পুরাকালে সুরথ নামক একজন রাজা শত্রুর নিকট পরাজিত হয়ে মনের দুঃখে বনে গমন করেন। ক্রমে তিনি মেধা মুনির আশ্রমে অবস্থান করেন। ধনলোভে স্ত্রী ও পুত্রগণ কর্তৃক বিতাড়িত হয়ে ধনবান সমাধি নামক এক বৈশ্য তথায় উপস্থিত হন। রাজ্য হারা রাজা সুরথ ও পরিবার পরিত্যক্ত বৈশ্য সমাধি মিলিত হলেন। তাঁরা একে অপরের সমস্যা অবগত হলেন। যে ধনলোভী আত্মীয় ও স্ত্রীপুত্রগণ তাঁদের পরিত্যাগ করেছে, তাদের জন্যই উভয়ের চিত্ত স্নেহাসক্ত হচ্ছে, তাদের কুশলাকুশল নিয়ে তাঁরা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। এই মায়ারহস্য সম্বন্ধে অবগত হতে তাঁরা উভয়ে মেধা মুনির সমীপে উপস্থিত হন, মুনিকে প্রশ্ন করেন। মেধা মুনি মহামায়ার স্বরূপ বর্ণনা করেন এবং বহু অবতারের মধ্যে মায়ের তিনটি অবতারের বিবরণ দেন। মধুকৈটভ বধ, মহিষাসুর বধ ও শুম্ভ-নিশুম্ভ বধ—মায়ের তিনটি অবতারের তিনটি কাজ। দেবী মাহাত্ম্য শ্রবণ করে মেধা মুনির উপদেশে সুরথ রাজা ও সমাধি বৈশ্য দেবীর আরাধনার জন্য গমন করেন। নদীতীরে অবস্থান করে তাঁরা সর্বশ্রেষ্ঠ দেবীসূক্তপাঠ ও তার ভাবার্থ অনুধ্যান করতে করতে তপস্যারত হন। তাঁরা উভয়ে নদীতটে দুর্গাদেবীর মৃন্ময়ী প্রতীমা নির্মাণ করে সংযতচিত্তে পূজা আরাধনা করেন। তিন বছর এরূপে দেবীর আরাধনার ফলে জগদম্বা চণ্ডিকা সন্তুষ্টা হলেন। দেবী প্রত্যক্ষভাবে আবির্ভূতা হয়ে বললেন যে, সুরথ রাজা ও সমাধি বৈশ্য দেবীর নিকট যা যা প্রার্থনা করছেন তা তারা পাবেন। দেবী তা তাদের প্রদান করবেন। স্ব স্ব প্রার্থনা অনুযায়ী, সুরথ রাজা তার হারানো রাজ্য ফিরে পাবেন ও মৃত্যুর পর সাবর্ণি নামে অষ্টম মনু হয়ে জন্মগ্রহণ করবেন—এই বর এবং সমাধি বৈশ্যকে মোক্ষপ্রাপ্তির জন্য তত্ত্বজ্ঞানরূপ বর প্রদান করে দেবী অন্তর্হিতা হন।
Courtesy by: Prithwish Ghosh
Courtesy by: Prithwish Ghosh
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন