ব্রাহ্মণ কৌশিক ধর্মজ্ঞান লাভের জন্য ধর্মব্যাধের দ্বারস্থ হলে ধর্মব্যাধ তাঁকে বলেন, হে ব্রাহ্মণ, যারা সতত ধর্মে নিরত তাঁদের কখনো কারো উপজীবী হতে হয় না। সর্বদা মিথ্যা পরিত্যাগ করবে। সর্বদা সুকর্মে যত্নশীল হবে। কাম, ক্রোধ ও দ্বেষের কারণে ধর্ম থেকে বিচ্যুত হবে না। প্রিয় বিষয়ে খুব আনন্দিত হবে না অথবা অপ্রিয় কিছু উপস্থিত হলে দুঃখ করবে না। যেসব কর্ম কল্যাণজনক কেবল সেগুলোতেই আত্মনিয়োজিত করবে। কেও অনিষ্ট করলে প্রতিহিংসাকারী হবে না, তথাপি সাধুবৎ আচরণ করবে। যে পাপ করতে ইচ্ছা করে সে আপনা থেকেই হত হয়।
পাপী মানুষ বিশাল কাপরের মত সর্বদা ফুলতে থাকে; সেসব মূর্খেরা যেসব চিন্তা করে তা নিতান্তই অসার। মূর্খলোক কেবল আত্মপ্রশংসা দ্বারাই জনসমাজে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে পারে না। দিনের বেলা যেমন সূর্য প্রকাশিত হয়, তেমনই অন্তরাত্মাই মূর্খের স্বরূপ প্রকাশ করে দেয়। তথাপি গুণী মানুষ লাবণ্য বিহীন হলেও কখনো কোন ব্যক্তির নিন্দা করে না ও আত্মপ্রসংশা করে না। কোন বিরুদ্ধকর্মের অনুষ্ঠান করেও মানুষ অনুতাপ দ্বারা পাপ থেকে মুক্তি পায়; “পুনরায় আর তা করব না” এইরূপ সংকল্প করে এবং সুকর্ম দ্বারা পাপ বিনষ্ট করা যায়।
হে ব্রাহ্মণ, ধর্মের ক্ষেত্রে এরূপ শ্রুতিই দৃষ্ট হয়। ধার্মিক যদি না যেনে কোনো পাপ করে তবে সে সুকর্ম দ্বারা সে পাপ নষ্ট করতে পারে।
হে ব্রাহ্মণ, মানুষের প্রমাদকৃত পাপ ধর্মই অপসারিত করে দেয়। লোভকেই পাপের মূল কারণ বলে জানবে, লোভের বশবর্তী হয়েই মানুষ পাপকার্যে লিপ্ত হয়। তাই সর্বদা সত্য বলবে, মঙ্গলজনক কর্ম করবে এবং লোভ থেকে নিবৃত্ত থাকবে।
দ্বিজব্যাধ সংবাদ, বনপর্ব, মহাভারত
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন