হিন্দু ধর্মের প্রকৃত নাম সনাতন ধর্ম । অর্থাৎ যা চিরন্তন , শাশ্বত । স্বামী বিবেকানন্দ একে সকল ধর্মের প্রসূতি স্বরূপ বলে নির্দেশ করেছেন । কারণ এই বিশ্বে প্রচলিত ধর্ম মত গুলির প্রায় সব গুলির মূল ভাব হিন্দু ধর্মে দেখা যায় । সভ্য মানব জাতির বিভিন্ন ধর্ম মত গুলির মধ্যে হিন্দু ধর্মই সর্বাপেক্ষা প্রাচীন ।হিন্দু ধর্মের প্রকৃত নাম সনাতন ধর্ম । অর্থাৎ যা চিরন্তন , শাশ্বত । স্বামী বিবেকানন্দ একে সকল ধর্মের প্রসূতি স্বরূপ বলে নির্দেশ করেছেন । কারণ এই বিশ্বে প্রচলিত ধর্ম মত গুলির প্রায় সব গুলির মূল ভাব হিন্দু ধর্মে দেখা যায় । সভ্য মানব জাতির বিভিন্ন ধর্ম মত গুলির মধ্যে হিন্দু ধর্মই সর্বাপেক্ষা প্রাচীন ।হিন্দু ধর্মের আকর হল বেদ , যার মুখ্যতঃ দুটি অংশ - ' জ্ঞান কাণ্ড' ও 'কর্ম কাণ্ড' । 'কর্ম কাণ্ড' যুগ ভেদে পরিবর্তন শীল । ভগবান শ্রী রামকৃষ্ণ যখন বললেন - '' কলি যুগে বেদ মত চলে না '' তখন তিনি এই 'কর্ম কাণ্ড' কেই নির্দেশ করেছেন ।' জ্ঞান কাণ্ড' যুগ ভেদে অপরিবর্তনীয় । অরণ্যচারী ঋষি দের সাধনার দ্বারা আবিষ্কৃত পারমার্থিক সত্য এই ' জ্ঞান কাণ্ড' । এটি কোনও সাম্প্রদায়িক মত নয় । হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন মিলে যেমন জল হয় , এটা যেমন যে কোনও মানুষের দ্বারা পরীক্ষায় সত্য প্রমাণিত হবে , ঠিক তেমনি ' জ্ঞান কাণ্ড ' নির্দেশিত অনুভূতি সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষের জন্যে প্রযোজ্য । এখানেই হিন্দু ধর্ম সকল ধর্ম মত কে নিজের মধ্যে গ্রহণ করেছে । অথবা ঐতিহাসিক বিচারে বলতে হয় হিন্দু ধর্ম সকল ধর্ম মতের জন্ম দিয়েছে ।হিন্দু ঋষিগণ ধর্মপথ নির্দেশের সময় মানুষের রুচি ও ক্ষমতার ভিন্নতার কথা চিন্তা করেছেন , তাই মূর্তি পূজা থেকে শুরু করে নিরাকার ব্রহ্ম উপাসনা পর্যন্ত সবই হিন্দু ধর্মে স্বীকৃত হয়েছে । বিভিন্ন মাপের মানুষের জন্য একই মাপের পোশাক এই ধর্ম দেয়না । হিন্দুরা নিজ নিজ রুচি ও ক্ষমতার স্তর অনুযায়ী নিজের উপযুক্ত সাধন পদ্ধতি বেছে নিতে পারেন । উদ্দেশ্য সবারই এক , এবং তা হল - আত্ম জ্ঞান , অর্থাৎ স্ব-স্বরূপ কে জানা ।হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন সাধন পথ গুলিকে মুখ্যতঃ চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে । এগুলি হল জ্ঞান যোগ , কর্ম যোগ , ভক্তি যোগ ও রাজ যোগ ।জ্ঞান যোগে আত্ম বিশ্লেষণ এবং ' শ্রবণ , মনন ও নিদিধ্যাসনের ' দ্বারা ' নেতি নেতি ' বিচারের মাধ্যমে সাধক লক্ষ্যে উপনীত হন । আচার্য শঙ্কর এই সাধনা প্রচার করেছেন ।কর্ম যোগে নিষ্কাম কর্ম দ্বারা সকাম কর্ম বন্ধন কেটে সাধক লক্ষ্যে উপনীত হন । ভগবান শ্রী কৃষ্ণ অর্জুন কে কুরুক্ষেত্র প্রান্তরে কর্মযোগে উদ্দীপ্ত করেছেন ।ভক্তিযোগে প্রেমের বন্ধনে ভক্ত সাধক ঈশ্বরকে ধরার চেষ্টা করেন । ভগবান শ্রীকৃষ্ণ-চৈতন্য ( মহাপ্রভু ) এই ভাবের প্রচার করেছেন ।রাজযোগে ধ্যান , প্রাণায়াম প্রভৃতি শারীরিক ও মানসিক প্রক্রিয়ার দ্বারা সাধক স্ব-স্বরূপ লাভ করেন । মহর্ষি পতঞ্জলি এই সাধন পদ্ধতি প্রচার করেছেন । পৃথক পৃথক ভাবে এই চারটি পথের সাধক অনেক ক্ষেত্রে বিপদের সম্মুখীন হতে পারেন , যেমন জ্ঞান যোগ মানুষকে শুষ্ক বিচার প্রবণ করতে পারে । কর্ম যোগে কর্ম সকাম হয়ে সাধকের অবনতি ঘটাতে পারে । ভক্তি যোগে গোঁড়ামি আসতে পারে । রাজ যোগে সিদ্ধাই বা অলৌকিক ক্ষমতা লাভের দিকে মন চলে যেতে পারে । ভগবান শ্রী রামকৃষ্ণ এই নবযুগের জন্য তাই নির্দেশ করেছেন যোগ - চতুষ্টয়ের সমন্বয় । স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন - জ্ঞান - কর্ম - ভক্তি অথবা রাজ যোগ এই চারটি পথের যে কোনও একটি অবলম্বন করে সাধক সিদ্ধ হতে পারেন , কিন্তু ' শ্রী রামকৃষ্ণ - রূপ মুষায় ( ছাঁচে) জীবন উৎকীর্ণ করিতে হইলে ( জীবন ঢেলে গঠন করতে গেলে ) সেই জীবনে থাকিবে - চতুর্বিধ যোগের সমন্বয় ' সমন্বয়ের PRACTICAL প্রয়োগ হিসাবে স্বামীজী তুলে ধরেছেন শিব - জ্ঞানে জীব সেবার আদর্শ । এই হল স্বামী বিবেকানন্দ নির্দেশিত 'PRACTICAL বেদান্ত' । বনের বেদান্ত এভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সমাজে ও সংসারের সর্বত্র ।
- See more at: http://bangalihindupost.blogspot.in/2012/04/blog-post_5534.html#sthash.Q9bwPEWA.dpuf
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন