কূর্ম্ম পুরাণে উল্লিখিত আছে, ঋষি মুনিরা কূর্মরূপী ভগবানকে প্রশ্ন করেছিলেন- “যে শিবশক্তি প্রথমে দাক্ষায়ণী সতী হইয়া পরে হিমালয়সুতারূপে জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন , সেই ভগবতী শঙ্করার্দ্ধশরীরিণী কে? আপনি যথাবৃন্তান্ত আমাদের বলুন।”
ভগবান কূর্ম বলছেন-
যা সা মাহেশ্বরী শক্তির্জ্ঞানরূপাতিলালসা ।
শিবা সর্ব্বগতানন্তা গুণাতীতানিষ্কলা ।
একানেকবিভাগস্থা জ্ঞানরূপাতিলালসা ।।
অনন্যা নিস্কলে তত্ত্বে সংস্থিতা তস্য তেজসা ।
স্বাভাবিকী চ তন্মূলা প্রভা তানোরিবামলা ।।
একা মাহেশ্বরী শক্তিরনেকোপাধযোগতঃ ।
পরাবরেণ রূপেণ ক্রীড়তে তস্য সন্নিধৌ ।।
সেয়ং করোতি সকলং তস্যাঃ কার্য্যমিদং জগৎ ।
ন কার্য্যং নাপি করণমীশ্বরস্যেতি সুরয়ঃ ।।
চতস্রঃ শক্তয়ো দেব্যাঃ স্বরূপত্বেন সস্থিতাঃ ।
অধিষ্ঠানবশাৎ তস্যাঃ শৃণুধ্বং মুনিপুঙ্গবাঃ ।।
শান্তির্বিদ্যা প্রতিষ্ঠা চনিবৃত্তিশ্চেতি তাঃস্মৃতাঃ ।
চতুর্বহস্ততো দেবঃ প্রোচ্যতে পরমেশ্বরঃ ।।
অনয়া পরয়া দেবঃ স্বাত্মানন্দং সমশ্ন্যুতে ।
চতুর্ষ্বপি চ বেদেষু চতুর্বৃত্তির্মহেশ্বরঃ ।।
অস্যাস্ত্বনাদিসংসিদ্ধমৈশ্বর্য্যমতুলং মহৎ ।
তৎসম্বন্ধাদনন্তা সা রুদ্রেণ পরমাত্মনা ।।
সৈষা সর্ব্বেশ্বরী দেবী সর্ব্বভূতপ্রবর্ত্তিকা ।
প্রোচ্যতে ভগবান্ কালো হরিপ্রাণো মহেশ্বরঃ ।।
( কূর্ম্মপুরাণ/ পূর্বভাগ/ দ্বাদশ অধ্যায়/ ৬-১৫)
অর্থাৎ- ভগবান কূর্ম বলছেন, যিনি সেই জ্ঞানস্বরূপা ব্যোমসংজ্ঞা মাহেশ্বরী শক্তি , তাঁহাকেই এই হৈমবতী বলিয়া জানিবে । তিনি শিবা, সর্ব পদার্থে সম্যকরূপে অবস্থিতা, অন্তরহিতা গুণাতীতা , নিরবয়বা , একা অথচ অনেক বিভাগরূপে সংস্থিতা, জ্ঞানরূপা, অতিলালসা, অদ্বিতীয়া , ব্রহ্মতেজোরূপে পরব্রহ্মে সংস্থিতা , সূর্য্যের অমলপ্রভার ন্যায় তন্মুলা ও নিত্যা; সেই মাহেশ্বরী শক্তি একা হইয়াও উপাধিযোগে অনেকা । তিনি পরাবররূপে মহাদেবের সন্নিধানে ক্রীড়া করিতেছেন । সেই দেবীই এই সকল করিতেছেন এই জগত তাহারই কার্য্য ; পণ্ডিতেরা বলেন ঈশ্বরের কোন কার্য্য বা করণ নাই । হে মুনিপুঙ্গবগণ ! সেই দেবীর অধিষ্ঠান বশে স্বরূপত্বরূপে সংস্থিতা চারিটি শক্তি আছে । সেই হেতু দেব পরমেশ্বর চতুর্ব্যুহ বলিয়া বিখ্যাত । পরমেশ্বর এই প্রধানা দেবীর সহিতই স্বীয় আত্মানন্দ অনুভব করিয়া থাকেন । মহাদেব চারিবেদে চারিরূপে অবস্থিত । এই দেবীর যে মহৎ অতুল ঐশ্বর্য্য , তাহা অনাদি বলিয়া সংসিদ্ধ । সেই হেতু পরমাত্মা রুদ্রের যোগে ইনি অনন্তা নামে অভিহিতা । সেই এই দেবীই সর্ব্বভূতপ্রবর্ত্তিকা ও সকলের ঈশ্বরী এবং হরির প্রাণ মহেশ্বর সর্বভূতের কাল বলে কথিত হন।
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন