যজ্ঞ হচ্ছে মহৎ উদ্দেশ্যে সাধিত শুভ কর্ম। যেখানে বলি দেয়া নিজের আত্মম্ভরিতাকে, স্বার্থপরতাকে এবং পাশবিকতাকে। যজ্ঞের দর্শন আমাদের শেখায় সমাজে সাম্য প্রতিষ্ঠাকে এবং তুলে ধরে এমন জীবন ব্যবস্থাকে যেখানে মানবীয় গুণাবলীকে রক্ষা ও এর আদর্শ সমাজে প্রচারিত করা হয়। এরকম কিছু যজ্ঞ হচ্ছে সেবা যজ্ঞ- যেখানে সমাজ সেবাই সকলের ব্রত, জ্ঞান যজ্ঞ- মানবসমাজে জ্ঞানের আলোকবর্তিকা প্রজ্বলনের ব্রত, প্রাণ যজ্ঞ- যেখানে জীবের প্রাণ রক্ষাই আমাদের ব্রত। সত্যি করে বলতে আমরা জেনে না জেনে অনেক যজ্ঞই করছি মনের অগোচরে।
আমরা সাধারণত যজ্ঞ বলতে বুঝি একটি কুণ্ডে আগুন জ্বালিয়ে মন্ত্র পাঠ করে বিভিন্ন প্রকার দ্রব্য আহুতি দেয়া। বৈদিক ধর্মে এমনি নিত্য আচরিত একটি যজ্ঞ হচ্ছে হবন বা অগ্নিহোত্র।
অনেক বস্তুবাদীই প্রশ্ন করতে পারেন অগ্নিহোত্র কি অর্থহীন আড়ম্বর নয়? মোটেও নয়, বরং এর মাঝে লুকিয়ে আছে বিজ্ঞানের অন্যতম বিস্ময়।
আমাদের এ জগতে শক্তির মধ্যে তাপ শক্তি ও শব্দ শক্তি অন্যতম। যজ্ঞে এই দুই শক্তিরই সম্মেলনে আমরা অর্জন করতে পারি শারীরিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক উপকারিতা। যজ্ঞে বিভিন্ন পদার্থের দহন ঐ বস্তুর অন্তর্নিহিত সঞ্চিত শক্তির উন্মোচন ও পরিবেশে ছড়িয়ে দেয়ার একটি উৎকৃষ্ট প্রক্রিয়া। অন্যদিকে যজ্ঞে উচ্চারিত মন্ত্রের কম্পাঙ্ক শক্তি বহন করে এক আধ্যাত্মিক প্রেরণা।
যজ্ঞে সমিধ হিসেবে যেসব দ্রব্য ব্যবহার করা হয় তার মধ্যে থাকে নানা সুগন্ধি পদার্থ, ওষধি বৃক্ষের কাঠ, পুষ্টিকর খাদ্য ইত্যাদি। আপনাদের মনে হতে পারে এসব দ্রব্য পোড়ানোর ফলে বিপুল পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড, বিষাক্ত কার্বন মনো অক্সাইড, সালফার ডাই অক্সাইড প্রভৃতি উৎপন্ন হতে পারে। কিন্তু আপনি যদি বৈদিক কল্প ও ব্রাহ্মণ গ্রন্থের বিধি মোতাবেক সঠিক অনুপাতে জ্বালানী, দাহ্য পদার্থ ব্যবহার করেন এবং যজ্ঞকুণ্ড যদি শাস্ত্রীয় রীতি অনুসারে তৈরী করেন তবে কোনো বিষাক্ত গ্যাসই উৎপন্ন হবে না। যে কার্বন ডাই অক্সাইড যজ্ঞকুণ্ডে উৎপন্ন হবে তা যজ্ঞকুণ্ডের প্রবল উত্তাপে বাষ্পের সঙ্গে ক্রিয়া করে ফরমালডিহাইড উৎপন্ন করবে যা যজ্ঞকুণ্ডের চারপাশের পরিবেশ সুগন্ধে পূর্ণ করে তুলবে। আর এই গ্যাস কেবল সুগন্ধিই নয়, বায়ুতে থাকা বিভিন্ন কীটাণু দমনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অর্থাৎ যজ্ঞের মাধ্যমে আপনি পাবেন দুর্গন্ধ মুক্ত স্বাস্থ্যকর এক পরিবেশ। আর যে অল্প পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড থেকে যাবে সেটি সালোকসংশ্লেষণ ক্রিয়ার মাধ্যমে প্রকৃতিতে বিলীন হয়ে যাবে। যা একই সাথে বৃক্ষরাজির খাদ্য ও পরিবেশে মুক্ত অক্সিজেনের যোগান দেবে। তাই যজ্ঞ কেবল যজ্ঞকারীর নয়, বরং সমগ্র পরিবেশ ও প্রকৃতির জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ।
অনেকে বলতে পারেন যজ্ঞে ব্যবহৃত কাঠের জন্য তো প্রচুর বৃক্ষ নিধন করতে হবে। আপনাদের জন্য বলছি বৈদিক ঋষিগণ কেবল মৃত বৃক্ষের কর্তনেরই নির্দেশ দিয়েছেন। আর সেই সাথে মনু আদি মহর্ষিরা ব্যাপকভাবে বৃক্ষরোপনেরও নির্দেশ দিয়েছেন। তাই যজ্ঞের জন্য কোনো জীবিত বৃক্ষ কর্তনের প্রয়োজন নেই, বরং মৃত বা মৃতপ্রায় বৃক্ষের কাঠই যজ্ঞে সমিধারূপে ব্যবহৃত হবে।
বর্তমান পরিবেশ দূষণ ও রোগ মহামারীর যুগে যজ্ঞের আয়োজন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ড. হাফকিন বলেছেন, “ঘি এবং চিনি মিশ্রণ করে যজ্ঞে পোড়ালে যে ধোঁয়া উৎপন্ন হয় তা বিভিন্ন রোগজীবাণু ধ্বংস করে।” প্রফেসর টিলওয়ার্ড বলেন, “চিনি মিশ্রিত হবিষ্যের পরিবেশ শোধনের শক্তি রয়েছে। এটি যক্ষ্মা, মিলস, বসন্ত প্রভৃতি জীবাণুনাশক।”
গায়ত্রী পরিবার আয়োজিত গোরখপুরে অশ্বমেধ যজ্ঞ চলাকালীন সময়ে “উত্তর প্রদেশ দূষণ রক্ষা বোর্ড” এর ডিরেক্টর ড. মনোজ গর্গ একদল বিজ্ঞানী নিয়ে বেশকিছু পরীক্ষা চালান। এই পরীক্ষার ফল “অখণ্ড জ্যোতি” সাময়ীকির সেপ্টেম্বর ’৯৭ সংখ্যাতে প্রকাশ পায়। যা যজ্ঞের ব্যাপক উপযোগিতা ফুটিয়ে তুলে। বিজ্ঞানীরা দেখতে পান যজ্ঞ সম্পাদনের পূর্বে সে স্থানে বিষাক্ত সালফার ডাই অক্সাইড ও নাইট্রাস অক্সাইডের পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৩.৩৬ ও ১.১৬ ইউনিট এবং যজ্ঞ সম্পাদনের শেষে বিষাক্ত গ্যাস দুটির পরিমাণ কমে দাড়ায় যথাক্রমে ০.৮০ ও ১.০২ ইউনিট। বিজ্ঞানীর দল যজ্ঞকুণ্ডের কিছু দূরে অবস্থিত জলাশয়ের পানি পরীক্ষা করেও অভূতপূর্ব ফল লাভ করেন। তাঁরা দেখতে পান সংগৃহীত নমুনায় যজ্ঞের পূর্বে ব্যাকটেরিয়া ছিল ৪৫০০ এবং যজ্ঞের শেষে ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ কমে দাড়ায় ১২৫০। যজ্ঞাবশিষ্ট যে ছাই ছিল তাতে মিনারেল পদার্থের পরিমাণ পরীক্ষা করে উত্তর প্রদেশ কৃষির ডেপুটি ডিরেক্টর একে উত্তর মৃত্তিকা উর্বরকারক বলে মত দেন। ১৯৯৩-১৯৯৫ পর্যন্ত ২৭টি যজ্ঞভিত্তিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, যার প্রত্যেকটিই বর্তমানের পরিপ্রেক্ষিতে যজ্ঞের উপযোগিতা ব্যাপকহারে সমর্থন করে।
আপনারা অনেকেই ভূপাল ট্র্যাজেডির কথা শুনেছেন, যেখানে বিষাক্ত এমআইসি গ্যাস নির্গমনের ফলে শতশত মানুষ মারা যায় এবং সহস্র মানুষ দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়। এই গ্যাস ছড়িয়ে পড়েছিল মাইলের পর মাইল। ৪মে ১৯৮৫ এর দৈনিক “দ্যা হিন্দি” এর একটি প্রতিবেদন সকলকে বিস্ময়ে হতবাক করে দেয়। প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল “দূষণ প্রতিরোধে বৈদিক উপায়।” যেখানে বলা হয় ওই গ্যাস প্ল্যান্টের খুব নিকটবর্তী সোহান লাল খুশওয়া এর পরিবারের কোনো সদস্যই ওই ঘটনার ফলে মৃত্যু তো দূরে থাক অসুস্থই হয় নি। কারণ কি? অগ্নিহোত্র। হ্যাঁ একমাত্র এই পরিবারটিই সেখানে নিয়মিত বৈদিক অগ্নিহোত্র যজ্ঞ করত। যার ফল স্বরূপ এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবল থেকে রক্ষা পায় পরিবারটি। আর এই ঘটনা পরিবেশ দূষণ রোধে অগ্নিহোত্র যজ্ঞের কার্যকারিতা পুনরায় প্রতিপাদন করল।
তাই তো বৈদিক ধর্ম ঘোষণা দিয়েছে “য়জ্ঞো বৈ শ্রেষ্ঠতম কর্মম্”। ভগবানও বলেছেন যজ্ঞের মাধ্যমে মনীষিরা কেবল নিজের চিত্ত শুদ্ধিই ঘটায় না, সেই সাথে ভূত অর্থাৎ পরিবেশের শুদ্ধতাও বজায় রাখে। আর কলির এ দুঃসময়ে আমরা যজ্ঞবিমুখী হয়ে কেবল অন্ধকারেই ঘুরে বেড়াচ্ছি। তাই আমাদের উচিত পুনরায় অগ্নিহোত্র আদি যজ্ঞ আয়োজনের মাধ্যমে সনাতনের স্বর্ণযুগে ফিরে যাওয়া। যেদিন ঘরে ঘরে সুবাসিত অগ্নিহোত্রের গন্ধ ছেয়ে যাবে এবং মুখে মুখে গায়ত্রীর পবিত্র ধ্বনি উচ্চারিত হবে সেদিনই কলি হবে পরাহত এবং ফিরে আসবে সনাতনের স্বর্ণযুগ।
ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ( হরে কৃষ্ণ)
আমরা সাধারণত যজ্ঞ বলতে বুঝি একটি কুণ্ডে আগুন জ্বালিয়ে মন্ত্র পাঠ করে বিভিন্ন প্রকার দ্রব্য আহুতি দেয়া। বৈদিক ধর্মে এমনি নিত্য আচরিত একটি যজ্ঞ হচ্ছে হবন বা অগ্নিহোত্র।
অনেক বস্তুবাদীই প্রশ্ন করতে পারেন অগ্নিহোত্র কি অর্থহীন আড়ম্বর নয়? মোটেও নয়, বরং এর মাঝে লুকিয়ে আছে বিজ্ঞানের অন্যতম বিস্ময়।
আমাদের এ জগতে শক্তির মধ্যে তাপ শক্তি ও শব্দ শক্তি অন্যতম। যজ্ঞে এই দুই শক্তিরই সম্মেলনে আমরা অর্জন করতে পারি শারীরিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক উপকারিতা। যজ্ঞে বিভিন্ন পদার্থের দহন ঐ বস্তুর অন্তর্নিহিত সঞ্চিত শক্তির উন্মোচন ও পরিবেশে ছড়িয়ে দেয়ার একটি উৎকৃষ্ট প্রক্রিয়া। অন্যদিকে যজ্ঞে উচ্চারিত মন্ত্রের কম্পাঙ্ক শক্তি বহন করে এক আধ্যাত্মিক প্রেরণা।
যজ্ঞে সমিধ হিসেবে যেসব দ্রব্য ব্যবহার করা হয় তার মধ্যে থাকে নানা সুগন্ধি পদার্থ, ওষধি বৃক্ষের কাঠ, পুষ্টিকর খাদ্য ইত্যাদি। আপনাদের মনে হতে পারে এসব দ্রব্য পোড়ানোর ফলে বিপুল পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড, বিষাক্ত কার্বন মনো অক্সাইড, সালফার ডাই অক্সাইড প্রভৃতি উৎপন্ন হতে পারে। কিন্তু আপনি যদি বৈদিক কল্প ও ব্রাহ্মণ গ্রন্থের বিধি মোতাবেক সঠিক অনুপাতে জ্বালানী, দাহ্য পদার্থ ব্যবহার করেন এবং যজ্ঞকুণ্ড যদি শাস্ত্রীয় রীতি অনুসারে তৈরী করেন তবে কোনো বিষাক্ত গ্যাসই উৎপন্ন হবে না। যে কার্বন ডাই অক্সাইড যজ্ঞকুণ্ডে উৎপন্ন হবে তা যজ্ঞকুণ্ডের প্রবল উত্তাপে বাষ্পের সঙ্গে ক্রিয়া করে ফরমালডিহাইড উৎপন্ন করবে যা যজ্ঞকুণ্ডের চারপাশের পরিবেশ সুগন্ধে পূর্ণ করে তুলবে। আর এই গ্যাস কেবল সুগন্ধিই নয়, বায়ুতে থাকা বিভিন্ন কীটাণু দমনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অর্থাৎ যজ্ঞের মাধ্যমে আপনি পাবেন দুর্গন্ধ মুক্ত স্বাস্থ্যকর এক পরিবেশ। আর যে অল্প পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড থেকে যাবে সেটি সালোকসংশ্লেষণ ক্রিয়ার মাধ্যমে প্রকৃতিতে বিলীন হয়ে যাবে। যা একই সাথে বৃক্ষরাজির খাদ্য ও পরিবেশে মুক্ত অক্সিজেনের যোগান দেবে। তাই যজ্ঞ কেবল যজ্ঞকারীর নয়, বরং সমগ্র পরিবেশ ও প্রকৃতির জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ।
অনেকে বলতে পারেন যজ্ঞে ব্যবহৃত কাঠের জন্য তো প্রচুর বৃক্ষ নিধন করতে হবে। আপনাদের জন্য বলছি বৈদিক ঋষিগণ কেবল মৃত বৃক্ষের কর্তনেরই নির্দেশ দিয়েছেন। আর সেই সাথে মনু আদি মহর্ষিরা ব্যাপকভাবে বৃক্ষরোপনেরও নির্দেশ দিয়েছেন। তাই যজ্ঞের জন্য কোনো জীবিত বৃক্ষ কর্তনের প্রয়োজন নেই, বরং মৃত বা মৃতপ্রায় বৃক্ষের কাঠই যজ্ঞে সমিধারূপে ব্যবহৃত হবে।
বর্তমান পরিবেশ দূষণ ও রোগ মহামারীর যুগে যজ্ঞের আয়োজন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ড. হাফকিন বলেছেন, “ঘি এবং চিনি মিশ্রণ করে যজ্ঞে পোড়ালে যে ধোঁয়া উৎপন্ন হয় তা বিভিন্ন রোগজীবাণু ধ্বংস করে।” প্রফেসর টিলওয়ার্ড বলেন, “চিনি মিশ্রিত হবিষ্যের পরিবেশ শোধনের শক্তি রয়েছে। এটি যক্ষ্মা, মিলস, বসন্ত প্রভৃতি জীবাণুনাশক।”
গায়ত্রী পরিবার আয়োজিত গোরখপুরে অশ্বমেধ যজ্ঞ চলাকালীন সময়ে “উত্তর প্রদেশ দূষণ রক্ষা বোর্ড” এর ডিরেক্টর ড. মনোজ গর্গ একদল বিজ্ঞানী নিয়ে বেশকিছু পরীক্ষা চালান। এই পরীক্ষার ফল “অখণ্ড জ্যোতি” সাময়ীকির সেপ্টেম্বর ’৯৭ সংখ্যাতে প্রকাশ পায়। যা যজ্ঞের ব্যাপক উপযোগিতা ফুটিয়ে তুলে। বিজ্ঞানীরা দেখতে পান যজ্ঞ সম্পাদনের পূর্বে সে স্থানে বিষাক্ত সালফার ডাই অক্সাইড ও নাইট্রাস অক্সাইডের পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৩.৩৬ ও ১.১৬ ইউনিট এবং যজ্ঞ সম্পাদনের শেষে বিষাক্ত গ্যাস দুটির পরিমাণ কমে দাড়ায় যথাক্রমে ০.৮০ ও ১.০২ ইউনিট। বিজ্ঞানীর দল যজ্ঞকুণ্ডের কিছু দূরে অবস্থিত জলাশয়ের পানি পরীক্ষা করেও অভূতপূর্ব ফল লাভ করেন। তাঁরা দেখতে পান সংগৃহীত নমুনায় যজ্ঞের পূর্বে ব্যাকটেরিয়া ছিল ৪৫০০ এবং যজ্ঞের শেষে ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ কমে দাড়ায় ১২৫০। যজ্ঞাবশিষ্ট যে ছাই ছিল তাতে মিনারেল পদার্থের পরিমাণ পরীক্ষা করে উত্তর প্রদেশ কৃষির ডেপুটি ডিরেক্টর একে উত্তর মৃত্তিকা উর্বরকারক বলে মত দেন। ১৯৯৩-১৯৯৫ পর্যন্ত ২৭টি যজ্ঞভিত্তিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, যার প্রত্যেকটিই বর্তমানের পরিপ্রেক্ষিতে যজ্ঞের উপযোগিতা ব্যাপকহারে সমর্থন করে।
আপনারা অনেকেই ভূপাল ট্র্যাজেডির কথা শুনেছেন, যেখানে বিষাক্ত এমআইসি গ্যাস নির্গমনের ফলে শতশত মানুষ মারা যায় এবং সহস্র মানুষ দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়। এই গ্যাস ছড়িয়ে পড়েছিল মাইলের পর মাইল। ৪মে ১৯৮৫ এর দৈনিক “দ্যা হিন্দি” এর একটি প্রতিবেদন সকলকে বিস্ময়ে হতবাক করে দেয়। প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল “দূষণ প্রতিরোধে বৈদিক উপায়।” যেখানে বলা হয় ওই গ্যাস প্ল্যান্টের খুব নিকটবর্তী সোহান লাল খুশওয়া এর পরিবারের কোনো সদস্যই ওই ঘটনার ফলে মৃত্যু তো দূরে থাক অসুস্থই হয় নি। কারণ কি? অগ্নিহোত্র। হ্যাঁ একমাত্র এই পরিবারটিই সেখানে নিয়মিত বৈদিক অগ্নিহোত্র যজ্ঞ করত। যার ফল স্বরূপ এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবল থেকে রক্ষা পায় পরিবারটি। আর এই ঘটনা পরিবেশ দূষণ রোধে অগ্নিহোত্র যজ্ঞের কার্যকারিতা পুনরায় প্রতিপাদন করল।
তাই তো বৈদিক ধর্ম ঘোষণা দিয়েছে “য়জ্ঞো বৈ শ্রেষ্ঠতম কর্মম্”। ভগবানও বলেছেন যজ্ঞের মাধ্যমে মনীষিরা কেবল নিজের চিত্ত শুদ্ধিই ঘটায় না, সেই সাথে ভূত অর্থাৎ পরিবেশের শুদ্ধতাও বজায় রাখে। আর কলির এ দুঃসময়ে আমরা যজ্ঞবিমুখী হয়ে কেবল অন্ধকারেই ঘুরে বেড়াচ্ছি। তাই আমাদের উচিত পুনরায় অগ্নিহোত্র আদি যজ্ঞ আয়োজনের মাধ্যমে সনাতনের স্বর্ণযুগে ফিরে যাওয়া। যেদিন ঘরে ঘরে সুবাসিত অগ্নিহোত্রের গন্ধ ছেয়ে যাবে এবং মুখে মুখে গায়ত্রীর পবিত্র ধ্বনি উচ্চারিত হবে সেদিনই কলি হবে পরাহত এবং ফিরে আসবে সনাতনের স্বর্ণযুগ।
ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ( হরে কৃষ্ণ)
(C) ঈশ্বর বাণী কৃষ্ণ কথা
1 Comments:
ভাল লাগলো
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন