আজ থেকে সহস্রাধিক বৎসর পূর্বে ভগবৎপাদ শঙ্কর আচার্য যখন দিগবিজয়ে বেরিয়ে সনাতন হিন্দু ধর্মের বিজয় পতাকা ভারতের নানা প্রান্তে উড্ডীন করছেন, সেই সময় তিনি বেশ কয়েক বার বিরুদ্ধবাদীদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিলেন। একবার দক্ষিণ ভারতের শ্রী শৈলম তীর্থে শঙ্কর এক দুষ্ট কাপালিকের কবলে পড়েন। কাপালিক তাঁকে বলি দেয়ার চেষ্টায় ছিল। শঙ্কর তা বুঝেও নির্বিকার ভাবে ভগবৎ চিন্তায় মগ্ন ছিলেন। এইসময় সহসা শঙ্করের অন্যতম শিষ্য ও পদ্মপাদ সেখানে উগ্র মূর্তিতে প্রবেশ করেন ও গর্জন করতে করতে বলির খাঁড়া দিয়ে কাপালিক কে বধ করেন। পরে প্রকিতস্থ হলে তিনি শঙ্করকে জানান যে ছোট বেলা থেকেই পদ্মপাদ নরসিংহ ভক্ত। একবার প্রভু পদ্মপাদকে দেখা দিয়ে বলেছিলেন যে ভয়ানক বিপদ কালে তিনি আবির্ভূত হয়ে তাঁকে রক্ষা করবেন। বাস্তবেও তাই হল। নরসিংহ ভগবান পদ্মপাদের শরীরে আবিষ্ট হয়ে দুষ্ট দমন করলেন। এরপরই আদি শংকর তাঁর প্রসিদ্ধ শ্রীশ্রীলক্ষ্মী-নরসিংহ স্তোত্রটি রচনা করেন। ভারত ও হিন্দু ধর্ম তার ফলে আচার্য শঙ্কর কে আরও অনেক দিন জীবিত ভাবে পেল এবং অগ্র গতির দিকে এইভাবে আর -ও এগিয়ে গেল।
সাম্প্রতিক অতীতে এ সি ভক্তি বেদান্ত দ্বারা " আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সঙ্ঘ " বা " ইস্কন " স্থাপিত হবার পর যখন নানারকম প্রতিকূলতার মধ্যে পড়েছিল,বিশেষ করে যখন মায়াপুর মূল কেন্দ্রে বার বার ডাকাতের হামলা হচ্ছিল, সেই সময় ইস্কনের পরিচালক গন শ্রীশ্রীনরসিংহ ভগবানের উপাসনা করতে মনস্থ করেন।
সারাজগতে কৃষ্ণনাম প্রচার করাই ইসকনের লক্ষ্য। যদিও কলিযুগের যুগধর্ম হরিনাম সংকীর্তন এবং জগৎমঙ্গলকর পন্থা হল কৃষ্ণভক্তি অনুশীলন, তবুও কলিযুগের আসুরিক মানুষরা কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলনের বিরোধী। তারা চায় কৃষ্ণনাম প্রচার বন্ধ করে দিতে। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু যখন কৃষ্ণনাম সংকীর্তন প্রবর্তন করলেন, তখন নবদ্বীপে স্মার্ত ব্রাহ্মণেরা শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে নবদ্বীপে হরিনাম বন্ধ করার জন্য তৎকালীন নদীয়ার শাসনকর্তা চাঁদ কাজীর কাছে আবেদন পেশ করেছিলেন। চাঁদ কাজীও গুন্ডা পাঠিয়ে মায়াপুরের শ্রীবাস অঙ্গনে সংকীর্তনকারী ভক্তদের উৎপীড়ন করতে লাগলেন তারপর নাগরা পিটিয়ে হরিনাম সংকীর্তন বন্ধের ঘোষণা জারি হয়েছিল। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু ও নিত্যান্দ প্রভু সেই সংবাদ পেয়ে চাঁদ কাজী সরকারের বিরুদ্ধে আইন অমান্য আন্দোলন শুরু করলেন। লক্ষ লক্ষ লোক মশাল জ্বালিয়ে হরিনাম করতে করতে চাঁদ কাজীর প্রাসাদে এসে পৌঁছলেন। চাঁদ কাজী ভয়ে লুকিয়ে ছিলেছিলেন। পরে পরিস্থিতি শান্ত হলে, তিনি বেরিয়ে এসে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর সমাদর করলেন। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু কাজীকে যখন প্রশ্ন করলেন, আপনার নির্দেশ অমান্য করে ভক্তরা হরিনাম করছে,আর আপনি কেন কিছুই প্রতিবাদ করছেন না ? ' উত্তরে চাঁদ কাজী মহাপ্র্রভুকে বলেন, ' নিমাই, তোমাদের হরিনামে আমি আর কখনই বাধা দেবো না। কেননা আমি ভয়ে ভীত হয়ে ঘুমাতে পারিনি। এক দেবতা- যার মুখ সিংহের মতো, শরীরটা মানুষের মতো। তার হাতে ছিল বড় বড় নখ। সে আমার বুকে নখের আচড় লাগিয়ে ধমক দিয়ে বলল ' , "ভক্তদের সংকীর্তন যদি বনধ করিস্ তবে তোর নিপাত করব।" তারপর সে অদৃশ্য হয়ে যায়। তার নখের দাগ এখনো বুকে রয়েছে।'
সবাই বুঝলেন, ভক্তদের রক্ষার জন্য ভগবান নৃসিংহদেব, যিনি অত্যাচরী অসুর হিরণ্যকশিপুর কবল থেকে ভক্ত প্রহ্লাদকে রক্ষা করেছিলেন, তিনিই চাঁদ কাজীকে সাবধানবাণী শুনিয়েছেন।
কলিযুগের আসুরিক লোকদের উৎপাত থেকে ভগবানের যে অবতার সর্বদা জাগ্রত হয়ে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ পূর্বক ভক্তদের রক্ষা করেন, তিনি হচ্ছেন শ্রীনৃসিংহদেব।
১৯৮৪ খৃষ্টাব্দের ২৪শে মার্চ রাত দুপুরে গোলাবারুদ ও অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে শ্রীধাম মায়াপুর ইসকন মন্দির আক্রমণ করেছিল ৩৫ জন ডাকাত। প্রভুপাদের বিগ্রহ ও রাধারাণীর বিগ্রহ তারা অপহরণ করে। মন্দিরের আর্তক্রন্দনময় বিভীষিকা ভক্তদের মর্মাহত করেছিল। কাঞ্চীর শঙ্কর আচার্য পূজ্যপাদ জয়েন্দ্র সরস্বতীর পরামর্শ ক্রমে শ্রীশ্রীনরসিংহ ভগবান মায়াপুরে স্থাপিত হন ।এর পর থেকে ইস্কনের সঙ্কট দূর হতে থাকে ও আরও অগ্র গতি হতে থাকে । জিবিসি পক্ষ থেকে সমাধান কল্পে শ্রীমায়াপুর ইসকন মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত হলেন শ্রীশ্রী উগ্রনৃসিংহদেব। সময়টি ছিল ১৯৮৬ খৃষ্টাব্দের জুলাইয়ের শেষ দিক।
শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য মহাপ্রভুর হরে কৃষ্ণ আন্দোলনে ভক্তদের সারা পৃথিবীতে বিভিন্ন প্রান্তে আসুরিক শক্তির সঙ্গে মোকাবিলা করতে হয়। আসুরিক শক্তির কাজটিই হল ভক্তদের উৎপীড়ন করা এবং হরিনাম প্রচার বনধ করা। সর্বত্রই ভক্তিবিঘ্ন বিনাশক শ্রীনৃসিংহদেবই সুরক্ষা দান করেন।
এই ঘটনাটি আরও তাৎপর্য পূর্ণ এই কারনে যে, শ্রীশ্রীনরসিংহ ভগবানের বিগ্রহ স্থাপনের পূর্বে শ্রীকৃষ্ণ ভিন্ন অন্য দেবতা মূল মন্দিরে পূজিত হতেন না।হয়ত সংস্থার পরিচালক গন শ্রীকৃষ্ণ ভিন্ন অন্য দেবতাদের দাস/দাসী জ্ঞান করে অন্য দেবগনের উপাসনা করায় উৎসাহ দিতেন না। কিন্তু বিপদ সৃষ্টি করে , শ্রীশ্রীভগবান নরসিংহ (তন্ত্রের বিচারে যিনি সাক্ষাৎ ভৈরব বা শিব) দেবের পূজা করিয়ে,গোঁড়ামি মুক্ত সনাতন হিন্দুত্বের ঐক্যবদ্ধ বিরাটত্বের বাণী আমাদের সকলকে শিখিয়েছেন।
মায়াপুর ইসকন মন্দিরে শ্রীনৃসিংহদেব বিগ্রহ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরে পরেই বহু শালগ্রাম শিলাও উপস্থিত হয়েছে। সবচেয়ে বড় শিলা নৃসিংহ শিলা, তারপরে দশ অবতার সহ বহু অসংখ্য অবতারের শিলাও অর্চিত হচ্ছে। সমস্ত অবতারেরই পূজা-অর্চনা হলেও প্রায় ক্ষেত্রে নৃসিংহদেবের প্রকাশ প্রভাবটাই বেশী দেখা যায় সেজন্য সব মন্দিরে ভক্তরা নৃসিংহ প্রার্থনাই নিত্য গীত করে থাকেন।
জয়নৃসিংহশ্রীনৃসিংহ।
জয়জয়জয়শ্রীনৃসিংহ।।
শ্রীশ্রীনৃসিংহের ধ্যান মন্ত্র :-
ওঁ মাণিক্যাদ্রিসমপ্রভং নিজরুচা সন্ত্রস্তরক্ষোগণং,
জানুন্যস্তকরাম্বুজং ত্রিনয়নং রত্নোল্পসদ্ভূষণম্ ।
বাহুভ্যাং ধৃতশঙ্খচক্রমনিশং
দংষ্ট্রোগ্রবক্ত্রোল্পসজ্জ্বালাজিহ্বমুদারকেশরচয়ং বন্দে নৃসিংহং বিভূম্।।
শ্রীশ্রীনৃসিংহের মন্ত্র :-
ওঁ উগ্রং বীরং মহাবিষ্ণুং জ্বলন্তং সর্বতোমুখম্।
নৃসিংহং ভীষণং ভদ্রং মৃত্যোর্মৃত্যুংনমাম্যহম্।।
শ্রীশ্রীনৃসিংহ-গায়ত্রী মন্ত্র: -
ওঁ বজ্রনখায় বিদ্মহে তীক্ষ্ণদংষ্ট্রায় ধীমহি।
তন্নো নরসিংহ প্রচোদয়াৎ।।
ওঁ গুহ্যাতিগুহ্যগোপ্তী ত্বং গৃহাণাস্মৎকৃতং জপম্।
সিদ্ধির্ভবতু মে দেব ত্বৎপ্রসাদাৎ জনার্দ্দন ।
শ্রীনৃসিংহ, জয়নৃসিংহ, জয়জয়নৃসিংহ।।
প্রহ্লাদেশজয়পদ্মমুখপদ্মভৃঙ্গ।।
নমস্তেনরসিংহায়প্রহ্লাদাহ্লাদ-দায়িনে।
হিরন্যকশিপোর্বক্ষঃশিলাটঙ্কনখালয়ে।।
ইতোনৃসিংহঃপরতোনৃসিংহো
যতোযতোযামিততোনৃসিংহ।
বর্হিনৃসিংহোহৃদয়েনৃসিংহো
নৃসিংহমাদিংশরণংপ্রপদ্যে।।
তবকরকমলবরেনখমদ্ভূতশৃঙ্গং
দলিতহিরন্যকশিপুতনুভৃঙ্গম্।
কেশবধৃত-নরহরিরূপজয়জগদীশহরে।।
ভগবান শ্রীনৃসিংহদেবের আবির্ভাব তিথি কি !!! জয়
ভগবান শ্রীনৃসিংহদেব কি !!! জয়
শুদ্ধ ভক্ত প্রহল্লাদ মহারাজ কি !!! জয়
ওঁ ইতঃ পূর্ব্বং প্রাণবুদ্ধি দেহধর্ম্মাধিকারতো জাগ্রৎস্বপ্নসুষুপ্ত্যবস্থাসু মনসা বাচা হস্তাভ্যং পদ্ভ্যামুদরেণ শিশ্মা যৎ স্মৃতং যদুক্তং যৎ কৃতং তৎসর্ব্বং ব্রহ্মার্পণং ভবতু স্বাহা,
মাং মদীয়ং সকলং সম গশ্রীশ্রীনৃসিংহদেবতায়ৈ সমর্পয়ামি ওঁ তৎ সং।
ওঁ বিষ্ণু ওঁ বিষ্ণু ওঁ বিষ্ণু
ওঁ বিষ্ণু ওঁ বিষ্ণু ওঁ বিষ্ণু
ওঁ বিষ্ণু ওঁ বিষ্ণু ওঁ বিষ্ণু
ওঁ বিষ্ণু
ওঁ ঋচং বাচং প্রপদ্যে মনো যজূঃ প্রপদ্যে সাম প্রাণং প্রপদ্যে চক্ষুঃশ্রোত্রং প্রপদ্যে বাগৌজঃ সহৌজ ময়ি প্রাণাপানৌ।
ওঁ ষন্মে ছিদ্রং চক্ষুষোর্হৃদয়স্য মনসো বাতিতৃণ্নং বৃহস্পতিতে তদ্দধাতু।
শন্নো ভবতু ভুবনস্য যস্পতিঃ।।
ওঁ স্বস্তি ন ইন্দ্রো বৃদ্ধশ্রবাঃ স্বস্তি নঃ পূষা বিশ্ববেদাঃ।
স্বস্তি নস্তাক্ষ্যো অরিষ্টনেমিঃ স্বস্তি নো বৃহস্পতির্দ্দাধাতু।।
ওঁ স্বস্তি ওঁ স্বস্তি ওঁ স্বস্তি।।
জয় শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ শ্রীঅদ্বৈত গদাধর শ্রীবাসাদি গৌর ভক্তবৃন্দ -
হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে, হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।।
হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে, হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।।
হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে, হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।।
ACHARYA KUSH MUKHERJEE
RAMPURHAT CHAKLAMATH BIRBHUM (W.B)
PIN NO 731224
GOLD MEDALIST
WHATSAPP NO 9233172388
CONTACT NO 7001608953
ONLINE PORISEVA DEWA HOI rs 1000/=
MY PAGE NAME IS ASTRO-PALMIST-NEUMEROLOGY CENTER
PLEASE LIKE&SARE
Contact with me :www.apnc.co.in
https://m.facebook.com/Astro-Palmist-Neumerology-Center-1569956439973629/?ref=bookmarks
Blog Url: https://apnc.co.in/blog.php?blog=20180430075422
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন