হনুমান দেখলো সাড়ি সাড়ি কদলী গাছ পক্ক কদলীর ভারে নুয়ে আছে । বিবিধ রকমের কদলীর জাতি। পক্ক কদলীর গন্ধে আমোদিত হয়ে আছে । একেবারে গিয়ে কলা গাছ উপরে ফেলে কলার কাঁদি টেনে এনে পক্ক কদলী ভোজন করতে লাগলো। অপূর্ব স্বাদ। যেনো মিষ্ট মাখন দিয়ে বিধাতা কদলী গুলি রচিত করেছেন । মড় মড় করে একে একে কদলী বৃক্ষ উপরে ফেলে সাবাড় করতে লাগলেন। কদলীর খোসার যেনো পাহার জমল। রাক্ষসী গুলোর ঘুম ভেঙ্গে গেলো। দেখলো এক বানর সমানে কলাগাছ উপরে নিয়ে কদলী ভক্ষণ করছে। রাক্ষসী গুলো রে রে করে তেড়ে আসলো। হনুমান গদা দিয়ে পিটিয়ে রাক্ষসীদের অর্ধমৃত করলো। কাউকে লাঙুরে পেঁচিয়ে ছুড়ে মারলো, কাউকে কলাগাছ ছুড়ে মারলো। প্রকাণ্ড কদলী বৃক্ষ চাপা পড়ে মরল রাক্ষসেরা। হৈ হৈ পড়ে গেলো লঙ্কায়। এক মর্কট এসে উৎপাত শুরু করছে। হনুমান একে একে নারকেল বৃক্ষ উপরে নারকেল , কচি ডাব ভক্ষণ করলো। তরমুজের বাগান তছনছ করে সকল তরমুজ সাবার করলো, বারোমাসের আমের গাছে একটা আম্র অবশিষ্ট থাকলো না। যত না খেলো তার অধিক ছড়িয়ে ফেলল, বারোমাসের পনস ফলে এমন গাছে কাঠাল গুলি গ্রেগাসে আহার করতে লাগলো। তাল বৃক্ষে উঠে তাল ফলগুলি খেতে লাগলো। বিকট চেহারার রাক্ষসেরা অস্ত্র হাতে তেড়ে আসলো। হনুমানের দিকে তির, বর্শা ইত্যাদি নিক্ষেপ করলো। হনুমানের কিছুই হল না। দাঁত-মুখ দিয়ে ভেঙচি কেটে রাক্ষসদের দিকে বৃহৎ তাল, নারিকেল ছুড়ে ছুড়ে হতাহত করলো। বিশাল বৃক্ষ গুলো তুলে রাক্ষসদের ওপর ফেলতে লাগলো। গাছের চাপা পড়ে ছটফট করতে করতে সেই বিকট চেহারার বলশালী রাক্ষসেরা অক্কা পেলো । হনুমান লাফ দিয়ে দিয়ে এক গাছ থেকে আর এক গাছে গিয়ে ফলমূল সাবাড় করে রাক্ষসদের ওপর গাছ তুলে তুলে নিক্ষেপ করতে লাগলো। অতি সুজ্জতিত স্তম্ভ গুলি একে একে ধূলিসাৎ হল।
হৈ হৈ করে রাক্ষসেরা ছুটতে লাগলো। এই সময় রাবণের এক পুত্র অক্ষয় কুমার প্রহরা দিচ্ছিল্ল। সে এসে বলল- “এই তুচ্ছ ঘটনার জন্য পিতাকে জানানোর প্রয়োজন নেই। আমি এখুনি গিয়ে সেই কপিকে বধ করবো, অন্যথায় ধরে বেঁধে আনবো।” ইতিমধ্যে জাম্বুবালী রাক্ষস হনুমানের সাথে প্রবল বিক্রমে যুদ্ধে করতে লাগলো। তীক্ষ্ণ তীক্ষ্ণ শর চালনা করলো। ঘাতক দিব্যাস্ত্র সকল নিক্ষেপ করতে থাকলো। হনুমানের ওপর ব্রহ্মার বর আছে যে কোন দিব্যাস্ত্রেই তাঁর কিছুই হবে না। দিব্যাস্ত্রে হনুমানের কিছুই হল না। হনুমান দাঁত, মুখ ভেঙিয়ে ভেঙচি কেটে বড় শাল, তাল বৃক্ষ তুলে জাম্বুবালীর সেনাদের দিকে ছুড়ে মারলো। রাক্ষসেরা চাপা পড়ে হতাহত হল। এরপর হনুমান গাছ থেকে নেমে গদার আঘাতে জাম্বুবালীর স্বর্ণ রথ চূর্ণ চূর্ণ করলো। আর এক গদার আঘাতে জাম্বুবালীর মাথাটাই থেঁতলে দিলো। জাম্বুবালী নিহত হয়েছে দেখে রাবণের পুত্র অক্ষয় কুমার বিড়ালাক্ষ, শার্দূল , ধুম্র আদি শক্তিশালী রাক্ষস যোদ্ধা ও রাক্ষসে সেনা নিয়ে হনুমানকে বন্দী করতে আসলেন । গিয়ে দেখলেন অশোক বাটিকার আর সৌন্দর্য বলে কিছু নেই। ফুল- ফলের গাছ সব তুলে ফেলে দিয়েছে। এদিকে ওদিকে কেবল রক্তের ধারা প্রবাহিত হচ্ছে। বহু রাক্ষস প্রান হারিয়েছে। কিছু রাক্ষস যন্ত্রনায় ছটফট করছে । অক্ষয় কুমার বলল- “ওহে মর্কট! তোমার এত দুঃসাহস? রোস ! আজ তোর প্রান নিয়ে তবেই ক্ষান্ত হবো। দেবতারা অবধি লঙ্কায় আসতে সাহস করে না- আর তুই বনের পশু হয়ে এই সাহস দেখালি? আজকেই তোর অন্তিম দিন।” বিড়ালাক্ষ, শার্দূল , ধুম্র আদি রাক্ষসেরা রাক্ষস সেনা পরিবৃত হয়ে হৈহৈ করে হনুমানের দিকে ধাইলো। হনুমান বড় বড় পাথর, শাল- তাল বৃক্ষ তুলে রাক্ষসের পালে নিক্ষেপ করলো। রাক্ষসেরা চাপা মরে মরল। রাক্ষসদের নিক্ষেপিত অস্ত্রে হনুমানের কোন ক্ষতিই হল না। কিছু রাক্ষসকে তুলে অনেক উচুতে ছুড়ে ফেলল, কিছু রাক্ষসকে পদদলিত করে পিষে দিলো। একসাথে শত রাক্ষসকে লাঙুরে পেঁচিয়ে ভূমিতে আছাড় মেরে খুলি চূর্ণ করে দিলো হনুমান ।
বিড়ালাক্ষ রাক্ষসের ওপর বিশাল পর্বতের চূড়া আকৃতি প্রস্তর নিক্ষেপ করলো মারুতি । মারুতির নিক্ষেপিত প্রস্তরে বিড়ালাক্ষের মস্তক পিষে সমস্ত অস্তি, মাংস, শিরা সকল বাহিরে চলে আসলো। বিড়ালাক্ষের নিথর দেহ পতিত হতেই দাঁত কড়মড় করে শার্দূল , ধুম্র রাক্ষসেরা ছুটে এলো । পট্টিশ , লৌহকাটা, বর্শা, তীক্ষ্ণ ছোড়া, তীক্ষ্ণ শর সকল হনুমানের দিকে নিক্ষেপ করতে লাগলো । হনুমান গদা দিয়ে সেই সকল অস্ত্র গুলি ছুড়ে ফেলে দিলো । হনুমান তখন গদা দিয়ে শার্দূল কে পিটিয়ে যমালয়ে পাঠালো। অক্ষয় কুমার অবাক হল এই দেখে যে এই সামান্য মর্কট বড় বড় রাক্ষসদের কিভাবে যমালয়ে প্রেরন করছে । এর শক্তি অনেক । ধুম্র রাক্ষস হনুমানের দিকে ধেয়ে যেতে হনুমান তখন বড় পাথর নিক্ষেপ করে তাঁর দেহটাকে পিষে দিলো । চার বড় বড় যোদ্ধা মারা গেছে দেখে বাকী রাক্ষস সেনারা কেউ আর অগ্রসর হতে সাহস করছিলো না। অক্ষয় কুমার ক্রোধে রথে উঠে হনুমানের দিকে অগ্নিবাণ নিক্ষেপ করলো। হনুমান লম্ফ দিয়ে গগনে উঠলো। অগ্নিবাণের কোন প্রভাব হনুমানের ওপর খাটলোই না । এরপর হনুমান একটি প্রস্তর নিক্ষেপ করলো অক্ষয়কুমারের প্রতি ।অক্ষয়কুমার এক শরে প্রস্তর চূর্ণ করলো। হনুমানের দিকে নানা ঘাতক সকল বর্ষণ করতে লাগলো। বাণে বাণে ছেয়ে গেলো। কিন্তু হনুমানের কিছুই হয় না । এরপর হনুমান লম্ফ দিয়ে অক্ষয়কুমারের রথে এলো। হনুমান যত গতিতে লম্ফ দিয়ে অক্ষয়কুমারের রথে এসে পড়লো, রথ খানি সেই বেগ সহ্য করতে না পেরে টুকরো টুকরো হল। এরপর হনুমান “জয় শ্রী রাম” ধ্বনি তুলে অক্ষয় কুমার কে তুলে ভূমিতে আছাড় দিলো। রাবণের পুত্র অক্ষয়কুমারের অস্থি , মস্তক চূর্ণ হয়ে নিহত হল। রাবণের পুত্র মারা গেছে শুনে লঙ্কায় শোরগোল পড়ে গেলো।
( ক্রমশঃ )
হৈ হৈ করে রাক্ষসেরা ছুটতে লাগলো। এই সময় রাবণের এক পুত্র অক্ষয় কুমার প্রহরা দিচ্ছিল্ল। সে এসে বলল- “এই তুচ্ছ ঘটনার জন্য পিতাকে জানানোর প্রয়োজন নেই। আমি এখুনি গিয়ে সেই কপিকে বধ করবো, অন্যথায় ধরে বেঁধে আনবো।” ইতিমধ্যে জাম্বুবালী রাক্ষস হনুমানের সাথে প্রবল বিক্রমে যুদ্ধে করতে লাগলো। তীক্ষ্ণ তীক্ষ্ণ শর চালনা করলো। ঘাতক দিব্যাস্ত্র সকল নিক্ষেপ করতে থাকলো। হনুমানের ওপর ব্রহ্মার বর আছে যে কোন দিব্যাস্ত্রেই তাঁর কিছুই হবে না। দিব্যাস্ত্রে হনুমানের কিছুই হল না। হনুমান দাঁত, মুখ ভেঙিয়ে ভেঙচি কেটে বড় শাল, তাল বৃক্ষ তুলে জাম্বুবালীর সেনাদের দিকে ছুড়ে মারলো। রাক্ষসেরা চাপা পড়ে হতাহত হল। এরপর হনুমান গাছ থেকে নেমে গদার আঘাতে জাম্বুবালীর স্বর্ণ রথ চূর্ণ চূর্ণ করলো। আর এক গদার আঘাতে জাম্বুবালীর মাথাটাই থেঁতলে দিলো। জাম্বুবালী নিহত হয়েছে দেখে রাবণের পুত্র অক্ষয় কুমার বিড়ালাক্ষ, শার্দূল , ধুম্র আদি শক্তিশালী রাক্ষস যোদ্ধা ও রাক্ষসে সেনা নিয়ে হনুমানকে বন্দী করতে আসলেন । গিয়ে দেখলেন অশোক বাটিকার আর সৌন্দর্য বলে কিছু নেই। ফুল- ফলের গাছ সব তুলে ফেলে দিয়েছে। এদিকে ওদিকে কেবল রক্তের ধারা প্রবাহিত হচ্ছে। বহু রাক্ষস প্রান হারিয়েছে। কিছু রাক্ষস যন্ত্রনায় ছটফট করছে । অক্ষয় কুমার বলল- “ওহে মর্কট! তোমার এত দুঃসাহস? রোস ! আজ তোর প্রান নিয়ে তবেই ক্ষান্ত হবো। দেবতারা অবধি লঙ্কায় আসতে সাহস করে না- আর তুই বনের পশু হয়ে এই সাহস দেখালি? আজকেই তোর অন্তিম দিন।” বিড়ালাক্ষ, শার্দূল , ধুম্র আদি রাক্ষসেরা রাক্ষস সেনা পরিবৃত হয়ে হৈহৈ করে হনুমানের দিকে ধাইলো। হনুমান বড় বড় পাথর, শাল- তাল বৃক্ষ তুলে রাক্ষসের পালে নিক্ষেপ করলো। রাক্ষসেরা চাপা মরে মরল। রাক্ষসদের নিক্ষেপিত অস্ত্রে হনুমানের কোন ক্ষতিই হল না। কিছু রাক্ষসকে তুলে অনেক উচুতে ছুড়ে ফেলল, কিছু রাক্ষসকে পদদলিত করে পিষে দিলো। একসাথে শত রাক্ষসকে লাঙুরে পেঁচিয়ে ভূমিতে আছাড় মেরে খুলি চূর্ণ করে দিলো হনুমান ।
বিড়ালাক্ষ রাক্ষসের ওপর বিশাল পর্বতের চূড়া আকৃতি প্রস্তর নিক্ষেপ করলো মারুতি । মারুতির নিক্ষেপিত প্রস্তরে বিড়ালাক্ষের মস্তক পিষে সমস্ত অস্তি, মাংস, শিরা সকল বাহিরে চলে আসলো। বিড়ালাক্ষের নিথর দেহ পতিত হতেই দাঁত কড়মড় করে শার্দূল , ধুম্র রাক্ষসেরা ছুটে এলো । পট্টিশ , লৌহকাটা, বর্শা, তীক্ষ্ণ ছোড়া, তীক্ষ্ণ শর সকল হনুমানের দিকে নিক্ষেপ করতে লাগলো । হনুমান গদা দিয়ে সেই সকল অস্ত্র গুলি ছুড়ে ফেলে দিলো । হনুমান তখন গদা দিয়ে শার্দূল কে পিটিয়ে যমালয়ে পাঠালো। অক্ষয় কুমার অবাক হল এই দেখে যে এই সামান্য মর্কট বড় বড় রাক্ষসদের কিভাবে যমালয়ে প্রেরন করছে । এর শক্তি অনেক । ধুম্র রাক্ষস হনুমানের দিকে ধেয়ে যেতে হনুমান তখন বড় পাথর নিক্ষেপ করে তাঁর দেহটাকে পিষে দিলো । চার বড় বড় যোদ্ধা মারা গেছে দেখে বাকী রাক্ষস সেনারা কেউ আর অগ্রসর হতে সাহস করছিলো না। অক্ষয় কুমার ক্রোধে রথে উঠে হনুমানের দিকে অগ্নিবাণ নিক্ষেপ করলো। হনুমান লম্ফ দিয়ে গগনে উঠলো। অগ্নিবাণের কোন প্রভাব হনুমানের ওপর খাটলোই না । এরপর হনুমান একটি প্রস্তর নিক্ষেপ করলো অক্ষয়কুমারের প্রতি ।অক্ষয়কুমার এক শরে প্রস্তর চূর্ণ করলো। হনুমানের দিকে নানা ঘাতক সকল বর্ষণ করতে লাগলো। বাণে বাণে ছেয়ে গেলো। কিন্তু হনুমানের কিছুই হয় না । এরপর হনুমান লম্ফ দিয়ে অক্ষয়কুমারের রথে এলো। হনুমান যত গতিতে লম্ফ দিয়ে অক্ষয়কুমারের রথে এসে পড়লো, রথ খানি সেই বেগ সহ্য করতে না পেরে টুকরো টুকরো হল। এরপর হনুমান “জয় শ্রী রাম” ধ্বনি তুলে অক্ষয় কুমার কে তুলে ভূমিতে আছাড় দিলো। রাবণের পুত্র অক্ষয়কুমারের অস্থি , মস্তক চূর্ণ হয়ে নিহত হল। রাবণের পুত্র মারা গেছে শুনে লঙ্কায় শোরগোল পড়ে গেলো।
( ক্রমশঃ )
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন