) অগ্নি দ্যুলোকাগ্নির মধ্যে প্রধান, আকাশে মেঘের মধ্যে জলের সাথে বর্তমান। হে ব্রহ্মের পালক অগ্নি, প্রাণবায়ু মরুদগণের কাছে বর্ষমিরূপ বরণীয় পালন ঋক্ মন্ত্রের দ্বারা যাচ্ঞা করি।
মন্ত্রঃ- (৪৯) অগ্নিমীড়িম্বাবসে গাথাভিঃ শীরশোচিষম্। অগ্নিং রায়ে পুরুমীঢ় শ্রুতং নরোহগ্নিঃ সুদীহয়ে ছর্দিঃ॥৫॥
অর্থঃ- (৪৯) যে পুরুমীঢ়, তেনু আত্মরক্ষার জন্য পবিত্র শিখা অগ্নিকে গাথাদ্বারা স্তর কর, খ্যাত অগ্নিকে ধনের জন্য স্তব কর, সুদীতির জন্য কামনা কর, অন্য লোকেও এইভাবে অগ্নিকে স্তব কর।
মন্ত্রঃ- (৫০) শ্রুধি শ্রুৎকর্ণ বহ্নিভি-র্দেবৈরগ্নে সয়াবভিঃ। আসীদতু বর্হিষি মিত্রো অর্যমা প্রাতর্যাবভিরধ্বরে॥৬॥
অর্থঃ- (৫০) শোন হে অগ্নি, হে শ্রবণসমর্থ, আমার বচন; যে দেবেরা তোমার সঙ্গে হব্য বহন করেন তাঁদের নিয়ে এবং মিত্র অর্যমা ও প্রাতর্যাগে আগমনকারী অন্যদেবতাদের সঙ্গে নিয়ে এই অহিংসিত যজ্ঞে এসে যজ্ঞাসনে বোসো।
মন্ত্রঃ- (৫১) প্রে দৈবদাসো অগ্নির্দেব ইন্দ্রো ন মজ্‌মনা। অনু মাতরং পৃথিবীং বি বাবৃতে তস্থৈ নাদন্য শর্মণি॥৭॥
অর্থঃ- (৫১) ইন্দ্রের মত বলবান দৈবকর্মা অগ্নিদেব মাতা পৃথিবীকে আবৃত করে দ্যুলোকের আশ্রয়ে অবস্থিত থাকেন।
মন্ত্রঃ- (৫২) অধ জূমো অধ বা দিবো বৃহতো রোচনাদধি। অয়া বর্ধস্ব তন্বা গিরা মমা জাতা সুক্রতো পৃণ॥৮॥
অর্থঃ- (৫২) পৃথিবী হতে, দ্যুলোক হতে, অথবা বিশাল আলোকলোক হতে এস হে, সুক্রতু (সুকর্মা), আমার স্তুতিতে বেড়ে ওঠ, আমার সন্তানদের কামনা পূর্ণ কর।
মন্ত্রঃ- (৫৩) কায়মানো বনা ত্বং যন্মাতুরঞ্জগন্নপঃ। ন তত্তে অগ্নে প্রমৃষে নিবর্তনং যদ্ দূরে সন্নিথা ভুবঃ॥৯॥
অর্থঃ- (৫৩) হে অগ্নি, যখন তোমার নিজের উৎপত্তিস্থান বনকাষ্ঠমধ্যে ও সকলজীবের স্রষ্টা জলরাশিকে কামনা করে তাদের মধ্যে প্রবেশ কর তখন তুমি চিরতরে হারিয়ে যাও না তুমি আমাদের থেকে দূরে গেলেও আবার ফিরে আস।
মন্ত্রঃ- (৫৪) মি ত্বামগ্নে মনূর্দধে জ্যোতির্জনায় শশ্বতে। দীদেথ কণ্ব ঋতজাত উক্ষিতো যং নমস্যন্তি কৃষ্টয়ঃ॥১০॥
অর্থঃ- (৫৪) জ্যোতিস্বরূপ্ তোমাকে হে অগ্নি, মানুষের হিতের জন্য সূর্যদেব সদাই ধারণ করেন; মেধাবী সত্যজাত সদা বর্ধমান তুমি দীপ্তিলাভ কর, যে তোমাকে মানুষেরা নমস্কার জানায়।

সপ্তম খণ্ড : মন্ত্র সংখ্যা ১০ ॥
দেবতা অগ্নি ॥ ছন্দ ১।৩, ৫-৯ ত্রিষ্টুপ, ২।৪ জগতী ১০ ত্রিপাদ্ বিরাট্ গায়ত্রী ॥
ঋষিঃ
১ শ্যাবাশ্ব আত্রেয় বা বামদেব গৌতম;
২ উপস্তুত বার্ষ্টিহব্য;
৩ বৃহদুকথ্ বামদেব্য;
৪ কুৎস আঙ্গিরস;
৫।৬ ভরদ্বাজ বার্হস্পত্য;
৭ বামদেব গৌতম;
৮।১০ বসিষ্ঠ মৈত্রাবরুণি;
৯ ত্রিশিরা ত্বাষ্ট্র॥
মন্ত্রঃ- (৬৩) আ জুহোতা হবিষা মর্জয়ধ্বং নি হোতারং গৃহপতিং দধিধ্বম্। ইডস্পদে নমসা রাতহবাং সপর্যতা যজতং পস্ত্যানাম ॥১॥
অর্থ : (৬৩) তাঁর উদ্দেশে নিবেদন কর, হোতাকে প্রশংসিত কর, গৃহপতিকে অন্তরে ধারণ কর; সকল গৃহের উপাস্যকে স্তুতি দ্বারা, যজ্ঞভূমিতে সেই হব্যগ্রহণকারীকে পূজার দ্বারা প্রীত কর।
মন্ত্র (৬৪) চিত্র ইচ্ছিশোস্তরুণস্য বক্ষথো ন যো মাতরাবন্বেতি ধাতবে। অনূধা যদজীজনদধা চিদা ববক্ষ সদ্যো মহি দূত্যাংত চরন্॥২॥
অর্থ (৬৪): এই শিশুর এই তরুণের কাজ বড়ই বিচিত্র। এ স্তন্যপানের জন্য মায়ের কাছে যায় না। এর মাতার (-অরণি কাষ্ঠ যা থেকে অগ্নি উৎপন্ন) স্তন নেই, তবু এ জন্মমাত্রই মহান দেবদৌত্যকার্যের ভার গ্রহণ করলো॥
মন্ত্র (৬৫) ইদং ত একং পর উ ত একং তৃতীয়েন জ্যোতিষা সং বিশস্ব। সংবেশনস্তন্বেতচারুরেধি প্রিয়ো দেবানাং পরমে জনিত্রে॥৩॥
অর্থ (৬৫): হে অগ্নি, এই পার্থিব অগ্নি তোমার একরূপ, অন্তরিক্ষে বিদ্যুৎ তোমার আর এক রূপ, আর দ্যুলোকে সুর্যরূপ জ্যোতির্ময় তোমার শরীর তৃতীয়রূপ – এ তিন রূপে তুমি সকল কিছুর মধ্যে প্রবেশ কর। তারপর তুমি কল্যাণরূপ ধারণ করে দেবশ্রেষ্ঠ পরমপিতা সূর্যদেবের প্রিয় হও॥
মন্ত্র (৬৬) ইমং স্তোমমর্হতে জাতবেদসে রথমিব নং মহেমা মনীষয়া। ভদ্রা হি নঃ প্রমতিরস্য সংসদ্যগ্নে সখ্যে মা রিষামা বয়ং তব॥৪॥
অর্থ (৬৬) : সুর্যসমান পূজনীয় সর্বজ্ঞান অগ্নির উদ্দেশে প্রজ্ঞার দ্বারা এই স্তুতি রচনা করি। অগ্নির উপাসনায় আমাদের বুদ্ধি হোক কল্যাণময়ী। হে অগ্নি, আমরা তোমার সখা হলে কেউ হিংসা করতে পারবে না॥
মন্ত্র (৬৭) মূর্ধানং দিবো অরতিং পৃথিব্যা বৈশ্বানরমৃত আ জাতমগ্নিম্। কবিং সম্রাজমতিথিং জনানামাসন্নঃ পাত্রং জনয়স্ত দেবাঃ॥৫॥
অর্থ (৬৭) দ্যুলোকের মস্তক, পৃথিবীর শাসক, বিশ্বনায়ক, সৎকর্মের প্রকাশক, কবি, সম্রাট, অতিথির ন্যায় পূজ্য, জনগণের মুখপাত্র অগ্নিদেবকে দেবগণ (-রশ্মিগণ) প্রকাশিত করেন॥
মন্ত্র (৬৮) বি ত্বদাপো ন পর্বতস্য পৃষ্ঠাদুকথেভিরগ্নে জনয়স্ত দেবাঃ। তং ত্বা গিরঃ সুষ্টুতয়ো বাজয়ন্ত্যাজিং ন গির্ববাহো জিগ্যুরশ্বাঃ॥৬॥
অর্থ (৬৮) বারিধারা যেমন পর্বতপৃষ্ঠকে সিক্ত করে সেরূপ হে অগ্নি, দেবতুল্য মানুষেরা তোমাকে সামগানে স্নান করান। হে স্তুতিবাহন, অশ্ব যেমন পথকে ব্যাপ্ত করে, সেই সুন্দর স্তুতিও তেমনি তোমাকে উজ্জ্বলরূপে ব্যাপ্ত করুক॥
মন্ত্র (৬৯) আ বো রাজানমধ্বরস্য রুদ্রং হোতারং সত্যযজং রোদস্যোঃ। অগ্নিং পুরা তনয়িত্নোরচিত্তাদ্ধিরণ্যরূপমবসে কৃণুধ্বম্॥৭॥
অর্থ (৬৯) যজ্ঞের রাজা, রুদ্ররূপ, হোতা, দ্যুলোক-ভূলোকের সৎকর্মা, আদি অজ্ঞেয় মহানাদধ্বনি হতে হিরণ্যরূপে জাত অগ্নিকে তোমাদের রক্ষার জন্য উপাসনা কর॥
মন্ত্র (৭০) ইন্ধে রাজা সমর্যো নমোভির্যস্য প্রতীকমাহুতং ঘৃতেন। নরো হব্যেভিরীডতে সবাধ আগ্নিরগ্রমুষসামশোচি॥৮॥
অর্থ (৭০) রাজা, ঈশ্বর স্তবের দ্বারা সম্যক্ দীপ্ত, যাঁর পূর্ণদর্শন ঘৃতের দ্বারা সংবর্ধিত, মানুষেরা আগ্রহের সঙ্গে হবির দ্বারা তাঁকে পূজা করে; অগ্নিদেব ঊষার আগে দীপ্তি লাভ করতে চলেছেন; কাছের আকাশ দূরের আকাশ তিনি ছেয়ে ফেললেন; জলের আধার আকাশে মহান বিদ্যুৎরূপে তিনি বর্ধিত হলেন॥
মন্ত্র (৭১) প্র কেতুনা যাত্যগ্নিরা রোদসী বৃষভো রোরবীতি। দিবশ্চিদন্তাদুপমামুদানডপামুপস্থে মহিষো ববর্ধ ॥৯॥
অর্থ (৭১) : বিশাল পতাকা উড়িয়ে অগ্নিদেব দ্যুলোক ভূলোক জুড়ে বৃষের মত শব্দ করতে করতে চলেছেন; কাছের আকাশ দূরের আকাশ তিনি ছেয়ে ফেললেন; জলের আধার আকাশে মহান বিদ্যুৎরূপে তিনি বর্ধিত হলেন ॥
মন্ত্র (৭২) অগ্নিং নরো দীধিতিভীররণ্যোর্হস্তচ্যুতং জনয়ত প্রশস্তম্। দূরেদৃশং গৃহপতিমথব্যুম্।।১০।।
অর্থ (৭২) যিনি প্রশস্ত, দূরে দৃশ্যমান, গৃহপতি, দেবগণের উদ্দেশ্যে গমনশীল, সেই অগ্নিকে মানুষেরা আঙ্গুলের সাহায্যে অরণিকাষ্ঠ থেকে উৎপন্ন করেন (-প্রজ্জ্বালিত করেন)॥
(c) https://www.ebanglalibrary.com
Share:

Total Pageviews

বিভাগ সমুহ

অন্যান্য (91) অবতারবাদ (7) অর্জুন (3) আদ্যশক্তি (68) আর্য (1) ইতিহাস (30) উপনিষদ (5) ঋগ্বেদ সংহিতা (10) একাদশী (10) একেশ্বরবাদ (1) কল্কি অবতার (3) কৃষ্ণভক্তগণ (11) ক্ষয়িষ্ণু হিন্দু (21) ক্ষুদিরাম (1) গায়ত্রী মন্ত্র (2) গীতার বানী (14) গুরু তত্ত্ব (6) গোমাতা (1) গোহত্যা (1) চাণক্য নীতি (3) জগন্নাথ (23) জয় শ্রী রাম (7) জানা-অজানা (7) জীবন দর্শন (68) জীবনাচরন (56) জ্ঞ (1) জ্যোতিষ শ্রাস্ত্র (4) তন্ত্রসাধনা (2) তীর্থস্থান (18) দেব দেবী (60) নারী (8) নিজেকে জানার জন্য সনাতন ধর্ম চর্চাক্ষেত্র (9) নীতিশিক্ষা (14) পরমেশ্বর ভগবান (25) পূজা পার্বন (43) পৌরানিক কাহিনী (8) প্রশ্নোত্তর (39) প্রাচীন শহর (19) বর্ন ভেদ (14) বাবা লোকনাথ (1) বিজ্ঞান ও সনাতন ধর্ম (39) বিভিন্ন দেশে সনাতন ধর্ম (11) বেদ (35) বেদের বানী (14) বৈদিক দর্শন (3) ভক্ত (4) ভক্তিবাদ (43) ভাগবত (14) ভোলানাথ (6) মনুসংহিতা (1) মন্দির (38) মহাদেব (7) মহাভারত (39) মূর্তি পুজা (5) যোগসাধনা (3) যোগাসন (3) যৌক্তিক ব্যাখ্যা (26) রহস্য ও সনাতন (1) রাধা রানি (8) রামকৃষ্ণ দেবের বানী (7) রামায়ন (14) রামায়ন কথা (211) লাভ জিহাদ (2) শঙ্করাচার্য (3) শিব (36) শিব লিঙ্গ (15) শ্রীকৃষ্ণ (67) শ্রীকৃষ্ণ চরিত (42) শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু (9) শ্রীমদ্ভগবদগীতা (40) শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা (4) শ্রীমদ্ভাগব‌ত (1) সংস্কৃত ভাষা (4) সনাতন ধর্ম (13) সনাতন ধর্মের হাজারো প্রশ্নের উত্তর (3) সফটওয়্যার (1) সাধু - মনীষীবৃন্দ (2) সামবেদ সংহিতা (9) সাম্প্রতিক খবর (21) সৃষ্টি তত্ত্ব (15) স্বামী বিবেকানন্দ (37) স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (14) স্মরনীয় যারা (67) হরিরাম কীর্ত্তন (6) হিন্দু নির্যাতনের চিত্র (23) হিন্দু পৌরাণিক চরিত্র ও অন্যান্য অর্থের পরিচিতি (8) হিন্দুত্ববাদ. (82) shiv (4) shiv lingo (4)

আর্টিকেল সমুহ

অনুসরণকারী

" সনাতন সন্দেশ " ফেসবুক পেজ সম্পর্কে কিছু কথা

  • “সনাতন সন্দেশ-sanatan swandesh" এমন একটি পেজ যা সনাতন ধর্মের বিভিন্ন শাখা ও সনাতন সংস্কৃতিকে সঠিকভাবে সবার সামনে তুলে ধরার জন্য অসাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে গঠন করা হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য নিজের ধর্মকে সঠিক ভাবে জানা, পাশাপাশি অন্য ধর্মকেও সম্মান দেওয়া। আমাদের লক্ষ্য সনাতন ধর্মের বর্তমান প্রজন্মের মাঝে সনাতনের চেতনা ও নেতৃত্ত্ব ছড়িয়ে দেওয়া। আমরা কুসংষ্কারমুক্ত একটি বৈদিক সনাতন সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এ পথচলায় আপনাদের সকলের সহযোগিতা কাম্য । এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। সনাতন ধর্মের যে কেউ লাইক দিয়ে এর সদস্য হতে পারে।