সম্প্রতি সংবাদপত্রের মাধ্যমে জানতে পারলাম দিল্লীর জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ করতে না পারার শোকে একজন যুবক আত্মহত্যা করেছে । জড়জাগতিক জ্ঞানের চর্চিত পরিবেশে তথাকথিত আধুনিক সভ্যতায় এমনই হয়ে থাকে।
আমরা একটি দুটি যুবক বা যুবতীর আত্মহত্যার খবর হয়ত কখনও কখনও সংবাদ
মাধ্যম থেকে পাই । কিন্তু আরও কত এমন হতভাগ্য তরুণ তরুণি যে, কেবলমাত্র
জীবনের প্রকৃত শিক্ষার অভাবে নিজেদের অকালে নিভৃতে শেষ করে দিচ্ছে তাঁর
খোঁজ ক’জন রাখছে । এহেন মৃত্যু বর্তমান এই যুগেরই ফসল, তথাকথিত উন্নয়নমুখী
সমাজ ও ভোগবাদী শিক্ষারই দান ।
আজকের যুগের ছেলে মেয়েরা জন্মের পর থেকে কি পাচ্ছে ? শুধুই জড় জাগতিক বিভিন্ন বিদ্যা শিক্ষার চাপ । প্রচুর টাকার বিনিময়ে তথাকথিত বড় বড় স্কুলে ভর্তি হওয়ার প্রতিযোগিতা । যেন ঐ সব স্কুলে ভর্তি হওয়ার সুযোগ না পেলে জীবনটাই বৃথা । তার ফলে আজকাল এই ধরনের বহু স্কুল গজিয়ে উঠেছে । স্কুলগুলো হয়ে উঠেছে এক একটি ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান । আর সেইসব স্কুলে ও বাড়িতে ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা বড় হয়ে উঠছে কেবলই জড় জাগতিক পড়াশুনার চাপের মধ্যে যান্ত্রিক ভাবে ।
পারমার্থিকতা তো দুরের কথা, সাধারণভাবে মানুষের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার কোন শিক্ষাই তার লাভ করে না । শিশু কাল থেকেই তাদের মধ্যে এক জাগতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে ।
সেই উচ্চাকাঙ্ক্ষাটি কি ? সেটি হল, ‘তোমাকে বড় হতে হবে ।’ এই বড় হওয়াটি কি রকম ? সেটি হল, ‘তোমাকে অনেক বড় চাকরী করতে হবে ।’ কেন এই বড় চাকরী ? সেটি এই জন্য যে তোমাকে অনেক টাকা মাইনে পেতে হবে , অনেক অর্থ রোজগার করতে হবে, তারই এক প্রতিযোগিতা । যখন কেউ কোন প্রতিযোগিতায় নামে তখন তার উদ্দেশ্যটি থাকে আমি অন্য সবাইকে হারিয়ে জিতব, অন্যকে ওটা করতে দেব না বা নিতে দেব না ইত্যাদি । তখন সে যেমন অন্য প্রতিযোগীদের শত্রু অন্যেরাও তার শত্রু । এইভাবে ছাত্রাবস্থা থেকেই আজকের তরুণ তরুণীদের মধ্যে এক নীরব শত্রুতাবোধ গড়ে ওঠে ।
অথচ পৃথিবীতে প্রকৃত সভ্যতা ও শান্তি গড়ে তোলার জন্য চাই মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও মিত্রতাবোধ । তো আজকের মানুষ যখন শুধু ভোগাকাঙ্ক্ষাকে জীবনের উদ্দেশ্য করে পারস্পরিক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এক নিভৃত শত্রুতাবোধের দ্বারা সমাজকে গড়ে তুলছে, সেই সমাজে আমার আকাঙ্ক্ষায় ব্যাঘাত ঘটলেই বা কারো থেকে কোন ভাবে পিছেয়ে পড়লেই আশে হতাশা ।
আর সেই হতাশারই শিকার হয়ে আজকের নবীন প্রজন্মের অনেকেই আত্মহত্যায় প্রবৃত হয় । দুর্লভ মনুষ্য জন্মের উদ্দেশ্য কি সেটি হৃদয়ঙ্গম করা বা জানাই এই জীবনের আসল শিক্ষা লাভ । অনেকেই অনেক বড় বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতি বছরই পাশ করছে, বড় বড় ডিগ্রী লাভ করছে, মোটা চাকুরী পাচ্ছে, প্রচুর অর্থ রোজগার করছে, জড় প্রাচুর্য লাভ করেছে, প্রতি বছরই এসব ঘটছে । কিন্তু তারা সুখী হয়েছে কি ?
শান্তি লাভ করেছে কি ? আকাঙ্ক্ষা চরিতার্থ হয়েছে কি ? না, এসবের কোনটাই কেউ প্রাপ্ত হয় নি । বরং পৃথিবীতে অশান্তি ও হতাশা ক্রমশই বেড়ে চলেছে । আমাদের তাই কোন নামী স্কুল বা কলেজে ভর্তি হলাম কি হলাম না, উচ্চ রোজগারের চাকরী পেলাম কি পেলাম না সেসব হিসাবের মধ্যে না গিয়ে এটা হৃদয়ঙ্গম করা উচিত যে আমি এই দেহটি নই ।
আমি এই মনুষ্য দেহটি লাভ করেছি পারমার্থিক তত্ত্ব হৃদয়ঙ্গম করার জন্য এবং সেটিই আমার একমাত্র উদ্দেশ্য । তাই মহাজনগণের নির্দেশ ও শাস্রজ্ঞান অনুসরণ করে ‘সরল জীবন উচ্চ চিন্তা’র নীতি জীবনে প্রয়োগ করে এই মনুষ্য জীবনের সদ্ব্যবহার করা উচিত । তাহলেই পূর্ণ আনন্দ আমরা প্রাপ্ত হব আর দূর হবে সমস্ত হতাশা ।
সংগ্রহ : হরেকৃষ্ণ সমাচার
আজকের যুগের ছেলে মেয়েরা জন্মের পর থেকে কি পাচ্ছে ? শুধুই জড় জাগতিক বিভিন্ন বিদ্যা শিক্ষার চাপ । প্রচুর টাকার বিনিময়ে তথাকথিত বড় বড় স্কুলে ভর্তি হওয়ার প্রতিযোগিতা । যেন ঐ সব স্কুলে ভর্তি হওয়ার সুযোগ না পেলে জীবনটাই বৃথা । তার ফলে আজকাল এই ধরনের বহু স্কুল গজিয়ে উঠেছে । স্কুলগুলো হয়ে উঠেছে এক একটি ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান । আর সেইসব স্কুলে ও বাড়িতে ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা বড় হয়ে উঠছে কেবলই জড় জাগতিক পড়াশুনার চাপের মধ্যে যান্ত্রিক ভাবে ।
পারমার্থিকতা তো দুরের কথা, সাধারণভাবে মানুষের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার কোন শিক্ষাই তার লাভ করে না । শিশু কাল থেকেই তাদের মধ্যে এক জাগতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে ।
সেই উচ্চাকাঙ্ক্ষাটি কি ? সেটি হল, ‘তোমাকে বড় হতে হবে ।’ এই বড় হওয়াটি কি রকম ? সেটি হল, ‘তোমাকে অনেক বড় চাকরী করতে হবে ।’ কেন এই বড় চাকরী ? সেটি এই জন্য যে তোমাকে অনেক টাকা মাইনে পেতে হবে , অনেক অর্থ রোজগার করতে হবে, তারই এক প্রতিযোগিতা । যখন কেউ কোন প্রতিযোগিতায় নামে তখন তার উদ্দেশ্যটি থাকে আমি অন্য সবাইকে হারিয়ে জিতব, অন্যকে ওটা করতে দেব না বা নিতে দেব না ইত্যাদি । তখন সে যেমন অন্য প্রতিযোগীদের শত্রু অন্যেরাও তার শত্রু । এইভাবে ছাত্রাবস্থা থেকেই আজকের তরুণ তরুণীদের মধ্যে এক নীরব শত্রুতাবোধ গড়ে ওঠে ।
অথচ পৃথিবীতে প্রকৃত সভ্যতা ও শান্তি গড়ে তোলার জন্য চাই মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও মিত্রতাবোধ । তো আজকের মানুষ যখন শুধু ভোগাকাঙ্ক্ষাকে জীবনের উদ্দেশ্য করে পারস্পরিক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এক নিভৃত শত্রুতাবোধের দ্বারা সমাজকে গড়ে তুলছে, সেই সমাজে আমার আকাঙ্ক্ষায় ব্যাঘাত ঘটলেই বা কারো থেকে কোন ভাবে পিছেয়ে পড়লেই আশে হতাশা ।
আর সেই হতাশারই শিকার হয়ে আজকের নবীন প্রজন্মের অনেকেই আত্মহত্যায় প্রবৃত হয় । দুর্লভ মনুষ্য জন্মের উদ্দেশ্য কি সেটি হৃদয়ঙ্গম করা বা জানাই এই জীবনের আসল শিক্ষা লাভ । অনেকেই অনেক বড় বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতি বছরই পাশ করছে, বড় বড় ডিগ্রী লাভ করছে, মোটা চাকুরী পাচ্ছে, প্রচুর অর্থ রোজগার করছে, জড় প্রাচুর্য লাভ করেছে, প্রতি বছরই এসব ঘটছে । কিন্তু তারা সুখী হয়েছে কি ?
শান্তি লাভ করেছে কি ? আকাঙ্ক্ষা চরিতার্থ হয়েছে কি ? না, এসবের কোনটাই কেউ প্রাপ্ত হয় নি । বরং পৃথিবীতে অশান্তি ও হতাশা ক্রমশই বেড়ে চলেছে । আমাদের তাই কোন নামী স্কুল বা কলেজে ভর্তি হলাম কি হলাম না, উচ্চ রোজগারের চাকরী পেলাম কি পেলাম না সেসব হিসাবের মধ্যে না গিয়ে এটা হৃদয়ঙ্গম করা উচিত যে আমি এই দেহটি নই ।
আমি এই মনুষ্য দেহটি লাভ করেছি পারমার্থিক তত্ত্ব হৃদয়ঙ্গম করার জন্য এবং সেটিই আমার একমাত্র উদ্দেশ্য । তাই মহাজনগণের নির্দেশ ও শাস্রজ্ঞান অনুসরণ করে ‘সরল জীবন উচ্চ চিন্তা’র নীতি জীবনে প্রয়োগ করে এই মনুষ্য জীবনের সদ্ব্যবহার করা উচিত । তাহলেই পূর্ণ আনন্দ আমরা প্রাপ্ত হব আর দূর হবে সমস্ত হতাশা ।
সংগ্রহ : হরেকৃষ্ণ সমাচার
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন