নারদ মুনি বললেন , কি প্রয়োজনে স্মরণ করলেন । যমরাজ নারদকে জিজ্ঞাসা করলেন , " আপনি তো কৃষ্ণনাম জপ করেন " । নারদ মুনি বললেন , " হ্যাঁ করি " । যমরাজ বললেন , একটা সমস্যা তৈরি হয়েছে । এই ব্যক্তি জীবনভর পাপ করেছে কিন্তু একবার " কৃষ্ণ " নাম নিয়েছে , এখন একে নিয়ে কি করব । আপনি বলুন নারদজী ।
নারদ মুনি বললেন , আমি হরিনাম করি , নারায়ণের নাম নিই ঠিক কিন্তু এই ব্যক্তি পাপও করেছে আবার " কৃষ্ণ " নামও নিয়েছে , কি করা যায় তার সমাধান আমার কাছে নেই । নারদ চিন্তা করে বললেন , মহাদেব তো ধ্যান করেন হয়ত তিনি জানবেন । তখন যমরাজ মহাদেবকে স্মরণ করলেন , মহাদেব হাতে ত্রিশূল নিয়ে হাজির ।
মহাদেব উপস্থিত হয়ে বললেন , কি জন্য স্মরণ করলেন যমরাজ । তখন যমরাজ পূর্ণরায় একই কথা বললেন । তখন মহাদেব বললেন , আমার কাজ হচ্ছে প্রলয় করা । যদি বলেন তবে প্রলয় করতে পারি কিন্তু একবার " কৃষ্ণ " নাম নিলে কি হয় তা জানি না । কি করবেন , কি করবেন তখন পিতামহ ব্রহ্মার কথা স্মরণে আসলো । মহাদেব বললেন , ব্রহ্মা হাতে বেদ নিয়ে পড়েন , হয়ত তিনি জানবেন । কিন্তু ব্রহ্মা তো এখানে আসবেন না , তখন যমরাজ , নারদ মুনি , মহাদেব , আর পাপী সকলে ব্রহ্মলোকে গেলেন ।
ব্রহ্মলোকে আসার পর , ব্রহ্মা সকলকে স্বাগত জানালেন , আর বললেন এই ব্যক্তিটি আবার কে ? তখন যমরাজ বললেন , এ পৃথিবীর অনেক বড় পাপী । ব্রহ্মা বললেন , তাহলে পাপীকে এখানে নিয়ে এসেছেন কেন ? যমরাজ বললেন , এ জীবনভর পাপ করছে কিন্তু একবার " কৃষ্ণ " নাম নিয়েছে । আপনি তো বেদ পড়েন তবে আপনি বলুন একে নিয়ে কি করব ।
তখন ব্রহ্মা বললেন , অনেকবার বেদ পড়েছি , কিন্তু এমন কথা পড়িনি যে পাপও করেছে আবার কৃষ্ণনামও নিয়েছে এর কি করা যায় । তখন সকলে চিন্তায় পড়লো । পরে ব্রহ্মা বললেন , এক কাজ করি যাঁর নাম তাঁর কাছে যাই , তিনি বলতে পারবেন তাঁর নামের মহিমা কি ? এখন যে পাপী সে বললো আমি যেতে পারব না , যা করার আপনারা এখানে করেন ।
ব্রহ্মা , মহাদেব , নারদ , যমরাজ বললেন , তোমাকে যেতেই হবে । সঠিক বিচার করার জন্য নারায়ণের কাছে যেতে হবে । পাপী বললেন যদি যেতে হবে তবে পালকি আনেন । আমি এক কদমও যাব না তা না হলে । তখন পালকি আনা হলো । এখন তুলবে কে । অবশেষে যমরাজ বললেন , আবার কাকে ডাকব আমরা চারজন তো আছি , আমি ( যমরাজ ) , মহাদেব , ব্রহ্মা , নারদজী । চলেন আমরা নিয়ে যাই । কি আর করা নিয়ে যেতে হলো পালকি করে " নারায়ণের " কাছে ।
পাপীকে পালকি করে " নারায়ণের " কাছে নিয়ে আসলেন চারজন মিলে । নারায়ণ অনন্ত নাগের ওপর বিরাজ করছিলেন । মাতা লক্ষ্মী নারায়ণের সেবা করছেন । ব্রহ্মা , শিব , নারদ , যমরাজকে দেখে তাঁদের স্বাগত জানালেন । , " নারায়ণ বললেন , আপনারা চারজন এইখানে আর ইনি কে , কোন মাহাত্মা নাকি " । তখন যমরাজ বললেন , না প্রভু ! এ কোন মাহাত্মা নয় , এ হলো অনেক বড় পাপী ।
শ্রীহরি বললেন , তাহলে একে এখানে নিয়ে আসলেন কেন ? তখন যমরাজ বললেন , হে প্রভু ! এই জীবনভর পাপ করছে কিন্তু একবার আপনার নাম নিয়েছে ! এখন তাকে নিয়ে কি করা যায় আপনিই বলুন । আপনার নামের মহিমা কি ? তখন শ্রীহরি বললেন , আচ্ছা এই কথা । আপনারা কি গীতা পড়েন নি । গীতায় কি লেখা আছে !
শ্রীহরি বললেন , " যে একবার আমার বৈকুন্ঠধামে আসে সে আর কখনোই ফিরে যান না । " আর আমার নাম একবার নেওয়ার __ " ফল " আপনারা তো দেখলেন । নামের সবচেয়ে বড় মহিমা হলো , আপনারা চারজন মিলে পালকি করে নিয়ে এসেছেন এর চেয়ে বড় মহিমা আর কি হতে । সেই এখানে থাকবে আপনারা নিজ নিজ কর্মে যান ।
ভক্তগণ ভগবানের নাম অনন্ত । তাঁর লীলাও অপার । নামী থেকে নাম বড় । তাই শ্রীকৃষ্ণের নাম ভাব নিয়ে নিতে হয় । আপনি শ্রদ্ধা , ভক্তি , প্রেম , ভাব নিয়ে ভগবানের নাম স্মরণ করুন দেখবেন আনন্দ লাভ করবেন । তখন আর দুঃখ বলে কিছু থাকবে না । জীবনে যাই কিছু করুন তা ভেবে চিন্তা করবেন । আর শ্রীকৃষ্ণের নাম যত পারেন জপ করবেন । তা নিজের জন্যও ভালো অপরের জন্য ভালো ।
জয় রাধে ।
শ্রীহরির জয় ।
ভূলক্রটি মার্জনা করবেন ।
1 Comments:
জয় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ,
প্রভুর আপনার অসীম দয়া যে মনুষ্যজন্ম দিয়েছেন মহাপবিত্র কৃষ্ণনাম উচ্চারণ করার জন্য,, আপনার সদা জয় হোক প্রভু💖💜
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন