০৫ জুলাই ২০১৫

পিরামিডের অজানা রহস্য ! (পর্ব ০১)


প্রাচীন সপ্ত আশ্চর্যের একটি মিশরের পিরামিড । সম্ভবত পৃথিবীর সবচেয়ে রহস্যময় ও আশ্চর্যময় স্থাপত্যের নাম পিরামিড । রূপকথার পুস্পিতবাক্যে নানা রঙ্গে সাজিয়ে ও মিশিয়ে কবি, লেখকরা তাকে নিয়ে রচনা করেছেন বহু কাব্য, ইতিহাস । অন্যদিকে প্রচুর শক্তি সম্পন্ন চশমা, লেন্স চোখে এটে তাবৎ বিশ্বের বিজ্ঞানীরা খুঁজে দেখতে চেষ্টা করছেন পিরামিডের অর্ন্তদিক । আর নিরপেক্ষ দর্শকগন মন্ত্রমুগ্ধের মত যুগযুগ ধরে পিরামিডের সৌন্দর্য উপভোগ করে চলছেন । কিন্তু পিরামিড কিংবা ইজিপ্টের রহস্য জালের শেষ কোথায় ?









বহু প্রাচীন এবং আধুনিক বিজ্ঞানী এবং ঐতিহাসিকদের মতে প্রাচীন বৈদিক সভ্যতা এবং মিশরের সভ্যতার মধ্যে শতভাগ মিল পাওয়া যায় । পিটার ভন বোহরেন, আল মুনসুরী, স্যার উইলিয়াম জোনস, পল উইলিয়াম রবার্ট, এডলফ ইরামসহ বহু ঐতিহাসিক এই কথা এক বাক্যে স্বীকার করেছেন । প্রথমত মিশর বা ‘ইজিপ্ট’ শব্দটি এসেছে সংস্কৃত ‘অজপ’ বা ‘অজপতি’ থেকে । ভগবান শ্রীরামচন্দ্রের পিতামহ । আবার শ্রীরামের নামে যে ইজিপ্টের নামকরণ করা হয়েছে তার সত্যতা মিলেছে স্বয়ং ইজিপ্টের শাস্ত্রগ্রন্থে । মিশরবাসীরা দেবতা বা ভগবানকে ‘ফারাও’ নামে সম্বোধন করে । আশ্চর্যজনকভাবে মিশরের এক ফারাও এর নাম ‘রামইসি’ । ড. এস কে ভি তার গ্রন্থে “হিন্দু মাইথোলজী এন্ড প্রিহিস্টোরী” তে মিশরের প্রাচীন ইতিহাস পর্যালোচনা করেছেন । তিনি লিখেছেন একসময় মিশরে দদাতি মহারাজ এবং তার দুই স্ত্রী দেবযানী ও শর্মিষ্ঠা বাস করতেন । একসময় এক বিশেষ কারণে দদাতি মহারাজ যুবক অবস্থায় বৃদ্ধ দশা প্রাপ্ত হয়েছিলেন । তখন তিনি তার পুত্রদের অনুরোধ করেন তাকে তাদের যুবক দেহ প্রদান করে বৃদ্ধ দেহ বিনিময় করার জন্য । অন্যান্য পুত্ররা পিতাকে সম্মতি জ্ঞাপন না করলেও কনিষ্ঠ পুত্র পুরু সম্মতি জ্ঞাপন করে এবং সিংহাসন আরোহন করে । পরবর্তীতে এই পুরুর বংশধররা একসময় ‘পরুবাস’ এবং পরবর্তীতে ‘ফারাওস’ নামে মিশরে পরিচিতি লাভ করে ।

“Proof of Vedic Cultures Global Existence” নামক গ্রন্থে স্টিফেন নেপ লিখেছেন যে, পাশ্চত্যবাসীরা পূর্বে রামকে ‘রাহাম’ নামে উচ্চারণ করত । কালের প্রভাবে পরবর্তীতে রা উচ্চারন বিস্মৃত হয় এবং আফ্রিকার স্কুল পাঠ্যবইয়ে লিখিত আছে যে, আফ্রিকানদের ‘কুশইটেস’ বলা হয় (কুশইটেস এসেছে রামপুত্র কুশ থেকে) এবং তাদের পিতার নাম ‘হাম’ । অন্যদিকে রামচন্দ্রের অন্য পুত্র ‘লব’ সংস্কৃত ভাষায় লব্য নামে পরিচিতি যার থেকে ‘লিবিয়া’ নামক দেশের নাম সমাদৃত হয়েছে । অপরদিকে ব্রিটিশ আর্মি অফিসার জন এইচ স্পিকি ১৮৪৪ সালে মিশরের বিখ্যাত নাইল বা নীল নদের উৎস আবিষ্কার করেন । সংস্কৃত শব্দ নীল (Blue) থেকে মূলত নীল নদ এসেছে । এছাড়া মিশরের বহু স্থান এবং বস্তুর নামের উৎস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, এগুলোর উৎস মূলত বৈদিকশাস্ত্র বা সংস্কৃত ভাষা ।
এছাড়া সনাতন বৈদিক ধর্ম থেকেই যে প্রাচীন ইজিপশিয়াম ধর্মের উদ্ভব তার বহু নিদর্শন সেখানে রয়েছে । স্কন্দ পুরাণ মতে, মিশর বা আফ্রিকা শঙ্খ দ্বীপ হিসেবে পরিচিত । এছাড়া সৃষ্টিলীলা পর্যবেক্ষণ করলেও উভয় ক্ষেত্রে মিল পাওয়া যায় । প্রাচীন ইজিপ্ট ধর্ম মতে হ্রি হিরি হচ্ছেন সমস্ত দেবতা এবং বিগ্রহের উৎস যেখানে বৈদিক মতে, শ্রীহরি বা শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন সমস্ত দেবতাদেরও ঈশ্বর বা পরমেশ্বর । এটি সত্যিই আশ্চর্যকর মিল । এছাড়া মিশরীয় শাস্ত্রে আরো উল্লেখ আছে যে, সৃষ্টির পূর্বে নাহরাইন (NHRYN) (বৈদিক শাস্ত্র মতে নারায়ণ) জলের উপর শায়িত ছিলেন । এছাড়া প্রাচীন ইজিপ্টের জনগন ছিলেন কঠোর নিরামিশাষী । তাদের ঔষধবিদ্য, মহাকাশবিদ্যা ও ভাস্তু বিদ্যায় পারদর্শী ছিলেন ।
ঐতিহাসিক মতে, বৈদিক যুগে সমগ্র পৃথিবী বৈদিক শাস্ত্র মতে পরিচালিত হত । তৎকালীন সময়ে সমগ্র পৃথিবীর মানুষ ভারতবর্ষে এসে তপস্যা, সংযম এবং শাস্ত্রগ্রন্থাদি অধ্যয়ন করতেন । এভাবেই বৈদিক ভাস্তুশাস্ত্র সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে । বিখ্যাত ভাস্তুবিদ ড. ভি গণপতি স্থপতি পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, ভারতের দক্ষিণ অংশ, ইজিপ্টের পিরামিড এবং মেক্সিকোর মায়ান সভ্যতার মধ্যে স্থাপত্যগত মিল পাওয়া যায় ।

ভাস্তু মতে যাকে ‘শিখর’ বলা হয় ইজিপ্টবাসীরা তাকে ‘পিরামিড’ বলে । পিরামিডের বিস্ময়কর স্থাপত্য মূলত ভাস্তুশাস্ত্রের একটি ক্ষুদ্র শাখা মাত্র । এছাড়া পিরামিডের অভ্যন্তরেও বৈদিক সভ্যতার অনেক নিদর্শন পাওয়া গেছে । যেমনঃ- মিশরীয়রা পূর্ণজন্ম বিশ্বাস করে । তারা বিশ্বাস করে যে, মৃত্যুর পর আত্মা পরবর্তী দেহ লাভ করে এবং পরবর্তী দেহ লাভ না করা পর্যন্ত সে আত্মার সুরক্ষাকল্পে তারা ‘মমি’র সন্নিকটে খাদ্যদ্রব্য রেখে দেয় । এছাড়া মিশরে ৩০০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দেরও প্রাচীন পিরামিডে খনন কার্য সমাপনের সময় ভগবদগীতা শ্লোক সমন্বিত প্যাপিরাস পাতা আবিষ্কৃত হয় । শ্লোকটি ছিল “বাসাংসি জীর্ণানি যথা…..” অর্থাৎ কেউ যখন জীর্ণ বস্ত্র ত্যাগ করে নতুন বস্ত্র পরিধান করে তেমনি আত্মা জীর্ণ দেহ পরিত্যাগ করে । এছাড়া আরো আশ্চর্যকর ব্যাপার হচ্ছে যে, ভারতীয় ‘মসলিন’ কাপড় দ্বারা মৃত ফারাওদের দেহকে মোড়ানো হয় । এছাড়া প্রাচীন ভারতবর্ষের বৈদিক শাস্ত্রবিদগণও পিরামিড তৈরি করতে জানত । ঠিক যেমন সম্প্রতি মহেঞ্জোদারোতে বৈঞ্জানিক খননকার্য সমাপনের সময় মিশরের টেরাকোটা মমির মত অবিকল মমি আবিষ্কৃত হয় ।

পরবর্তী পোষ্টে পিরামিড সম্পর্কিত আরো চমকপ্রদ তথ্য উপস্থাপন করা হবে
http://egy-king.blogspot.com/…/egypt-and-vedic-civilization…
http://www.indiadivine.org/…/42473-vedic-founders-egypt-pic…

লিখেছেনঃ সংকীর্তন মাধব

Share:

Total Pageviews

বিভাগ সমুহ

অন্যান্য (91) অবতারবাদ (7) অর্জুন (4) আদ্যশক্তি (68) আর্য (1) ইতিহাস (30) উপনিষদ (5) ঋগ্বেদ সংহিতা (10) একাদশী (10) একেশ্বরবাদ (1) কল্কি অবতার (3) কৃষ্ণভক্তগণ (11) ক্ষয়িষ্ণু হিন্দু (21) ক্ষুদিরাম (1) গায়ত্রী মন্ত্র (2) গীতার বানী (14) গুরু তত্ত্ব (6) গোমাতা (1) গোহত্যা (1) চাণক্য নীতি (3) জগন্নাথ (23) জয় শ্রী রাম (7) জানা-অজানা (7) জীবন দর্শন (68) জীবনাচরন (56) জ্ঞ (1) জ্যোতিষ শ্রাস্ত্র (4) তন্ত্রসাধনা (2) তীর্থস্থান (18) দেব দেবী (60) নারী (8) নিজেকে জানার জন্য সনাতন ধর্ম চর্চাক্ষেত্র (9) নীতিশিক্ষা (14) পরমেশ্বর ভগবান (25) পূজা পার্বন (43) পৌরানিক কাহিনী (8) প্রশ্নোত্তর (39) প্রাচীন শহর (19) বর্ন ভেদ (14) বাবা লোকনাথ (1) বিজ্ঞান ও সনাতন ধর্ম (39) বিভিন্ন দেশে সনাতন ধর্ম (11) বেদ (35) বেদের বানী (14) বৈদিক দর্শন (3) ভক্ত (4) ভক্তিবাদ (43) ভাগবত (14) ভোলানাথ (6) মনুসংহিতা (1) মন্দির (38) মহাদেব (7) মহাভারত (39) মূর্তি পুজা (5) যোগসাধনা (3) যোগাসন (3) যৌক্তিক ব্যাখ্যা (26) রহস্য ও সনাতন (1) রাধা রানি (8) রামকৃষ্ণ দেবের বানী (7) রামায়ন (14) রামায়ন কথা (211) লাভ জিহাদ (2) শঙ্করাচার্য (3) শিব (36) শিব লিঙ্গ (15) শ্রীকৃষ্ণ (67) শ্রীকৃষ্ণ চরিত (42) শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু (9) শ্রীমদ্ভগবদগীতা (40) শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা (4) শ্রীমদ্ভাগব‌ত (1) সংস্কৃত ভাষা (4) সনাতন ধর্ম (13) সনাতন ধর্মের হাজারো প্রশ্নের উত্তর (3) সফটওয়্যার (1) সাধু - মনীষীবৃন্দ (2) সামবেদ সংহিতা (9) সাম্প্রতিক খবর (21) সৃষ্টি তত্ত্ব (15) স্বামী বিবেকানন্দ (37) স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (14) স্মরনীয় যারা (67) হরিরাম কীর্ত্তন (6) হিন্দু নির্যাতনের চিত্র (23) হিন্দু পৌরাণিক চরিত্র ও অন্যান্য অর্থের পরিচিতি (8) হিন্দুত্ববাদ. (83) shiv (4) shiv lingo (4)

আর্টিকেল সমুহ

অনুসরণকারী

" সনাতন সন্দেশ " ফেসবুক পেজ সম্পর্কে কিছু কথা

  • “সনাতন সন্দেশ-sanatan swandesh" এমন একটি পেজ যা সনাতন ধর্মের বিভিন্ন শাখা ও সনাতন সংস্কৃতিকে সঠিকভাবে সবার সামনে তুলে ধরার জন্য অসাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে গঠন করা হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য নিজের ধর্মকে সঠিক ভাবে জানা, পাশাপাশি অন্য ধর্মকেও সম্মান দেওয়া। আমাদের লক্ষ্য সনাতন ধর্মের বর্তমান প্রজন্মের মাঝে সনাতনের চেতনা ও নেতৃত্ত্ব ছড়িয়ে দেওয়া। আমরা কুসংষ্কারমুক্ত একটি বৈদিক সনাতন সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এ পথচলায় আপনাদের সকলের সহযোগিতা কাম্য । এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। সনাতন ধর্মের যে কেউ লাইক দিয়ে এর সদস্য হতে পারে।