নদীতে অধিকতর বলবান কুমীর কতৃক আক্ৰান্ত গজেন্দ্ৰকে উদ্ধার করার কাহিনী শ্ৰীমদ্ভাগবতের অষ্টম স্কন্ধে বৰ্ণিত হয়েছে । যেহেতু ভগবান পরম - জ্ঞানস্বরপ , তাই তার দিব্য নাম এবং তার চিন্ময় স্বরপে কোন পাৰ্থক্য নেই । কুমীর কতৃক আক্ৰান্ত হয়ে গজেন্দ্ৰ অত্যন্ত পীড়িত হয়েছিল ।
সাধারণত হাতী যদিও কুমীরের থেকে অধিক শক্তিশালী কিন্তু জলে কুমীর হাতীর থেকে অধিক শক্তিশালী। গজেন্দ্ৰ পূৰ্ব্বজন্মে ভগবানের এক মহান ভক্ত ছিলেন , তাই তার পূর্বকৃত সুকৃতির প্রভাবে তিনি দিব্য নাম উচ্চারণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন । এবং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তাকে রক্ষা করেছিলেন
জড় জগতে প্রতিটি জীবই সর্বদা দুঃখ - দুৰ্দশায় পীড়িত, কেননা এই জগতটি এমনই যে প্ৰতি পদক্ষেপেই প্ৰত্যেককে কোন না কোন প্রকার দুঃখ কষ্ট ভোগ করতে হয় । কিন্তু কারো যদি পূর্বজন্মের সুকৃতি থাকে , তাহলে তিনি ভগবানের সেবায় যুক্ত হয়ে ভগবানের চিন্ময় আনন্দে এই ''দুঃখ্যালয়মশাশ্বতম'' জগতে অবস্থান করেন। সেকথা শ্ৰীমদ্ভগবদগীতায় প্ৰতিপন্ন হয়েছে,
''চতুর্বিধা ভজন্তে মাং জনাঃ সুকৃতিনোহর্জুন,
আর্তো জিজ্ঞাসুরর্থাথী জ্ঞানী চ ভরতর্ষভ''।। ৭/১৬
''অর্থাৎ হে ভরত শ্রেষ্ঠ অর্জুন, আর্ত, অর্থাথী, জিজ্ঞাসু এবং জ্ঞানী এই চার প্রকার পুন্যকর্মা ব্যাক্তিগন আমার ভজনা করেন।
কিন্তু যারা দুস্কৃতকারী এবং পাপী তারা দুঃখ - দুৰ্দশায় আর্ত হলেও ভগবানের শরণাগত হতে পারে না । সে কথাও শ্ৰীমদ্ভগবদগীতায় প্ৰতিপন্ন হয়েছে ।
''ন মাং দুস্কৃতিনো মূঢ়াঃ প্রপদ্যন্তে নরাধমাঃ,
মায়য়াপহৃতজ্ঞানা আসুরং ভাবমাশ্রিতাঃ''। ৭/১৫
অনুবাদঃ মূঢ়া , নরধম , মায়য়া দ্বারা যাদের জ্ঞান অপহৃত হয়েছে এবং যারা আসুরিক ভাবসমপন্ন, সেই সমস্ত দুস্কৃতিকারীরা কখনও আমার শরনাগত হতে পারে না''।
গজেন্দ্ৰ যখন আর্ত হয়ে ভগবানের শরণাগত হন। এবং চিৎকার করে তাকে রক্ষা করার জন্য ভগবানকে ডাকতে থাকেন তখন ভগবান তার নিত্য বাহন গরুড়ের পিঠে চড়ে তৎক্ষণাৎ সেখানে এসে উপস্থিত হন এবং দুঃখী গজেন্দ্ৰকে উদ্ধার করেন।
গজেন্দ্ৰ পরমেশ্বর ভগবানের সঙ্গে তার সম্পৰ্ক সম্বন্ধে অবগত ছিলেন । তিনি ভগবানকে আদিপুরুষ বা পরম ভোক্তা বলে সম্বোধন করে ডাকতে থাকেন।
ভগবান এবং জীব উভয়ই চেতন এবং তাই উভয়ই ভোক্তা ; কিন্তু ভগবান হচ্ছেন পরম ভোক্তা , কেননা তিনি সবকিছুর স্ৰষ্টা । একটি পরিবারে যেমন পিতা এবং পুত্ৰ উভয়ই নিঃসন্দেহে ভোক্তা , কিন্তু পিতা হচ্ছেন মুখ্য ভোক্তা এবং পুত্ৰ গৌণ ভোক্তা ।
ভগবানের শুদ্ধ ভক্ত ভালভাবেই জানেন যে এই ব্ৰহ্মাণ্ডের সবকিছুই ভগবানের সম্পত্তি এবং জীব তার জন্য বরাদ্দ অংশটুকুই কেবল ভোগ করতে পারে । যা তার জন্য বরাদ্দ করা হয়নি , তা জীব স্পর্শ করতেও পারেন না। এইভাবে ভগবান এবং জীবের মধ্যে পাৰ্থক্য যিনি অবগত তিনি ভগবানকে প্ৰথমে নিবেদন না করে কোন কিছু গ্ৰহণ করেন না।
গজেন্দ্ৰ ভগবানকে সমগ্ৰ জগতের প্রভু বলে সম্বোধন করেছেন , সেই সূত্ৰে তিনি গজেন্দ্ৰরও প্ৰভু । ভগবানের শুদ্ধ ভক্ত গজেন্দ্ৰ কুমীরের আক্ৰমণ থেকে রক্ষা লাভের বিশেষ যোগ্য ছিলেন এবং ভগবান যেহেতু প্ৰতিজ্ঞা করেছেন যে তার ভক্ত কখনো বিনষ্ট হবেন না , তাই গজেন্দ্রর পক্ষে রক্ষা লাভের জন্য ভগবানের কাছে প্ৰাৰ্থনা যথাৰ্থই উপযুক্ত ছিল এবং ভগবানও তৎক্ষণাৎ সাড়া দিয়েছিলেন ।
ভগবান সকলেরই পালক , তবে অহঙ্কারে মত্ত হয়ে ভগবানের শ্ৰেষ্ঠত্ব অস্বীকার করে তার সমকক্ষ হওয়ার দাবী করার পরিবর্তে যারা তার মাহাত্ম্য স্বীকার করে তার শরণাগত হন , তাদের তিনি সর্বপ্ৰথমে রক্ষা করেন । ভগবান সর্বদাই পরম উৎকৃষ্ট । ভগবানের শুদ্ধ ভক্ত ভগবানের সঙ্গে তার পাৰ্থক্য সম্বন্ধে অবগত । ভগবানের শুদ্ধ ভক্ত সৰ্বতোভাবে ভগবানের শরণাগত বলে ভগবান তাকে প্ৰথম সুযোগ দেন ।
কিন্তু যারা ভগবানের অস্তিত্ব অস্বীকার করে নিজেদের ভগবান বলে প্রচার করে , সেই সমস্ত অসুরদের ভগবান কিছু সীমিত শক্তি অনুমোদন করেন যার প্রভাবে তারা আত্মরক্ষা করে । যেহেতু ভগবান হচ্ছেন সকলের থেকে শ্ৰেষ্ঠ , তাই তার পূৰ্ণতাও সর্বশ্ৰেষ্ঠ । তার পূৰ্ণতা কেউ কল্পনাও করতে পারে না ।
তাই ভগবান চক্ৰপাণি শ্ৰীহরি সেই শরণার্থী গজরাজের আর্তনাদ শ্ৰবণ করে পক্ষীরাজ গরুড়ের পৃষ্ঠে আরোহণপূর্বক তার চক্রের দ্বারা কুমীরের বদন দ্বিখণ্ডিত করেছিলেন এবং কৃপাপূর্বক গজরাজের শুড় ধরে তাকে কুমীরের মুখ থেকে উদ্ধার করেছিলেন।
সাধারণত হাতী যদিও কুমীরের থেকে অধিক শক্তিশালী কিন্তু জলে কুমীর হাতীর থেকে অধিক শক্তিশালী। গজেন্দ্ৰ পূৰ্ব্বজন্মে ভগবানের এক মহান ভক্ত ছিলেন , তাই তার পূর্বকৃত সুকৃতির প্রভাবে তিনি দিব্য নাম উচ্চারণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন । এবং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তাকে রক্ষা করেছিলেন
জড় জগতে প্রতিটি জীবই সর্বদা দুঃখ - দুৰ্দশায় পীড়িত, কেননা এই জগতটি এমনই যে প্ৰতি পদক্ষেপেই প্ৰত্যেককে কোন না কোন প্রকার দুঃখ কষ্ট ভোগ করতে হয় । কিন্তু কারো যদি পূর্বজন্মের সুকৃতি থাকে , তাহলে তিনি ভগবানের সেবায় যুক্ত হয়ে ভগবানের চিন্ময় আনন্দে এই ''দুঃখ্যালয়মশাশ্বতম'' জগতে অবস্থান করেন। সেকথা শ্ৰীমদ্ভগবদগীতায় প্ৰতিপন্ন হয়েছে,
''চতুর্বিধা ভজন্তে মাং জনাঃ সুকৃতিনোহর্জুন,
আর্তো জিজ্ঞাসুরর্থাথী জ্ঞানী চ ভরতর্ষভ''।। ৭/১৬
''অর্থাৎ হে ভরত শ্রেষ্ঠ অর্জুন, আর্ত, অর্থাথী, জিজ্ঞাসু এবং জ্ঞানী এই চার প্রকার পুন্যকর্মা ব্যাক্তিগন আমার ভজনা করেন।
কিন্তু যারা দুস্কৃতকারী এবং পাপী তারা দুঃখ - দুৰ্দশায় আর্ত হলেও ভগবানের শরণাগত হতে পারে না । সে কথাও শ্ৰীমদ্ভগবদগীতায় প্ৰতিপন্ন হয়েছে ।
''ন মাং দুস্কৃতিনো মূঢ়াঃ প্রপদ্যন্তে নরাধমাঃ,
মায়য়াপহৃতজ্ঞানা আসুরং ভাবমাশ্রিতাঃ''। ৭/১৫
অনুবাদঃ মূঢ়া , নরধম , মায়য়া দ্বারা যাদের জ্ঞান অপহৃত হয়েছে এবং যারা আসুরিক ভাবসমপন্ন, সেই সমস্ত দুস্কৃতিকারীরা কখনও আমার শরনাগত হতে পারে না''।
গজেন্দ্ৰ যখন আর্ত হয়ে ভগবানের শরণাগত হন। এবং চিৎকার করে তাকে রক্ষা করার জন্য ভগবানকে ডাকতে থাকেন তখন ভগবান তার নিত্য বাহন গরুড়ের পিঠে চড়ে তৎক্ষণাৎ সেখানে এসে উপস্থিত হন এবং দুঃখী গজেন্দ্ৰকে উদ্ধার করেন।
গজেন্দ্ৰ পরমেশ্বর ভগবানের সঙ্গে তার সম্পৰ্ক সম্বন্ধে অবগত ছিলেন । তিনি ভগবানকে আদিপুরুষ বা পরম ভোক্তা বলে সম্বোধন করে ডাকতে থাকেন।
ভগবান এবং জীব উভয়ই চেতন এবং তাই উভয়ই ভোক্তা ; কিন্তু ভগবান হচ্ছেন পরম ভোক্তা , কেননা তিনি সবকিছুর স্ৰষ্টা । একটি পরিবারে যেমন পিতা এবং পুত্ৰ উভয়ই নিঃসন্দেহে ভোক্তা , কিন্তু পিতা হচ্ছেন মুখ্য ভোক্তা এবং পুত্ৰ গৌণ ভোক্তা ।
ভগবানের শুদ্ধ ভক্ত ভালভাবেই জানেন যে এই ব্ৰহ্মাণ্ডের সবকিছুই ভগবানের সম্পত্তি এবং জীব তার জন্য বরাদ্দ অংশটুকুই কেবল ভোগ করতে পারে । যা তার জন্য বরাদ্দ করা হয়নি , তা জীব স্পর্শ করতেও পারেন না। এইভাবে ভগবান এবং জীবের মধ্যে পাৰ্থক্য যিনি অবগত তিনি ভগবানকে প্ৰথমে নিবেদন না করে কোন কিছু গ্ৰহণ করেন না।
গজেন্দ্ৰ ভগবানকে সমগ্ৰ জগতের প্রভু বলে সম্বোধন করেছেন , সেই সূত্ৰে তিনি গজেন্দ্ৰরও প্ৰভু । ভগবানের শুদ্ধ ভক্ত গজেন্দ্ৰ কুমীরের আক্ৰমণ থেকে রক্ষা লাভের বিশেষ যোগ্য ছিলেন এবং ভগবান যেহেতু প্ৰতিজ্ঞা করেছেন যে তার ভক্ত কখনো বিনষ্ট হবেন না , তাই গজেন্দ্রর পক্ষে রক্ষা লাভের জন্য ভগবানের কাছে প্ৰাৰ্থনা যথাৰ্থই উপযুক্ত ছিল এবং ভগবানও তৎক্ষণাৎ সাড়া দিয়েছিলেন ।
ভগবান সকলেরই পালক , তবে অহঙ্কারে মত্ত হয়ে ভগবানের শ্ৰেষ্ঠত্ব অস্বীকার করে তার সমকক্ষ হওয়ার দাবী করার পরিবর্তে যারা তার মাহাত্ম্য স্বীকার করে তার শরণাগত হন , তাদের তিনি সর্বপ্ৰথমে রক্ষা করেন । ভগবান সর্বদাই পরম উৎকৃষ্ট । ভগবানের শুদ্ধ ভক্ত ভগবানের সঙ্গে তার পাৰ্থক্য সম্বন্ধে অবগত । ভগবানের শুদ্ধ ভক্ত সৰ্বতোভাবে ভগবানের শরণাগত বলে ভগবান তাকে প্ৰথম সুযোগ দেন ।
কিন্তু যারা ভগবানের অস্তিত্ব অস্বীকার করে নিজেদের ভগবান বলে প্রচার করে , সেই সমস্ত অসুরদের ভগবান কিছু সীমিত শক্তি অনুমোদন করেন যার প্রভাবে তারা আত্মরক্ষা করে । যেহেতু ভগবান হচ্ছেন সকলের থেকে শ্ৰেষ্ঠ , তাই তার পূৰ্ণতাও সর্বশ্ৰেষ্ঠ । তার পূৰ্ণতা কেউ কল্পনাও করতে পারে না ।
তাই ভগবান চক্ৰপাণি শ্ৰীহরি সেই শরণার্থী গজরাজের আর্তনাদ শ্ৰবণ করে পক্ষীরাজ গরুড়ের পৃষ্ঠে আরোহণপূর্বক তার চক্রের দ্বারা কুমীরের বদন দ্বিখণ্ডিত করেছিলেন এবং কৃপাপূর্বক গজরাজের শুড় ধরে তাকে কুমীরের মুখ থেকে উদ্ধার করেছিলেন।
(C) প্রসেনজিৎ মোহন দাশ
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন