১০১ সুক্ত।।
অনুবাদঃ
১। যিনি ঋজিশ্বন রাজার সঙ্গে কৃষ্ণের (১) গর্ভবতী ভার্যাদের হত করেছিলেন, সে হৃষ্ট ইন্দ্রের উদ্দেশে অন্নের সঙ্গে স্তুতি অর্পণ কর। আমরা রক্ষণেচ্ছায় সে অভীষ্টদাতা, দক্ষিণ হস্তে বজ্রধারী ইন্দ্রকে মরুৎগণের সাথে আমাদের সখা হবার জন্য আহ্বান করি।
২। যে ইন্দ্র প্রবৃদ্ধ কোপের সাথে বিগতভূজ বৃত্রকে হত করেছিলেন, যিনি শম্বরকেও যজ্ঞরহিত পিপ্রুকে বধ করেছিলেন যিনি দুজয় শুষ্ণকে সমূলে হত করেছিলেন, সে ইন্দ্রকে মরুৎগণের সাথে আমাদের সখা হবার জন্য আহ্বান করি।
৩। দ্যাবা পৃথিবী যার বিপুল বল অনুধাবন করে, বরুণ ও সূর্য যার নিয়মে চলছেন নদীসমূহ যার নিয়ম অনুসারে প্রবাহিত হয়, সে ইন্দ্রকে মরুৎগণের সাথে আমাদের সখা হবার জন্য আহ্বান করি।
৪। যিনি অশ্বসমূহের অধিপতি, যিনি গোপ সমূহের অধিপতি, যিনি স্বাধীন, যিনি স্তুতি প্রাপ্ত হয়ে সকল কর্মে স্থির, যিনি অভিষব রহিত দুর্ধর্ষ শত্রুদেরও হন্তা, সে ইন্দ্রকে মরুৎগণের সাথে আমাদের সখা হবার জন্য আহ্বান করি।
৫। যিনি গমনশীল নিশ্বাসযুক্ত সকল জীবের অধিপতি, যিনি স্তোতৃদের জন্য গো সকলের প্রথমে উদ্ধার করেছিলেন, যিনি দস্যুদের নিকৃষ্ট করে বধ করেছিলেন, সে ইন্দ্রকে মরুৎগণের সঙ্গে আমাদের সখা হবার জন্য আহ্বান করি।
৬। যিনি শুরদের এবং ভীরুদের আহ্বান যোগ্য, যাকে পলায়মান লোক এবং বিজয়ী লোকও আহ্বান করে। যাকে সকল জীব নিজ নিজ কার্যে সম্মুখে স্থাপন করে, সে ইন্দ্রকে মরুৎগণের সঙ্গে আমাদের সখা হবার জন্য আহ্বান করি।
৭। আলোকময় ইন্দ্র রুদ্রদের গ্রহণ করে উদিত হন এবং সে রুদ্রদের দ্বারা বাক্য বেগযুক্ত হ{েয় বিস্তারিত হয়। প্রসিদ্ধ ইন্দ্রকে স্তুতি লক্ষণ বাক্য পূজা করে। আমরা তাকে মরুৎগণের সাথে আমাদের সখা হবার জন্য আহ্বান করি।
৮। হে মরুৎযুক্ত ইন্দ্র। তুমি উৎকৃষ্ট গৃহেই হৃষ্ট হও অথবা সামান্য বাসস্থানেই হৃষ্ট হও, আমাদের যজ্ঞ অভিমুখে এস। হে সত্যধন! তোমার জন্য উৎসুক হয়ে আমরা হব্য প্রদান করছি।
৯। হে শোভনীয় বলযুক্ত ইন্দ্র! আমরা তোমার জন্য উৎসুক হয়ে সোম অভিষব করছি। তোমাকে স্তুতি দ্বারা পাওয়া যায়, আমরা তোমার উদ্দেশে হব্য প্রদান করছি। হে অশ্বযুক্ত ইন্দ্র! মরুৎগণের সাথে দলবদ্ধ হয়ে এ যজ্ঞের কুশের উপর বসে হৃষ্ট হও।
১০। হে ইন্দ্র! তোমার অশ্বগণের সাথে হৃষ্ট হও, তোমার শিপ্র দুটি খোল, সোম পানার্থ তোমার জিহ্বা ও উপজিহ্বা প্রসারণ কর। হে সুশিপ্র! তোমাকে অশ্বগণ এখানে আনুক, তুমি আমাদরে প্রতি তুষ্ট হয়ে আমাদরে হব্য গ্রহণ কর।
১১। যার স্তোত্র মরুৎগণের সাথে এক, সে শত্রুহস্তা ইন্দ্র দ্বারা রক্ষিত হয়ে আমরা যেন তার নিকট হতে অন্ন প্রাপ্ত হই। মিত্র, বরুণ, অদিতি, সিন্ধু, পৃথিবী ও দ্যৌঃ আমাদের রক্ষা করুন।
১। যিনি ঋজিশ্বন রাজার সঙ্গে কৃষ্ণের (১) গর্ভবতী ভার্যাদের হত করেছিলেন, সে হৃষ্ট ইন্দ্রের উদ্দেশে অন্নের সঙ্গে স্তুতি অর্পণ কর। আমরা রক্ষণেচ্ছায় সে অভীষ্টদাতা, দক্ষিণ হস্তে বজ্রধারী ইন্দ্রকে মরুৎগণের সাথে আমাদের সখা হবার জন্য আহ্বান করি।
২। যে ইন্দ্র প্রবৃদ্ধ কোপের সাথে বিগতভূজ বৃত্রকে হত করেছিলেন, যিনি শম্বরকেও যজ্ঞরহিত পিপ্রুকে বধ করেছিলেন যিনি দুজয় শুষ্ণকে সমূলে হত করেছিলেন, সে ইন্দ্রকে মরুৎগণের সাথে আমাদের সখা হবার জন্য আহ্বান করি।
৩। দ্যাবা পৃথিবী যার বিপুল বল অনুধাবন করে, বরুণ ও সূর্য যার নিয়মে চলছেন নদীসমূহ যার নিয়ম অনুসারে প্রবাহিত হয়, সে ইন্দ্রকে মরুৎগণের সাথে আমাদের সখা হবার জন্য আহ্বান করি।
৪। যিনি অশ্বসমূহের অধিপতি, যিনি গোপ সমূহের অধিপতি, যিনি স্বাধীন, যিনি স্তুতি প্রাপ্ত হয়ে সকল কর্মে স্থির, যিনি অভিষব রহিত দুর্ধর্ষ শত্রুদেরও হন্তা, সে ইন্দ্রকে মরুৎগণের সাথে আমাদের সখা হবার জন্য আহ্বান করি।
৫। যিনি গমনশীল নিশ্বাসযুক্ত সকল জীবের অধিপতি, যিনি স্তোতৃদের জন্য গো সকলের প্রথমে উদ্ধার করেছিলেন, যিনি দস্যুদের নিকৃষ্ট করে বধ করেছিলেন, সে ইন্দ্রকে মরুৎগণের সঙ্গে আমাদের সখা হবার জন্য আহ্বান করি।
৬। যিনি শুরদের এবং ভীরুদের আহ্বান যোগ্য, যাকে পলায়মান লোক এবং বিজয়ী লোকও আহ্বান করে। যাকে সকল জীব নিজ নিজ কার্যে সম্মুখে স্থাপন করে, সে ইন্দ্রকে মরুৎগণের সঙ্গে আমাদের সখা হবার জন্য আহ্বান করি।
৭। আলোকময় ইন্দ্র রুদ্রদের গ্রহণ করে উদিত হন এবং সে রুদ্রদের দ্বারা বাক্য বেগযুক্ত হ{েয় বিস্তারিত হয়। প্রসিদ্ধ ইন্দ্রকে স্তুতি লক্ষণ বাক্য পূজা করে। আমরা তাকে মরুৎগণের সাথে আমাদের সখা হবার জন্য আহ্বান করি।
৮। হে মরুৎযুক্ত ইন্দ্র। তুমি উৎকৃষ্ট গৃহেই হৃষ্ট হও অথবা সামান্য বাসস্থানেই হৃষ্ট হও, আমাদের যজ্ঞ অভিমুখে এস। হে সত্যধন! তোমার জন্য উৎসুক হয়ে আমরা হব্য প্রদান করছি।
৯। হে শোভনীয় বলযুক্ত ইন্দ্র! আমরা তোমার জন্য উৎসুক হয়ে সোম অভিষব করছি। তোমাকে স্তুতি দ্বারা পাওয়া যায়, আমরা তোমার উদ্দেশে হব্য প্রদান করছি। হে অশ্বযুক্ত ইন্দ্র! মরুৎগণের সাথে দলবদ্ধ হয়ে এ যজ্ঞের কুশের উপর বসে হৃষ্ট হও।
১০। হে ইন্দ্র! তোমার অশ্বগণের সাথে হৃষ্ট হও, তোমার শিপ্র দুটি খোল, সোম পানার্থ তোমার জিহ্বা ও উপজিহ্বা প্রসারণ কর। হে সুশিপ্র! তোমাকে অশ্বগণ এখানে আনুক, তুমি আমাদরে প্রতি তুষ্ট হয়ে আমাদরে হব্য গ্রহণ কর।
১১। যার স্তোত্র মরুৎগণের সাথে এক, সে শত্রুহস্তা ইন্দ্র দ্বারা রক্ষিত হয়ে আমরা যেন তার নিকট হতে অন্ন প্রাপ্ত হই। মিত্র, বরুণ, অদিতি, সিন্ধু, পৃথিবী ও দ্যৌঃ আমাদের রক্ষা করুন।
টীকাঃ
১। কৃষ্ণ বোধ হয় আদিম জাতীয় কৃষ্ণবর্ণ কোন যোদ্ধা। আবার কৃষ্ণ নামক একজন ঋষি ছিলেন, সে বিষয়ে ১১৬ সুক্তের ২৩ ঋক ও টীকা দেখুন।
১। কৃষ্ণ বোধ হয় আদিম জাতীয় কৃষ্ণবর্ণ কোন যোদ্ধা। আবার কৃষ্ণ নামক একজন ঋষি ছিলেন, সে বিষয়ে ১১৬ সুক্তের ২৩ ঋক ও টীকা দেখুন।
১০২ সুক্ত।।
অনুবাদঃ
১। তুমি মহৎ, আমি তোমার উদ্দেশ্যে এ মহতী স্তুতি সম্পাদন করছি, কেন না তোমার অনুগ্রহ আমার স্তুতির উপর নির্ভর করে। ঋত্বিকগণ সমৃদ্ধি ও ধনলাভার্থ সে শত্রুবিজয়ী ইন্দ্রকে স্তুতিবল দ্বারা হৃষ্ট করেছেন।
২। সপ্ত নদী তার যশ ধারণা করছে, আকাশ, পৃথিবী ও অন্তরীক্ষ তার দর্শনীয় বপু ধারণ করছে, হে ইন্দ্র! সূর্য ও চন্দ্র আমাদের সম্মুখে আলোক বিতরণার্থ এবং আমাদের বিশ্বাস উৎপাদনার্থ পুনঃ পুনঃ একের পর অন্য বিচরণ করছে।
৩। হে মঘবন! হে ইন্দ্র! আমরা মনের সঙ্গে তোমাকে বহু স্তুতি করি। তোমার যে জয়শীল রথ শত্রুসঙ্কুল যুদ্ধে দেখে আমরা হৃষ্ট হই সে রথ আমাদের ধনলাভার্থ প্রেরণ কর। হে মঘবন! আমরা তোমাকে কামনা করি, আমাদের সুখ প্রদান কর।
৪। তোমাকে সহায় পেয়ে আমরা অবরোধকারী শত্রুদের পরান্ত করয সংগ্রামে আমাদের অংশ রক্ষা কর হে ইন্দ্র! সহজে ধন পাই এরূপ করে দাও; হে মঘবন! শত্রুদের বীর্য ভেঙে দাও।
৫। হে ধনাধিপতি! যারা রক্ষণের জন্য তোমার স্তুতি করছে ও তোমাকে আহ্বান করছে এরা নানা প্রকার। (সে সকল লোকের মধ্যে) আমাদের ধন দেবার জন্য রথে আরোহণ কর; হে ইন্দ্র! তোমার মন ব্যাকুলতারহিত এবং জয়শীল।
৬। তোমার বহুদ্বর গোজয় করেছে; তোমার জ্ঞান অপরিমিত; তুমি শ্রেষ্ঠ এবং কর্মে কর্মে শত রক্ষণকায{ সম্পন্ন কর। ইন্দ্র যুদ্ধকর্তা স্বতস্ত্র এবং সকল প্রাণীর বলের পরিমাণস্বরূপ; এ জন্যই ধনলাভার্থী লোকে তাকে বিবিধ প্রকারে আহ্বান করে।
৭। হে মঘবন! তুমি মানুষকে যে অন্ন দান কর তা শত হতেও অধিক অথবা তা হতেও অধিক অথবা সহস্র হতেও অধিক। তুমি পরিমাণরহিত, আমাদের স্তুতি বাক্য তোমাকে দীপ্ত করেছে; হে পুরন্দর, তুমি শত্রুকে হনন করেছ।
৮। হে নরপালক! তুমি ত্রিগুণিত রুজুর ন্যায় (১) সকল প্রাণীর বলের পরিমাণস্বরূপ, তুমি তিন লোকে তিন প্রকার তেজ (২) এবং এ বিশ্বভূবন বহন করতে অতিশয় সক্ষম কেননা হে ইন্দ্র! তুমি বহুকাল হতে, জন্ম অবধি শত্রু রহিত।
৯। তুমি দেবগনের মধ্যে প্রথম, তুমি সংগ্রামে শত্রুবিজয়ী, আমরা তোমাকে আহ্বান করছি। সে ইন্দ্র আমাদের যুদ্ধযোগ্য তেজযুক্ত এবং বিভেদকারী রথকে (অন্য রথের) পুরোবর্তী করে দিন।
১০। তুমি জয় লাভ কর এবং (বিজিত) ধন অবরুদ্ধ করে রাখ না। হে মঘবন! তুমি উগ্র, ক্ষুদ্র যুদ্ধে এবং মহৎ যুদ্ধেও আমরা রক্ষণার্থ তোমাকে স্তোত্র দ্বারা তীক্ষ্ম করি। অতএব হে ইন্দ্র! আমাদের যুদ্ধের আহ্বান সমূহে উত্তেজিত কর।
১১। সর্বকালে বর্তমান ইন্দ্র আমাদের পক্ষ হয়ে বলুন, আমরাও অকুটিল গতি বিশিষ্ট হয়ে অন্নভোগ করি। মিত্র, বরুণ, অদিতি, সিন্ধু, পৃথিবী ও দ্যৌঃ আমাদের রক্ষা করে তা পূজিত করুন।
১। তুমি মহৎ, আমি তোমার উদ্দেশ্যে এ মহতী স্তুতি সম্পাদন করছি, কেন না তোমার অনুগ্রহ আমার স্তুতির উপর নির্ভর করে। ঋত্বিকগণ সমৃদ্ধি ও ধনলাভার্থ সে শত্রুবিজয়ী ইন্দ্রকে স্তুতিবল দ্বারা হৃষ্ট করেছেন।
২। সপ্ত নদী তার যশ ধারণা করছে, আকাশ, পৃথিবী ও অন্তরীক্ষ তার দর্শনীয় বপু ধারণ করছে, হে ইন্দ্র! সূর্য ও চন্দ্র আমাদের সম্মুখে আলোক বিতরণার্থ এবং আমাদের বিশ্বাস উৎপাদনার্থ পুনঃ পুনঃ একের পর অন্য বিচরণ করছে।
৩। হে মঘবন! হে ইন্দ্র! আমরা মনের সঙ্গে তোমাকে বহু স্তুতি করি। তোমার যে জয়শীল রথ শত্রুসঙ্কুল যুদ্ধে দেখে আমরা হৃষ্ট হই সে রথ আমাদের ধনলাভার্থ প্রেরণ কর। হে মঘবন! আমরা তোমাকে কামনা করি, আমাদের সুখ প্রদান কর।
৪। তোমাকে সহায় পেয়ে আমরা অবরোধকারী শত্রুদের পরান্ত করয সংগ্রামে আমাদের অংশ রক্ষা কর হে ইন্দ্র! সহজে ধন পাই এরূপ করে দাও; হে মঘবন! শত্রুদের বীর্য ভেঙে দাও।
৫। হে ধনাধিপতি! যারা রক্ষণের জন্য তোমার স্তুতি করছে ও তোমাকে আহ্বান করছে এরা নানা প্রকার। (সে সকল লোকের মধ্যে) আমাদের ধন দেবার জন্য রথে আরোহণ কর; হে ইন্দ্র! তোমার মন ব্যাকুলতারহিত এবং জয়শীল।
৬। তোমার বহুদ্বর গোজয় করেছে; তোমার জ্ঞান অপরিমিত; তুমি শ্রেষ্ঠ এবং কর্মে কর্মে শত রক্ষণকায{ সম্পন্ন কর। ইন্দ্র যুদ্ধকর্তা স্বতস্ত্র এবং সকল প্রাণীর বলের পরিমাণস্বরূপ; এ জন্যই ধনলাভার্থী লোকে তাকে বিবিধ প্রকারে আহ্বান করে।
৭। হে মঘবন! তুমি মানুষকে যে অন্ন দান কর তা শত হতেও অধিক অথবা তা হতেও অধিক অথবা সহস্র হতেও অধিক। তুমি পরিমাণরহিত, আমাদের স্তুতি বাক্য তোমাকে দীপ্ত করেছে; হে পুরন্দর, তুমি শত্রুকে হনন করেছ।
৮। হে নরপালক! তুমি ত্রিগুণিত রুজুর ন্যায় (১) সকল প্রাণীর বলের পরিমাণস্বরূপ, তুমি তিন লোকে তিন প্রকার তেজ (২) এবং এ বিশ্বভূবন বহন করতে অতিশয় সক্ষম কেননা হে ইন্দ্র! তুমি বহুকাল হতে, জন্ম অবধি শত্রু রহিত।
৯। তুমি দেবগনের মধ্যে প্রথম, তুমি সংগ্রামে শত্রুবিজয়ী, আমরা তোমাকে আহ্বান করছি। সে ইন্দ্র আমাদের যুদ্ধযোগ্য তেজযুক্ত এবং বিভেদকারী রথকে (অন্য রথের) পুরোবর্তী করে দিন।
১০। তুমি জয় লাভ কর এবং (বিজিত) ধন অবরুদ্ধ করে রাখ না। হে মঘবন! তুমি উগ্র, ক্ষুদ্র যুদ্ধে এবং মহৎ যুদ্ধেও আমরা রক্ষণার্থ তোমাকে স্তোত্র দ্বারা তীক্ষ্ম করি। অতএব হে ইন্দ্র! আমাদের যুদ্ধের আহ্বান সমূহে উত্তেজিত কর।
১১। সর্বকালে বর্তমান ইন্দ্র আমাদের পক্ষ হয়ে বলুন, আমরাও অকুটিল গতি বিশিষ্ট হয়ে অন্নভোগ করি। মিত্র, বরুণ, অদিতি, সিন্ধু, পৃথিবী ও দ্যৌঃ আমাদের রক্ষা করে তা পূজিত করুন।
টীকাঃ
১। যথা ত্রিবিষ্টস্ত্রিগুণিতা রুজুর্দ্রঢ়ীয়সী। ইন্দ্রোহপি দৃঢ় ইত্যর্থঃ।
২। আকাশে সূর্য, অন্তরীক্ষে বিদ্যুৎ এবং পৃথিবীতে অগ্নি। সায়ণ।
১। যথা ত্রিবিষ্টস্ত্রিগুণিতা রুজুর্দ্রঢ়ীয়সী। ইন্দ্রোহপি দৃঢ় ইত্যর্থঃ।
২। আকাশে সূর্য, অন্তরীক্ষে বিদ্যুৎ এবং পৃথিবীতে অগ্নি। সায়ণ।
১০৪ সুক্ত।।
অনুবাদঃ
১। হে ইন্দ্র! তোমার বসবার জন্য যে বেদি প্রস্তুত হয়েছে শব্দায়মান অশ্বের ন্যায় তথায় উপবেশন কর। অশ্ববন্ধন রশ্মিবিমোচন করে অশ্বদের মুক্ত করে দাও, সে অশ্ব যজ্ঞকাল সমাগত হলে দিন রাত তোমাকে বহন করে।
২। এ মানুষেরা রক্ষণের জন্য ইন্দ্রের নিকট এসেছে । তিনি শীঘ্র, সদ্যই তাদের (অনুষ্ঠান) মার্গে গমন করতে দিন। দেবগণ দাসদের ক্রোধ বিনাশ করুন এবং আমাদের সুখের জন্য আমাদের বর্ণকে বৃদ্ধি করুন (১)
৩। কুষব (২) পরের ধন জানতে পেরে স্বয়ং অপহরণ কর, জলে বর্তমান থেকে স্বয়ং ফেনযুক্ত জল অপহরণ করে। কুযবের দু ভার্যা সে জলে স্নান করে, তারা যেন শিফানদীর গভীর নিম্নভাগে হত হয়
৪। অযু (৩) জল মধ্যে অবস্থান করে এবং তার বাসস্থান গুপ্ত ছিল; সে শুর পুর্ব অপহৃত জলের সাথে বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয় এবং বিরাজ করে। অঞ্জসী কুলিশী, ও বীরপত্নী নদীত্রয় (৪) স্বকীয় জল দিয়ে তাকে প্রীত করে জল দ্বারা তাকে ধারণ করে।
৫। বৎসপ্রিয় গরু যে রূপ গোষ্ঠের পথ জানে আমরা সেরূপ সে শত্রুর গৃহের পথ জানি। হে মঘবন! সে শত্রুর পুনঃপুনঃ কৃত উপদ্রব হতে আমাদের রক্ষা কর। কামুক (যেরুপ ধনত্যাগ করে) আমাদের সেরূপ পরিত্যাগ কেরা না।
৬। হে ইন্দ্র! আমাদের সূর্যের প্রতি ও জলসমূহের প্রতি ভক্তিপূর্ণ কর, যারা পাপশূন্যতার জন্য জবি মাত্রের প্রশংসনীয় তাদের প্রতি ভক্তিপূর্ণ কর। গর্ভস্থিত আমাদের সন্ততিকে হিংসা করো না, আমরা তোমার মহৎ বল শ্রদ্ধা করি।
৭। োমাকে আমি মনের সাথে জানি, তোমার সে বলে আমরা শ্রদ্ধা স্থাপন করেছি। তুমি অভীষ্টদাতা, আমাদের মহৎ ধন প্রদান কর। হে ইন্দ্র! তুমি বহু লোকদ্বারা আহুত, তুমি আমাদের ধনশূন্য গৃহে রেখ না, বুভুক্ষিতদের অন্ন ও পানীয় দান কর।
৮। হে ইন্দ্র! আমাদের বধ করো না, আমাদের পরিত্যাগ করো না, আমাদের প্রিয় আহার উপভোগাদি কেড়ে নিও না। হে মঘবন শত্রু। গর্ভস্থিত আমাদের অপত্যদের নষ্ট করো না, যারা জানুদ্বারা চলে এরূপ গমনসমর্থ অপত্যদের নষ্ট করো না।
৯। আমাদের অভিমুখে এস,লোকে তোমাকে সোমপ্রিয় বলেছে এ সোম ভবিষত হয়েছে, এ পান করে হৃষ্ট হও। বিস্তীর্ণাবয়ব হয়ে জঠরে সোমরস বর্ষণ কর পিতা যে রূপ পুত্রের বাক্য শোনে, আমাদের দ্বারা আহুত হয়ে সেরূপ আমাদের বাক্য শ্রবণ কর।
১। হে ইন্দ্র! তোমার বসবার জন্য যে বেদি প্রস্তুত হয়েছে শব্দায়মান অশ্বের ন্যায় তথায় উপবেশন কর। অশ্ববন্ধন রশ্মিবিমোচন করে অশ্বদের মুক্ত করে দাও, সে অশ্ব যজ্ঞকাল সমাগত হলে দিন রাত তোমাকে বহন করে।
২। এ মানুষেরা রক্ষণের জন্য ইন্দ্রের নিকট এসেছে । তিনি শীঘ্র, সদ্যই তাদের (অনুষ্ঠান) মার্গে গমন করতে দিন। দেবগণ দাসদের ক্রোধ বিনাশ করুন এবং আমাদের সুখের জন্য আমাদের বর্ণকে বৃদ্ধি করুন (১)
৩। কুষব (২) পরের ধন জানতে পেরে স্বয়ং অপহরণ কর, জলে বর্তমান থেকে স্বয়ং ফেনযুক্ত জল অপহরণ করে। কুযবের দু ভার্যা সে জলে স্নান করে, তারা যেন শিফানদীর গভীর নিম্নভাগে হত হয়
৪। অযু (৩) জল মধ্যে অবস্থান করে এবং তার বাসস্থান গুপ্ত ছিল; সে শুর পুর্ব অপহৃত জলের সাথে বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয় এবং বিরাজ করে। অঞ্জসী কুলিশী, ও বীরপত্নী নদীত্রয় (৪) স্বকীয় জল দিয়ে তাকে প্রীত করে জল দ্বারা তাকে ধারণ করে।
৫। বৎসপ্রিয় গরু যে রূপ গোষ্ঠের পথ জানে আমরা সেরূপ সে শত্রুর গৃহের পথ জানি। হে মঘবন! সে শত্রুর পুনঃপুনঃ কৃত উপদ্রব হতে আমাদের রক্ষা কর। কামুক (যেরুপ ধনত্যাগ করে) আমাদের সেরূপ পরিত্যাগ কেরা না।
৬। হে ইন্দ্র! আমাদের সূর্যের প্রতি ও জলসমূহের প্রতি ভক্তিপূর্ণ কর, যারা পাপশূন্যতার জন্য জবি মাত্রের প্রশংসনীয় তাদের প্রতি ভক্তিপূর্ণ কর। গর্ভস্থিত আমাদের সন্ততিকে হিংসা করো না, আমরা তোমার মহৎ বল শ্রদ্ধা করি।
৭। োমাকে আমি মনের সাথে জানি, তোমার সে বলে আমরা শ্রদ্ধা স্থাপন করেছি। তুমি অভীষ্টদাতা, আমাদের মহৎ ধন প্রদান কর। হে ইন্দ্র! তুমি বহু লোকদ্বারা আহুত, তুমি আমাদের ধনশূন্য গৃহে রেখ না, বুভুক্ষিতদের অন্ন ও পানীয় দান কর।
৮। হে ইন্দ্র! আমাদের বধ করো না, আমাদের পরিত্যাগ করো না, আমাদের প্রিয় আহার উপভোগাদি কেড়ে নিও না। হে মঘবন শত্রু। গর্ভস্থিত আমাদের অপত্যদের নষ্ট করো না, যারা জানুদ্বারা চলে এরূপ গমনসমর্থ অপত্যদের নষ্ট করো না।
৯। আমাদের অভিমুখে এস,লোকে তোমাকে সোমপ্রিয় বলেছে এ সোম ভবিষত হয়েছে, এ পান করে হৃষ্ট হও। বিস্তীর্ণাবয়ব হয়ে জঠরে সোমরস বর্ষণ কর পিতা যে রূপ পুত্রের বাক্য শোনে, আমাদের দ্বারা আহুত হয়ে সেরূপ আমাদের বাক্য শ্রবণ কর।
টীকাঃ
১। বর্ণং শব্দের অর্থ সায়ণ ইন্দ্র করেছেন, কিন্তু বোধ হয় বর্ণ অর্থে আর্য জাতি। Bring additions to our race বেদার্থযত্ন।
২। কুযবনামাসুরঃ। সায়ণ। সায়ণ এ অসুর সম্বন্ধে আর কোন বৃত্তান্ত লেখেন নি। পরের দুটি ঋক হতে বোধ হয়, কুযব নামে কোন প্রসিদ্ধ আদিম জাতীয় যোদ্ধা আর্যদের প্রতি অনকে উপদ্রব করেছিল।
৩। অযু বোধ হয় অন্য একজন আদিম জাতীয় যোদ্ধা; ৪; শিফা অঞ্জশী কুলশী ও বীরপত্নী এ নদীগুলি কোথায়?
১। বর্ণং শব্দের অর্থ সায়ণ ইন্দ্র করেছেন, কিন্তু বোধ হয় বর্ণ অর্থে আর্য জাতি। Bring additions to our race বেদার্থযত্ন।
২। কুযবনামাসুরঃ। সায়ণ। সায়ণ এ অসুর সম্বন্ধে আর কোন বৃত্তান্ত লেখেন নি। পরের দুটি ঋক হতে বোধ হয়, কুযব নামে কোন প্রসিদ্ধ আদিম জাতীয় যোদ্ধা আর্যদের প্রতি অনকে উপদ্রব করেছিল।
৩। অযু বোধ হয় অন্য একজন আদিম জাতীয় যোদ্ধা; ৪; শিফা অঞ্জশী কুলশী ও বীরপত্নী এ নদীগুলি কোথায়?
H
১০৫ সুক্ত।। অনুবাদঃ
১। উদকময় অন্তরীক্ষে বর্তমান চন্দ্র সুন্দর কিরণের সাথে আকাশে ধাবমান হচ্ছে। হে সুবর্ণনেমি রশ্মিসমূহ! আমার ইন্দ্রিয়গণ তোমার পদ জানে না (১) হে দ্যাবা পৃথিবী! আমার এ স্তোত্র অবগত হও।
২। যারা অর্থ অনুসন্ধান করে তারা অর্থ প্রাপ্ত হয়। জায়া পতিকে প্রাপ্ত হয় এবং তাদরে সহবাসে গর্ভে সন্তান উৎপন্ন হয়। হে দ্যাবা পৃথিবী! আমার এ দুৎখ অবগত হও (২)।
৩। হে দেবগণ! স্বর্গস্থ আমার পূর্বপুরুষগণ যেন স্বর্গচ্যুত না হন, আমরা যেন কদাচ সোমপায়ী পিতৃগণের সুখহেতু পুত্র হতে নিরাশ না হই। হে দ্যাবা পৃথিবী! আমার বিষয় অবগত হও (৩)।
৪। দেবগণের প্রথম যজ্ঞাহ অগ্নিকে আমি যাঞ্চা করছি, তিনি দূতরূপে আমার যাচ্ঞা দেবগণকে জানাবেন। হে অগ্নি! তোমার পূর্বের সে বদান্যতা কোথায় গিয়েছে? নুতন কোন পুরুষ তা এখন ধারণ করেন? হে দ্যাবা পৃথিবী। আমার বিষয় অবগত হও।
৫। সূর্যদীপ্ত তিন লোকে এ যে সকল দেব বাস করেন, হে দেবগণ! তোমাদের সত্য কোথায় অসত্যই বা কোথায়, তোমাদের সম্বন্ধীয় পুরাতন আহুতি কোথায়? হে দ্যাবা পৃথিবী। আমার বিষয় অবগত হও।
৬। তোমাদের সত্য পালন কোথায়? বরুণের অনুগ্রহ দৃষ্টি কোথায়? মহৎ অর্যমার সে পথ কোথায়? যা দিয়ে আমরা পাপমতিদের অতিক্রম করতে পারি? হে দ্যাবা পৃথিবী! আমার বিষয় অবগত হও।
৭। পূর্বে সোম অভিষুত হলে যে কতকগুলি (স্ত্রোত্র) উচ্চারণ করতে পারে, আমি সেই। তৃষার্থ মৃগকে ব্যাঘ্র যেরূপ ভক্ষণ করে, দুঃখ সেরূপ আমাকে ভক্ষণ করছে। হে দ্যাবা পৃথিবী! আমার বিষয় অবগত হও।
৮। সপত্নীদ্বয় স্বামীর উভয় পার্শ্বে থেকে যেরূপ তাকে সন্তাপ দেয়, এ পার্শ্বস্থ কূপের ভিত্তি সকল আমাকে সেরূপ সন্তাপ দিচ্ছে। মূষিক যেরূপ সুত্র দংশন করে, হে শতক্রতো! আমি তোমার স্তোতা, দুঃখ আমাকে সেরূপ দংশন করছে। হে দ্যাবা পৃথিবী! আমার বিষয় অবগত হও।
৯। এ যে সূর্যের সপ্ত রশ্মি এ কূপে (৪) পতিত হয়েছে, আপ্তা ত্রিত তা জানে এবং কূপ হতে নির্গত হবার জন্য সে রশ্মি সমূহকে স্তুতি করছে। হে দ্যাবা পৃথিবী! আমার বিষয় অবগত হও।
১০। এ সে পঞ্চ অভীষ্টদাতা বিস্তীর্ণ আকাশে আছেন (৫) তারা আমার এ প্রসংশনীয় স্তোত্র শীঘ্র দেবগণের নিকট নিয়ে গিয়ে প্রত্যাবর্তন করুন। হে দ্যাবা পৃথিবী! আমার বিষ{য় অবগত হও।
১১। সূর্য রশ্মিসমূহ সর্বব্যাপী আকাশে আছে, ব্যাঘ্র মহৎ জল রাশি পার হবার সময়, পথে সূর্য রশ্মিসমূহ তাকে নিবারণ করে (৬)। হে দ্যাবা পৃথিবী! আমার বিষয় অবগত হও।
১২। হে দেবগণ! যে নব্য প্রশংসনীয় ও সুবাচ্য বল তোমাদের মধ্যে নিহিত আছে; তা দিয়ে বহনশীল নদীগণ সর্বদাই জল চালনা করছে এবং সূর্য সর্বদা তার বিদ্যমান আলোক বিস্তার করছেন; হে দ্যাবা পৃথিবী! আমার বিষয় অবগত হও।
১৩। হে অগ্নি! দেবগণের সঙ্গে তোমার সে বন্ধুত্ব প্রসংসনীয়। তুমি অতিশয় বিদ্বান, মনুর যজ্ঞের ন্যায় আমাদের যজ্ঞে উপ বেশন করে দেবগণের যজ্ঞ কর। হে দ্যাবা পৃথিবী! আমার বিষয় অবগত হও।
১৪। দেবগণের আহ্বানকারী, অতিশয় বিদ্বান এবং দেবগণের মধ্যে মেধাবী অগ্নিদেব, মনুর যজ্ঞের ন্যায় আমাদের যজ্ঞে উপবেশন করে দেবগণকে আমাদের হব্যের অভিমুখে শাস্ত্রানুসারে প্রেরণ করুন। হে দ্যাবাপৃথিবী! আমার বিষয় অবগত হও।
১৫। বরুণ রক্ষণ কার্য সম্পাদন করেন, সে পথদর্শকের নিকট আমরা যাচ্ঞা করি। স্তোতা হৃদয়ের সাথে তার উদ্দেশে মননীয় স্তুতি প্রচার করছে। হে দ্যাবা পৃথিবী! আমরা বিষয় অবগত হও।
১৬। এ যে সূর্য আকাশে সর্পসিদ্ধ পথস্বরূপ হয়েছে; হে দেবগণ! তোমরা তাকে অতিক্রম করতে পার না; হে মনুষ্যগণ! তোমরা তাকে জান না। হে দ্যাবা পৃথিবী! আমার বিষ অবগত হও।
১৭। ত্রিত কূপে পতিত হয়ে রক্ষার জন্য দেবগণকে আহ্বান করছে; বৃহস্পতি তাকে পাপরূপ কূপ হতে উদ্ধার করে তার আহ্বান শ্রবণ করেছিলেন। হে দ্যাবা পৃথিবী! আমার বিষয় অবগত হও।
১৮। অরুণবর্ণ ব্যাঘ্র একবার আমাকে পথে গমন করতে দেখেছিল (৭); সূত্রধার নিজ কর্ম করতে করতে পৃষ্ঠদেশে বেদনা হলে যেরূপ উঠে দাড়ায় ব্যাঘ্র সেরূপ আমাকে দেখে উদগত হয়েছিল। হে দ্যাবা পৃথিবী! আমার বিষয় অবগত হও।
১৯। এ ঘোষণযোগ্য স্তোত্রদ্বারা ইন্দ্রকে পেয়ে আমরা সকলে বীরদের সঙ্গে মিলিত হয়ে সংগ্রামে শত্রুদের পরাস্ত করব। মিত্র, বরুণ, অদিতি, সিন্ধু পৃথিবী ও দ্যৌঃ আমাদের রক্ষা করুন।
১। উদকময় অন্তরীক্ষে বর্তমান চন্দ্র সুন্দর কিরণের সাথে আকাশে ধাবমান হচ্ছে। হে সুবর্ণনেমি রশ্মিসমূহ! আমার ইন্দ্রিয়গণ তোমার পদ জানে না (১) হে দ্যাবা পৃথিবী! আমার এ স্তোত্র অবগত হও।
২। যারা অর্থ অনুসন্ধান করে তারা অর্থ প্রাপ্ত হয়। জায়া পতিকে প্রাপ্ত হয় এবং তাদরে সহবাসে গর্ভে সন্তান উৎপন্ন হয়। হে দ্যাবা পৃথিবী! আমার এ দুৎখ অবগত হও (২)।
৩। হে দেবগণ! স্বর্গস্থ আমার পূর্বপুরুষগণ যেন স্বর্গচ্যুত না হন, আমরা যেন কদাচ সোমপায়ী পিতৃগণের সুখহেতু পুত্র হতে নিরাশ না হই। হে দ্যাবা পৃথিবী! আমার বিষয় অবগত হও (৩)।
৪। দেবগণের প্রথম যজ্ঞাহ অগ্নিকে আমি যাঞ্চা করছি, তিনি দূতরূপে আমার যাচ্ঞা দেবগণকে জানাবেন। হে অগ্নি! তোমার পূর্বের সে বদান্যতা কোথায় গিয়েছে? নুতন কোন পুরুষ তা এখন ধারণ করেন? হে দ্যাবা পৃথিবী। আমার বিষয় অবগত হও।
৫। সূর্যদীপ্ত তিন লোকে এ যে সকল দেব বাস করেন, হে দেবগণ! তোমাদের সত্য কোথায় অসত্যই বা কোথায়, তোমাদের সম্বন্ধীয় পুরাতন আহুতি কোথায়? হে দ্যাবা পৃথিবী। আমার বিষয় অবগত হও।
৬। তোমাদের সত্য পালন কোথায়? বরুণের অনুগ্রহ দৃষ্টি কোথায়? মহৎ অর্যমার সে পথ কোথায়? যা দিয়ে আমরা পাপমতিদের অতিক্রম করতে পারি? হে দ্যাবা পৃথিবী! আমার বিষয় অবগত হও।
৭। পূর্বে সোম অভিষুত হলে যে কতকগুলি (স্ত্রোত্র) উচ্চারণ করতে পারে, আমি সেই। তৃষার্থ মৃগকে ব্যাঘ্র যেরূপ ভক্ষণ করে, দুঃখ সেরূপ আমাকে ভক্ষণ করছে। হে দ্যাবা পৃথিবী! আমার বিষয় অবগত হও।
৮। সপত্নীদ্বয় স্বামীর উভয় পার্শ্বে থেকে যেরূপ তাকে সন্তাপ দেয়, এ পার্শ্বস্থ কূপের ভিত্তি সকল আমাকে সেরূপ সন্তাপ দিচ্ছে। মূষিক যেরূপ সুত্র দংশন করে, হে শতক্রতো! আমি তোমার স্তোতা, দুঃখ আমাকে সেরূপ দংশন করছে। হে দ্যাবা পৃথিবী! আমার বিষয় অবগত হও।
৯। এ যে সূর্যের সপ্ত রশ্মি এ কূপে (৪) পতিত হয়েছে, আপ্তা ত্রিত তা জানে এবং কূপ হতে নির্গত হবার জন্য সে রশ্মি সমূহকে স্তুতি করছে। হে দ্যাবা পৃথিবী! আমার বিষয় অবগত হও।
১০। এ সে পঞ্চ অভীষ্টদাতা বিস্তীর্ণ আকাশে আছেন (৫) তারা আমার এ প্রসংশনীয় স্তোত্র শীঘ্র দেবগণের নিকট নিয়ে গিয়ে প্রত্যাবর্তন করুন। হে দ্যাবা পৃথিবী! আমার বিষ{য় অবগত হও।
১১। সূর্য রশ্মিসমূহ সর্বব্যাপী আকাশে আছে, ব্যাঘ্র মহৎ জল রাশি পার হবার সময়, পথে সূর্য রশ্মিসমূহ তাকে নিবারণ করে (৬)। হে দ্যাবা পৃথিবী! আমার বিষয় অবগত হও।
১২। হে দেবগণ! যে নব্য প্রশংসনীয় ও সুবাচ্য বল তোমাদের মধ্যে নিহিত আছে; তা দিয়ে বহনশীল নদীগণ সর্বদাই জল চালনা করছে এবং সূর্য সর্বদা তার বিদ্যমান আলোক বিস্তার করছেন; হে দ্যাবা পৃথিবী! আমার বিষয় অবগত হও।
১৩। হে অগ্নি! দেবগণের সঙ্গে তোমার সে বন্ধুত্ব প্রসংসনীয়। তুমি অতিশয় বিদ্বান, মনুর যজ্ঞের ন্যায় আমাদের যজ্ঞে উপ বেশন করে দেবগণের যজ্ঞ কর। হে দ্যাবা পৃথিবী! আমার বিষয় অবগত হও।
১৪। দেবগণের আহ্বানকারী, অতিশয় বিদ্বান এবং দেবগণের মধ্যে মেধাবী অগ্নিদেব, মনুর যজ্ঞের ন্যায় আমাদের যজ্ঞে উপবেশন করে দেবগণকে আমাদের হব্যের অভিমুখে শাস্ত্রানুসারে প্রেরণ করুন। হে দ্যাবাপৃথিবী! আমার বিষয় অবগত হও।
১৫। বরুণ রক্ষণ কার্য সম্পাদন করেন, সে পথদর্শকের নিকট আমরা যাচ্ঞা করি। স্তোতা হৃদয়ের সাথে তার উদ্দেশে মননীয় স্তুতি প্রচার করছে। হে দ্যাবা পৃথিবী! আমরা বিষয় অবগত হও।
১৬। এ যে সূর্য আকাশে সর্পসিদ্ধ পথস্বরূপ হয়েছে; হে দেবগণ! তোমরা তাকে অতিক্রম করতে পার না; হে মনুষ্যগণ! তোমরা তাকে জান না। হে দ্যাবা পৃথিবী! আমার বিষ অবগত হও।
১৭। ত্রিত কূপে পতিত হয়ে রক্ষার জন্য দেবগণকে আহ্বান করছে; বৃহস্পতি তাকে পাপরূপ কূপ হতে উদ্ধার করে তার আহ্বান শ্রবণ করেছিলেন। হে দ্যাবা পৃথিবী! আমার বিষয় অবগত হও।
১৮। অরুণবর্ণ ব্যাঘ্র একবার আমাকে পথে গমন করতে দেখেছিল (৭); সূত্রধার নিজ কর্ম করতে করতে পৃষ্ঠদেশে বেদনা হলে যেরূপ উঠে দাড়ায় ব্যাঘ্র সেরূপ আমাকে দেখে উদগত হয়েছিল। হে দ্যাবা পৃথিবী! আমার বিষয় অবগত হও।
১৯। এ ঘোষণযোগ্য স্তোত্রদ্বারা ইন্দ্রকে পেয়ে আমরা সকলে বীরদের সঙ্গে মিলিত হয়ে সংগ্রামে শত্রুদের পরাস্ত করব। মিত্র, বরুণ, অদিতি, সিন্ধু পৃথিবী ও দ্যৌঃ আমাদের রক্ষা করুন।
টীকাঃ
১। সায়ণ এর মর্ম এরূপ ব্যাখ্যা করেছেন যে ত্রিত কূপে পতিত হয়ে বলছেন আমার ইন্দ্রিয় সকল কূপে আবৃত হওয়ায় তোমাকে পায় না; এ উচিত নয়, অতএব আমাকে কূপ হতে উদ্ধার কর। ত্রিত সম্বন্ধে ৫২ সুক্তের ৫ ঋকের টীকা দেখুন।
২। অর্থাৎ আমি অর্থ পাই না, আমার স্ত্রী আমাকে নিকটে পায় না, আমার পুত্র জন্মায় না, এ দুঃখ। সায়ণ।
৩। পুত্র না হলে স্বর্গলোক পাওয়া যায় না, ত্রিতের পুত্র। না হলে তার পিতৃগণ স্বর্গচ্যুত হবে, ত্রিত এরূপ আশঙ্কা করছেন, সায়ণের এ প্রকার অর্থ। কিন্তু ঋকে পুর্ব পুরুষ বা পিতৃগণ বা পুত্রসূচক কোন শব্দই নেই, এগুলি সায়ণ উহা করেছেন;৪। মুলে নাভি শব্দ আছে। রোসেন ও লাংলোয়া তার অর্থ করেছেন আবাস স্থান কূপ। সে অর্থই আমরা গ্রহণ করেছি।
৫। ইন্দ্র বরুণ, অগ্নি, অর্যমা ও সবিতা। অথবা অগ্নি, বায়ু, সূর্য, চন্দ্র ও বিদ্যুৎ অথবা পৃথিবীতে অগ্নি, অন্তরীক্ষে বায়ু, আকাশে সূর্য, নক্ষত্র জগতে চন্দ্র, মেঘে বিদ্যুৎ। তৈত্তিরীয় অনুসারে পৃথিবীতে অগ্নি, অন্তরীক্ষে বায়ু আকাশে সূর্য, দিকে চন্দ্র এবং স্বর্গে নক্ষত্র। সায়ণ।
৬। ত্রিত কূপে পড়বার পূর্বে তাকে দেখে একটি অরণ্য কুকুর (বৃক) তাকে খাবার জন্য বড় নদী পার হয়ে আসছিল; কিন্তু পথে সূর্য রশ্মি দেখে এখন অবসর নয় ভেবে নিবৃত্ত হল। সায়ণ। কিন্তু যাস্ক বলেন জল (আপ) অর্থে অন্তরীক্ষ বৃক অর্থাৎ চন্দ্র সে অন্তরীক্ষ পার হয়ে আসে, কিন্ত সূর্য কিরণ সে চন্দ্রকে নিবারণ (বিলিপ্ত) করে।
৭। যাস্ক এরূপ অর্থ করেছেন অরুণ বর্ণ অর্ধ মাসের কর্তা চন্দ্র নক্ষত্রগণকে পথে যেতে দেখেছিলেন। ইত্যাদি নিরুক্ত
৫।২০।
১। সায়ণ এর মর্ম এরূপ ব্যাখ্যা করেছেন যে ত্রিত কূপে পতিত হয়ে বলছেন আমার ইন্দ্রিয় সকল কূপে আবৃত হওয়ায় তোমাকে পায় না; এ উচিত নয়, অতএব আমাকে কূপ হতে উদ্ধার কর। ত্রিত সম্বন্ধে ৫২ সুক্তের ৫ ঋকের টীকা দেখুন।
২। অর্থাৎ আমি অর্থ পাই না, আমার স্ত্রী আমাকে নিকটে পায় না, আমার পুত্র জন্মায় না, এ দুঃখ। সায়ণ।
৩। পুত্র না হলে স্বর্গলোক পাওয়া যায় না, ত্রিতের পুত্র। না হলে তার পিতৃগণ স্বর্গচ্যুত হবে, ত্রিত এরূপ আশঙ্কা করছেন, সায়ণের এ প্রকার অর্থ। কিন্তু ঋকে পুর্ব পুরুষ বা পিতৃগণ বা পুত্রসূচক কোন শব্দই নেই, এগুলি সায়ণ উহা করেছেন;৪। মুলে নাভি শব্দ আছে। রোসেন ও লাংলোয়া তার অর্থ করেছেন আবাস স্থান কূপ। সে অর্থই আমরা গ্রহণ করেছি।
৫। ইন্দ্র বরুণ, অগ্নি, অর্যমা ও সবিতা। অথবা অগ্নি, বায়ু, সূর্য, চন্দ্র ও বিদ্যুৎ অথবা পৃথিবীতে অগ্নি, অন্তরীক্ষে বায়ু, আকাশে সূর্য, নক্ষত্র জগতে চন্দ্র, মেঘে বিদ্যুৎ। তৈত্তিরীয় অনুসারে পৃথিবীতে অগ্নি, অন্তরীক্ষে বায়ু আকাশে সূর্য, দিকে চন্দ্র এবং স্বর্গে নক্ষত্র। সায়ণ।
৬। ত্রিত কূপে পড়বার পূর্বে তাকে দেখে একটি অরণ্য কুকুর (বৃক) তাকে খাবার জন্য বড় নদী পার হয়ে আসছিল; কিন্তু পথে সূর্য রশ্মি দেখে এখন অবসর নয় ভেবে নিবৃত্ত হল। সায়ণ। কিন্তু যাস্ক বলেন জল (আপ) অর্থে অন্তরীক্ষ বৃক অর্থাৎ চন্দ্র সে অন্তরীক্ষ পার হয়ে আসে, কিন্ত সূর্য কিরণ সে চন্দ্রকে নিবারণ (বিলিপ্ত) করে।
৭। যাস্ক এরূপ অর্থ করেছেন অরুণ বর্ণ অর্ধ মাসের কর্তা চন্দ্র নক্ষত্রগণকে পথে যেতে দেখেছিলেন। ইত্যাদি নিরুক্ত
৫।২০।
১০৬ সুক্ত।।
অনুবাদঃ
১। আমরা রক্ষার জন্য ইন্দ্র, মিত্র, বরুণ, অগ্নি এবং মরুৎগণ ও অদিতিকে আহ্বান করি। লোকে দুর্গম পথ হতে যেরূপ রথকে উদ্ধার করে আনে, সেরূপ দানশীল ও বাসগৃহদাতা দেবগণ সকল পাপ হতে আমাদের উদ্ধার করে পালন করুন।
২। হে আদিত্যগণ, তোমরা যুদ্ধে আমাদের সাহায্যার্থে এস এবং যুদ্ধে আমাদের জয়ের কারণ হও। লোকে দুর্গম পথ হতে যেরূপ রথকে উদ্ধার করে আনে, সেরূপ দানশীল ও বাসগৃহদাতা দেবগণ সকল পাপ হতে আমাদের উদ্ধার করে পালন করুন।
৩। যাদের স্তুতি সুখসাধ্য সে পিতৃগণ আমাদের রক্ষা করুন এবং দেবগণের পিতা মাতাস্বরূপ যজ্ঞবর্ধয়িতা দ্যাবা পৃথিবী আমাদের রক্ষা করুন। লোকে দুর্গম পথ হতে যেরূপ রথকে উদ্ধার করে আনে, সেরূপ দানশীল ও বাসগৃহদাতা দেবগণ সকল পাপ হতে আমাদের উদ্ধার করে পালন করুন।
৪। অন্নবান নরাশংস অগ্নিকে (১) প্রজ্বলিত করে এখন স্তুতি করি, বীরবিজয়ী পুষার নিকট সুখকর স্তোত্র দ্বারা যাচ্ঞা করি। লোকে দুর্গম পথ হতে রথকে যেরূপ উদ্ধার করে আনে, সেরূপ দানশীল ও বাসগৃহদাতা দেবগণ সকল পাপ হতে আমাদের উদ্ধার করে পালন করুন।
৫। হে বৃহস্পতি! আমাদের সর্বদা সুখ প্রদান কর, মানুষদের উপকারী যে রোগের উপশম ও ভয়ের দূরীকরণ ক্ষমতা তোমাতে স্থাপিত হয়েছে, তাও যাচ্ঞা করি। লোকে দুর্গম পথ হতে যেরূপ রথকে উদ্ধার করে আনে, সেরূপ দানশীল ও বাসগৃহদাতা দেবগণ সকল পাপ হতে আমাদের উদ্ধার করে পালন করুন।
৬। কুপে নিপতিত কুৎস নিজ রক্ষার (২) জন্য বৃত্তহস্তা ও যজ্ঞ প্রতিপালক (৩) ইন্দ্রকে আহ্বান করছে। লোকে দুর্গম পথ হতে যেরূপ রথকে উদ্ধার করে আনে, সেরূপ দানশীল ও বাসগৃহদাতা দেবগণ সকল পাপ হতে আমাদের উদ্ধার করে পালন করুন।
৭। দেবী অদিতি দেবগণের সাথে আমাদের পালন করুন। সকলের রক্ষক দীপ্যমান সবিতা জাগরুক হয়ে আমাদের রক্ষা করুন। মিত্র, বরুণ, অদিতি, সিন্ধু, পৃথিবী ও দ্যৌঃ আমাদের রক্ষা করুন।
১। আমরা রক্ষার জন্য ইন্দ্র, মিত্র, বরুণ, অগ্নি এবং মরুৎগণ ও অদিতিকে আহ্বান করি। লোকে দুর্গম পথ হতে যেরূপ রথকে উদ্ধার করে আনে, সেরূপ দানশীল ও বাসগৃহদাতা দেবগণ সকল পাপ হতে আমাদের উদ্ধার করে পালন করুন।
২। হে আদিত্যগণ, তোমরা যুদ্ধে আমাদের সাহায্যার্থে এস এবং যুদ্ধে আমাদের জয়ের কারণ হও। লোকে দুর্গম পথ হতে যেরূপ রথকে উদ্ধার করে আনে, সেরূপ দানশীল ও বাসগৃহদাতা দেবগণ সকল পাপ হতে আমাদের উদ্ধার করে পালন করুন।
৩। যাদের স্তুতি সুখসাধ্য সে পিতৃগণ আমাদের রক্ষা করুন এবং দেবগণের পিতা মাতাস্বরূপ যজ্ঞবর্ধয়িতা দ্যাবা পৃথিবী আমাদের রক্ষা করুন। লোকে দুর্গম পথ হতে যেরূপ রথকে উদ্ধার করে আনে, সেরূপ দানশীল ও বাসগৃহদাতা দেবগণ সকল পাপ হতে আমাদের উদ্ধার করে পালন করুন।
৪। অন্নবান নরাশংস অগ্নিকে (১) প্রজ্বলিত করে এখন স্তুতি করি, বীরবিজয়ী পুষার নিকট সুখকর স্তোত্র দ্বারা যাচ্ঞা করি। লোকে দুর্গম পথ হতে রথকে যেরূপ উদ্ধার করে আনে, সেরূপ দানশীল ও বাসগৃহদাতা দেবগণ সকল পাপ হতে আমাদের উদ্ধার করে পালন করুন।
৫। হে বৃহস্পতি! আমাদের সর্বদা সুখ প্রদান কর, মানুষদের উপকারী যে রোগের উপশম ও ভয়ের দূরীকরণ ক্ষমতা তোমাতে স্থাপিত হয়েছে, তাও যাচ্ঞা করি। লোকে দুর্গম পথ হতে যেরূপ রথকে উদ্ধার করে আনে, সেরূপ দানশীল ও বাসগৃহদাতা দেবগণ সকল পাপ হতে আমাদের উদ্ধার করে পালন করুন।
৬। কুপে নিপতিত কুৎস নিজ রক্ষার (২) জন্য বৃত্তহস্তা ও যজ্ঞ প্রতিপালক (৩) ইন্দ্রকে আহ্বান করছে। লোকে দুর্গম পথ হতে যেরূপ রথকে উদ্ধার করে আনে, সেরূপ দানশীল ও বাসগৃহদাতা দেবগণ সকল পাপ হতে আমাদের উদ্ধার করে পালন করুন।
৭। দেবী অদিতি দেবগণের সাথে আমাদের পালন করুন। সকলের রক্ষক দীপ্যমান সবিতা জাগরুক হয়ে আমাদের রক্ষা করুন। মিত্র, বরুণ, অদিতি, সিন্ধু, পৃথিবী ও দ্যৌঃ আমাদের রক্ষা করুন।
টীকাঃ
১। নরাশংস সম্বন্ধে ১৩ সুক্তের ৩ ঋকের টীকা দেখুন।
২। পূর্বে ত্রিত কূপে পাড়ছিলেন এরূপ দেখা গিয়েছে, এখানে দেখা যাচ্ছে কুৎস ঋষি কূপে পড়েছিলেন। ১০৫ ও ১০৬ সুক্তের ঋষি কৃৎস অথবা ত্রিত। অতএব কুৎস ত্রিত একই তা অনুভব হয়। আমরা পূর্ব বলেছি আপ্ত্য অর্থাৎ জলসম্ভূত ত্রিত আর্যদের একজন পুরাতন দেব ছিলেন। অনুভব হয় তার কথা জলে নিপতিত কুৎস ঋষির বিবরণের সাথে কোনরূপে জড়িত হয়ে গিয়েছে। ৫২ সুক্তের ৫ ঋকের টীকা দেখুন।
৩। মুলে শচীপতিং আছে। শচীতি কর্মনাম। সর্বেষাং কর্মণাং পালয়িতারং। যদ্বা শচ্যা দেব্যা ভর্তারং। সায়ণ। ঋগ্বেদে শচী শব্দ কর্ম বা যজ্ঞ অর্থেই ব্যবহার হয়েছে। ইন্দ্র যজ্ঞের পতি সুতরাং শচীপতি। পরে এ হতে ইন্দ্রের স্ত্রী শচীর পৌরাণিক উপাখ্যান সৃষ্ট হয়।
১। নরাশংস সম্বন্ধে ১৩ সুক্তের ৩ ঋকের টীকা দেখুন।
২। পূর্বে ত্রিত কূপে পাড়ছিলেন এরূপ দেখা গিয়েছে, এখানে দেখা যাচ্ছে কুৎস ঋষি কূপে পড়েছিলেন। ১০৫ ও ১০৬ সুক্তের ঋষি কৃৎস অথবা ত্রিত। অতএব কুৎস ত্রিত একই তা অনুভব হয়। আমরা পূর্ব বলেছি আপ্ত্য অর্থাৎ জলসম্ভূত ত্রিত আর্যদের একজন পুরাতন দেব ছিলেন। অনুভব হয় তার কথা জলে নিপতিত কুৎস ঋষির বিবরণের সাথে কোনরূপে জড়িত হয়ে গিয়েছে। ৫২ সুক্তের ৫ ঋকের টীকা দেখুন।
৩। মুলে শচীপতিং আছে। শচীতি কর্মনাম। সর্বেষাং কর্মণাং পালয়িতারং। যদ্বা শচ্যা দেব্যা ভর্তারং। সায়ণ। ঋগ্বেদে শচী শব্দ কর্ম বা যজ্ঞ অর্থেই ব্যবহার হয়েছে। ইন্দ্র যজ্ঞের পতি সুতরাং শচীপতি। পরে এ হতে ইন্দ্রের স্ত্রী শচীর পৌরাণিক উপাখ্যান সৃষ্ট হয়।
১০৭ সুক্ত।।
অনুবাদঃ
১। আমাদের যজ্ঞ দেবগণকে সুখী করুক হে আদিত্যগণ! তুষ্ট হও। তোমাদের অনুগ্রহ আমাদের অভিমুখে প্রেরিত হোক এবং সে অনুগ্রহ দরিদ্র জনের পক্ষে প্রভূত ধনের কারণ হোক।
২। দেবগণ অঙ্গিরাদের গীতমন্ত্র (১) দ্বারা স্তুত হয়ে রক্ষণার্থে আমাদের নিকট আসুন। ইন্দ্র নিজগণের সঙ্গে, মরুৎগণ নিজ দলের সাথে এবং অদিতি আদিত্যদের নিয়ে আমাদের সুখ দান করুন।
৩। যে অন্ন (আমরা যাচ্ঞা করি) ইন্দ্র বরুণ, অগ্নি, অযমা ও সবিতা যেন আমাদের তা দান করেন। মিত্র, বরুণ, অদিতি, সিন্ধু, পৃথিবী ও দ্যৌঃ যেন আমাদের রক্ষা করেন।
১। আমাদের যজ্ঞ দেবগণকে সুখী করুক হে আদিত্যগণ! তুষ্ট হও। তোমাদের অনুগ্রহ আমাদের অভিমুখে প্রেরিত হোক এবং সে অনুগ্রহ দরিদ্র জনের পক্ষে প্রভূত ধনের কারণ হোক।
২। দেবগণ অঙ্গিরাদের গীতমন্ত্র (১) দ্বারা স্তুত হয়ে রক্ষণার্থে আমাদের নিকট আসুন। ইন্দ্র নিজগণের সঙ্গে, মরুৎগণ নিজ দলের সাথে এবং অদিতি আদিত্যদের নিয়ে আমাদের সুখ দান করুন।
৩। যে অন্ন (আমরা যাচ্ঞা করি) ইন্দ্র বরুণ, অগ্নি, অযমা ও সবিতা যেন আমাদের তা দান করেন। মিত্র, বরুণ, অদিতি, সিন্ধু, পৃথিবী ও দ্যৌঃ যেন আমাদের রক্ষা করেন।
টীকাঃ
১। মূলে সামসভিঃ আছে। প্রগীতৈমন্ত্রৈঃ। সায়ণ।
১। মূলে সামসভিঃ আছে। প্রগীতৈমন্ত্রৈঃ। সায়ণ।
১০৮ সুক্ত।।
অনুবাদঃ
১। হে ইন্দ্র ও অগ্নি! তোমাদের যে অতিশয় বিচিত্র রথ বিশ্বভূবন উজ্জ্বল করেছে, সে রথে একত্রে বসে এস, অভিষুত সোম পান কর।
২। এ বহুব্যাপী ও আত্মগুরুত্বে গভীর বিশ্বভুবনের যে পরিমাণ, হে ইন্দ্র ও অগ্নি! তোমাদের পানীয় এ সোমের সেরূপ পরিমাণ হোক এবং তোমাদের অভিলাষ পর্যাপ্তরূপে পূরণ করুক।
৩। তোমাদের কল্যাণকর নামদ্বয় একত্রিত করেছ, হে বৃত্রহন্তদ্বয়! তোমরা বৃত্রবধের জন্য সঙ্গত হয়েছিলে (১)। হে অভীষ্টদাতা ইন্দ্র ও অগ্নি! তোমরা একত্র হয়ে উপবেশন করে অভিষিক্ত সোম আপনাদের উদরে সেচন কর।
৪। অগ্নি সমুদয় প্রজ্বলিত হলে পর অধ্বর্যুদ্বয় পাত্র হতে ঘৃত সেচন করে কুশ বিস্তার করেছে। হে ইন্দ্র ও অগ্নি! চারদিকে অভিষিক্ত তীব্র সোমরসদ্বারা আকৃষ্ট হয়ে অনুগ্রহার্থ আমাদের অভিমুখে এস।
৫। হে ইন্দ্র ও অগ্নি! তোমরা যে কিছু বীর কর্ম করেছ, যে কিছু রূপ বিশিষ্ট জীব সৃষ্টি করেছ, যে কিছু বৃষ্টি বর্ষণ করেছ এবং তোমাদের যে কিছু পুরাতন কল্যাণকর বন্ধুত্ব আছে, সে সমস্ত নিয়ে এসে অভিষুত সোম পান কর।
৬। প্রথমেই তোমাদের দুজনকে বরণ করছি, আমার অকপট শ্রদ্ধা লক্ষ্য করে এস; অভিষুত সোম পান কর। এ সোম আমাদের ঋত্বিকগণের (২) বিশেষ আহুতি যোগ্য হোক।
৭। হে যজ্ঞ ভাজন ইন্দ্র ও অগ্নি! যদি নিজ গৃহে হৃষ্ট হয়ে থাক, যদি পূজকের প্রতি বা রাজার প্রতি (৩) তুষ্ট হয়ে থাক, তবে হে অভীষ্ট দাতৃদ্বয়! এ সমস্ত স্থান হতে এস, অভিষুত সোম পান কর।
৮। হে ইন্দ্র ও অগ্নি! যদি তোমরা তুর্বশদের মধ্যে দ্রুহ্যুদের মধ্যে, অনুদের মধ্যে অথবা পুরুষদের মধ্যে অবস্থান করে থাক তবে হে অভীষ্ট দাতৃদ্বয়! সে সমস্ত স্থান হতে এস, অভিষূত সোম পান কর।
৯। হে ইন্দ্র ও অগ্নি! সে সমস্ত স্থান হতে এস, অভিষুত সোম পান কর।
৯। হে ইন্দ্র ও অগ্নি! তোমরা যদি নিন্ম পৃথিবীতে বা মধ্যম পৃথিবীতে অন্তরীক্ষে বা আকাশে অবস্থান করে থাকে, তবে হে অভীষ্ট দাতৃদ্বয়! সে সমস্ত স্থান হতে এস, অভিষুত সোম পান কর।
১০। হে ইন্দ্র ও অগ্নি! তোমরা যদি উচ্চ পৃথিবীতে (আকাশে) বা মধ্যম পৃথিবীতে (অন্তরীক্ষে) বা নিম্ন পৃথিবীতে অবস্থান করে থাক, তবে হে অভীষ্ট দাতৃদ্বয়! সে সমস্ত স্থান হতে এস, অভিষুত সোম পান কর।
১১। হে ইন্দ্র ও অগ্নি! যদি তোমরা আকাশে বা পৃথিবীতে বা পর্বতে শস্যে বা জলে অবস্থান কর, তবে হে অভীষ্ট দাতৃদ্বয়! সে সমস্ত স্থান হতে এস, অভিষুত সোম পান কর।
১২। হে ইন্দ্র ও অগ্নি! সূর্য উদিত হলে দীপ্তিমান অন্তরীক্ষে যদি তোমরা নিজ তেজে হৃষ্ট হও, তবে হে অভীষ্ট দাতৃদ্বয়! সে সমস্ত স্থান হতে এস, অভিষুত সোমপান কর।
১৩। হে ইন্দ্র ও অগ্নি! এ রূপে অভিষুত সোমপান করে আমাদের সমস্ত ধন দান কর। মিত্র, বরুণ, অদিতি, সিন্ধু, পৃথিবী ও দ্যৌঃ যেন আমাদের রক্ষা করেন।
১। হে ইন্দ্র ও অগ্নি! তোমাদের যে অতিশয় বিচিত্র রথ বিশ্বভূবন উজ্জ্বল করেছে, সে রথে একত্রে বসে এস, অভিষুত সোম পান কর।
২। এ বহুব্যাপী ও আত্মগুরুত্বে গভীর বিশ্বভুবনের যে পরিমাণ, হে ইন্দ্র ও অগ্নি! তোমাদের পানীয় এ সোমের সেরূপ পরিমাণ হোক এবং তোমাদের অভিলাষ পর্যাপ্তরূপে পূরণ করুক।
৩। তোমাদের কল্যাণকর নামদ্বয় একত্রিত করেছ, হে বৃত্রহন্তদ্বয়! তোমরা বৃত্রবধের জন্য সঙ্গত হয়েছিলে (১)। হে অভীষ্টদাতা ইন্দ্র ও অগ্নি! তোমরা একত্র হয়ে উপবেশন করে অভিষিক্ত সোম আপনাদের উদরে সেচন কর।
৪। অগ্নি সমুদয় প্রজ্বলিত হলে পর অধ্বর্যুদ্বয় পাত্র হতে ঘৃত সেচন করে কুশ বিস্তার করেছে। হে ইন্দ্র ও অগ্নি! চারদিকে অভিষিক্ত তীব্র সোমরসদ্বারা আকৃষ্ট হয়ে অনুগ্রহার্থ আমাদের অভিমুখে এস।
৫। হে ইন্দ্র ও অগ্নি! তোমরা যে কিছু বীর কর্ম করেছ, যে কিছু রূপ বিশিষ্ট জীব সৃষ্টি করেছ, যে কিছু বৃষ্টি বর্ষণ করেছ এবং তোমাদের যে কিছু পুরাতন কল্যাণকর বন্ধুত্ব আছে, সে সমস্ত নিয়ে এসে অভিষুত সোম পান কর।
৬। প্রথমেই তোমাদের দুজনকে বরণ করছি, আমার অকপট শ্রদ্ধা লক্ষ্য করে এস; অভিষুত সোম পান কর। এ সোম আমাদের ঋত্বিকগণের (২) বিশেষ আহুতি যোগ্য হোক।
৭। হে যজ্ঞ ভাজন ইন্দ্র ও অগ্নি! যদি নিজ গৃহে হৃষ্ট হয়ে থাক, যদি পূজকের প্রতি বা রাজার প্রতি (৩) তুষ্ট হয়ে থাক, তবে হে অভীষ্ট দাতৃদ্বয়! এ সমস্ত স্থান হতে এস, অভিষুত সোম পান কর।
৮। হে ইন্দ্র ও অগ্নি! যদি তোমরা তুর্বশদের মধ্যে দ্রুহ্যুদের মধ্যে, অনুদের মধ্যে অথবা পুরুষদের মধ্যে অবস্থান করে থাক তবে হে অভীষ্ট দাতৃদ্বয়! সে সমস্ত স্থান হতে এস, অভিষূত সোম পান কর।
৯। হে ইন্দ্র ও অগ্নি! সে সমস্ত স্থান হতে এস, অভিষুত সোম পান কর।
৯। হে ইন্দ্র ও অগ্নি! তোমরা যদি নিন্ম পৃথিবীতে বা মধ্যম পৃথিবীতে অন্তরীক্ষে বা আকাশে অবস্থান করে থাকে, তবে হে অভীষ্ট দাতৃদ্বয়! সে সমস্ত স্থান হতে এস, অভিষুত সোম পান কর।
১০। হে ইন্দ্র ও অগ্নি! তোমরা যদি উচ্চ পৃথিবীতে (আকাশে) বা মধ্যম পৃথিবীতে (অন্তরীক্ষে) বা নিম্ন পৃথিবীতে অবস্থান করে থাক, তবে হে অভীষ্ট দাতৃদ্বয়! সে সমস্ত স্থান হতে এস, অভিষুত সোম পান কর।
১১। হে ইন্দ্র ও অগ্নি! যদি তোমরা আকাশে বা পৃথিবীতে বা পর্বতে শস্যে বা জলে অবস্থান কর, তবে হে অভীষ্ট দাতৃদ্বয়! সে সমস্ত স্থান হতে এস, অভিষুত সোম পান কর।
১২। হে ইন্দ্র ও অগ্নি! সূর্য উদিত হলে দীপ্তিমান অন্তরীক্ষে যদি তোমরা নিজ তেজে হৃষ্ট হও, তবে হে অভীষ্ট দাতৃদ্বয়! সে সমস্ত স্থান হতে এস, অভিষুত সোমপান কর।
১৩। হে ইন্দ্র ও অগ্নি! এ রূপে অভিষুত সোমপান করে আমাদের সমস্ত ধন দান কর। মিত্র, বরুণ, অদিতি, সিন্ধু, পৃথিবী ও দ্যৌঃ যেন আমাদের রক্ষা করেন।
টীকাঃ
১। ইন্দ্রই বৃত্রহন্তা। তবে বেদে দুই দেবি যখন একত্রে অর্চিত হন, তখন উভয়েই এক গুণবিশিষ্ট বলে বর্ণিত হন। সুতরাং ইন্দ্র ও অগ্নিকে বৃত্রহন্তা বলা হয়েছে।
২। মুলে অসরৈঃ আছে। হবিষাং প্রক্ষেপকৈঃ ঋতিগ্রভিঃ। সায়ণ।
৩। যদ ব্রহ্মণি রাজনি বা মূলে এ রূপ আছে। সায়ণ। এ দুই শব্দের অর্থ ব্রাহ্মণ ও ক্ষত্রিয় করেছেন। কিন্তু রাজন অর্থ রাজামাত্র ও ব্রহ্মা শব্দের অর্থ স্তুতিকার মাত্র, তা পূর্বে বলা হয়েছে। ১০ সুক্তের ৩১ ঋক, ১৫ সুক্তের ৫ ঋক এবং ১৮ সুক্তের ১ ঋক দেখুন।
১। ইন্দ্রই বৃত্রহন্তা। তবে বেদে দুই দেবি যখন একত্রে অর্চিত হন, তখন উভয়েই এক গুণবিশিষ্ট বলে বর্ণিত হন। সুতরাং ইন্দ্র ও অগ্নিকে বৃত্রহন্তা বলা হয়েছে।
২। মুলে অসরৈঃ আছে। হবিষাং প্রক্ষেপকৈঃ ঋতিগ্রভিঃ। সায়ণ।
৩। যদ ব্রহ্মণি রাজনি বা মূলে এ রূপ আছে। সায়ণ। এ দুই শব্দের অর্থ ব্রাহ্মণ ও ক্ষত্রিয় করেছেন। কিন্তু রাজন অর্থ রাজামাত্র ও ব্রহ্মা শব্দের অর্থ স্তুতিকার মাত্র, তা পূর্বে বলা হয়েছে। ১০ সুক্তের ৩১ ঋক, ১৫ সুক্তের ৫ ঋক এবং ১৮ সুক্তের ১ ঋক দেখুন।
১০৯ সুক্ত ।।
অনুবাদঃ
১। হে ইন্দ্র ও অগ্নি! আমি ধন ইচ্ছা করে তোমাদের জ্ঞাতি বা বন্ধুর ন্যায় মনে করি। আমার প্রকৃষ্ট বৃদ্ধি তোমারাই দিয়েছ, অন্য কেউ নয়, অতএব আমি এ ধ্যাননিষ্পন্ন, অন্নের ইচ্ছা সূচক স্তুতি তোমাদের উদ্দেশে রচনা করেছি।
২। হে ইন্দ্র ও অগ্নি! তোমরা অযোগ্য জামাতা (১) অথবা শ্যালক (২) অপেক্ষাও অধিক বহুবিধ ধন দান কর, এরূপ শুনেছি; অতএব হে ইন্দ্র ও অগ্নি! আমি তোমাদের সোমপ্রদানকালে পঠনীয় একটি নুতন স্তোত্র রচনা করছি।
৩। আমরা পুত্র পৌত্রাদিরূপ রুজু যেন কখনও ছেদন না করি, এরূপ প্রার্থনা করে এবং পিতৃগণের ন্যায় শক্তিমান পুত্রাদি উৎপাদন করে উৎপাদন সমর্থ (যজমানগণ) ইন্দ্র ও অগ্নিকে সুখে স্তুতি করেন; শত্রুহিংসক ইন্দ্র ও অগ্নি স্তুতির নিকট উপস্থিত থাকেন।
৪। হে ইন্দ্র ও অগ্নি! দীপ্তিমান প্রার্থনা তোমাদের কামনা করে তোমাদের হর্ষের জন্য সোমরস অভিষব করছে; তোমরা অশ্বযুক্ত শোভনীয় বাহুযুক্ত ও সুপাণি; তোমার শীঘ্র এসে উদকস্থ মাধুর্য দ্বারা আমাদের সোমরস সংপৃক্ত কর।
৫। হে ইন্দ্র ও অগ্নি! তোমরা (স্তোতাদের মধ্যে) ধন বিভাগে রত থেকে বৃত্তহননে অতিশয় বল প্রকাশ করেছিলে, তা শুনেছি; হে সর্বদর্শিদ্বয়! আমাদের এ যজ্ঞে কুশে উপবেশন করে অভিষুত সোম পান করে হৃষ্ট হও।
৬। হে ইন্দ্র ও অগ্নি! যুদ্ধের সময় আহ্বান করলে তোমরা এসে স্বকীয় মহত্ত্ব দ্বারা সকল মানুষ অপেক্ষা বড় হও, পৃথিবী অপেক্ষা আকাশ অপেক্ষা নদী ও পর্বত সমূহ অপেক্ষা বড় হও; তোমরা অন্য সকল ভূবন অপেক্ষা বড়।
৭। হে বজ্রহস্ত ইন্দ্র ও অগ্নি! ধন আহরণ কর, আমাদের প্রদান কর, কর্মদ্বারা আমাদের রক্ষা কর। সূর্যের যে রশ্মিসমূহ দ্বারা আমাদের পূর্ব পুরুষগণ সমবেত হয়েছিলেন, সে এই।
৮। হে বজ্রহস্ত নগরবিদারক (৩) ইন্দ্র ও অগ্নি! আমাদের ধন দান কর; সংগ্রামে আমাদের রক্ষা কর। মিত্র, বরুণ, অদিতি সিন্ধু, পৃথিবী ও দ্যৌঃ আমাদের রক্ষা করুন।
১। হে ইন্দ্র ও অগ্নি! আমি ধন ইচ্ছা করে তোমাদের জ্ঞাতি বা বন্ধুর ন্যায় মনে করি। আমার প্রকৃষ্ট বৃদ্ধি তোমারাই দিয়েছ, অন্য কেউ নয়, অতএব আমি এ ধ্যাননিষ্পন্ন, অন্নের ইচ্ছা সূচক স্তুতি তোমাদের উদ্দেশে রচনা করেছি।
২। হে ইন্দ্র ও অগ্নি! তোমরা অযোগ্য জামাতা (১) অথবা শ্যালক (২) অপেক্ষাও অধিক বহুবিধ ধন দান কর, এরূপ শুনেছি; অতএব হে ইন্দ্র ও অগ্নি! আমি তোমাদের সোমপ্রদানকালে পঠনীয় একটি নুতন স্তোত্র রচনা করছি।
৩। আমরা পুত্র পৌত্রাদিরূপ রুজু যেন কখনও ছেদন না করি, এরূপ প্রার্থনা করে এবং পিতৃগণের ন্যায় শক্তিমান পুত্রাদি উৎপাদন করে উৎপাদন সমর্থ (যজমানগণ) ইন্দ্র ও অগ্নিকে সুখে স্তুতি করেন; শত্রুহিংসক ইন্দ্র ও অগ্নি স্তুতির নিকট উপস্থিত থাকেন।
৪। হে ইন্দ্র ও অগ্নি! দীপ্তিমান প্রার্থনা তোমাদের কামনা করে তোমাদের হর্ষের জন্য সোমরস অভিষব করছে; তোমরা অশ্বযুক্ত শোভনীয় বাহুযুক্ত ও সুপাণি; তোমার শীঘ্র এসে উদকস্থ মাধুর্য দ্বারা আমাদের সোমরস সংপৃক্ত কর।
৫। হে ইন্দ্র ও অগ্নি! তোমরা (স্তোতাদের মধ্যে) ধন বিভাগে রত থেকে বৃত্তহননে অতিশয় বল প্রকাশ করেছিলে, তা শুনেছি; হে সর্বদর্শিদ্বয়! আমাদের এ যজ্ঞে কুশে উপবেশন করে অভিষুত সোম পান করে হৃষ্ট হও।
৬। হে ইন্দ্র ও অগ্নি! যুদ্ধের সময় আহ্বান করলে তোমরা এসে স্বকীয় মহত্ত্ব দ্বারা সকল মানুষ অপেক্ষা বড় হও, পৃথিবী অপেক্ষা আকাশ অপেক্ষা নদী ও পর্বত সমূহ অপেক্ষা বড় হও; তোমরা অন্য সকল ভূবন অপেক্ষা বড়।
৭। হে বজ্রহস্ত ইন্দ্র ও অগ্নি! ধন আহরণ কর, আমাদের প্রদান কর, কর্মদ্বারা আমাদের রক্ষা কর। সূর্যের যে রশ্মিসমূহ দ্বারা আমাদের পূর্ব পুরুষগণ সমবেত হয়েছিলেন, সে এই।
৮। হে বজ্রহস্ত নগরবিদারক (৩) ইন্দ্র ও অগ্নি! আমাদের ধন দান কর; সংগ্রামে আমাদের রক্ষা কর। মিত্র, বরুণ, অদিতি সিন্ধু, পৃথিবী ও দ্যৌঃ আমাদের রক্ষা করুন।
টীকাঃ
১। গুণবিহীন জামাতা কন্যা লাভের জন্য কন্যাকর্তাকে অনেক ধন দান করে, ইন্দ্র ও অগ্নি তা হতেও অধিক দান করেন। সায়ণ। জামাতা=জা অর্থে, অপত্য, তার নির্মাতা। যাস্ক। নিরুক্ত
৬।৯।২।স্যালাৎ অর্থ কন্যার ভ্রাতা; সে যেরূপ ভগিনীকে ভালবেসে অনেক ধন দেয়, ইন্দ্র ও অগ্নি তা অপেক্ষাও অধিক দেন। সায়ণ। স্যাল=সা অর্থে শূর্প বা কুলো, লাজ অর্থে খৈ। যাস্ক নিরুক্ত
৬।
৯। বিবাহের সময় স্যালক শূর্প দ্বারা খৈ ছড়ায়।
৩। পুরন্দর শব্দ প্রায় ইন্দ্র সম্বন্ধেই ব্যবহৃত হয়, এখানে ইন্দ্র ও অগ্নি উভয়ের সম্বন্ধেই ব্যবহৃত হয়েছে। পুরুদরৌ অসুরপুরাণাং দারয়িতারৌ। সায়ণ।
১। গুণবিহীন জামাতা কন্যা লাভের জন্য কন্যাকর্তাকে অনেক ধন দান করে, ইন্দ্র ও অগ্নি তা হতেও অধিক দান করেন। সায়ণ। জামাতা=জা অর্থে, অপত্য, তার নির্মাতা। যাস্ক। নিরুক্ত
৬।৯।২।স্যালাৎ অর্থ কন্যার ভ্রাতা; সে যেরূপ ভগিনীকে ভালবেসে অনেক ধন দেয়, ইন্দ্র ও অগ্নি তা অপেক্ষাও অধিক দেন। সায়ণ। স্যাল=সা অর্থে শূর্প বা কুলো, লাজ অর্থে খৈ। যাস্ক নিরুক্ত
৬।
৯। বিবাহের সময় স্যালক শূর্প দ্বারা খৈ ছড়ায়।
৩। পুরন্দর শব্দ প্রায় ইন্দ্র সম্বন্ধেই ব্যবহৃত হয়, এখানে ইন্দ্র ও অগ্নি উভয়ের সম্বন্ধেই ব্যবহৃত হয়েছে। পুরুদরৌ অসুরপুরাণাং দারয়িতারৌ। সায়ণ।
১১০ সুক্ত।।
অনুবাদঃ
১। হে ঋভুগণ। আমি পূর্বে বারবার যজ্ঞকর্ম অনুষ্ঠান করেছি, এখন আবার অনুষ্ঠান করছি এবং সেখানে তোমাদের প্রশংসার জন্য অতিশয় সুমিষ্ট স্তুতি পাঠ করা হচ্ছে। এখানে সকল দেবগণের জন্য এ সোমরস (১) প্রস্তুত হয়েছে, স্বাহা শব্দ উচ্চারণপূর্বক অগ্নিতে সে রস অর্পিত হলে, তা পান করে তৃপ্ত হও।
২। হে ঋভুগণ! তোমরা আমার জ্ঞাতি, তোমাদের জ্ঞান যখন অপরিপক্ক ছিল, সেই পূর্বকালে তোমরা উপভোগ্য সোমরস ইচ্ছা করে গিয়েছিলে। হে সুধম্বার (২) পুত্রগণ! তখন তোমাদের কর্মের মহত্ত্ব দ্বারা দানশীল সবিতার গৃহে এসেছিলে।
৩। যখন তোমরা প্রকাশমান সবিতাকে তোমাদের (পোমপানের) ইচ্ছা জানিয়ে এসেছিলে এবং অসুর ত্বষ্টার নির্মিত সেই একটি সোমপাত্রকে চারখানা করেছিলে, তখন সবিতা তোমাদের অমরত্ব দান করেছিলেন।
৪। তারা শীঘ্র কর্ম সাধন করেছেন বলে এবং ঋত্বিকদের সাথে মিলিত হয়েছিলেন বলে মানুষ হয়েও অমরত্ব প্রাপ্ত হয়েছিলেন। তখন সুধন্বার পুত্র ঋভুগণ সূর্যের ন্যায় দীপ্তিমান হয়ে সাংবৎসরিক যজ্ঞসমূহের হব্য ভাজন হলেন।
৫। ঋভুগণ নিকটস্থদের স্তুতিভাজন হয়ে, উৎকৃষ্ট সোমরস আকাঙ্ক্ষা করে, দেবগণের মধ্যে হব্য কামনা করে, মানদন্ড দিয়ে যেরূপ ক্ষেত্র পরিমাণ করে সেরুপ তীক্ষ্ম অস্ত্রদ্বারা একটি যজ্ঞপাত্র চারটি ভাগ করেছিলেন।
৬। আমরা অন্তরীক্ষের নেতা ঋভুগণকে পাত্রস্থিত ঘৃত অর্পণ করছি এবং জ্ঞানদ্বারা স্তুতি করছি; তারা জগৎপালক সূর্যের শীঘ্রতা প্রাপ্ত হয়েছিলেন, তারা দিব্য লোকের যজ্ঞ অন্ন প্রাপ্ত হয়েছিলেন।
৭। সমবলসম্পন্ন ঋভু আমাদের রক্ষক অন্ন ও বাসগৃহদাতা, ঋভু আমাদের নিবাস হেতু অতএব তিনি আমাদের তা দান করুন। হে ঋভু আদি দেবগণ। আমরা যেন তোমাদের রক্ষা প্রাপ্ত হয়ে অনুকুল দিবসে অভিষববিহীন শত্রু সেনাকে পরাস্ত করি।
৮। ঋভুগণ তুমি গাভীকে চর্ম দ্বারা আচ্ছাদন করেছিলে এবং সে গাভীকে পুনরায় বৎসের সাথে যোগ করে দিয়েছিলে (৩)। হে সুধম্বার পুত্র! যজ্ঞের নেতৃগণ! তোমরা শোভনীয় কর্মদ্বারা বৃদ্ধ পিতা মাতাকে পুনরায় যুবা করে দিয়েছিলে।
৯। হে ইন্দ্র! তুমি ঋভুদের সাথে মিলিত হয়ে অন্নদানের সময় আমাদের অন্নদান কর, বিচিত্র ধন দান কর। মিত্র, বরুণ, অদিতি, সিন্ধু, পৃথিবী ও দ্যৌঃ যেন আমাদের রক্ষা করেন।
১। হে ঋভুগণ। আমি পূর্বে বারবার যজ্ঞকর্ম অনুষ্ঠান করেছি, এখন আবার অনুষ্ঠান করছি এবং সেখানে তোমাদের প্রশংসার জন্য অতিশয় সুমিষ্ট স্তুতি পাঠ করা হচ্ছে। এখানে সকল দেবগণের জন্য এ সোমরস (১) প্রস্তুত হয়েছে, স্বাহা শব্দ উচ্চারণপূর্বক অগ্নিতে সে রস অর্পিত হলে, তা পান করে তৃপ্ত হও।
২। হে ঋভুগণ! তোমরা আমার জ্ঞাতি, তোমাদের জ্ঞান যখন অপরিপক্ক ছিল, সেই পূর্বকালে তোমরা উপভোগ্য সোমরস ইচ্ছা করে গিয়েছিলে। হে সুধম্বার (২) পুত্রগণ! তখন তোমাদের কর্মের মহত্ত্ব দ্বারা দানশীল সবিতার গৃহে এসেছিলে।
৩। যখন তোমরা প্রকাশমান সবিতাকে তোমাদের (পোমপানের) ইচ্ছা জানিয়ে এসেছিলে এবং অসুর ত্বষ্টার নির্মিত সেই একটি সোমপাত্রকে চারখানা করেছিলে, তখন সবিতা তোমাদের অমরত্ব দান করেছিলেন।
৪। তারা শীঘ্র কর্ম সাধন করেছেন বলে এবং ঋত্বিকদের সাথে মিলিত হয়েছিলেন বলে মানুষ হয়েও অমরত্ব প্রাপ্ত হয়েছিলেন। তখন সুধন্বার পুত্র ঋভুগণ সূর্যের ন্যায় দীপ্তিমান হয়ে সাংবৎসরিক যজ্ঞসমূহের হব্য ভাজন হলেন।
৫। ঋভুগণ নিকটস্থদের স্তুতিভাজন হয়ে, উৎকৃষ্ট সোমরস আকাঙ্ক্ষা করে, দেবগণের মধ্যে হব্য কামনা করে, মানদন্ড দিয়ে যেরূপ ক্ষেত্র পরিমাণ করে সেরুপ তীক্ষ্ম অস্ত্রদ্বারা একটি যজ্ঞপাত্র চারটি ভাগ করেছিলেন।
৬। আমরা অন্তরীক্ষের নেতা ঋভুগণকে পাত্রস্থিত ঘৃত অর্পণ করছি এবং জ্ঞানদ্বারা স্তুতি করছি; তারা জগৎপালক সূর্যের শীঘ্রতা প্রাপ্ত হয়েছিলেন, তারা দিব্য লোকের যজ্ঞ অন্ন প্রাপ্ত হয়েছিলেন।
৭। সমবলসম্পন্ন ঋভু আমাদের রক্ষক অন্ন ও বাসগৃহদাতা, ঋভু আমাদের নিবাস হেতু অতএব তিনি আমাদের তা দান করুন। হে ঋভু আদি দেবগণ। আমরা যেন তোমাদের রক্ষা প্রাপ্ত হয়ে অনুকুল দিবসে অভিষববিহীন শত্রু সেনাকে পরাস্ত করি।
৮। ঋভুগণ তুমি গাভীকে চর্ম দ্বারা আচ্ছাদন করেছিলে এবং সে গাভীকে পুনরায় বৎসের সাথে যোগ করে দিয়েছিলে (৩)। হে সুধম্বার পুত্র! যজ্ঞের নেতৃগণ! তোমরা শোভনীয় কর্মদ্বারা বৃদ্ধ পিতা মাতাকে পুনরায় যুবা করে দিয়েছিলে।
৯। হে ইন্দ্র! তুমি ঋভুদের সাথে মিলিত হয়ে অন্নদানের সময় আমাদের অন্নদান কর, বিচিত্র ধন দান কর। মিত্র, বরুণ, অদিতি, সিন্ধু, পৃথিবী ও দ্যৌঃ যেন আমাদের রক্ষা করেন।
টীকাঃ
১। মুলে সমুদ্রঃ আছে, সায়ণ তার অর্থ করেছেন সমুদ্র নশীলোহয়ং সোমরসঃ।
২। ঋভু, বিভু ও বাজ এ তিন জন সুধম্বা নামক অঙ্গিরার পুত্র। যাস্ক। নিরুক্ত
১১।১৬। এ সুক্তের ঋষি কুৎস ও অঙ্গিরা বংশীয় অতএব ঋভুগণ তার জ্ঞাতি। ২০ সুক্তের ১ ঋকের টীকা দেখুন।
৩। পূর্বে কোনও ঋষির ধেনু মরেছিল, ঋষি বৎসটিকে দেখে ঋভুকে স্তুতি করেছিলেন। ঋভুগণ তার সদৃশ আর একটি ধেনু নির্মাণ করে মৃত ধেনুর চর্ম দ্বারা তা আচ্ছাদন করে তাই বৎসের সঙ্গে যাগ করে দিয়েছিলেন। সায়ণ।
১১১ সুক্ত।।
অনুবাদঃ
১। উৎকৃষ্ঠজ্ঞানসম্পন্ন শিল্পী ঋভুগণ (অশ্বিদ্বয়ের জন্য) সুনির্মিত রথ প্রস্তুত করেছিলেন এবং ইন্দ্রের বাহক হরিনামক বলবান অশ্বদ্বয় নির্মাণ করেছিলেন। তাদের পিতামাতাকে যৌবন দান করেছিলেন এবং বৎসকে তার সহচর গাভী দান করেছিলেন।
২। আমাদের যজ্ঞের জন্য উজ্জ্বল অন্ন প্রস্তুত কর এবং আমাদের ক্রতুর জন্য ও বলের জন্য সন্তানের হেতুভূত অন্ন প্রস্তুত কর, যেন আমরা সমস্ত বীর সন্তানদের সাথে সুখে বাস করতে পারি। আমাদের বলের জন্য এরূপ ধন দাও।
৩। হে নেতা ঋভুগণ! আমাদের জন্য অন্ন প্রস্তুত কর, আমাদের রথের জন্য ধন প্রস্তুত কর, আমাদের অশ্বের জন্য অন্ন প্রস্তুত কর। প্রতিদিন লোকে যেন আমাদের জয়শীল ধন পূজা করে আমরা যেন সংগ্রামে আমাদের মধ্যে জাত হোক বা না হোক, সকল শত্রুকে পরাস্ত করতে পারি।
৪। রক্ষণের জন্য মহৎ ইন্দ্রকে এবং ঋভু, বিভু ও বাজকে ও মরুৎগণকে সোমপানার্থ আহ্বান করি, মিত্র ও বরুণ এবং অশ্বিদ্বয়কে আহ্বান করি। তারা আমাদের ধন ও যজ্ঞকর্ম ও বিজয় সাধন করে দেবেন।
৫। ঋভু আমাদের সংগ্রামের জন্য ধন প্রদান করুন, সমরবিজয়ী বাজ আমাদের রক্ষা করুন। মিত্র, বরুণ, অদিতি, সিন্ধু, পৃথিবী ও দ্যৌঃ আমাদের রক্ষা করুন।
১১২ সুক্ত।। অনুবাদঃ
১। আমি অশ্বিদ্বয়কে আগে জানবার জন্য দ্যাবা পৃথিবীকে স্তুতি করি, অশ্বিদ্বয় এলে তাদের অর্চনার জন্য প্রদীপ্ত এবং শোভনীয় কান্তিযুক্ত অগ্নিকে স্তুতি করি। হে অশ্বিদ্বয়! তোমরা সংগ্রামে তোমাদের ভাগ প্রাপ্তির জন্য যে সমস্ত উপায়ের সাথে শঙ্খ শব্দ কর, সে সকল উপায়ের সঙ্গে এস।
২। যেরূপ ন্যায় বাক্যযুক্ত পন্ডিতের নিকট শিষ্যগণ শিক্ষার জন্য দাড়িয়ে থাকে, হে অশ্বিদ্বয়! অন্যদেবে অনাসক্ত স্তোতৃগণ শোভনীয় স্তোত্রের সাথে তোমার রথের পার্শ্বে অণুগ্রহ লাভের আশায় সেরূপ দাড়িয়ে আছে। তোমরা যে সকল উপায দ্বারা যজ্ঞ সম্পাদনার্থ সুমতিদের রক্ষা কর, হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
৩। হে নেতৃম্বয়! তোমরা স্বর্গীয় অমৃতলব্ধ বলদ্বারা সে ত্রিভূবননিবাসী সকল লোককে শাসন করতে সমর্থ। যে সকল উপায় দ্বারা তোমরা প্রসব রহিত গাভীকে দুগ্ধবতী করেছিলে, হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
৪। চতুর্দিক বিচারী বায়ুর পুত্র দ্বিমাত অগ্নির (১) বলদ্বারা যুক্ত হয়ে এবং দ্রুতগামীদের মধ্যে অতিশয় ত্বরান্বিত হয়ে, যে সকল উপায়ে সকল স্থানে ব্যাপ্ত হন এবং যে সকল উপায় দ্বারা ত্রিবিধ কর্মজ্ঞ ঋষি কক্ষীবান (২) বিশিষ্ট জ্ঞানযুক্ত হয়েছিলেন, যে সকল উপায়ের সাথে এস।
৫। যে সকল উপায় দ্বারা তোমরা কুপে নিক্ষিপ্ত ও পাশবন্ধ রেভকে জল হতে উদ্ধার করেছিলে (৩) এবং বন্ধনকেও সেরূপ অবস্থা হতে উদ্ধার করেছিলে, (৪) যে সকল উপায় দ্বারা আলোকেচ্ছু কম্বকে রক্ষা করেছিলে (৫); হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
৬। অন্তক নামক রাজর্যিকে কূপে নিক্ষেপ করে শত্রু যখন তাকে হিংসা করছিল, তখন তোমরা যে সকল উপায় দ্বারা তাকে রক্ষা করেছিলে (৬), যে সকল ব্যথাশূন্য উপায় দ্বারা ভূজ্যুকে রক্ষা করেছিলে (৭), যে সকল উপায় দ্বারা কর্কন্ধু ও বয্যকে (৮) রক্ষা করেছিলে, হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
৭। যে সকল উপায় দ্বারা শুচন্তিকে ধনবান ও শোভনীয় গৃহসম্পন্ন করেছিলে (৯), যে সকল উপায় দ্বারা অত্রির জন্য গাত্রদাহকারী উত্তাপও সুখকর করেছিলে (১০), যে সকল উপায় দ্বারা পুশ্নিগু ও পুরুকুৎসকে রক্ষা কেরছিলে (১১), হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
৮। হে অভীষ্টবর্ষিদ্বয়! যে সকল কর্মদ্বারা পঙ্গু পরাবৃজকে (১২) গমনসমর্থ করেছিলে, অন্ধ ঋজ্রশ্বকে (১৩) দৃষ্টি সমর্থ করেছিলে এবং দুর্বলজানু শ্রোণকে গমনসমর্থ করেছিলে (১৪) যে সকল কর্মদ্বারা গৃহীত বর্তিকা পক্ষীকে মুক্তি দিয়েছিলে (১৫); হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস!
৯। যে সকল উপায় দ্বারা মধুময়ী নদী প্রবাহিত করেছিলে, হে জরারহিত অশ্বিদ্বয়! যে সকল উপায় দ্বারা বসিষ্ঠকে (১৬) প্রীত করেছিলে, যে সকল উপায় দ্বারা কুৎস ও শুতর্ষ ও নর্যকে (১৭) রক্ষা করেছিলে, হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
১০। যে সকল উপায় দ্বারা ধানবতী এবং গমনে অসমর্থা বিশপলাকে বহু ধনযুক্ত সংগ্রামে যেগে সমর্থ করেছিলে (১৮); যে সকল উপায় দ্বারা অশ্বের পুত্র স্তুতি পরায়ণ বেশকে রক্ষা করেছিলে (১৯) হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
১১। হে দানশীল অশ্বিদ্বয়! যে সকল উপায় দ্বারা উশিজের পুত্র বণিক দীর্ঘশ্রবাকে মেঘ হতে মধুর জল দিয়েছিলে এবং যে সকল উপায় দ্বারা উশিজের পুত্র স্তোতা কক্ষীবানকে রক্ষা করেছিলে (২০), হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
১২। যে সকল উপায় দ্বারা নদী কূলসমূহ জল দ্বারা পূর্ণ করেছ, যে সকল উপায় দ্বারা তোমাদের অশ্বরহিত রথকে বিজয়ার্থ চালিয়েছ, যে সকল উপায় দ্বারা ত্রিশোক আপন (অপহৃত) গো উদ্ধার করেছিলেন (২১), হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
১৩। যে সকল উপায়দ্বারা দূরবর্তী সূর্যের নিকট গমন কর (২২) এবং মান্ধাতাকে ক্ষেত্রপতি কার্যে রক্ষা করেছিলে (২৩); যে সকল উপায় দ্বারা মেধাবী ভারদ্বাজকে (২৪) রক্ষা করেছিলে; হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
১৪। যে সকল উপায়দ্বারা মহৎ অতিথিবৎসল এবং জলে প্রবিষ্ট দিবোদাসকে শম্বর হনন কালে রক্ষা করেছিলে (২৫); যে সকল উপায় দ্বারা নগর বিনাশী সংগ্রামে ত্রসদস্যুকে রক্ষা করেছিলে ( ২৬ ); হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
১৫। যে সকল উপায় দ্বারা পানরত এবং স্তুতিভাজন বম্রকে (২৭) রক্ষা করেছিলে, কলি ভার্যা লাভ করার পর তাকে যে সকল উপায় দ্বারা রক্ষা করেছিলে, যে সকল উপায দ্বারা অশ্বশূন্য পৃথিকে রক্ষা করেছিলে (২৮), হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
১৬। হে নেতৃদ্বয়! যে সকল উপায় দ্বারা শযুকে, অত্রিকে এবং পূর্বকালে মনুকে গমনের পথ দেখাতে ইচ্ছুক হয়েছিল; যে সকল উপায দ্বারা স্যুমরশ্মির জন্য তীর নিক্ষেপ করেছিলে (২৯); হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
১৭। যে সকল উপায় দ্বারা পঠর্বা শরীরবলে সংগ্রামে কাষ্ঠযুক্ত প্রজ্বলিত অগ্নির ন্যা{য় দীপ্তিমান হয়েছিলেন, যে সকল উপায় দ্বারা শর্যাতকে যুদ্ধে রক্ষা করেছিলে (৩০), হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
১৮। হে অঙ্গিরা! হে অশ্বিদ্বয়! যে সকল উপায় দ্বারা তোমরা মনের সাথে হৃষ্ট হয়েছিলে এবং অপহৃত গাভীর বিবরে সকল দেবের অগ্রে গিয়েছিলে, যে সকল উপায় দ্বারা শুর মনুকে অন্নদ্বারা রক্ষা করেছিলে (৩১), হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
১৯। যে সকল উপায় দ্বারা বিমদাকে ভার্যা দিয়েছিলে (৩২); যে সকল উপায় দ্বারা {অরুণবর্ণ গো প্রদান করেছিলে; যে সকল উপায দ্বারা সুরদাসকে উৎকৃষ্ট ধন দিয়েছিলে (৩৩); হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
২০। যে সকল উপায দ্বারা হব্যদাতাকে সুখ প্রদান কর, যে সকল উপায় দ্বারা ভুজ্য (৩৪) ও অধ্রিগুকে রক্ষা করেছ, সে সকল উপায় দ্বারা ঋতস্তুভকে (৩৫) সুখকর পুষ্টিকর (অন্ন দান করেছ) , হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
২১। যে সকল উপায দ্বারা কৃশানুকে যুদ্ধে রক্ষা করেছিলে, যে সকল উপায় দ্বারা যুবা পুরুকুৎসের (৩৬) অশ্বকে বেগ প্রদান করেছিলে, যে সকল উপায় দ্বারা মধুমক্ষিকাদের প্রিয় মধু দিয়েছ, হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
২২। যে সকল উপায় দ্বারা গোলাভের জন্য যুদ্ধকালে মানুষকে রক্ষা কর ও ক্ষেত্র ও তনয় লাভে সহায়তা কর, যে সকল উপায দ্বারা তার রথ ও অশ্ব সমূহ রক্ষা কর, হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
২৩। হে শতক্রতু অশ্বিদ্বয়! যে সকল উপায় দ্বারা অর্জুনের পুত্র কুৎসকে, তুর্বীতিকে ও দভীতিকে (৩৭) রক্ষা করেছ, যে সকল উপায দ্বারা ধ্বসন্তি ও পুরুষন্তিকে (৩৮ রক্ষা করেছ, হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
২৪। হে অশ্বিদ্বয়! আমাদের বাক্য বিহিত কর্মসংযুক্ত কর, হে অভীষ্টবর্ষী দস্রদ্বয়! আমাদের বুদ্ধি জ্ঞান সমর্থ কর। আমরা আলোকশুন্য রাত্রের শেষ প্রহরে রক্ষণার্থে তেমাদের আহ্বান করি, আমাদের অন্ন লাভে বৃদ্ধি সাধন করে দাও।
২৫। হে অশ্বিদ্বয়! দিনে ও রাতে আমাদের বিনাশ রহিত সৌভাগ্যদ্বারা রক্ষা কর। মিত্র, বরুণ, অদিতি, সিন্ধু, পৃথিবী ও দ্যৌঃ আমাদের রক্ষা করুন।
টীকাঃ
১। বায়ু দ্বারা বৃক্ষের ঘর্ষণ হলে যে অগ্নির উৎপত্তি হয় সে অগ্নি বায়ুর পুত্র। সায়ণ। দুই কাষ্ঠের ঘর্ষণে অগ্নি জন্মায় সেজন্য অগ্নি দ্বিমাতৃ। সায়ণ।
২। পাকযজ্ঞহবির্ষ জ্ঞাসোমযজ্ঞেষু আসাদিতজ্ঞানঃ কক্ষীবান। সায়ণ। কক্ষীবান সম্বন্ধে ১৮ সুক্তের ১ ঋকের টীকা দেখুন।
৩। ১১৬ সুক্তের ২৪ ঋকের টীকা দেখুন।
৪। ১১৬ সুক্তের ১১ ঋকের টীকা দেখুন।
৫। ১১৮ সুক্তের ৭ ঋকের টীকা দেখুন।
৬। অন্তক একজন রাজর্ষি এবং অসুরগণ তাকে কূপে নিক্ষেপ করেছিল, এ ছাড়া সায়ণের ব্যাখ্যায় অন্য কোনও বিবরণ নেই।
৭। ১১৬ সুক্তের ৩ ঋকের টীকা দেখুন।
৮। এদের সম্বন্ধে সায়ণের টীকায় কোনও বিবরণ নেই।
৯। সায়ণের ব্যাখ্যায় কোনও বিবরণ নেই।
১০। অসুরগণ অত্রিকে শতদ্বার যন্ত্র গৃহে নিক্ষেপ করে তাকে পীড়া দেবার জন্য অগ্নি জ্বালিয়েছিল, অশ্বিদ্বয় শীতল জল দ্বারা সে অগ্নি নিবিয়ে দিয়েছিলেন। সায়ণ। যাস্ক এ উপাখ্যানটি একটি উপমামাত্র মনে করেন। অত্রি অর্থ অগ্নি (অদ ধাতু ভক্ষণে হবাতুক)। গ্রীষ্মকালে সূর্য কিরণততপ্ত অগ্নির ক্ষুধা কিঞ্চিৎ নিবৃত্ত হলে, বর্ষাকালের বৃষ্টি দ্বারা পুনরায় উত্তেজিত হয়।
১১। সায়ণের টীকায় এদের কোনও বিবরণ নেই।
১২। পরাবৃজ একজন ঋষি। সায়ণের টীকার অন্য বিবরণ নেই।
১৩। ১১৬ সুক্তের ১৬ ঋকের টীকা দেখুন এবং ১০০ সুক্তের ঋষিগণের নাম ও ১৭ ঋক দেখুন।
১৪। শ্রোণ একজন ঋষি, অন্য বিবরণ নেই।
১৫। ১১৬ সুক্তে ১৪ ঋকের টীকা দেখুন।
১৬। প্রসিদ্ধ বসিষ্ঠ ঋষি, বসিষ্ঠবংশীয়গণ ঋগ্বেদের সমুদয় সপ্তম মন্ডলের ঋষি।
১৭। কুৎস সম্বন্ধে ৬৩ সুক্তের ৩ ঋংরটীকা দেখুন। শ্রুতর্ষের কোন বিবরণ নেই। নর্ষ সম্বন্ধে ৫৪ সুক্তের ৬ ঋককেদখুন।
১৮। ১১৬ সুক্তের ১৫ ঋকের টীকা দেখুন। মূলে অথর্ব্যং আছে। বেদার্থ যত্ন বলেন, এর অর্থ গন্তুমসমর্থাং নয় এর অর্থ অথর্বপুত্রীং।
১৯। বেশ একজন ঋষি। সায়ণের টীকায় আর কোন বিবরণ নেই।
২০। উশিজের পুত্র কক্ষীবান, সম্বন্ধে ১৮ সুক্তের ১ ঋকের টীকা দেখুন। উশিজের পুত্র দীর্ঘশ্রবা সম্বন্ধে সায়ণ লিখেছেন; যথা, দীর্ঘতমার উশীজ নামে পত্নী ছিল। তাদের দীর্ঘশ্রবা নামক পুত্র ঋষি ছিলেন। তিনি অনাবৃষ্টিতে জীবন যাপনার্থে বাণিজ্য করেছিলেন এবং বৃষ্টির অন্য অশ্বিদ্বয়কে স্তুতি করেছিলেন। অশ্বিদ্বয় তাকেমেঘ প্রেরণ করেছিলেন।
২১। ত্রিশোক ঋষি কম্বের পুত্র। সায়ণ।
২২। সূর্যং পরিযার্থ অথাৎ সুর্যের নিকট যাও। কিন্তু সায়ণ ব্যাখ্যা করেছেন, গ্রহনের অন্ধকার হতে সূর্যকে মুক্ত করতে যাও।
২৩। বাঙলায় সচরাচর যে মান্ধাতার আমল বলা যায় সে মান্ধাতা ঋগ্বেদ রচনার সময় ক্ষেত্রপতি অর্থাৎ ভূস্বামী বা রাজা বলে প্রসিদ্ধ ছিলেন, সায়ণ তাকে রাজর্ষি বলেছেন। বিষ্ণু পুরাণে মান্ধাতা একজন প্রসিদ্ধ সূর্য বংশীয় রাজা।
২৪। সায়ণ লিখেছেন অশ্বিদ্বয় অন্ন প্রদান করে ভারদ্বাজ ঋষিকে রক্ষা করেছিলেন। কিন্তু এ অন্ন প্রদানের কথাটি বোধ হয় ভরুবাজের নাম হতেই উৎপন্ন হয়েছে। বাজ শব্দের বৈদিক অর্থ অন্ন, ভরত ভূধাতু হতে, অর্থ পোষণ বা প্রদান
২৫। ৫১ সুক্তের ৬ ঋকের টীকা দেখুন।
২৬। পুরুকুৎসের পুত্র ত্রসদস্যু নামক একজন ঋষি। সায়ণ।
২৭। বম্র বিখনার পুত্র। বম্রের যজ্ঞদ্রব্যসমূহ নিয়ে যাওয়া সম্বন্ধে ৫১ সুক্তের ৯ ঋকের টীকা দেখুন।
২৮। কলি একজন ঋষি ছিলেন, এবং পৃথি রাজর্ষি ছিলেন, এ ভিন্ন সায়ণের টীকায় কোনও বিবরণ নেই।
২৯। অত্রি সম্বন্ধে এ সুক্তের ৭ ঋকের টীকা দেখুন। মনু নামক রাজর্ষিকে অশ্বিদ্বয় যবাদি ধান্য বপনদ্বারা দারিদ্র্য গতে নির্গমনের পথ দেখিয়ে দিয়েছিলেন। সায়ণ। স্যুমরশ্মি একজন ঋষি। অন্য বিবরণ নেই।
৩০। একজন রাজর্ষি। সায়ণ। শর্যাত সম্বন্ধে ৫১ সুক্তের ২২ ঋকের টীকা দেখুন। শর্যাতং মানবং ইন্দ্রেণ সহস্পর্ধমানং। সায়ণ। বিষ্ণু পুরাণে শর্যাতি বৈবস্বত মনুর চতুর্থ সন্তান। ৩১। পণিদ্বারা অপহৃত গাভী ইন্দ্র উদ্ধার করেছিলেন, ৬ সুক্তের ৫ ঋকের টীকা দেখুন। কিন্তু ঋগ্বেদে অনেক স্থানে অন্যান্য দেবকেও এ কার্যের জন্য স্তুতি করা হয়েছে। মনু সম্বন্ধে এ সুক্তের ১৬ ঋকের টীকা দেখুন।
৩২। ১১৬ সুক্তের ১ ঋকের টীকা দেখুন।
৩৩। ৪৭ সুক্তের ৬ ঋকের টীকা দেখুন। সায়ণ লিখেছেন সুদাসু পিজনবের পুত্র একজন রাজা। ৩৪। ভুজ্যু সম্বন্ধে ১১৬ সুক্তের ৩ ঋকেয় টীকা দেখুন। অধ্রিগু ও চাপ এ দুজন দেবগণের শমিতা। সায়ণ। ৩৫। একজন ঋষি। সায়ণ।
৩৬। কৃশানু সোমপালদিগের মধ্যে একজন সোমপাল। সায়ণ। পুরু কুৎস সম্বন্ধে এ সুক্তের ১৪ ঋকের টীকা দেখুন। পুরাণে মান্ধাতার পুত্র পুরুকুৎস নর্মদা নদীকে বিবাহ করেন।
৩৭। কুৎস সম্বন্ধে ৩৩ সুক্তের ১৪ ঋকের টীকা দেখুন। অর্জুন ইন্দ্রের একটি নাম। সায়ণ। তুর্বীতি সম্বন্ধে ৬১ সুক্তের ১১ ঋকের টীকা দেখুন। দভীতি সম্বন্ধে সায়ণের টীকায় কোনও বিবরণ নেই।
৩৮। ধ্বমন্তি সম্বন্ধে সায়ণের টীকায় কোনও বিবরণ নেই। পুরুষন্তি একজন ঋসি। সায়ণের টীকায় অন্য কোনও বিবরণ নেই।
১১৩ সুক্ত।।
অনুবাদঃ
১। জ্যেতি সমূহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ জ্যোতি ঊষা এসেছেন; তার বিচিত্র ও জগৎ প্রকাশক রশ্নিও ব্যক্ত হয়ে প্রকাশ হয়েছে। যেরূপ রাত সবিতার প্রসূত, সেরুপ রাতও উষার উৎপত্তির জন্য জন্মস্থান কল্পনা করেছেন (১)।
২। দীপ্তিমতী শুভ্রবর্ণা সূর্যের মাতা (২) ঊষা এসেছেন, কৃষ্ণবর্ণা রাত স্বীয় স্থানে গিয়েছেন, রাত ও ঊষা উভয়েই সূর্যের বন্ধু এবং উভয়ই অমর। একে অন্যের পর আসেন এবং একে অন্যের বর্ণ বিনাশ করেন; এরূপে তারা দীপ্তিমান হয়ে বিচরণ করেন।
৩। এ ভগ্নীদ্বয় রাত এবং ঊষার একই অনন্ত সঞ্চরণ মার্গ দীপ্তিমান সূর্য কর্তৃক আদিষ্ট হয়েছে, তারা একের পর অন্যে সে পথ বিচরণ করেন। সকল বস্তুর উৎপাদনকারী রাত ও ঊষা ভিন্ন ভিন্ন রূপ ধারণ করলেও সমান মনঃসম্পন্মা; তারা পরস্পরকে বাধা দেন না এবং কখনও স্থির হয়ে অবস্থিতি করেন না।
৪। আমরা প্রভাসম্পন্মা সুনুতবাক্যের নেত্রী (৩) বিচিত্রা ঊষাকে জানি, তিনি আমাদের স্বার খুলে দিয়েছেন। তিনি সর্বজগৎ আলোকপূর্ণ করে আমাদের ধন প্রকাশ করে দিয়েছেন। তিনি সমস্ত ভুবন সমূহ প্রকাশ করে দিয়েছেন।
৫। যে সকল লোক বক্র হয়ে শুরেছিল, ঊষা তার মধ্যে কাকেও ভোগের জনী, কাকেও যজ্ঞের জন্য এবং কাকেও ধনের জন্য, সকলেই নিজ নিজ কর্মের জন্য, জাগরিত করেছেন। যারা অল্প দেখতে পায় ঊষা তাদের বিশেষরূপ দৃষ্টির জন্য অন্ধকার দূর করেন। বিস্তীর্ণ ঊষা সমস্ত ভূবনসমূহ প্রকাশ করে দিয়েছেন।
৬। ঊষা কাকেও ধনের জন্য কাকেও অন্যের জন্য, কাকেও মহাযজ্ঞের জন্য, কাকেও অভীষ্ট লাভের জন্য জাগরিত করেন। তিনি ভিন্ন ভিন্ন জীবনোপায় প্রকাশ করে দেবার জন্য সমস্ত ভূবনসমূহ প্রকাশ করে দিয়েছেন।
৭। ঐ নিত্য যৌবনসম্পনা, শুভ্রবসনা, আকাশদুহিতা অন্ধকার দূর করে মনুষ্যের দর্শনগোচর হয়েছেন। তিনি পার্থিব সমস্ত ধনের ঈশ্বরী। হে সুভগে। তুমি অদ্য এ স্থানে অন্ধকার দূর কর।
৮। অতীত উষাগণ যে অন্তরীক্ষ পথ দিয়ে গিয়েছেন সে পথে ঊষা অনুগমন করছেন, ভবিষ্যতে অনন্ত ঊষাগণ সে পথ অনুধাবন করবেন। ঊষা অন্ধকার দূর করে মৃতবৎ সংজ্ঞাশূন্য লোককে চৈতন্য দান করেন।
৯। হে ঊষা! যেহেতু তুমি অগ্নি প্রজ্বলিত করেছ, সূর্যের আলোক দ্বারা অন্ধকার দূর করেছ ও যজ্ঞরত মানুষদের অন্ধকার মুক্ত করেছ, অতএব তুমি দেবগণের উপকারজনক কাজ করেছ।
১০। কত কাল হতে ঊষা উৎপন্ন হচ্ছেন, কত কাল পর্যন্ত উৎপন্ন হবেন। বর্তমান ঊষা পূর্ব ঊষাকে সাগ্রহে অনুকরণ করেছেন, আবার আগামী ঊষাসমূহ এ দীপ্তিমান ঊষাকে অনুকরণ করবে।
১১। যে মানুষেরা অতি পূর্বকালের ঊষাকে আলোক প্রকাশ করতে দেখেছিলেন তারা এক্ষণে গত হয়েছেন; আমরা এক্ষণে ঊষাকে দর্শন করছি, ভবিষ্যতে যারা ঊষাকে দর্শন করবেন তারা আসছেন।
১২। তিনি বিদ্বেষীদের দূর করে, যজ্ঞ পালন করেন, যজ্ঞার্থে প্রাদুর্ভুত হন, তিনি সুখ প্রদান করেন এবং সুনৃত শব্দ প্রেরণ করেন। ঊষা কল্যাণবতী ও দেবগণের আকাঙ্ক্ষিত যজ্ঞ ধারণ করেন। হে ঊষা! তুমি উৎকৃষ্টরূপে অদ্য এ স্থানে আলোক প্রকাশ কর।
১৩। ঊষা দেবী পূর্বকালে নিত্য উদয় হতেন, ধনবতী ঊষা এখনও এ জগৎ অন্ধকারবিমুক্ত করছেন, সেরূপ তিনি ভবিষ্যতে ও দিনে দিনে উদয় হবেন, কেননা তিনি অজরা ও অমরা হয়ে স্বকীয় তেজে বিচরণ করেন।
১৪। ঊষা আকাশের বিস্তীর্ণ দিক সকল আলোকপূর্ণ তেজদ্বারা দীপ্তিমান করছেন, ঊষাদেবী রাতকৃত কৃষ্ণরূপ দূর করছেন। সুপ্ত প্রাণীদের জাগরিত করে ঊষা অরুণ অশ্বযুক্ত রথে আসছেন।
১৫। তিনি পোষণসমর্থ বরণীয় ধন এনে এবং সকলকে চৈতন্য দান করে বিচিত্র রশ্মি প্রকাশ করছেন। তিনি পূর্বগত অনেক ঊষার উপমাস্বরূপ এবং আগামী প্রভাযুক্ত উষাসমূহের প্রায়ম্ভ স্বরূপ। তিনি রশ্মি বিকাশ করছেন।
১৬। হে মনুষ্যগণ! ওঠ, আমাদের (শরীর) পরিচালক জীবন এসেছে, অন্ধকার গিয়েছে, আলোক এসেছে। (ঊষা) সূর্যের গমনের জন্য পথ করে দিয়েছেন; যেখানে অন্ন দান করে বর্ধন করেছে, সেখানে যাব।
১৭। স্তুতিবাহক স্তোতা প্রত্যযুক্ত ঊষাকে স্তব করে সুগ্রহিত বাক্য সমূহ উচ্চারণ করছে। হে ধনবতী ঊষা! অদ্য সে স্তোতায় অন্ধকার বিনাশ কর এবং তাকে সন্ততিযুক্ত অর্থ দান কর।
১৮। যে গাভীসম্পন্ন ও সকল বীরযুক্ত ঊষাসমূহ বায়ুর ন্যায় (শীঘ্র) সুনুত স্তুতি শেষ হলে হব্যদাতা মানুষের অন্ধকার বিনাশ করেন, সে অশ্বদাতা ঊষাগণ সোম অতিযবকারীর প্রতি প্রসন্ন হোন।
১৯। হে ঊষা! তুমি দেবগণের মাতা (৩) অদিতির প্রতিস্পষিনী, তুমি যজ্ঞ প্রকাশ কর, বিস্তীর্ণ হয়ে বিরণ দান কর। আমাদের স্তোত্র প্রশংসা করে আমাদের উপর উদয় হও; হে সকলের বরণীয়! আমাদের জনপদে প্রাদুর্ভূত কর।
২০। ঊষাগণ যে বিছু বিচিত্র গ্রহণযোগ্য ধন আনেন, তা যজ্ঞ সম্পাদক স্তোতার কল্যাণস্বরূপ। মিত্র, বরুণ, অদিতি, সিন্ধু, পৃথিবী ও দ্যৌঃ আমাদের রক্ষা করুন।
টীকাঃ
১। সূর্যের অস্তগমনের পর রাত আসে, এই জন্য রাত সূর্যের সন্তান, আবার রাত্রির পর ঊষা আসে এই জন্য ঊষা রাতের সন্তান।
২। ঊষার পর সুর্য আসে এ জন্য সুর্য ঊষার সন্তান।
৩। ঊষার প্রাদুর্ভাব হলে পশু পক্ষী মৃগাদি শব্দ করে এ জন্য তিনি সুনৃত্যবাক্যের নেত্রী। সায়ণ।
৪। ঊষাকালে সকল দেবগণ স্তুতি দ্বারা জাগরিত হন অতএব উষাকে তাদের জননী বলে বর্ণনা করা হয়েছে। অতএব তিনি দেবগণের মাতা অদিতির প্রতিস্পর্ধিনী। সায়ণ।
১। মুলে সমুদ্রঃ আছে, সায়ণ তার অর্থ করেছেন সমুদ্র নশীলোহয়ং সোমরসঃ।
২। ঋভু, বিভু ও বাজ এ তিন জন সুধম্বা নামক অঙ্গিরার পুত্র। যাস্ক। নিরুক্ত
১১।১৬। এ সুক্তের ঋষি কুৎস ও অঙ্গিরা বংশীয় অতএব ঋভুগণ তার জ্ঞাতি। ২০ সুক্তের ১ ঋকের টীকা দেখুন।
৩। পূর্বে কোনও ঋষির ধেনু মরেছিল, ঋষি বৎসটিকে দেখে ঋভুকে স্তুতি করেছিলেন। ঋভুগণ তার সদৃশ আর একটি ধেনু নির্মাণ করে মৃত ধেনুর চর্ম দ্বারা তা আচ্ছাদন করে তাই বৎসের সঙ্গে যাগ করে দিয়েছিলেন। সায়ণ।
১১১ সুক্ত।।
অনুবাদঃ
১। উৎকৃষ্ঠজ্ঞানসম্পন্ন শিল্পী ঋভুগণ (অশ্বিদ্বয়ের জন্য) সুনির্মিত রথ প্রস্তুত করেছিলেন এবং ইন্দ্রের বাহক হরিনামক বলবান অশ্বদ্বয় নির্মাণ করেছিলেন। তাদের পিতামাতাকে যৌবন দান করেছিলেন এবং বৎসকে তার সহচর গাভী দান করেছিলেন।
২। আমাদের যজ্ঞের জন্য উজ্জ্বল অন্ন প্রস্তুত কর এবং আমাদের ক্রতুর জন্য ও বলের জন্য সন্তানের হেতুভূত অন্ন প্রস্তুত কর, যেন আমরা সমস্ত বীর সন্তানদের সাথে সুখে বাস করতে পারি। আমাদের বলের জন্য এরূপ ধন দাও।
৩। হে নেতা ঋভুগণ! আমাদের জন্য অন্ন প্রস্তুত কর, আমাদের রথের জন্য ধন প্রস্তুত কর, আমাদের অশ্বের জন্য অন্ন প্রস্তুত কর। প্রতিদিন লোকে যেন আমাদের জয়শীল ধন পূজা করে আমরা যেন সংগ্রামে আমাদের মধ্যে জাত হোক বা না হোক, সকল শত্রুকে পরাস্ত করতে পারি।
৪। রক্ষণের জন্য মহৎ ইন্দ্রকে এবং ঋভু, বিভু ও বাজকে ও মরুৎগণকে সোমপানার্থ আহ্বান করি, মিত্র ও বরুণ এবং অশ্বিদ্বয়কে আহ্বান করি। তারা আমাদের ধন ও যজ্ঞকর্ম ও বিজয় সাধন করে দেবেন।
৫। ঋভু আমাদের সংগ্রামের জন্য ধন প্রদান করুন, সমরবিজয়ী বাজ আমাদের রক্ষা করুন। মিত্র, বরুণ, অদিতি, সিন্ধু, পৃথিবী ও দ্যৌঃ আমাদের রক্ষা করুন।
১১২ সুক্ত।। অনুবাদঃ
১। আমি অশ্বিদ্বয়কে আগে জানবার জন্য দ্যাবা পৃথিবীকে স্তুতি করি, অশ্বিদ্বয় এলে তাদের অর্চনার জন্য প্রদীপ্ত এবং শোভনীয় কান্তিযুক্ত অগ্নিকে স্তুতি করি। হে অশ্বিদ্বয়! তোমরা সংগ্রামে তোমাদের ভাগ প্রাপ্তির জন্য যে সমস্ত উপায়ের সাথে শঙ্খ শব্দ কর, সে সকল উপায়ের সঙ্গে এস।
২। যেরূপ ন্যায় বাক্যযুক্ত পন্ডিতের নিকট শিষ্যগণ শিক্ষার জন্য দাড়িয়ে থাকে, হে অশ্বিদ্বয়! অন্যদেবে অনাসক্ত স্তোতৃগণ শোভনীয় স্তোত্রের সাথে তোমার রথের পার্শ্বে অণুগ্রহ লাভের আশায় সেরূপ দাড়িয়ে আছে। তোমরা যে সকল উপায দ্বারা যজ্ঞ সম্পাদনার্থ সুমতিদের রক্ষা কর, হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
৩। হে নেতৃম্বয়! তোমরা স্বর্গীয় অমৃতলব্ধ বলদ্বারা সে ত্রিভূবননিবাসী সকল লোককে শাসন করতে সমর্থ। যে সকল উপায় দ্বারা তোমরা প্রসব রহিত গাভীকে দুগ্ধবতী করেছিলে, হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
৪। চতুর্দিক বিচারী বায়ুর পুত্র দ্বিমাত অগ্নির (১) বলদ্বারা যুক্ত হয়ে এবং দ্রুতগামীদের মধ্যে অতিশয় ত্বরান্বিত হয়ে, যে সকল উপায়ে সকল স্থানে ব্যাপ্ত হন এবং যে সকল উপায় দ্বারা ত্রিবিধ কর্মজ্ঞ ঋষি কক্ষীবান (২) বিশিষ্ট জ্ঞানযুক্ত হয়েছিলেন, যে সকল উপায়ের সাথে এস।
৫। যে সকল উপায় দ্বারা তোমরা কুপে নিক্ষিপ্ত ও পাশবন্ধ রেভকে জল হতে উদ্ধার করেছিলে (৩) এবং বন্ধনকেও সেরূপ অবস্থা হতে উদ্ধার করেছিলে, (৪) যে সকল উপায় দ্বারা আলোকেচ্ছু কম্বকে রক্ষা করেছিলে (৫); হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
৬। অন্তক নামক রাজর্যিকে কূপে নিক্ষেপ করে শত্রু যখন তাকে হিংসা করছিল, তখন তোমরা যে সকল উপায় দ্বারা তাকে রক্ষা করেছিলে (৬), যে সকল ব্যথাশূন্য উপায় দ্বারা ভূজ্যুকে রক্ষা করেছিলে (৭), যে সকল উপায় দ্বারা কর্কন্ধু ও বয্যকে (৮) রক্ষা করেছিলে, হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
৭। যে সকল উপায় দ্বারা শুচন্তিকে ধনবান ও শোভনীয় গৃহসম্পন্ন করেছিলে (৯), যে সকল উপায় দ্বারা অত্রির জন্য গাত্রদাহকারী উত্তাপও সুখকর করেছিলে (১০), যে সকল উপায় দ্বারা পুশ্নিগু ও পুরুকুৎসকে রক্ষা কেরছিলে (১১), হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
৮। হে অভীষ্টবর্ষিদ্বয়! যে সকল কর্মদ্বারা পঙ্গু পরাবৃজকে (১২) গমনসমর্থ করেছিলে, অন্ধ ঋজ্রশ্বকে (১৩) দৃষ্টি সমর্থ করেছিলে এবং দুর্বলজানু শ্রোণকে গমনসমর্থ করেছিলে (১৪) যে সকল কর্মদ্বারা গৃহীত বর্তিকা পক্ষীকে মুক্তি দিয়েছিলে (১৫); হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস!
৯। যে সকল উপায় দ্বারা মধুময়ী নদী প্রবাহিত করেছিলে, হে জরারহিত অশ্বিদ্বয়! যে সকল উপায় দ্বারা বসিষ্ঠকে (১৬) প্রীত করেছিলে, যে সকল উপায় দ্বারা কুৎস ও শুতর্ষ ও নর্যকে (১৭) রক্ষা করেছিলে, হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
১০। যে সকল উপায় দ্বারা ধানবতী এবং গমনে অসমর্থা বিশপলাকে বহু ধনযুক্ত সংগ্রামে যেগে সমর্থ করেছিলে (১৮); যে সকল উপায় দ্বারা অশ্বের পুত্র স্তুতি পরায়ণ বেশকে রক্ষা করেছিলে (১৯) হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
১১। হে দানশীল অশ্বিদ্বয়! যে সকল উপায় দ্বারা উশিজের পুত্র বণিক দীর্ঘশ্রবাকে মেঘ হতে মধুর জল দিয়েছিলে এবং যে সকল উপায় দ্বারা উশিজের পুত্র স্তোতা কক্ষীবানকে রক্ষা করেছিলে (২০), হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
১২। যে সকল উপায় দ্বারা নদী কূলসমূহ জল দ্বারা পূর্ণ করেছ, যে সকল উপায় দ্বারা তোমাদের অশ্বরহিত রথকে বিজয়ার্থ চালিয়েছ, যে সকল উপায় দ্বারা ত্রিশোক আপন (অপহৃত) গো উদ্ধার করেছিলেন (২১), হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
১৩। যে সকল উপায়দ্বারা দূরবর্তী সূর্যের নিকট গমন কর (২২) এবং মান্ধাতাকে ক্ষেত্রপতি কার্যে রক্ষা করেছিলে (২৩); যে সকল উপায় দ্বারা মেধাবী ভারদ্বাজকে (২৪) রক্ষা করেছিলে; হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
১৪। যে সকল উপায়দ্বারা মহৎ অতিথিবৎসল এবং জলে প্রবিষ্ট দিবোদাসকে শম্বর হনন কালে রক্ষা করেছিলে (২৫); যে সকল উপায় দ্বারা নগর বিনাশী সংগ্রামে ত্রসদস্যুকে রক্ষা করেছিলে ( ২৬ ); হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
১৫। যে সকল উপায় দ্বারা পানরত এবং স্তুতিভাজন বম্রকে (২৭) রক্ষা করেছিলে, কলি ভার্যা লাভ করার পর তাকে যে সকল উপায় দ্বারা রক্ষা করেছিলে, যে সকল উপায দ্বারা অশ্বশূন্য পৃথিকে রক্ষা করেছিলে (২৮), হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
১৬। হে নেতৃদ্বয়! যে সকল উপায় দ্বারা শযুকে, অত্রিকে এবং পূর্বকালে মনুকে গমনের পথ দেখাতে ইচ্ছুক হয়েছিল; যে সকল উপায দ্বারা স্যুমরশ্মির জন্য তীর নিক্ষেপ করেছিলে (২৯); হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
১৭। যে সকল উপায় দ্বারা পঠর্বা শরীরবলে সংগ্রামে কাষ্ঠযুক্ত প্রজ্বলিত অগ্নির ন্যা{য় দীপ্তিমান হয়েছিলেন, যে সকল উপায় দ্বারা শর্যাতকে যুদ্ধে রক্ষা করেছিলে (৩০), হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
১৮। হে অঙ্গিরা! হে অশ্বিদ্বয়! যে সকল উপায় দ্বারা তোমরা মনের সাথে হৃষ্ট হয়েছিলে এবং অপহৃত গাভীর বিবরে সকল দেবের অগ্রে গিয়েছিলে, যে সকল উপায় দ্বারা শুর মনুকে অন্নদ্বারা রক্ষা করেছিলে (৩১), হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
১৯। যে সকল উপায় দ্বারা বিমদাকে ভার্যা দিয়েছিলে (৩২); যে সকল উপায় দ্বারা {অরুণবর্ণ গো প্রদান করেছিলে; যে সকল উপায দ্বারা সুরদাসকে উৎকৃষ্ট ধন দিয়েছিলে (৩৩); হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
২০। যে সকল উপায দ্বারা হব্যদাতাকে সুখ প্রদান কর, যে সকল উপায় দ্বারা ভুজ্য (৩৪) ও অধ্রিগুকে রক্ষা করেছ, সে সকল উপায় দ্বারা ঋতস্তুভকে (৩৫) সুখকর পুষ্টিকর (অন্ন দান করেছ) , হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
২১। যে সকল উপায দ্বারা কৃশানুকে যুদ্ধে রক্ষা করেছিলে, যে সকল উপায় দ্বারা যুবা পুরুকুৎসের (৩৬) অশ্বকে বেগ প্রদান করেছিলে, যে সকল উপায় দ্বারা মধুমক্ষিকাদের প্রিয় মধু দিয়েছ, হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
২২। যে সকল উপায় দ্বারা গোলাভের জন্য যুদ্ধকালে মানুষকে রক্ষা কর ও ক্ষেত্র ও তনয় লাভে সহায়তা কর, যে সকল উপায দ্বারা তার রথ ও অশ্ব সমূহ রক্ষা কর, হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
২৩। হে শতক্রতু অশ্বিদ্বয়! যে সকল উপায় দ্বারা অর্জুনের পুত্র কুৎসকে, তুর্বীতিকে ও দভীতিকে (৩৭) রক্ষা করেছ, যে সকল উপায দ্বারা ধ্বসন্তি ও পুরুষন্তিকে (৩৮ রক্ষা করেছ, হে অশ্বিদ্বয়! সে সকল উপায়ের সাথে এস।
২৪। হে অশ্বিদ্বয়! আমাদের বাক্য বিহিত কর্মসংযুক্ত কর, হে অভীষ্টবর্ষী দস্রদ্বয়! আমাদের বুদ্ধি জ্ঞান সমর্থ কর। আমরা আলোকশুন্য রাত্রের শেষ প্রহরে রক্ষণার্থে তেমাদের আহ্বান করি, আমাদের অন্ন লাভে বৃদ্ধি সাধন করে দাও।
২৫। হে অশ্বিদ্বয়! দিনে ও রাতে আমাদের বিনাশ রহিত সৌভাগ্যদ্বারা রক্ষা কর। মিত্র, বরুণ, অদিতি, সিন্ধু, পৃথিবী ও দ্যৌঃ আমাদের রক্ষা করুন।
টীকাঃ
১। বায়ু দ্বারা বৃক্ষের ঘর্ষণ হলে যে অগ্নির উৎপত্তি হয় সে অগ্নি বায়ুর পুত্র। সায়ণ। দুই কাষ্ঠের ঘর্ষণে অগ্নি জন্মায় সেজন্য অগ্নি দ্বিমাতৃ। সায়ণ।
২। পাকযজ্ঞহবির্ষ জ্ঞাসোমযজ্ঞেষু আসাদিতজ্ঞানঃ কক্ষীবান। সায়ণ। কক্ষীবান সম্বন্ধে ১৮ সুক্তের ১ ঋকের টীকা দেখুন।
৩। ১১৬ সুক্তের ২৪ ঋকের টীকা দেখুন।
৪। ১১৬ সুক্তের ১১ ঋকের টীকা দেখুন।
৫। ১১৮ সুক্তের ৭ ঋকের টীকা দেখুন।
৬। অন্তক একজন রাজর্ষি এবং অসুরগণ তাকে কূপে নিক্ষেপ করেছিল, এ ছাড়া সায়ণের ব্যাখ্যায় অন্য কোনও বিবরণ নেই।
৭। ১১৬ সুক্তের ৩ ঋকের টীকা দেখুন।
৮। এদের সম্বন্ধে সায়ণের টীকায় কোনও বিবরণ নেই।
৯। সায়ণের ব্যাখ্যায় কোনও বিবরণ নেই।
১০। অসুরগণ অত্রিকে শতদ্বার যন্ত্র গৃহে নিক্ষেপ করে তাকে পীড়া দেবার জন্য অগ্নি জ্বালিয়েছিল, অশ্বিদ্বয় শীতল জল দ্বারা সে অগ্নি নিবিয়ে দিয়েছিলেন। সায়ণ। যাস্ক এ উপাখ্যানটি একটি উপমামাত্র মনে করেন। অত্রি অর্থ অগ্নি (অদ ধাতু ভক্ষণে হবাতুক)। গ্রীষ্মকালে সূর্য কিরণততপ্ত অগ্নির ক্ষুধা কিঞ্চিৎ নিবৃত্ত হলে, বর্ষাকালের বৃষ্টি দ্বারা পুনরায় উত্তেজিত হয়।
১১। সায়ণের টীকায় এদের কোনও বিবরণ নেই।
১২। পরাবৃজ একজন ঋষি। সায়ণের টীকার অন্য বিবরণ নেই।
১৩। ১১৬ সুক্তের ১৬ ঋকের টীকা দেখুন এবং ১০০ সুক্তের ঋষিগণের নাম ও ১৭ ঋক দেখুন।
১৪। শ্রোণ একজন ঋষি, অন্য বিবরণ নেই।
১৫। ১১৬ সুক্তে ১৪ ঋকের টীকা দেখুন।
১৬। প্রসিদ্ধ বসিষ্ঠ ঋষি, বসিষ্ঠবংশীয়গণ ঋগ্বেদের সমুদয় সপ্তম মন্ডলের ঋষি।
১৭। কুৎস সম্বন্ধে ৬৩ সুক্তের ৩ ঋংরটীকা দেখুন। শ্রুতর্ষের কোন বিবরণ নেই। নর্ষ সম্বন্ধে ৫৪ সুক্তের ৬ ঋককেদখুন।
১৮। ১১৬ সুক্তের ১৫ ঋকের টীকা দেখুন। মূলে অথর্ব্যং আছে। বেদার্থ যত্ন বলেন, এর অর্থ গন্তুমসমর্থাং নয় এর অর্থ অথর্বপুত্রীং।
১৯। বেশ একজন ঋষি। সায়ণের টীকায় আর কোন বিবরণ নেই।
২০। উশিজের পুত্র কক্ষীবান, সম্বন্ধে ১৮ সুক্তের ১ ঋকের টীকা দেখুন। উশিজের পুত্র দীর্ঘশ্রবা সম্বন্ধে সায়ণ লিখেছেন; যথা, দীর্ঘতমার উশীজ নামে পত্নী ছিল। তাদের দীর্ঘশ্রবা নামক পুত্র ঋষি ছিলেন। তিনি অনাবৃষ্টিতে জীবন যাপনার্থে বাণিজ্য করেছিলেন এবং বৃষ্টির অন্য অশ্বিদ্বয়কে স্তুতি করেছিলেন। অশ্বিদ্বয় তাকেমেঘ প্রেরণ করেছিলেন।
২১। ত্রিশোক ঋষি কম্বের পুত্র। সায়ণ।
২২। সূর্যং পরিযার্থ অথাৎ সুর্যের নিকট যাও। কিন্তু সায়ণ ব্যাখ্যা করেছেন, গ্রহনের অন্ধকার হতে সূর্যকে মুক্ত করতে যাও।
২৩। বাঙলায় সচরাচর যে মান্ধাতার আমল বলা যায় সে মান্ধাতা ঋগ্বেদ রচনার সময় ক্ষেত্রপতি অর্থাৎ ভূস্বামী বা রাজা বলে প্রসিদ্ধ ছিলেন, সায়ণ তাকে রাজর্ষি বলেছেন। বিষ্ণু পুরাণে মান্ধাতা একজন প্রসিদ্ধ সূর্য বংশীয় রাজা।
২৪। সায়ণ লিখেছেন অশ্বিদ্বয় অন্ন প্রদান করে ভারদ্বাজ ঋষিকে রক্ষা করেছিলেন। কিন্তু এ অন্ন প্রদানের কথাটি বোধ হয় ভরুবাজের নাম হতেই উৎপন্ন হয়েছে। বাজ শব্দের বৈদিক অর্থ অন্ন, ভরত ভূধাতু হতে, অর্থ পোষণ বা প্রদান
২৫। ৫১ সুক্তের ৬ ঋকের টীকা দেখুন।
২৬। পুরুকুৎসের পুত্র ত্রসদস্যু নামক একজন ঋষি। সায়ণ।
২৭। বম্র বিখনার পুত্র। বম্রের যজ্ঞদ্রব্যসমূহ নিয়ে যাওয়া সম্বন্ধে ৫১ সুক্তের ৯ ঋকের টীকা দেখুন।
২৮। কলি একজন ঋষি ছিলেন, এবং পৃথি রাজর্ষি ছিলেন, এ ভিন্ন সায়ণের টীকায় কোনও বিবরণ নেই।
২৯। অত্রি সম্বন্ধে এ সুক্তের ৭ ঋকের টীকা দেখুন। মনু নামক রাজর্ষিকে অশ্বিদ্বয় যবাদি ধান্য বপনদ্বারা দারিদ্র্য গতে নির্গমনের পথ দেখিয়ে দিয়েছিলেন। সায়ণ। স্যুমরশ্মি একজন ঋষি। অন্য বিবরণ নেই।
৩০। একজন রাজর্ষি। সায়ণ। শর্যাত সম্বন্ধে ৫১ সুক্তের ২২ ঋকের টীকা দেখুন। শর্যাতং মানবং ইন্দ্রেণ সহস্পর্ধমানং। সায়ণ। বিষ্ণু পুরাণে শর্যাতি বৈবস্বত মনুর চতুর্থ সন্তান। ৩১। পণিদ্বারা অপহৃত গাভী ইন্দ্র উদ্ধার করেছিলেন, ৬ সুক্তের ৫ ঋকের টীকা দেখুন। কিন্তু ঋগ্বেদে অনেক স্থানে অন্যান্য দেবকেও এ কার্যের জন্য স্তুতি করা হয়েছে। মনু সম্বন্ধে এ সুক্তের ১৬ ঋকের টীকা দেখুন।
৩২। ১১৬ সুক্তের ১ ঋকের টীকা দেখুন।
৩৩। ৪৭ সুক্তের ৬ ঋকের টীকা দেখুন। সায়ণ লিখেছেন সুদাসু পিজনবের পুত্র একজন রাজা। ৩৪। ভুজ্যু সম্বন্ধে ১১৬ সুক্তের ৩ ঋকেয় টীকা দেখুন। অধ্রিগু ও চাপ এ দুজন দেবগণের শমিতা। সায়ণ। ৩৫। একজন ঋষি। সায়ণ।
৩৬। কৃশানু সোমপালদিগের মধ্যে একজন সোমপাল। সায়ণ। পুরু কুৎস সম্বন্ধে এ সুক্তের ১৪ ঋকের টীকা দেখুন। পুরাণে মান্ধাতার পুত্র পুরুকুৎস নর্মদা নদীকে বিবাহ করেন।
৩৭। কুৎস সম্বন্ধে ৩৩ সুক্তের ১৪ ঋকের টীকা দেখুন। অর্জুন ইন্দ্রের একটি নাম। সায়ণ। তুর্বীতি সম্বন্ধে ৬১ সুক্তের ১১ ঋকের টীকা দেখুন। দভীতি সম্বন্ধে সায়ণের টীকায় কোনও বিবরণ নেই।
৩৮। ধ্বমন্তি সম্বন্ধে সায়ণের টীকায় কোনও বিবরণ নেই। পুরুষন্তি একজন ঋসি। সায়ণের টীকায় অন্য কোনও বিবরণ নেই।
১১৩ সুক্ত।।
অনুবাদঃ
১। জ্যেতি সমূহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ জ্যোতি ঊষা এসেছেন; তার বিচিত্র ও জগৎ প্রকাশক রশ্নিও ব্যক্ত হয়ে প্রকাশ হয়েছে। যেরূপ রাত সবিতার প্রসূত, সেরুপ রাতও উষার উৎপত্তির জন্য জন্মস্থান কল্পনা করেছেন (১)।
২। দীপ্তিমতী শুভ্রবর্ণা সূর্যের মাতা (২) ঊষা এসেছেন, কৃষ্ণবর্ণা রাত স্বীয় স্থানে গিয়েছেন, রাত ও ঊষা উভয়েই সূর্যের বন্ধু এবং উভয়ই অমর। একে অন্যের পর আসেন এবং একে অন্যের বর্ণ বিনাশ করেন; এরূপে তারা দীপ্তিমান হয়ে বিচরণ করেন।
৩। এ ভগ্নীদ্বয় রাত এবং ঊষার একই অনন্ত সঞ্চরণ মার্গ দীপ্তিমান সূর্য কর্তৃক আদিষ্ট হয়েছে, তারা একের পর অন্যে সে পথ বিচরণ করেন। সকল বস্তুর উৎপাদনকারী রাত ও ঊষা ভিন্ন ভিন্ন রূপ ধারণ করলেও সমান মনঃসম্পন্মা; তারা পরস্পরকে বাধা দেন না এবং কখনও স্থির হয়ে অবস্থিতি করেন না।
৪। আমরা প্রভাসম্পন্মা সুনুতবাক্যের নেত্রী (৩) বিচিত্রা ঊষাকে জানি, তিনি আমাদের স্বার খুলে দিয়েছেন। তিনি সর্বজগৎ আলোকপূর্ণ করে আমাদের ধন প্রকাশ করে দিয়েছেন। তিনি সমস্ত ভুবন সমূহ প্রকাশ করে দিয়েছেন।
৫। যে সকল লোক বক্র হয়ে শুরেছিল, ঊষা তার মধ্যে কাকেও ভোগের জনী, কাকেও যজ্ঞের জন্য এবং কাকেও ধনের জন্য, সকলেই নিজ নিজ কর্মের জন্য, জাগরিত করেছেন। যারা অল্প দেখতে পায় ঊষা তাদের বিশেষরূপ দৃষ্টির জন্য অন্ধকার দূর করেন। বিস্তীর্ণ ঊষা সমস্ত ভূবনসমূহ প্রকাশ করে দিয়েছেন।
৬। ঊষা কাকেও ধনের জন্য কাকেও অন্যের জন্য, কাকেও মহাযজ্ঞের জন্য, কাকেও অভীষ্ট লাভের জন্য জাগরিত করেন। তিনি ভিন্ন ভিন্ন জীবনোপায় প্রকাশ করে দেবার জন্য সমস্ত ভূবনসমূহ প্রকাশ করে দিয়েছেন।
৭। ঐ নিত্য যৌবনসম্পনা, শুভ্রবসনা, আকাশদুহিতা অন্ধকার দূর করে মনুষ্যের দর্শনগোচর হয়েছেন। তিনি পার্থিব সমস্ত ধনের ঈশ্বরী। হে সুভগে। তুমি অদ্য এ স্থানে অন্ধকার দূর কর।
৮। অতীত উষাগণ যে অন্তরীক্ষ পথ দিয়ে গিয়েছেন সে পথে ঊষা অনুগমন করছেন, ভবিষ্যতে অনন্ত ঊষাগণ সে পথ অনুধাবন করবেন। ঊষা অন্ধকার দূর করে মৃতবৎ সংজ্ঞাশূন্য লোককে চৈতন্য দান করেন।
৯। হে ঊষা! যেহেতু তুমি অগ্নি প্রজ্বলিত করেছ, সূর্যের আলোক দ্বারা অন্ধকার দূর করেছ ও যজ্ঞরত মানুষদের অন্ধকার মুক্ত করেছ, অতএব তুমি দেবগণের উপকারজনক কাজ করেছ।
১০। কত কাল হতে ঊষা উৎপন্ন হচ্ছেন, কত কাল পর্যন্ত উৎপন্ন হবেন। বর্তমান ঊষা পূর্ব ঊষাকে সাগ্রহে অনুকরণ করেছেন, আবার আগামী ঊষাসমূহ এ দীপ্তিমান ঊষাকে অনুকরণ করবে।
১১। যে মানুষেরা অতি পূর্বকালের ঊষাকে আলোক প্রকাশ করতে দেখেছিলেন তারা এক্ষণে গত হয়েছেন; আমরা এক্ষণে ঊষাকে দর্শন করছি, ভবিষ্যতে যারা ঊষাকে দর্শন করবেন তারা আসছেন।
১২। তিনি বিদ্বেষীদের দূর করে, যজ্ঞ পালন করেন, যজ্ঞার্থে প্রাদুর্ভুত হন, তিনি সুখ প্রদান করেন এবং সুনৃত শব্দ প্রেরণ করেন। ঊষা কল্যাণবতী ও দেবগণের আকাঙ্ক্ষিত যজ্ঞ ধারণ করেন। হে ঊষা! তুমি উৎকৃষ্টরূপে অদ্য এ স্থানে আলোক প্রকাশ কর।
১৩। ঊষা দেবী পূর্বকালে নিত্য উদয় হতেন, ধনবতী ঊষা এখনও এ জগৎ অন্ধকারবিমুক্ত করছেন, সেরূপ তিনি ভবিষ্যতে ও দিনে দিনে উদয় হবেন, কেননা তিনি অজরা ও অমরা হয়ে স্বকীয় তেজে বিচরণ করেন।
১৪। ঊষা আকাশের বিস্তীর্ণ দিক সকল আলোকপূর্ণ তেজদ্বারা দীপ্তিমান করছেন, ঊষাদেবী রাতকৃত কৃষ্ণরূপ দূর করছেন। সুপ্ত প্রাণীদের জাগরিত করে ঊষা অরুণ অশ্বযুক্ত রথে আসছেন।
১৫। তিনি পোষণসমর্থ বরণীয় ধন এনে এবং সকলকে চৈতন্য দান করে বিচিত্র রশ্মি প্রকাশ করছেন। তিনি পূর্বগত অনেক ঊষার উপমাস্বরূপ এবং আগামী প্রভাযুক্ত উষাসমূহের প্রায়ম্ভ স্বরূপ। তিনি রশ্মি বিকাশ করছেন।
১৬। হে মনুষ্যগণ! ওঠ, আমাদের (শরীর) পরিচালক জীবন এসেছে, অন্ধকার গিয়েছে, আলোক এসেছে। (ঊষা) সূর্যের গমনের জন্য পথ করে দিয়েছেন; যেখানে অন্ন দান করে বর্ধন করেছে, সেখানে যাব।
১৭। স্তুতিবাহক স্তোতা প্রত্যযুক্ত ঊষাকে স্তব করে সুগ্রহিত বাক্য সমূহ উচ্চারণ করছে। হে ধনবতী ঊষা! অদ্য সে স্তোতায় অন্ধকার বিনাশ কর এবং তাকে সন্ততিযুক্ত অর্থ দান কর।
১৮। যে গাভীসম্পন্ন ও সকল বীরযুক্ত ঊষাসমূহ বায়ুর ন্যায় (শীঘ্র) সুনুত স্তুতি শেষ হলে হব্যদাতা মানুষের অন্ধকার বিনাশ করেন, সে অশ্বদাতা ঊষাগণ সোম অতিযবকারীর প্রতি প্রসন্ন হোন।
১৯। হে ঊষা! তুমি দেবগণের মাতা (৩) অদিতির প্রতিস্পষিনী, তুমি যজ্ঞ প্রকাশ কর, বিস্তীর্ণ হয়ে বিরণ দান কর। আমাদের স্তোত্র প্রশংসা করে আমাদের উপর উদয় হও; হে সকলের বরণীয়! আমাদের জনপদে প্রাদুর্ভূত কর।
২০। ঊষাগণ যে বিছু বিচিত্র গ্রহণযোগ্য ধন আনেন, তা যজ্ঞ সম্পাদক স্তোতার কল্যাণস্বরূপ। মিত্র, বরুণ, অদিতি, সিন্ধু, পৃথিবী ও দ্যৌঃ আমাদের রক্ষা করুন।
টীকাঃ
১। সূর্যের অস্তগমনের পর রাত আসে, এই জন্য রাত সূর্যের সন্তান, আবার রাত্রির পর ঊষা আসে এই জন্য ঊষা রাতের সন্তান।
২। ঊষার পর সুর্য আসে এ জন্য সুর্য ঊষার সন্তান।
৩। ঊষার প্রাদুর্ভাব হলে পশু পক্ষী মৃগাদি শব্দ করে এ জন্য তিনি সুনৃত্যবাক্যের নেত্রী। সায়ণ।
৪। ঊষাকালে সকল দেবগণ স্তুতি দ্বারা জাগরিত হন অতএব উষাকে তাদের জননী বলে বর্ণনা করা হয়েছে। অতএব তিনি দেবগণের মাতা অদিতির প্রতিস্পর্ধিনী। সায়ণ।
১১৪ সুক্ত।।
অনুবাদঃ
১। মহৎ কপদী (১) বীরনাশী রুদ্রকে আমরা এ মাননীয় (স্তুতি সমূহ) অর্পণ করছি, যেন দ্বিপদ ও চতুস্পদগণ সুস্থ থাকে, যেন আমাদের এ গ্রামে সকলে পুষ্ট ও রোগশুনা হয়ে থাকে।
২। হে রুদ্র! তুমি সুখী হো, আমাদের সুখী কর; তুমি বীরদের ক্ষয়কারী, আমরা নমস্কারের সাথে তোমার পরিচর্য়া করি। পিতা মনু যে রোগসমূহ হতে উপশম ও ভয়সমূহ হতে উদ্ধার পেয়েছিলেন, হে রুদ্র। তোমার উপদেশ হতে যেন আমরা তা পাই।
৩। হে অভিষ্টদাতা রুদ্র! তুমি বীরদের ক্ষয়কারী। আমরা দেবষজ্ঞ দ্বারা যেন তোমার অনুগ্রহ প্রাপ্ত হই; তুমি আমাদের সন্তানদের সুখ কামনা করে তাদের নিকট এস; আমরাও সন্তানগণের কুণল দেখে তোমাকে হব্য দান করব।
৪। আমরা রক্ষার জন্য দীপ্তিমান, যজ্ঞপাধক, কুটিলগতি ও মেধাবী রুদ্রকে আহবান করি, তিনি আমাদেরন নিকট হতে তাঁর ক্রোধ দূরে প্রেরণ করুন, আমরা তার অনুগ্রহ প্রার্থনা করি।
৫। সে উৎকৃষ্ট স্বর্গীয় বরাহকে (২) সে অনূণবর্ণ, কপর্দী, দীপ্তিমান উজ্বলরূপধারীকে আমরা নমস্কার দ্বারা আহবান করি। তিনি হস্তে বরণীয় ভৈজষ ধারণ করে আমাদের সূখ, কর্ম ও গৃহ প্রদান করুন।
৬। মধূ হতেও অধিক মধূর এ স্তুতি বাক্য মরুৎগণের পিতা রুদ্রের উদ্দেশে উচ্চারিত হচ্ছে, এতে (স্তোতার) বৃদ্ধি সাধন হয়। হে মরণরহিত রুদ্র! মনুষ্যেদের ভোজনরূপ অন্ন আমাদের প্রদান কর এবং আমাকে আমার পুত্রকে ও তার তনয়কে সুখ দান কর।
৭। হে রুদ্র! আমাদের মধ্যে বৃদ্ধকে বধ করো না, বালককে বধ করো না, সন্তান জনয়িতাকে বধ করোনা, গর্ভস্থ সন্তানকে বধ করো না, আমাদের পিতাকে বধ করো না, মাতাকে বধ করো না, আমাদের শরীরে আঘাত করো না।
৮। হে রুদ্র! আমাদের পুত্রকে হিংসা করো না, তার পুত্রকে হিংসা করো না, আমাদের অন্য মানুষকে হিংসা করো না, আমাদের গো ও অন্ধ হিংসা করো না। হে রুদ্র! ক্রুদ্ধ হয়ে আমাদের বীরদের হিংসা করো না, কেননা আমরা হব্য নিয়ে সর্বদাই তোমাকে অহবান করি।
৯। পণূপালক যেরূপ সায়ংকালে পশূসবামীদের তাদের পণূ ফিরিয়ে দেয়, হে রুদ্র! আমি সেরুপ তোমার স্থোত্র তোমাকে অপর্ণ করছি। হে মরুৎগণের পিতা! আমাদের সুখ দান কর, তোমার অনুগ্রহ অতিশয় সুখকর এবং কল্যাণকর, আমরা তোমার ক্ষণ প্রার্থনা করি।
১৯। হে বীরগণের ক্ষয়কারক! তোমার কৃত গোহত্যা ও মানুষহত্যা দূরে থাকুক, আমরা যেন তোমার দত্ত সুখ পাই। আমাদের সুখী কর, হে দীপ্তিমান রুদ্র! আমাদের পক্ষ হয়ে কথা বলো, তুমি উভয় পৃথিবীর স্বামী, আমাদের সুখ দাও।
১১। আমরা রক্ষণ বাঞ্ছা করে বলেছি, সে রুদ্রকে নমস্কার। রুদ্র মরুৎগণের সাথে আমাদের আহবান শ্রবণ করুন। মিত্র, বরুণ, অদিতি, সিন্ধু, পৃথিবী ও দ্যু আমাদের রক্ষা করুন।
১। মহৎ কপদী (১) বীরনাশী রুদ্রকে আমরা এ মাননীয় (স্তুতি সমূহ) অর্পণ করছি, যেন দ্বিপদ ও চতুস্পদগণ সুস্থ থাকে, যেন আমাদের এ গ্রামে সকলে পুষ্ট ও রোগশুনা হয়ে থাকে।
২। হে রুদ্র! তুমি সুখী হো, আমাদের সুখী কর; তুমি বীরদের ক্ষয়কারী, আমরা নমস্কারের সাথে তোমার পরিচর্য়া করি। পিতা মনু যে রোগসমূহ হতে উপশম ও ভয়সমূহ হতে উদ্ধার পেয়েছিলেন, হে রুদ্র। তোমার উপদেশ হতে যেন আমরা তা পাই।
৩। হে অভিষ্টদাতা রুদ্র! তুমি বীরদের ক্ষয়কারী। আমরা দেবষজ্ঞ দ্বারা যেন তোমার অনুগ্রহ প্রাপ্ত হই; তুমি আমাদের সন্তানদের সুখ কামনা করে তাদের নিকট এস; আমরাও সন্তানগণের কুণল দেখে তোমাকে হব্য দান করব।
৪। আমরা রক্ষার জন্য দীপ্তিমান, যজ্ঞপাধক, কুটিলগতি ও মেধাবী রুদ্রকে আহবান করি, তিনি আমাদেরন নিকট হতে তাঁর ক্রোধ দূরে প্রেরণ করুন, আমরা তার অনুগ্রহ প্রার্থনা করি।
৫। সে উৎকৃষ্ট স্বর্গীয় বরাহকে (২) সে অনূণবর্ণ, কপর্দী, দীপ্তিমান উজ্বলরূপধারীকে আমরা নমস্কার দ্বারা আহবান করি। তিনি হস্তে বরণীয় ভৈজষ ধারণ করে আমাদের সূখ, কর্ম ও গৃহ প্রদান করুন।
৬। মধূ হতেও অধিক মধূর এ স্তুতি বাক্য মরুৎগণের পিতা রুদ্রের উদ্দেশে উচ্চারিত হচ্ছে, এতে (স্তোতার) বৃদ্ধি সাধন হয়। হে মরণরহিত রুদ্র! মনুষ্যেদের ভোজনরূপ অন্ন আমাদের প্রদান কর এবং আমাকে আমার পুত্রকে ও তার তনয়কে সুখ দান কর।
৭। হে রুদ্র! আমাদের মধ্যে বৃদ্ধকে বধ করো না, বালককে বধ করো না, সন্তান জনয়িতাকে বধ করোনা, গর্ভস্থ সন্তানকে বধ করো না, আমাদের পিতাকে বধ করো না, মাতাকে বধ করো না, আমাদের শরীরে আঘাত করো না।
৮। হে রুদ্র! আমাদের পুত্রকে হিংসা করো না, তার পুত্রকে হিংসা করো না, আমাদের অন্য মানুষকে হিংসা করো না, আমাদের গো ও অন্ধ হিংসা করো না। হে রুদ্র! ক্রুদ্ধ হয়ে আমাদের বীরদের হিংসা করো না, কেননা আমরা হব্য নিয়ে সর্বদাই তোমাকে অহবান করি।
৯। পণূপালক যেরূপ সায়ংকালে পশূসবামীদের তাদের পণূ ফিরিয়ে দেয়, হে রুদ্র! আমি সেরুপ তোমার স্থোত্র তোমাকে অপর্ণ করছি। হে মরুৎগণের পিতা! আমাদের সুখ দান কর, তোমার অনুগ্রহ অতিশয় সুখকর এবং কল্যাণকর, আমরা তোমার ক্ষণ প্রার্থনা করি।
১৯। হে বীরগণের ক্ষয়কারক! তোমার কৃত গোহত্যা ও মানুষহত্যা দূরে থাকুক, আমরা যেন তোমার দত্ত সুখ পাই। আমাদের সুখী কর, হে দীপ্তিমান রুদ্র! আমাদের পক্ষ হয়ে কথা বলো, তুমি উভয় পৃথিবীর স্বামী, আমাদের সুখ দাও।
১১। আমরা রক্ষণ বাঞ্ছা করে বলেছি, সে রুদ্রকে নমস্কার। রুদ্র মরুৎগণের সাথে আমাদের আহবান শ্রবণ করুন। মিত্র, বরুণ, অদিতি, সিন্ধু, পৃথিবী ও দ্যু আমাদের রক্ষা করুন।
টীকাঃ
১। রুদ্র শব্দের আদিম অর্থ রজ্র অথবা অগ্নির রূপ বিশেষ। ৪৩ সূক্তের ১ ঝকের টীকা দেখুন। কপর্দী অর্থ ‘জটিল’ অথবা জটাধারী। সায়ণ। অপ্নির জটা কি? কৃষ্ণাম বা মেঘ পূঞ্জই অগ্নির জটা এরূপ অনুমিত হয়।
২। মূলে ‘বরাহং’ আছে। ‘বরাহারং উংকৃস্টভোজনং যদ্ধঅ বরাহবৎ দৃঢ়াঙ্গং।’
১। রুদ্র শব্দের আদিম অর্থ রজ্র অথবা অগ্নির রূপ বিশেষ। ৪৩ সূক্তের ১ ঝকের টীকা দেখুন। কপর্দী অর্থ ‘জটিল’ অথবা জটাধারী। সায়ণ। অপ্নির জটা কি? কৃষ্ণাম বা মেঘ পূঞ্জই অগ্নির জটা এরূপ অনুমিত হয়।
২। মূলে ‘বরাহং’ আছে। ‘বরাহারং উংকৃস্টভোজনং যদ্ধঅ বরাহবৎ দৃঢ়াঙ্গং।’
১১৫ সূক্ত।।
অনুবাদঃ
১। বিচিত্র তেজঃপুঞ্জরুপ, মিত্র, বরুণ ও অগ্নির চক্ষু স্বরূপ সূর্য উদয় হয়েছেন, দ্যাবা পৃথিবী ও অপ্তরীক্ষ স্বীয় কিরণে পরিপূর্ণ করেছেন, সূর্য জঙ্গম ও স্থাবর সকলের আত্মাস্বরূপ।
২। মানুষ যেরূপ নারীর পশ্চাৎ গমন করে, সূর্য সেরূপ দীপ্তিমান ঊষার পশ্চাতে আসছেন (১); এ সময়ে দেবতাকাঙ্খক্ষী করেন।
৩। সূর্যের কল্যাণরূপ হরিৎ নামক বিচিত্র অশ্বগণ এ পথ দিয়ে গমন করে, তারা সকলের স্তুতিভাজন। আমরা সে অস্বদের অর্চনা করছি; তারা আকাশ পৃষ্ঠে উঠেছে এবং একেবারেই দ্যাবা পৃথিবী ব্যাপ্ত করছে।
৪। সূর্যের এরূপ দেবতা, এরূপ মাহাত্ম্য যে মানুষদের কর্ম অসমাপ্ত থাকতেই তিনি তাঁর বিস্তীর্ণ রশ্মিজাল সম্বরণ করেন। যখন তিনি রথ হরিৎ নামক অশ্বগণ বিষুক্ত করেন, তখন রাত সর্বলোকে অংকারুপে আবরণ বিস্তার করেন।
৫। মিত্র ও বরুণের দর্শনাথ আকাশের মধ্য ভাগে সূর্য স্বীয় জ্যেতিময় রূপ প্রকাশ করছেন; তাঁর হরিৎ নামক অশ্বগণ একদিকে তাঁর অনস্ত দীপ্তিমান বল ধারণ করে, অন্য দিকে কৃষ্ণবর্ণ (অন্ধকার) নিষ্পাদন করে।
৬। হে দেবগণ। অদ্য সূর্যের উদয়ে আমাদের পাপ হতে মুক্ত হক। মিত্র, বরুণ, অদিতি, সিন্ধু পৃথিবী ও দ্যু আমাদের রক্ষা করুন।
টীকাঃ
১। ৩০ সুক্তের ২২ ঋকের টীকায় গ্রীকদিগের শাস্ত্রেরও Apollo Daphne সম্বন্ধে গল্প দেখুন।
২। ‘যুগশব্দঃ কালবাচী। তেন চন্ত্র কর্ত্তব্যানি কর্মাণি লক্ষ্যন্তে’। সায়ণ।
(C) https://www.ebanglalibrary.com
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন