
৩১ অক্টোবর ২০১৭
গুরু ও শিষ্যের লক্ষণ

গুরু চিনব কি করে???সূর্যকে প্রকাশ করতে মশালের প্রয়োজন হয় না।সূর্যকে দেখার জন্য আর বাতি জ্বালতে হয় না।সূর্য উঠলে আমরা স্বভাবতই জানতে পারি যে সূর্য উঠেছে।এইরূপ আমাদেরকে সাহায্য করার জন্য লোকগুরুর আবির্ভাব হলে আত্মা স্বভাবতই জানতে পারে যে,তার উপর সত্যের সূর্যালোকপাত শুরু হয়েছে।সত্য...
গুরুর প্রয়োজনীয়তা

জীবাত্নামাত্রেই পূর্ণতা লাভ করিবেই করিবে-শেষ পর্যন্ত সকলেই সিদ্ধাবস্থা লাভ করিবে।আমরা এখন যাহা হইয়াছি,তাহা আমাদের অতীত কার্য ও চিন্তারাশির ফলস্বরূপ।আর ভবিষ্যতে যাহা হইব,তাহা বর্তমানে যেরূপ চিন্তা ও কার্য করিতেছি,তাহার ফলস্বরূপ হইবে।কিন্তু আমরা নিজেরাই নিজেদের অদৃষ্ট গঠন করিতেছি...
২৫ অক্টোবর ২০১৭
ভগবান আর ভগবানের নাম জপের মাহাত্ম্য কি ভিন্ন - না একই ?

যে বস্তুর নাম গুড় , তার সেই নামে গুড় নামক বস্তুর অভাব আছে অর্থাৎ গুড়ের নামটির মধ্যে গুড় নেই । যতক্ষণ রসনেন্দ্রিয় বা জিভের সঙ্গে সম্বন্ধ না করা হচ্ছে ততক্ষণ মুখ মিষ্টতা লাভ করে না , কেননা জিভে গুড় নেই । ঠিক এইরকম ধনীর নাম নিলে ধন প্রাপ্ত হয় না । কেননা ধনী নামটির...
শ্রীভগবানের অবতারবাদ

সর্বাগমেষু যে প্রোক্তা অবতারা জগৎপ্রভোঃ ।তদ্রহস্যং হি গীতায়াং কৃষ্ণেন কথিতং স্বয়ম্ ।।যিনি নিজ স্থিতি থেকে নিম্নে অবতরণ করেন তাঁকে ' অবতার ' বলা হয় । যেমন কোন শিক্ষক কোন বালককে পড়াবার সময় তার সমক্ষক হয়ে পড়াতে থাকেন অর্থাৎ তিনি নিজে ' ক খ গ ঘ ইত্যাদি অক্ষর...
বর্তমানে ধর্ম লোপ পাচ্ছে এবং অধর্ম বেড়ে যাচ্ছে এবং উন্নতমনা পুরুষেরাও দুঃখ পাচ্ছেন , তবুও ভগবান কেন অবতাররূপে জন্মগ্রহণ করছেন না ?

এখনও ভগবানের অবতরণের সময় হয় নি । কারণ শাস্ত্রে , কলিযুগে যেরূপ অধঃপতনের কথা বলা হয়েছে , তার থেকেও বেশি অধঃপতন যদি হয় তবেই ভগবান অবতার-দেহ ধারণ করবেন । এখনও সেই সময় হয় নি । ত্রেতাযুগে রাক্ষসেরা ঋষি-মুনিদের মেরে খেয়ে হাড়ের পাহাড় তৈরী করেছিল , তবেই ভগবান...
গীতায় আশ্রয়ের বর্ণনা

জীবমাত্রেরই স্বভাব হচ্ছে যে সে কারো না কারো আশ্রয় গ্রহণ করতে চায় এবং আশ্রিত থাকে । মনুষ্য ,পশু , পক্ষী , বৃক্ষ , লতা ইত্যাদি সমস্তই কারো না করো আশ্রয় গ্রহণ করে থাকে , কারণ জীবমাত্রই সাক্ষাৎ পরমাত্মার অংশ । তারই জন্য জীব যতক্ষণ নিজ অংশী পরমাত্মার আশ্রয় গ্রহণ...
নামতো কেবলমাত্র শব্দ , তার দ্বারা কী কার্য সিদ্ধ হবে ?

সাধারণভাবেও শব্দমাত্রে অচিন্ত্য শক্তি আছে এবং নামে ভগবানের সঙ্গে সম্বন্ধ তৈরি করার এক বিশেষ ক্ষমতা আছে অতএব ভগবানের নাম যে কোন প্রকারেই নেওয়া হোন না কেন , তার দ্বারা মঙ্গলই হয় । যে বিশেষ ভাবসহ নাম জপ করে তার খুব শীঘ্রই লাভ হয় ।নামজপের সময় যদি ভাব কম হয় তাহলেও...
গীতায় এক প্রত্যয়ের মহিমা

জীবাত্মায় এক অংশে পরমাত্মা অপর অংশে প্রকৃতির অধিষ্ঠান । জীবাত্মা যখন পরমাত্মার দিকে অগ্রসর হয় , তখন তার মধ্যে নিশ্চয়াত্মিকা বুদ্ধি আসে আর যখন সে প্রকৃতির অংশ শরীর ও সংসারের দিকে চালিত হয় , তখন তার বুদ্ধি বহু দিকে ধাবিত হয় , তার অব্যবসায়াত্মিকা বুদ্ধি...
ভক্তেরা ভগবানকে যে ভোগ অর্পন করেন , তা যে ভগবান গ্রহণ করেন তার প্রমাণ কি ?

ভগবানের রাজত্বে বস্তুর প্রাধান্য নেই , আছে ভাবের প্রাধান্য । ভাবের জন্যই ভগবান ভক্ত-অর্পিত বস্তু এবং পূজাদি ক্রিয়াকর্ম স্বীকার করেন । ভক্তের যদি ভাব হয় ভগবানকে খাওয়াবার তখন ভগবানেরও খিদে পায় এবং তিনি প্রকট হয়ে ভোজন করেন । ভক্তের ভাব বা ভালোবাসাতে ভগবান...
চূড়ালার কাহিনী

পৌরাণিক সাহিত্যে আমরা দেখতে পাই , দুইজন মহীয়সী নারী অতুল বৈভরের মধ্যে জীবনযাপন করেও ব্রহ্মজ্ঞান লাভ করেছিলেন । একজন ঋতধ্বজ রাজার পত্নী মদালসা , আর একজন মালবরাজ শিখিধ্বজের পত্নী চূড়ালা । গৃহসংসারের সহস্র প্রলোভনের মধ্যে থেকেও অবিচলিতভাবে আধ্যাত্মিক সাধনা...
আমাদের কি ত্যাগ করতে হবে এবং কার শরণাগত হব ?

' যদহঙ্কারমাশ্রিত্য ' - প্রকৃতি থেকে মহত্তত্ত্ব এবং মহত্তত্ত্ব থেকে অহংকার উৎপন্ন হয়েছে । সেই অহংকারেরই এক বিকৃত অংশ - ' আমি শরীর ' এই ভাব । এই বিকৃত অহংকারের আশ্রয় গ্রহণকারী পুরুষ কখনো ক্রিয়ারহিত হতে পারে না । কারণ প্রকৃতি সর্বদা ক্রিয়াশীল ও পরিবর্তনশীল...
গীতায় দৈবী এবং আসুরী সম্পদ্

দৈবী এবং আসুুরী - এই দুটি শব্দের মধ্যে ' দেব ' নাম দেবতাদের নয় , তা হলো পরমাত্মার , এবং ' অসুর ' নাম রাক্ষসদের নয় , তা আসলে প্রাণে রমণকারীদের নাম । গীতায় ' দেবদেব ' ( ১০\১৫ ) , ' দেবম্ ' ( ১১ \১১ , ১৪ ) , ' দেবদেবস্য ' ( ১১\১৩ ) , ' দেব ' ( ১১ \১৫ ) ইত্যাদি...
ভক্ত ও ভগবান

ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পরম ভক্ত শ্রুতিদেব বিদেহের রাজধানী মিথিলাতে বাস করতেন । গৃহস্থ ব্রাহ্মণ ভগবদ্ভক্তিতেই পূর্ণ , পরম শান্ত , জ্ঞানী ও বৈরাগ্যবান ছিলেন । তিনি কামনারহিত থেকে যা পেতেন তাতেই সন্তুষ্ট থাকতেন । প্রারব্ধানুসারে তিনি জীবন ধারণ নিমিত্ত সামগ্রী লাভ...
গজেন্দ্র মোক্ষণ লীলা

অযুত যোজন উচ্চ ত্রিকূট পর্বত অতীব রমণীয় স্থান ছিল । তার চারদিকে ছিল ক্ষীর সাগরের পরিবেষ্টন । বিশাল পর্বতমালায় তিনটি শৃঙ্গ তার অনুপম সৌন্দর্যের অঙ্গস্বরূপ ছিল । এই স্বর্ণময় , রৌপ্যময় ও লৌহময় তিনটি শৃঙ্গ , সমুদ্র , দিক্ সকল ও আকাশেও শোভামণ্ডিত করে রাখত । পর্বতমালা...
নৃগরাজ উপাখ্যান

দানবীরদের মধ্যে অগ্রগণ্য রাজা নৃগ মহারাজ ইক্ষ্বাকুর পুত্র ছিলেন । বলা হয়ে থাকে যে রাজা নৃগ কর্তৃক দান করা ধেনুর সংখ্যা পৃথিবীর ধূলিকণা ,আকাশের নক্ষত্র ও বর্ষার ধারার সমতুল্য ছিল । সৎ উপায়ে অর্জিত ধনসম্পত্তি দ্বারা তিনি তাঁর রাজত্বকালে এই দান করেছিলেন । দান...
আমাদের লক্ষ্য ও কর্তব্য - ( ১ )

মানুষকে সর্বশ্রেষ্ঠ প্রাণী বলা হয়ে থাকে , সে নিজেকে শ্রেষ্ঠ ভাবে , আর ভেবে দেখলে মনে হয় যে ভগবান মানুষের রচনায় বৈশিষ্ট্যও রেখেছেন । কিন্তু মানুষকে প্রকৃতভাবে তখনই শ্রেষ্ঠ বলা যায় যখন সে জীবনের প্রধান লক্ষ্যে স্থির থেকে নিজ কর্তব্য পালন করে । কিন্তু যখন আমরা...
আমাদের লক্ষ্য ও কর্তব্য ( পর্ব-০২ )

যে কেউ প্রশ্ন করতে পারে , বিষের প্রভাব তৎক্ষণাৎ দেখা যায় কিন্তু এর তো তেমন প্রভাব চোখে পড়ে না ?এর উত্তরে বলা যায় - বিষ বহু প্রকারের হয়ে থাকে । এমন বিষও হয়ে থাকে যার প্রভাব ধীরে ধীরে হয় কিন্তু তা অতি ভয়ংকর হয় । ঠিক তেমনই ভোগ হল ধীরে ধীরে প্রভাবিত করার এক ভয়ানক...
শ্রীরমা একাদশী মাহাত্ম্য

একসময় যুধিষ্ঠির মহারাজ শ্রীকৃষ্ণকে বললেন-হে জনার্দন! কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের একাদশীর নাম ও মাহাত্ম্য কৃপা করে আমায় বলুন।শ্রীকৃষ্ণ বললেন-হে রাজন! মহাপাপ দূরকারী সেই একাদশী ‘রমা’ নামে বিখ্যাত। আমি এখন এর মাহাত্ম্য বর্ণনা করছি, আপনি তা মনোযোগ সহকারে শ্রবণ করুন।পুরাকালে মুচুকুন্দ...