হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী শান্তি আনতে ধরিত্রিকে ২১ বার ক্ষত্রিয়শূন্য করেছিলেন বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার পরশুরাম। পুরোকালে ত্রেতা যুগের শুরুর দিকে জমদগ্নি নামে একজন বিশিষ্ঠ ব্রাহ্মণ ছিলেন।তিনি সূর্যবংশীয়কন্যা রেণুকা কে পত্নী রুপে বরণ করেণ। কিছুকাল পর তাদের ঘর আলো করে ভগবান বিষ্ণু পরশুরাম রুপে আর্বিভূত হন।
পূর্বজন্মের তপস্যার দ্বারা তারা ভগবান কে সন্তান রুপে পেয়েছে। মহর্ষি ভৃগুর (পরশুরামের প্রপিতামহ) বাক্যানুযায়ী পরশুরাম বৃত্তিতে হয়েছিলেন ক্ষত্রিয়। তাই জগতে তিনিই প্রথম যোদ্ধা ব্রাক্ষণ। পরশুরামের মা রেণুকা ছিলেন অযোধ্যার সূর্যবংশের কণ্যা। এই বংশেই রামচন্দ্রের জন্ম হয়। জমদগ্নির ঔরসে রেণুকার গর্ভে পাঁচ পুত্রের মধ্যে পরশুরাম ছিলেন কনিষ্ঠ। রেণুকা একবার চিত্ররথ নামক এক রাজাকে সস্ত্রীক জলবিহার করতে দেখে কামার্তা হয়ে পড়েন। জমদগ্নি এই দৃশ্য দেখে পুত্রদেরকে মাতৃহত্যার আদেশ দেন। পাঁচ পুত্রের মধ্যে চারজনই এতে রাজী হয়নি। পরশুরাম তার পিতার আদেশ অমান্য করবে নাকি মাতৃহত্যার বোঝা বহন করবে। উভয় সংকটে পরে যায় পরম শিবভক্ত পরশুরাম।
পরশুরাম তার মায়ের কাছে যায় এবং সবকথা খুলে বলে। তার পিতা আদেশ দিয়েছে তার শীরচ্ছেদ করবার।পরশুরামের মা ছিলেন সত্যপরায়ণা তাই তিনি তার ছেলে পরশুরামকে আদেশ দিলেন সে তার পিতার আদেশ রক্ষা করুক এবং তিনি নিজে তার মস্তক ছেদকরবার জন্য প্রস্তুত করলেন। বুকে পাথর চাপা দিয়ে একমাত্র পরশুরাম পিতার আদেশে কুঠার দিয়ে তাঁর মায়ের শিরশ্ছেদ করেন।
মাতৃহত্যাজনিত পাপে, তার হাতে ওই কুঠার সংযুক্ত হয়ে গিয়েছিল। তবে পুত্রের কাজে জমদগ্নি খুশি হয়ে তাকে বর প্রার্থনা করতে বলেন এবং অন্য সন্তানদের অভিশাপ দেন। পরশুরাম মায়ের পুনর্জন্ম, মাতৃহত্যাজনিত পাপ ও মাতৃহত্যা স্মৃতি বিস্মৃত হওয়া, ভাইদের জড়ত্বমুক্তি, নিজের দীর্ঘায়ু ও অজেয়ত্বের বর প্রার্থনা করেন। জমদগ্নি তাঁকে সবগুলো বরই প্রদান করেন।ব্রহ্মকুণ্ডে স্নান করার পর হাত থেকে কুঠার বিচ্ছিন্ন হয়েছিল পরশুরামের। হৈহয়রাজ কার্তবীর্য জমদগ্নির হোমধেনুর গোবৎস হরণ করেছিলেন বলে পরশুরাম তাঁকে বধ করেছিলেন। কার্তবীর্যের পুত্ররা প্রতিশোধ নিতে আশ্রমে এসে তপস্যারত জমদগ্নিকে হত্যা করেন। ক্ষুব্ধ পরশুরাম একাই কার্তবীর্যের সব পুত্রকে বধ করেন। এরপর তিনি একুশবার পৃথিবী নিঃক্ষত্রিয় করেছিলেন। ক্ষত্রিয়দের রক্ত দিয়ে সমস্তপঞ্চক প্রদেশের পাঁচটি হ্রদ পূর্ণ করেন তিনি। [সমন্তপঞ্চকোপাখ্যান- দ্বিতীয় অধ্যায়- আদিপর্ব- মহাভারত] শেষে পিতামহ ঋচিকের অনুরোধে ক্ষত্রিয় হত্যা বন্ধ করেন পরশুরাম। এরপর তিনি যজ্ঞের মাধ্যমে কশ্যপকে পৃথিবী দান করে মহেন্দ্রপর্বতে বসবাস শুরু করেন।
ভীষ্ম ও দ্রোণ পরশুরামের কাছে অস্ত্রবিদ্যা শিক্ষা করেছেন। ভাই বিচিত্রবীর্যের বিয়ের জন্য, কাশীরাজের তিন কন্যা অম্বা, অম্বিকা ও অম্বালিকাকে ভীষ্ম স্বয়ংবর সভা থেকে অপহরণ করেছিলেন। অম্বা ভীষ্মকে জানান - তিনি আগেই শাম্বরাজকে মনে মনে পতি হিসেবে বরণ করেছেন। অম্বাকে শাম্ববরাজের কাছে ভীষ্ম যাওয়ার অনুমতি দিলেও, অপহৃতা কন্যা বলে শাম্বরাজ তাঁকে প্রত্যাখান করেন। অম্বা ভীষ্মের কাছে ফিরে এসে তাঁকে বিয়ে করার অনুরোধ করলে, ভীষ্ম তা প্রত্যাখ্যান করেন। ক্ষুব্ধ অম্বা শরণাপন্ন হন পরশুরামের । পরশুরাম এসেও ভীষ্মকে এই বিয়েতে রাজী করাতে ব্যর্থ হন। এর ফলে পরশুরামের সাথে ভীষ্মের ঘোরতর যুদ্ধ হয়। ২৩ দিন যুদ্ধের পরও পরশুরাম ভীষ্মকে পরাজিত করতে ব্যর্থ হন। পরে পরশুরাম মহেন্দ্র পর্বতে ফিরে যান এবং অস্ত্রলাভের জন্য মহাদেবের তপস্যা করেন। তপস্যায় খুশি হয়ে পরশুরামকে আশীর্বাদ প্রদান করেন মহাদেব । এরপর তিনি মহাদেবের আজ্ঞায় বহু দানব হত্যা করেন।
রামায়ণে আছে- পরশুরামের মৃত্যুর পূর্বেই বিষ্ণুর সপ্তম অবতার রামের জন্ম হয়। রামচন্দ্র হরধনু ভঙ্গের পর সীতাসহ অযোধ্যায় ফিরে আসছিলেন। হরধনু ভঙ্গের সংবাদ পেয়ে পরশুরাম ক্রোধান্বিত হয়ে রামের মুখোমুখি হন এবং অহঙ্কারের সঙ্গে বলেন , তাঁর কাছে বৈষ্ণবধনু আছে । এই বৈষ্ণবধনু ভঙ্গ করে প্রকৃত বীরত্ব দেখানোর জন্য তিনি রামকে আহ্বান জানান। আর রাম যদি এতে ব্যর্থ হন তাহলে তাকে দ্বন্দ্বযুদ্ধে অবতীর্ণ হতে হবে বলে চ্যালেঞ্জ করেন পরশুরাম। বৈষ্ণব ধনু নিয়ে পরশুরামের তপস্যার্জিত সমস্ত শক্তি বিনষ্ট করেন রাম। ফলে পরশুরামের তেজ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। এরপর ইনি নির্বীর্য হয়ে রামচন্দ্রকে পূজা ও প্রদক্ষিণ করে মহেন্দ্র পর্বতে ফিরে যান। (একোনবিংশ সর্গ- বালখণ্ড- বাল্মীকি রামায়ণ)
পূর্বজন্মের তপস্যার দ্বারা তারা ভগবান কে সন্তান রুপে পেয়েছে। মহর্ষি ভৃগুর (পরশুরামের প্রপিতামহ) বাক্যানুযায়ী পরশুরাম বৃত্তিতে হয়েছিলেন ক্ষত্রিয়। তাই জগতে তিনিই প্রথম যোদ্ধা ব্রাক্ষণ। পরশুরামের মা রেণুকা ছিলেন অযোধ্যার সূর্যবংশের কণ্যা। এই বংশেই রামচন্দ্রের জন্ম হয়। জমদগ্নির ঔরসে রেণুকার গর্ভে পাঁচ পুত্রের মধ্যে পরশুরাম ছিলেন কনিষ্ঠ। রেণুকা একবার চিত্ররথ নামক এক রাজাকে সস্ত্রীক জলবিহার করতে দেখে কামার্তা হয়ে পড়েন। জমদগ্নি এই দৃশ্য দেখে পুত্রদেরকে মাতৃহত্যার আদেশ দেন। পাঁচ পুত্রের মধ্যে চারজনই এতে রাজী হয়নি। পরশুরাম তার পিতার আদেশ অমান্য করবে নাকি মাতৃহত্যার বোঝা বহন করবে। উভয় সংকটে পরে যায় পরম শিবভক্ত পরশুরাম।
পরশুরাম তার মায়ের কাছে যায় এবং সবকথা খুলে বলে। তার পিতা আদেশ দিয়েছে তার শীরচ্ছেদ করবার।পরশুরামের মা ছিলেন সত্যপরায়ণা তাই তিনি তার ছেলে পরশুরামকে আদেশ দিলেন সে তার পিতার আদেশ রক্ষা করুক এবং তিনি নিজে তার মস্তক ছেদকরবার জন্য প্রস্তুত করলেন। বুকে পাথর চাপা দিয়ে একমাত্র পরশুরাম পিতার আদেশে কুঠার দিয়ে তাঁর মায়ের শিরশ্ছেদ করেন।
মাতৃহত্যাজনিত পাপে, তার হাতে ওই কুঠার সংযুক্ত হয়ে গিয়েছিল। তবে পুত্রের কাজে জমদগ্নি খুশি হয়ে তাকে বর প্রার্থনা করতে বলেন এবং অন্য সন্তানদের অভিশাপ দেন। পরশুরাম মায়ের পুনর্জন্ম, মাতৃহত্যাজনিত পাপ ও মাতৃহত্যা স্মৃতি বিস্মৃত হওয়া, ভাইদের জড়ত্বমুক্তি, নিজের দীর্ঘায়ু ও অজেয়ত্বের বর প্রার্থনা করেন। জমদগ্নি তাঁকে সবগুলো বরই প্রদান করেন।ব্রহ্মকুণ্ডে স্নান করার পর হাত থেকে কুঠার বিচ্ছিন্ন হয়েছিল পরশুরামের। হৈহয়রাজ কার্তবীর্য জমদগ্নির হোমধেনুর গোবৎস হরণ করেছিলেন বলে পরশুরাম তাঁকে বধ করেছিলেন। কার্তবীর্যের পুত্ররা প্রতিশোধ নিতে আশ্রমে এসে তপস্যারত জমদগ্নিকে হত্যা করেন। ক্ষুব্ধ পরশুরাম একাই কার্তবীর্যের সব পুত্রকে বধ করেন। এরপর তিনি একুশবার পৃথিবী নিঃক্ষত্রিয় করেছিলেন। ক্ষত্রিয়দের রক্ত দিয়ে সমস্তপঞ্চক প্রদেশের পাঁচটি হ্রদ পূর্ণ করেন তিনি। [সমন্তপঞ্চকোপাখ্যান- দ্বিতীয় অধ্যায়- আদিপর্ব- মহাভারত] শেষে পিতামহ ঋচিকের অনুরোধে ক্ষত্রিয় হত্যা বন্ধ করেন পরশুরাম। এরপর তিনি যজ্ঞের মাধ্যমে কশ্যপকে পৃথিবী দান করে মহেন্দ্রপর্বতে বসবাস শুরু করেন।
ভীষ্ম ও দ্রোণ পরশুরামের কাছে অস্ত্রবিদ্যা শিক্ষা করেছেন। ভাই বিচিত্রবীর্যের বিয়ের জন্য, কাশীরাজের তিন কন্যা অম্বা, অম্বিকা ও অম্বালিকাকে ভীষ্ম স্বয়ংবর সভা থেকে অপহরণ করেছিলেন। অম্বা ভীষ্মকে জানান - তিনি আগেই শাম্বরাজকে মনে মনে পতি হিসেবে বরণ করেছেন। অম্বাকে শাম্ববরাজের কাছে ভীষ্ম যাওয়ার অনুমতি দিলেও, অপহৃতা কন্যা বলে শাম্বরাজ তাঁকে প্রত্যাখান করেন। অম্বা ভীষ্মের কাছে ফিরে এসে তাঁকে বিয়ে করার অনুরোধ করলে, ভীষ্ম তা প্রত্যাখ্যান করেন। ক্ষুব্ধ অম্বা শরণাপন্ন হন পরশুরামের । পরশুরাম এসেও ভীষ্মকে এই বিয়েতে রাজী করাতে ব্যর্থ হন। এর ফলে পরশুরামের সাথে ভীষ্মের ঘোরতর যুদ্ধ হয়। ২৩ দিন যুদ্ধের পরও পরশুরাম ভীষ্মকে পরাজিত করতে ব্যর্থ হন। পরে পরশুরাম মহেন্দ্র পর্বতে ফিরে যান এবং অস্ত্রলাভের জন্য মহাদেবের তপস্যা করেন। তপস্যায় খুশি হয়ে পরশুরামকে আশীর্বাদ প্রদান করেন মহাদেব । এরপর তিনি মহাদেবের আজ্ঞায় বহু দানব হত্যা করেন।
রামায়ণে আছে- পরশুরামের মৃত্যুর পূর্বেই বিষ্ণুর সপ্তম অবতার রামের জন্ম হয়। রামচন্দ্র হরধনু ভঙ্গের পর সীতাসহ অযোধ্যায় ফিরে আসছিলেন। হরধনু ভঙ্গের সংবাদ পেয়ে পরশুরাম ক্রোধান্বিত হয়ে রামের মুখোমুখি হন এবং অহঙ্কারের সঙ্গে বলেন , তাঁর কাছে বৈষ্ণবধনু আছে । এই বৈষ্ণবধনু ভঙ্গ করে প্রকৃত বীরত্ব দেখানোর জন্য তিনি রামকে আহ্বান জানান। আর রাম যদি এতে ব্যর্থ হন তাহলে তাকে দ্বন্দ্বযুদ্ধে অবতীর্ণ হতে হবে বলে চ্যালেঞ্জ করেন পরশুরাম। বৈষ্ণব ধনু নিয়ে পরশুরামের তপস্যার্জিত সমস্ত শক্তি বিনষ্ট করেন রাম। ফলে পরশুরামের তেজ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। এরপর ইনি নির্বীর্য হয়ে রামচন্দ্রকে পূজা ও প্রদক্ষিণ করে মহেন্দ্র পর্বতে ফিরে যান। (একোনবিংশ সর্গ- বালখণ্ড- বাল্মীকি রামায়ণ)
Sanatan Dharma - সনাতন ধর্ম
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন