শিবলিঙ্গ বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে।ইষ্ঠ লিঙ্গ,ভব লিঙ্গ ও প্রাণলিঙ্গ। শিব শব্দের অর্থ মঙ্গলময় এবং লিঙ্গ শব্দের অর্থ প্রতীক; এই কারণে শিবলিঙ্গ শব্দটির অর্থ সর্বমঙ্গলময় বিশ্ববিধাতার প্রতীক।লিঙ্গ তথা লিন্ ও অঙ্গা তথা আত্মা দ্বারা যুক্ত একটি শব্দ,যাতে আত্মা ও পরমাত্মার সার বিদ্যমান। শিব শব্দের অপর একটি অর্থ হল যাঁর মধ্যে প্রলয়ের পর বিশ্ব নিদ্রিত থাকে;এবং লিঙ্গ শব্দটির অর্থও একই – যেখানে বিশ্বধ্বংসের পর যেখানে সকল সৃষ্ট বস্তু বিলীন হয়ে যায়। যেহেতু হিন্দুধর্মের মতে, জগতের সৃষ্টি, রক্ষা ও ধ্বংস একই ঈশ্বরের দ্বারা সম্পন্ন হয়, সেই হেতু শিবলিঙ্গ স্বয়ং পরম ঈশ্বরের প্রতীক রূপে পরিগণিত হয়।ইষ্ঠ লিঙ্গ,যেখানে স্বয়ম মহেশ্বর বিদ্যমান,এই লিঙ্গে ভগবান ভক্তকে বরদান করেন।ভব লিঙ্গ,এতে ভগবান সদাশিব নিরাকার,এই লিঙ্গ অন্তর আত্মা দ্বারা দৃশ্যমান হয়,এটি স্থান বা সময়ের অধীন নয়।প্রাণ লিঙ্গ,ইহা পরমেশ্বরের সত্য,যা কঠোর তপস্যা দ্বারা প্রাপ্ত হয়,ভারতের কেদারনাথ শিবলিঙ্গ প্রাণ লিঙ্গ।
অথর্ববেদ সংহিতা গ্রন্থে যূপস্তম্ভ নামে একপ্রকার বলিদান স্তম্ভের স্তোত্রে প্রথম শিব-লিঙ্গ পূজার কথা জানা যায়। এই স্তোত্রের আদি ও অন্তহীন এক স্তম্ভ বা স্কম্ভ-এর বর্ণনা পাওয়া যায়। এই স্কম্ভ-টি চিরন্তন ব্রহ্মের স্থলে স্থাপিত। যজ্ঞের আগুন, ধোঁয়া, ছাই, সোম লতা, এবং যজ্ঞকাষ্ঠবাহী ষাঁড়ের ধারণাটির থেকে শিবের উজ্জ্বল দেহ, তাঁর জটাজাল, নীলকণ্ঠ ও বাহন বৃষের একটি ধারণা পাওয়া যায়। তাই মনে করা হয়, উক্ত যূপস্তম্ভই কালক্রমে শিবলিঙ্গের রূপ ধারণ করেছে।
১৯০০ সালে প্যারিস ধর্মীয় ইতিহাস কংগ্রেসে রামকৃষ্ণ পরমহংসের শিষ্য স্বামী বিবেকানন্দ বলেন, শিবলিঙ্গ ধারণাটি এসেছে বৈদিক যূপস্তম্ভ বা স্কম্ভ ধারণা থেকে। যূপস্তম্ভ বা স্কম্ভ হল বলিদানের হাঁড়িকাঠ। এটিকে অনন্ত ব্রহ্মের একটি প্রতীক মনে করা হয়।
শিবলিঙ্গ শিবের আদি-অন্তহীন সত্ত্বার প্রতীক এক আদি ও অন্তহীন স্তম্ভের রূপবিশেষ।
শিব এক অনাদি অনন্ত লিঙ্গস্তম্ভের রূপে আবির্ভূত, বিষ্ণু বরাহ বেশে স্তম্ভের নিম্নতল ও ব্রহ্মা ঊর্ধ্বতল সন্ধানে রত। এই অনাদি অনন্ত স্তম্ভটি শিবের অনাদি অনন্ত সত্ত্বার প্রতীক মনে করা হয়।
আবার কেউ কেউ শিব লিঙ্গের ব্যাখ্যা দেন এভাবে, ইহা গোল কিম্বা উপবৃত্তাকার যা কোন বৃত্তাকার ভূমি (base ) কে কেন্দ্র করে স্থাপিত । এই গোল ভূমি কে আদি পরশক্তি বা চূড়ান্ত শক্তি ।আর সেই গোল কিম্বা বৃত্তাকার অংশ দ্বারা অসীম কে বোঝান হয় যার কোন আদি অন্ত নেই অর্থাৎ যা সর্ববিরাজমান । সর্ববিরাজমান অর্থ হল যা সব জায়গায় অবস্থিত ।ইহা দ্বারা বোঝান হয় ঈশ্বর নির্দিষ্ট আকার নাও থাকতে পারে। ঈশ্বর আদি অন্ত জুড়ে সর্বত্র বিরাজমান।
লিঙ্গ শব্দের অর্থ হলো সূক্ষ দেহ। এই দেহটিতে যুক্ত আছে পাঁচটি জ্ঞানেন্দ্রিয়, পাঁচটি কর্মেন্দ্রিয় এবং পাঁচটি প্রান অপান বায়ু, মন ও বুদ্ধি-মোট ১৭টি অবয়ব যুক্ত দেহ। সকল সৃষ্টিরই সূক্ষ শরীর আছে। আমাদের যখন মৃত্যু হয় তখন জীবাত্মা সূক্ষ শরীরে বিচরণ করেন এবং পুনরায় দেহ ধারণ করেন। শিব, রুদ্র, মহাদেব এই তিনটি নামই আমাদের মধ্যে বেশি পরিচিত ও তমোগুণান্বিত আদি দেব। তিনি সংহারক ও মঙ্গল দায়ক। সংহার হতেই আবার সৃষ্টি- এ জন্যই তিনি শিব বা শংকর নামে পরিচিত। যে সুক্ষ শরীরকে আমরা লিঙ্গপূজা নামে পূজা করি তা সৃষ্টির সূক্ষ শরীর প্রকৃতিতে বীজ বপন রুপ সূক্ষ বিষয়টিকে দেখানো হয়েছে।
পঞ্চাক্ষরী মহামন্ত্র ওঁ নমঃ শিবায়।।
Written by:
Shuvo Veer Chowdhury
অথর্ববেদ সংহিতা গ্রন্থে যূপস্তম্ভ নামে একপ্রকার বলিদান স্তম্ভের স্তোত্রে প্রথম শিব-লিঙ্গ পূজার কথা জানা যায়। এই স্তোত্রের আদি ও অন্তহীন এক স্তম্ভ বা স্কম্ভ-এর বর্ণনা পাওয়া যায়। এই স্কম্ভ-টি চিরন্তন ব্রহ্মের স্থলে স্থাপিত। যজ্ঞের আগুন, ধোঁয়া, ছাই, সোম লতা, এবং যজ্ঞকাষ্ঠবাহী ষাঁড়ের ধারণাটির থেকে শিবের উজ্জ্বল দেহ, তাঁর জটাজাল, নীলকণ্ঠ ও বাহন বৃষের একটি ধারণা পাওয়া যায়। তাই মনে করা হয়, উক্ত যূপস্তম্ভই কালক্রমে শিবলিঙ্গের রূপ ধারণ করেছে।
১৯০০ সালে প্যারিস ধর্মীয় ইতিহাস কংগ্রেসে রামকৃষ্ণ পরমহংসের শিষ্য স্বামী বিবেকানন্দ বলেন, শিবলিঙ্গ ধারণাটি এসেছে বৈদিক যূপস্তম্ভ বা স্কম্ভ ধারণা থেকে। যূপস্তম্ভ বা স্কম্ভ হল বলিদানের হাঁড়িকাঠ। এটিকে অনন্ত ব্রহ্মের একটি প্রতীক মনে করা হয়।
শিবলিঙ্গ শিবের আদি-অন্তহীন সত্ত্বার প্রতীক এক আদি ও অন্তহীন স্তম্ভের রূপবিশেষ।
শিব এক অনাদি অনন্ত লিঙ্গস্তম্ভের রূপে আবির্ভূত, বিষ্ণু বরাহ বেশে স্তম্ভের নিম্নতল ও ব্রহ্মা ঊর্ধ্বতল সন্ধানে রত। এই অনাদি অনন্ত স্তম্ভটি শিবের অনাদি অনন্ত সত্ত্বার প্রতীক মনে করা হয়।
আবার কেউ কেউ শিব লিঙ্গের ব্যাখ্যা দেন এভাবে, ইহা গোল কিম্বা উপবৃত্তাকার যা কোন বৃত্তাকার ভূমি (base ) কে কেন্দ্র করে স্থাপিত । এই গোল ভূমি কে আদি পরশক্তি বা চূড়ান্ত শক্তি ।আর সেই গোল কিম্বা বৃত্তাকার অংশ দ্বারা অসীম কে বোঝান হয় যার কোন আদি অন্ত নেই অর্থাৎ যা সর্ববিরাজমান । সর্ববিরাজমান অর্থ হল যা সব জায়গায় অবস্থিত ।ইহা দ্বারা বোঝান হয় ঈশ্বর নির্দিষ্ট আকার নাও থাকতে পারে। ঈশ্বর আদি অন্ত জুড়ে সর্বত্র বিরাজমান।
লিঙ্গ শব্দের অর্থ হলো সূক্ষ দেহ। এই দেহটিতে যুক্ত আছে পাঁচটি জ্ঞানেন্দ্রিয়, পাঁচটি কর্মেন্দ্রিয় এবং পাঁচটি প্রান অপান বায়ু, মন ও বুদ্ধি-মোট ১৭টি অবয়ব যুক্ত দেহ। সকল সৃষ্টিরই সূক্ষ শরীর আছে। আমাদের যখন মৃত্যু হয় তখন জীবাত্মা সূক্ষ শরীরে বিচরণ করেন এবং পুনরায় দেহ ধারণ করেন। শিব, রুদ্র, মহাদেব এই তিনটি নামই আমাদের মধ্যে বেশি পরিচিত ও তমোগুণান্বিত আদি দেব। তিনি সংহারক ও মঙ্গল দায়ক। সংহার হতেই আবার সৃষ্টি- এ জন্যই তিনি শিব বা শংকর নামে পরিচিত। যে সুক্ষ শরীরকে আমরা লিঙ্গপূজা নামে পূজা করি তা সৃষ্টির সূক্ষ শরীর প্রকৃতিতে বীজ বপন রুপ সূক্ষ বিষয়টিকে দেখানো হয়েছে।
পঞ্চাক্ষরী মহামন্ত্র ওঁ নমঃ শিবায়।।
Written by:
Shuvo Veer Chowdhury
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন