জগন্নাথ মন্দির:
---------------
পুরীর জগন্নাথ মন্দির ভারতের অন্যতম প্রসিদ্ধ মন্দির।জগন্নাথ-আরাধনার ইতিবৃত্ত এতই প্রাচীন যে এর কোনো ঐতিহাসিক রেকর্ড পাওয়া সম্ভব নয়।জগন্নাথ মন্দিরে অহিন্দুদের প্রবেশ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।কলিঙ্গ স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত এই মন্দিরটি শ্রীমন্দির নামে সমধিক পরিচিত।গর্ভগৃহের মাথায় রয়েছে একটি সুউচ্চ শিখর বা চূড়া।প্রদীপ উৎসর্গের জন্য রয়েছে ফসিল হয়ে যাওয়া কাঠের একটি স্তম্ভ।মন্দিরের প্রধান দ্বার সিংহদ্বারের রক্ষক দেবতা জয়া ও বিজয়া।মূল প্রবেশপথের সামনে রয়েছে অরুণস্তম্ভ নামে একটি স্মৃতিস্তম্ভ।খুরদার রাজা কোনার্কের সূর্যমন্দির থেকে এটি নিয়ে আসেন।তিন দেবতাকে সাধারণত মন্দিরের অভ্যন্তরেই পূজা করা হয়।তবে প্রতি বছর আষাঢ় মাসে তাঁদের রাজপথে বের করে রথারূহ করে তিন কিলোমিটার দূরে মৌসিমা মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয়।এই সময় ভক্তরা দেবতাকে গণদর্শনের সুযোগ পান।এই বিরাট রথগুলি প্রতি বছর কাঠ দিয়ে নির্মাণ করা হয়।দীর্ঘ বিচ্ছেদের পর কৃষ্ণের বৃন্দাবন প্রত্যাবর্তনের প্রতীকী রূপে পালিত হয়ে থাকে এই রথযাত্রা উৎসব। রথযাত্রার সময় সারা পৃথিবী থেকে এখানে ভক্ত সমাগম হয়। পুরীর রাজা রথের সম্মুখে রাস্তা ঝাঁট দেন।
বিষ্ণুপাদ মন্দির:
---------------
ভগবান ব্রহ্মা সৃষ্টি করেছেন এই ব্রহ্মাণ্ড- ভগবান শিব ধবংস করবেন এবং এই সময়ের মাঝে ভগবান বিষ্ণু পালন ও রক্ষা করেছেন এবং করবেন। বিহারের গয়ায় রয়েছে ভগবান বিষ্ণুপাদ মন্দির। গয়া নামটি এসেছে গয়াসুরের নামে। পুরাকালে গয় নামে এই অসুর বিষ্ণুর উপাসনা শুরু করে। তার উদ্দেশ্য ছিল অমরত্ব লাভ করা এবং স্বর্গ দখল করা। সে এই জন্য তুখোড় তপস্যা শুরু করে। তপস্যা এত দাপটে করতে থাকে যে বিষ্ণু আর স্থির থাকতে পারেন না- তিনি ছুটে যান গয় এর কাছে। গয় বিষ্ণুর কাছে বর চান যেন অমর হতে পারেন। তখন বিষ্ণু বলেন- " হে গয়- আমার অবতারা ও জন্ম নেয় এবং এই পৃথিবীতেই তাদের মৃত্যু হয়। তুমি অন্য কোন বর চাও। আমি তোমাকে পৃথিবীর নিয়মের ব্যাতিক্রম কোন বর দিতে পারব না। তুমি অন্য কিছু চাও।" তখন গয় মহা চিন্তায় পড়ে যায়। শেষে সে বলে- " হে পরম বিষ্ণু- আমাকে এমন এক দেহ দান করুন যেন আমার দেহ স্পর্শ না করে এই পৃথিবীর কারো স্বর্গলোক প্রাপ্তি না হয়।" তখন ভগবান বিষ্ণু বললেন- "এ জন্য আমাকে যজ্ঞ করতে হবে- এবং তোমাকে মৃত্যু বরন করে দেহ খানা দিতে হবে।" এ শুনে সদা হাস্যময় গয় নিজের দেহ দান করতে প্রস্তুত হল।কিন্তু সে এত বিরাট ছিল যে বিষ্ণু কোথাও দাঁড়াতে পারছিলেন না। তখন গয় নিজের মাথা পেতে দেয়- ভগবান বিষ্ণু সেই মাথায় পা দিয়ে অত্র এলাকাকে মহা পবিত্র করে দেন এবং বর দান করেন যে এই খানে পিন্ড দান না করে কোন দেব দানব বা মানুষের আত্মা স্বর্গ লোকে প্রবেশ করবেনা।
ফল্গু নদীর তীরে অবস্থিত এই মন্দির। রামায়নে লেখা আছে এই ফ্লগু নদী পূর্বে প্রবাহমান ছিল। রাজা দশরথের মৃত্যুর পর এখানে শ্রী শ্রী রামের অনুপস্থিতিতে সীতাদেবী দশরথের পিন্ড দেন। এখানে এই পিন্ড দানের সাক্ষী ছিল এই ফল্গু নদী, অক্ষয় বট,ও তুলসী কে সাক্ষি মানেন। শ্রী রাম ফিরে এলে সীতা দেবী পিন্ড দানের কথা জানান এবং বলেন যে এর সাক্ষী ও আছে। এই সময় অক্ষয় বট সত্য স্বীকার করেন। কিন্তু ফ্লগু নদী ও তুলসী রামের পায়ের স্পর্শ পাবার আশায় মিথ্যে সাক্ষী দেন। এতে সীতা দেবী অভিশাপ দেন। এরপর থেকে এই ফ্লগু নদীর পানি শুকিয়ে যায় আর তুলসি যেখানে সেখানে জন্মায়।
ফল্গু নদীর তীরে অবস্থিত এই মন্দির। রামায়নে লেখা আছে এই ফ্লগু নদী পূর্বে প্রবাহমান ছিল। রাজা দশরথের মৃত্যুর পর এখানে শ্রী শ্রী রামের অনুপস্থিতিতে সীতাদেবী দশরথের পিন্ড দেন। এখানে এই পিন্ড দানের সাক্ষী ছিল এই ফল্গু নদী, অক্ষয় বট,ও তুলসী কে সাক্ষি মানেন। শ্রী রাম ফিরে এলে সীতা দেবী পিন্ড দানের কথা জানান এবং বলেন যে এর সাক্ষী ও আছে। এই সময় অক্ষয় বট সত্য স্বীকার করেন। কিন্তু ফ্লগু নদী ও তুলসী রামের পায়ের স্পর্শ পাবার আশায় মিথ্যে সাক্ষী দেন। এতে সীতা দেবী অভিশাপ দেন। এরপর থেকে এই ফ্লগু নদীর পানি শুকিয়ে যায় আর তুলসি যেখানে সেখানে জন্মায়।
বৃন্দাবন:
--------
ঢাকেশ্বরী মন্দির:
ভারতের উত্তর প্রদেশের অন্তর্গত মথুরা জেলায় অবস্থিত একটি প্রসিদ্ধ তীর্থস্থান এবং স্থানটি খুবই প্রাচীন।
পঞ্চপাণ্ডব (যুধিষ্ঠির, ভীম, অর্জুন, নকুল ও সহদেব) মহাপ্রস্থান করার পর শ্রীকৃষ্ণের প্রপৌত্র বজ্রনাভ মথুরার রাজসিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন। একদিন বজ্রনাভের মা রোচনা দেবী তাকে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের একটি মূর্তি তৈরী করার জন্য আদেশ দেন। মূর্তি প্রস্তুত হলে রোচনা দেবী বলেন, “মুখ ছাড়া এ মূর্তি শ্রীকৃষ্ণের মতো হয় নাই”। দ্বিতীয় মূর্তি প্রস্তুত হলো বটে কিন্তু তাতে কেবল বক্ষঃস্থল ভিন্ন শ্রীকৃষ্ণের আর কোন অঙ্গের মিল দেখা যায় নাই। তৃতীয় মূর্তিতে দুই চরণ ছাড়া শ্রীকৃষ্ণের কোন মিল খুঁজে পাওয়া যায় নাই। বজ্রনাভ চতুর্থ মুর্তি তৈরীতে উদ্যত হইলে জননী বলেন, “তার আর দরকার নেই। এ তিন মূর্তিরই তুমি প্রতিষ্ঠা কর”।মায়ের আদেশে বজ্রনাভ গোবিন্দ, গোপীনাথ ও মদনগোপাল নামকরণ করে ব্রজমণ্ডলের বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করেন এবং অন্যান্য স্থানে কৃষ্ণলীলার স্মরণ চিহ্ন হিসেবে প্রকৃত স্থানেই গ্রাম, কুণ্ড বা কুপ প্রতিষ্ঠা করেন।
খ্রীষ্টিয় একাদশ শতাব্দীতে গজনীর মামুদ মথুরা ও মহাবন আক্রমণ ও ধ্বংস করে তীর্থের গৌরব একেবারে নষ্ট করে ফেলেন। বৃন্দাবন প্রকৃত অর্থেই বনে পরিণত হয়ে যায়।কুতবুদ্দিনের সময়ে মথুরামণ্ডল দিল্লী রাজ্যের অধিভুক্ত হয়। সম্রাট আকবরের রাজত্বকালে বৃন্দাবনের অদৃষ্ট সুপ্রসন্ন হয়। এ সময়ে চৈতন্যদেবের আদেশে সনাতন, রূপ প্রভৃতি গৌড়ীয় বৈষ্ণবগণ বৃন্দাবনে এসে বাস করেন এবং হারানো তীর্থ গৌরব পুণরুদ্ধারে যত্নবান হন।
পুরাতন মন্দির তিনটি ব্যবহার উপযোগী না দেখে চব্বিশ পরগণা জেলায় অবস্থিত বহড়ু গ্রামের জমিদার দেওয়ান নন্দকুমার বসু ৮১২১ সালে বহু ব্যয় করে তিনটি মন্দির প্রস্তুত করেন। পরবর্তীকালে অন্যান্য যে সকল বিগ্রহগুলোর জন্য মন্দিরগুলো প্রতিষ্ঠা হয়েছে তা নিম্নরূপঃ- শেঠের মন্দির; সাহাজীর মন্দির; ব্রহ্মচারীর মন্দির; লালাবাবুর মন্দির অন্যতম।এছাড়াও, অনেক মন্দির ভক্ত বৈষ্ণবদের দ্বারা নির্মিত হয়েছে।
ঝুলনযাত্রাই বৃন্দাবনের সর্বপ্রধান পর্ব। তার পরেই অন্নকূট যাত্রা। শেষোক্ত পর্ব দীপান্বিতা অমাবস্যার পরদিনে সম্পন্ন হয়।
ইংরেজ সরকার কলকাতার রাজা স্যার রাধাকান্ত দেব বাহাদুর যখন বৃন্দাবন বাস করেন, সে সময়ে তিনি ইংরেজ সরকারকে আবেদন করে এ আদেশ প্রচার করেছিলেন যে, ইংরেজরা বৃন্দাবনের মধ্যে শিকারের উদ্দেশ্যে পশু বা পাখী বধ করতে পারবে না।
ভগবান কৃষ্ণের “বৃন্দাবনং পরিত্যজ্য পাদমেকং ন গচ্ছতি” - এ উক্তির সারমর্ম হৃদয়ে উপলদ্ধি করে বৈষ্ণবগণ এ স্থানকে সর্বপ্রধান তীর্থ ও বাঞ্ছনীয় বাসস্থান হিসেবে পরিগণনা করেন
পঞ্চপাণ্ডব (যুধিষ্ঠির, ভীম, অর্জুন, নকুল ও সহদেব) মহাপ্রস্থান করার পর শ্রীকৃষ্ণের প্রপৌত্র বজ্রনাভ মথুরার রাজসিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন। একদিন বজ্রনাভের মা রোচনা দেবী তাকে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের একটি মূর্তি তৈরী করার জন্য আদেশ দেন। মূর্তি প্রস্তুত হলে রোচনা দেবী বলেন, “মুখ ছাড়া এ মূর্তি শ্রীকৃষ্ণের মতো হয় নাই”। দ্বিতীয় মূর্তি প্রস্তুত হলো বটে কিন্তু তাতে কেবল বক্ষঃস্থল ভিন্ন শ্রীকৃষ্ণের আর কোন অঙ্গের মিল দেখা যায় নাই। তৃতীয় মূর্তিতে দুই চরণ ছাড়া শ্রীকৃষ্ণের কোন মিল খুঁজে পাওয়া যায় নাই। বজ্রনাভ চতুর্থ মুর্তি তৈরীতে উদ্যত হইলে জননী বলেন, “তার আর দরকার নেই। এ তিন মূর্তিরই তুমি প্রতিষ্ঠা কর”।মায়ের আদেশে বজ্রনাভ গোবিন্দ, গোপীনাথ ও মদনগোপাল নামকরণ করে ব্রজমণ্ডলের বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করেন এবং অন্যান্য স্থানে কৃষ্ণলীলার স্মরণ চিহ্ন হিসেবে প্রকৃত স্থানেই গ্রাম, কুণ্ড বা কুপ প্রতিষ্ঠা করেন।
খ্রীষ্টিয় একাদশ শতাব্দীতে গজনীর মামুদ মথুরা ও মহাবন আক্রমণ ও ধ্বংস করে তীর্থের গৌরব একেবারে নষ্ট করে ফেলেন। বৃন্দাবন প্রকৃত অর্থেই বনে পরিণত হয়ে যায়।কুতবুদ্দিনের সময়ে মথুরামণ্ডল দিল্লী রাজ্যের অধিভুক্ত হয়। সম্রাট আকবরের রাজত্বকালে বৃন্দাবনের অদৃষ্ট সুপ্রসন্ন হয়। এ সময়ে চৈতন্যদেবের আদেশে সনাতন, রূপ প্রভৃতি গৌড়ীয় বৈষ্ণবগণ বৃন্দাবনে এসে বাস করেন এবং হারানো তীর্থ গৌরব পুণরুদ্ধারে যত্নবান হন।
পুরাতন মন্দির তিনটি ব্যবহার উপযোগী না দেখে চব্বিশ পরগণা জেলায় অবস্থিত বহড়ু গ্রামের জমিদার দেওয়ান নন্দকুমার বসু ৮১২১ সালে বহু ব্যয় করে তিনটি মন্দির প্রস্তুত করেন। পরবর্তীকালে অন্যান্য যে সকল বিগ্রহগুলোর জন্য মন্দিরগুলো প্রতিষ্ঠা হয়েছে তা নিম্নরূপঃ- শেঠের মন্দির; সাহাজীর মন্দির; ব্রহ্মচারীর মন্দির; লালাবাবুর মন্দির অন্যতম।এছাড়াও, অনেক মন্দির ভক্ত বৈষ্ণবদের দ্বারা নির্মিত হয়েছে।
ঝুলনযাত্রাই বৃন্দাবনের সর্বপ্রধান পর্ব। তার পরেই অন্নকূট যাত্রা। শেষোক্ত পর্ব দীপান্বিতা অমাবস্যার পরদিনে সম্পন্ন হয়।
ইংরেজ সরকার কলকাতার রাজা স্যার রাধাকান্ত দেব বাহাদুর যখন বৃন্দাবন বাস করেন, সে সময়ে তিনি ইংরেজ সরকারকে আবেদন করে এ আদেশ প্রচার করেছিলেন যে, ইংরেজরা বৃন্দাবনের মধ্যে শিকারের উদ্দেশ্যে পশু বা পাখী বধ করতে পারবে না।
ভগবান কৃষ্ণের “বৃন্দাবনং পরিত্যজ্য পাদমেকং ন গচ্ছতি” - এ উক্তির সারমর্ম হৃদয়ে উপলদ্ধি করে বৈষ্ণবগণ এ স্থানকে সর্বপ্রধান তীর্থ ও বাঞ্ছনীয় বাসস্থান হিসেবে পরিগণনা করেন
-----------------
ঢাকেশ্বরী মন্দির ঢাকা শহরের পলাশী ব্যারাক এলাকায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বাসসমূহের দক্ষিণে ঢাকেশ্বরী রোডে অবস্থিত।এটি বাংলাদেশের অন্যতম একটি বিখ্যাত মন্দির।
বিক্রমপুরের রাজা আদিসুর এক সময় ক্রুদ্ধ হয়ে নির্দোষ রানীকে রাজপ্রাসাদ থেকে বহিষ্কার করেন। তখন রানীর গর্ভে ছিল বল্লাল সেন। রাজার বহিষ্কারাদেশে উপায়ন্ত না পেয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের পানিতে ঝাঁপ দেন। জনশ্রুতি আছে যে,রানী এরপর দেবী দুর্গার হাতে উদ্ধার হয়ে বুড়িগঙ্গা তীরের কাছাকাছি একটি জঙ্গলে আশ্রয় পান। সেখানে তার সন্তান বল্লাল ভূমিষ্ঠ হয়। বনে লালিত হয়েছিল বলে মা তাকে বনলাল সেন বলে ডাকতেন। সেখানে বল্লাল সেন জ্ঞান গরিমায় শৌর্য- বীর্যে অত্যধিক ব্যুপত্তি লাভ করেন। একদিন তিনি বেড়াতে বেড়াতে তার রক্ষাকর্ত্রী দূর্গার প্রতিমাকে লুকায়িত অবস্থায় দেখতে পান। পরম শ্রদ্ধাভরে তিনি সেখানে 'ঢাকা ঈশ্বর' বা লুকায়িত দেবীর মন্দির নির্মাণ ১২শ শতাব্দীতে করেন। সেই থেকে মন্দিরের নাম হয় 'ঢাকেশ্বরী'।তৎকালে এরূপ একটি মন্দিরের অস্তিত্বে থাকলেও পরে এর কোনো চিহ্ন পাওয়া যায় না। সেই পুরনো মন্দিরটির সংস্কার বা পুনর্নির্মাণ করেছিলেন সেনাপতি মানসিংহ।বর্তমান মন্দিরটি দুইশ' বছরের অধিক পুরনো এবং ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির এক হিন্দু এজেন্ট বর্তমান মন্দিরটি নির্মাণ করেন।
ঢাকার নামকরন ঢাকেশ্বরী মন্দিরের নাম অনুসারে হয়েছে বলে মনে করা হয়।তবে এই নামকরন নিয়ে বির্তক রয়েছে। বর্তমানে এখানে প্রতি বছর ধুমধামের সাথে দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হয়।মূল মন্দির প্রাঙ্গনের বাইরে মহানগর পুজামণ্ডপ অবস্থিত। এখানে যেখানে দুর্গা পুজার স্থায়ী বেদী রয়েছে। মূল মন্দির এলাকার ভবনগুলি উজ্জ্বল হলুদাভ ও লাল বর্ণের। মূল মন্দির প্রাঙ্গনের উত্তর পশ্চিম কোণে রয়েছে চারটি শিব মন্দির। মূল মন্দিরটি পূর্বাংশে অবস্থিত। এখানে দেবী দূর্গার একটি ধাতু-নির্মিত প্রতিমা রয়েছে।
কান্তজীর মন্দির:
----------------
বাংলাদেশের একটি প্রাচীন মন্দির হচ্ছে কান্তজীর মন্দির,মন্দিরটি দিনাজপুর শহর থেকে ২০ কিলোমিটার উত্তরে কান্তনগর গ্রামে অবস্থিত। এটি নবরত্ন মন্দির নামেও পরিচিত কারণ তিনতলা বিশিষ্ট এই মন্দিরের নয়টি চূড়া বা রত্ন ছিলো।
মন্দিরের উত্তর দিকের ভিত্তিবেদীর শিলালিপি থেকে জানা যায়, তৎকালীন দিনাজপুরের মহারাজা জমিদার প্রাণনাথ রায় তাঁর শেষ বয়সে মন্দিরের নির্মাণ কাজ শুরু করেন। ১৭২২ খ্রিস্টাব্দে তাঁর মৃত্যুর পরে তাঁর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তাঁর পোষ্যপুত্র মহারাজা রামনাথ রায় ১৭৫২ খ্রিস্টাব্দে মন্দিরটির নির্মাণ কাজ শেষ করেন। শুরুতে মন্দিরের চূঁড়ার উচ্চতা ছিলো ৭০ ফুট। ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দে মন্দিরটি ভূমিকম্পের কবলে পড়লে এর চূঁড়াগুলো ভেঙে যায়। মহারাজা গিরিজানাথ মন্দিরের ব্যাপক সংস্কার করলেও মন্দিরের চূড়াগুলো আর সংস্কার করা হয়নি।
মন্দিরের বাইরের দেয়াজুড়ে পোড়ামাটির ফলকে লেখা রয়েছে রামায়ণ, মহাভারত এবং বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনী।পুরো মন্দিরে প্রায় ১৫,০০০-এর মতো টেরাকোটা টালি রয়েছে। উপরের দিকে তিন ধাপে উঠে গেছে মন্দিরটি। মন্দিরের চারদিকের সবগুলো খিলান দিয়েই ভেতরের দেবমূর্তি দেখা যায়। মন্দির প্রাঙ্গণ আয়তাকার হলেও, পাথরের ভিত্তির উপরে দাঁড়ানো ৫০ফুট উচ্চতার মন্দিরটি বর্গাকার। নিচতলার সব প্রবেশপথে বহু খাঁজযুক্ত খিলান রয়েছে। দুটো ইটের স্তম্ভ দিয়ে খিলানগুলো আলাদা করা হয়েছে, স্তম্ভ দুটো খুবই সুন্দর এবং সমৃদ্ধ অলংকরণযুক্ত। মন্দিরের পশ্চিম দিকের দ্বিতীয় বারান্দা থেকে সিঁড়ি উপরের দিকে উঠে গেছে। মন্দিরের নিচতলায় ২১টি এবং দ্বিতীয় তলায় ২৭টি দরজা-খিলান রয়েছে, তবে তৃতীয় তলায় রয়েছে মাত্র ৩টি করে।
মন্দির থেকে আনুমানিক দুইশত গজ দূরে আছে একটি রাসমঞ্চ। এই মঞ্চে প্রতিবছর একবার অনুষ্ঠিত হয় রাসলীলা। রাসলীলায় পূর্ণিমার রাতে মন্দির থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বের করে আনা হয় রাধা কৃষ্ণের প্রতিমা।
চলবে......
সৌজন্যেঃ রথযাত্রা
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন