নমশূদ্র সমাজ উচ্চবর্ণের হিন্দুর নিকট অবহেলিত , ঘৃণিত উপেক্ষিত । এরা ছিল অত্যন্ত সাহসী ও বীরভাবাপন্ন । চাষবাসে দক্ষ, লাঠি , ঢাল, সড়কী খেলায় ওস্তাদ । স্বামী প্রণবানন্দ ব্রহ্মচারী সেই নমশূদ্র শ্রেনীকে বিরাট হিন্দুসমাজের সঙ্গে মিলিয়ে মিশিয়ে তাদেরকে আমন্ত্রণ করে নানাভাবে উৎসাহিত করতে লাগলেন। সর্বসাধারণের সহিত এক লাইনে বসিয়ে খাওয়ানো, যাত্রাগান শিক্ষা, কৃষ্ণলীলা , বিভিন্ন পৌরাণিক যাত্রার বই তাদের মধ্যে প্রচলণ করে তাদেরকে হিন্দুভাবে অনুপ্রাণিত করতে লাগলেন । নৌকা বাওয়া, ঢাল সড়কী খেলার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তাদের মধ্যে বীরত্বের ভাব জাগিয়ে তুলতে লাগলেন । সন্ন্যাসী ব্রহ্মচারীগণকে তাদের বাড়ী পাঠাতেন । ব্রহ্মচারী দিগদের মধ্যে কেহ কেহ পূর্ব সংস্কার বশত আপত্তির সুরে বলতেন যে, “নমশূদ্রদের বাড়িতে কি যাওয়া যায় ? ওখানে কি খাওয়া যায় ? কি করে রুচী হবে ইত্যাদি।”
তখন পতিত পাবন শ্রীঠাকুর কম্বুকণ্ঠে গর্জন করে উঠতেন। বলতেন- “কেন ওরা কি মানুষ না ? ওরা কি কারো থেকে পরিষ্কার কম থাকে ? উচ্চবর্ণের হিন্দু থেকেও সর্ববিষয়ে নিষ্ঠা সম্পন্ন ওরা । আমি নিজে ওদের হাতে খাই । ওদের ঘৃণা করবার কি আছে ? এত বড় একটা নমশূদ্র সমাজকে আমরা এই হিন্দুসমাজ থেকে বাদ দিয়ে চলব ? এ আমাদের সমাজের মহাপাপ । এতবড় একটা ক্ষত্রিয় জাতিকে বাদ দিয়ে হিন্দুসমাজ দাঁড়াবে কোথায় ? মানুষ মানুষকে ঘৃণা করবার কি আছে ? বড় যে, সে যদি ছোটকে তার দোষ ত্রুটি উপেক্ষা করে তাকে সৎ আচার বিচার শিক্ষা দিয়ে উঠিয়ে নিতে না পারল তবে বড়র মহত্ত্ব কোথায় ? শুধু বড় বলিলেই কি সে বড় হয়ে যায় ? তার গুণ থাকা চাই। আমি কি কাহাকেও ভুল পথ দেখাতে পারি ? আমি আজ যে পথ দেখাচ্ছি তাই-ই অভ্রান্ত পথ । সময় হইলে তখন নিজেরা বুঝবে, ভবিষ্যতে গুরুতর বিপদ আসছে। যার জ্ঞান আছে সে বুঝবে।”
শ্রীশ্রী আচার্যদেবের দর্শনে এসে নমশূদ্র সর্দারগণ তাঁকে প্রণাম করলে তিনি তাদের সকলকে বসতে আদেশ করলেন । এত স্নেহ, ভালোবাসা, এমন প্রাণ জুড়ানো মধুর বাণী তারা যেন কোথাও পায়নি । শুধু উচ্চবর্ণের হিন্দুর কাছে কেন, এমন আদর দরদ তারা জীবনে কখনও অনুভব করেনি কোথাও । তখন লীগ মন্ত্রীসভার শাসন । সবদিক দিয়ে হিন্দুরা কোণঠাসা । যুক্তবাংলার সেদিন সর্বত্র হিন্দুরা নির্যাতিত। লীগ নমশূদ্র নেতাকে মন্ত্রীসভায় এনে নমশূদ্র সম্প্রদায়ের মনোবল আকর্ষণ করিতেছে । পতিতপাবন শ্রীঠাকুর সেদিন হিন্দুসমাজকে এই ঘোরতর বিপদ হতে উদ্ধার করলেন। উচ্চবর্ণের মধ্যে একসময় রব উঠেছিল যে “আচার্য স্বামী প্রণবানন্দজী উচ্চবর্ণের হিন্দু ও নমশূদ্রদের একত্রে বসিয়ে জাতিচ্যুত করেছেন।” পরে যখন উচ্চবর্ণের হিন্দুরা তাঁর আন্দোলনের উদ্দেশ্য ও ভাব বুঝতে পারল তখন সেই ক্ষণিকের গুঞ্জন ধীরে ধীরে মিলিয়ে গেল ।
( শ্রীশ্রীঠাকুরের ভাবমধুর লীলাপ্রসঙ্গ- স্বামী অরূপানন্দ )
তখন পতিত পাবন শ্রীঠাকুর কম্বুকণ্ঠে গর্জন করে উঠতেন। বলতেন- “কেন ওরা কি মানুষ না ? ওরা কি কারো থেকে পরিষ্কার কম থাকে ? উচ্চবর্ণের হিন্দু থেকেও সর্ববিষয়ে নিষ্ঠা সম্পন্ন ওরা । আমি নিজে ওদের হাতে খাই । ওদের ঘৃণা করবার কি আছে ? এত বড় একটা নমশূদ্র সমাজকে আমরা এই হিন্দুসমাজ থেকে বাদ দিয়ে চলব ? এ আমাদের সমাজের মহাপাপ । এতবড় একটা ক্ষত্রিয় জাতিকে বাদ দিয়ে হিন্দুসমাজ দাঁড়াবে কোথায় ? মানুষ মানুষকে ঘৃণা করবার কি আছে ? বড় যে, সে যদি ছোটকে তার দোষ ত্রুটি উপেক্ষা করে তাকে সৎ আচার বিচার শিক্ষা দিয়ে উঠিয়ে নিতে না পারল তবে বড়র মহত্ত্ব কোথায় ? শুধু বড় বলিলেই কি সে বড় হয়ে যায় ? তার গুণ থাকা চাই। আমি কি কাহাকেও ভুল পথ দেখাতে পারি ? আমি আজ যে পথ দেখাচ্ছি তাই-ই অভ্রান্ত পথ । সময় হইলে তখন নিজেরা বুঝবে, ভবিষ্যতে গুরুতর বিপদ আসছে। যার জ্ঞান আছে সে বুঝবে।”
শ্রীশ্রী আচার্যদেবের দর্শনে এসে নমশূদ্র সর্দারগণ তাঁকে প্রণাম করলে তিনি তাদের সকলকে বসতে আদেশ করলেন । এত স্নেহ, ভালোবাসা, এমন প্রাণ জুড়ানো মধুর বাণী তারা যেন কোথাও পায়নি । শুধু উচ্চবর্ণের হিন্দুর কাছে কেন, এমন আদর দরদ তারা জীবনে কখনও অনুভব করেনি কোথাও । তখন লীগ মন্ত্রীসভার শাসন । সবদিক দিয়ে হিন্দুরা কোণঠাসা । যুক্তবাংলার সেদিন সর্বত্র হিন্দুরা নির্যাতিত। লীগ নমশূদ্র নেতাকে মন্ত্রীসভায় এনে নমশূদ্র সম্প্রদায়ের মনোবল আকর্ষণ করিতেছে । পতিতপাবন শ্রীঠাকুর সেদিন হিন্দুসমাজকে এই ঘোরতর বিপদ হতে উদ্ধার করলেন। উচ্চবর্ণের মধ্যে একসময় রব উঠেছিল যে “আচার্য স্বামী প্রণবানন্দজী উচ্চবর্ণের হিন্দু ও নমশূদ্রদের একত্রে বসিয়ে জাতিচ্যুত করেছেন।” পরে যখন উচ্চবর্ণের হিন্দুরা তাঁর আন্দোলনের উদ্দেশ্য ও ভাব বুঝতে পারল তখন সেই ক্ষণিকের গুঞ্জন ধীরে ধীরে মিলিয়ে গেল ।
( শ্রীশ্রীঠাকুরের ভাবমধুর লীলাপ্রসঙ্গ- স্বামী অরূপানন্দ )
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন