০২ ডিসেম্বর ২০১৭

সনাতন ধর্মে পরমেশ্বর ভগবান কে

কে পরমেশ্বর ভগবান তা জানতে হলে আমাদের বেদমাতা বা বৈদিক শাস্ত্রের সাহায্য নিতে হবে। কারন,সন্তানের পিতা কে তা মাতাই ভাল বলতে পারে। তেমনি বৈদিক শাস্ত্রসমূহই আমাদের বলে দিতে পারে, কে পরমেশ্বর ভগবান।

আসুন দেখি বৈদিক শাস্ত্রে কাকে পরমেশ্বর ভগবান বলা হয়েছে---
ঈশ্বরঃ পরমঃ কৃষ্ণঃ সচ্চিদানন্দবিগ্রহঃ।

অনাদির্রাদির্গোবিন্দ­নঃ সর্বকারণকারণম্।। -- ব্রহ্মসংহিতা (৫/১)
অনুবাদ -- শ্রীকৃষ্ণ, যিনি গোবিন্দ নামেও পরিচিত, তিনিই হচ্ছেন পরম ঈশ্বর। তাঁর রূপ সচ্চিদানন্দময়। তিনি হচ্ছেন সব কিছুর পরম উৎস। তাঁর কোন উৎস নেই, কেন না তিনি হচ্ছেন সমস্ত কারণের পরম কারণ।

মত্তঃ পরতরং নান্যৎ কিঞ্চিদস্তি ধনঞ্জয়।
ময়ি সর্বমিদং প্রোতং সূত্রে মণিগণা ইব।। -- গীতা ৭/৭

অনুবাদ -- হে ধনঞ্জয়! আমার থেকে শ্রেষ্ট আর কেউ নেই।সূত্রে যেমন মণিসমূহ গাঁথা থাকে, তেমনি সমস্ত বিশ্বই আমাতে ওতঃপ্রোতভাবে অবস্থান করে।

একলে ঈশ্বর কৃষ্ণ, আর সব ভৃত্য।
যারে যৈছে নাচায়, সে তৈছে করে নৃত্য।। শ্রীমহৎ ভাগবৎ ১/১/১

একমাত্র শ্রীকৃষ্ণই হচ্ছেন পরম ঈশ্বর এবং অন্য সকলেই তার সেবক।তিনি যেভাবে নির্দেশ দেন,তারা সেভাবেই নৃত্য করেন।চৈ:চ:আদি-৫/১৪২

হে বসুদেব তনয় শ্রীকৃষ্ণ। হে সর্বব্যাপ্ত পরমেশ্বর ভগবান। আমি আপনাকে আমার সশ্রদ্ধ প্রণতি নিবেদন করি। আমি পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ধ্যান করি,কেন না তিনি হচ্ছেন প্রকাশিত ব্রহ্মাণ্ডসমূহের সৃষ্টি, স্থিতি ও প্রলয়ের পরম কারণ।

এছাড়া আরো কিছু প্রমাণ --- আমি(শ্রীকৃষ্ণ) জড় ও চেতন জগতের সব কিছুর উৎস। গীতা-১০/৮
হে কৌন্তেয়! আমার অধ্যক্ষতার দ্বারা জড়া প্রকৃতি এই চরাচর বিশ্ব সৃষ্টি করি। গীতা-৯/১০
হে ব্রহ্মা! সৃষ্টির পূর্বে কেবল আমি ছিলাম এবং প্রলয়ের পর কেবল আমিই অবশিষ্ট থাকব। ভাগবত--২/৯/৩৩

কৃষ্ণস্তু ভগবান স্বয়ম। ভাগবত- ১/৩/২৮
হে রাজন! পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পরিকল্পনা কেউই জানতে পারে না। (ভীষ্মদেব) ভাগবত-১/৯/১৬।

শ্রীকৃষ্ণের নাম রূপ গুণ লীলা কখনও প্রাকৃত চক্ষু কর্ণ আদির গ্রাহ্য নয়।(পদ্মপুরান)

শ্রীকৃষ্ণ কারো ধ্যান/আরাধনা বা সেবা করেন না, তিনি সেবা গ্রহন করেন।

পরমেশ্বর ভগবান হলেন শ্রীকৃষ্ণ। এতে কোন সন্দেহ নেই।কারন ব্রহ্মা, শিব­, ইন্দ্রও তা স্বীকার করেছেন। সমস্ত বৈদিক শাস্ত্রের প্রনেতা বেদব্যাস তা স্বীকার করেছেন। তখনকার বিশ্বের শ্রেষ্ট পণ্ডিত, শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু তা স্বীকার করেছেন। সারা পৃথিবীতে সনাতনধর্ম প্রচারের অগ্রদূত, শ্রীল প্রভুপাদ তা স্বীকার করেছেন। যেখানে বৈদিক শাস্ত্রসমূহ ও এতো মহান মহান ব্যাক্তিরা শ্রীকৃষ্ণকে পরমেশ্বর ভগবান রূপে স্বীকার করেছেন, সেখানে আমরা কেন পারবো না, শ্রীকৃষ্ণকে পরমেশ্বর ভগবান রূপে গ্রহন করতে?

★ এই লেখা যদি ভালো লাগে তো পোষ্টটি শেয়ার করে অন্য কে পেতে সাহায্য করুন।
লেখকঃ প্রীথিষ ঘোষ
Share:

Related Posts:

Total Pageviews

4505823

বিভাগ সমুহ

অন্যান্য (91) অবতারবাদ (7) অর্জুন (4) আদ্যশক্তি (68) আর্য (1) ইতিহাস (30) উপনিষদ (5) ঋগ্বেদ সংহিতা (10) একাদশী (10) একেশ্বরবাদ (1) কল্কি অবতার (3) কৃষ্ণভক্তগণ (11) ক্ষয়িষ্ণু হিন্দু (21) ক্ষুদিরাম (1) গায়ত্রী মন্ত্র (2) গীতার বানী (14) গুরু তত্ত্ব (6) গোমাতা (1) গোহত্যা (1) চাণক্য নীতি (3) জগন্নাথ (23) জয় শ্রী রাম (7) জানা-অজানা (7) জীবন দর্শন (68) জীবনাচরন (56) জ্ঞ (1) জ্যোতিষ শ্রাস্ত্র (4) তন্ত্রসাধনা (2) তীর্থস্থান (18) দেব দেবী (60) নারী (8) নিজেকে জানার জন্য সনাতন ধর্ম চর্চাক্ষেত্র (9) নীতিশিক্ষা (14) পরমেশ্বর ভগবান (25) পূজা পার্বন (43) পৌরানিক কাহিনী (8) প্রশ্নোত্তর (39) প্রাচীন শহর (19) বর্ন ভেদ (14) বাবা লোকনাথ (1) বিজ্ঞান ও সনাতন ধর্ম (39) বিভিন্ন দেশে সনাতন ধর্ম (11) বেদ (35) বেদের বানী (14) বৈদিক দর্শন (3) ভক্ত (4) ভক্তিবাদ (43) ভাগবত (14) ভোলানাথ (6) মনুসংহিতা (1) মন্দির (38) মহাদেব (7) মহাভারত (39) মূর্তি পুজা (5) যোগসাধনা (3) যোগাসন (3) যৌক্তিক ব্যাখ্যা (26) রহস্য ও সনাতন (1) রাধা রানি (8) রামকৃষ্ণ দেবের বানী (7) রামায়ন (14) রামায়ন কথা (211) লাভ জিহাদ (2) শঙ্করাচার্য (3) শিব (36) শিব লিঙ্গ (15) শ্রীকৃষ্ণ (67) শ্রীকৃষ্ণ চরিত (42) শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু (9) শ্রীমদ্ভগবদগীতা (40) শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা (4) শ্রীমদ্ভাগব‌ত (1) সংস্কৃত ভাষা (4) সনাতন ধর্ম (13) সনাতন ধর্মের হাজারো প্রশ্নের উত্তর (3) সফটওয়্যার (1) সাধু - মনীষীবৃন্দ (2) সামবেদ সংহিতা (9) সাম্প্রতিক খবর (21) সৃষ্টি তত্ত্ব (15) স্বামী বিবেকানন্দ (37) স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (14) স্মরনীয় যারা (67) হরিরাম কীর্ত্তন (6) হিন্দু নির্যাতনের চিত্র (23) হিন্দু পৌরাণিক চরিত্র ও অন্যান্য অর্থের পরিচিতি (8) হিন্দুত্ববাদ. (83) shiv (4) shiv lingo (4)

আর্টিকেল সমুহ

অনুসরণকারী

" সনাতন সন্দেশ " ফেসবুক পেজ সম্পর্কে কিছু কথা

  • “সনাতন সন্দেশ-sanatan swandesh" এমন একটি পেজ যা সনাতন ধর্মের বিভিন্ন শাখা ও সনাতন সংস্কৃতিকে সঠিকভাবে সবার সামনে তুলে ধরার জন্য অসাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে গঠন করা হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য নিজের ধর্মকে সঠিক ভাবে জানা, পাশাপাশি অন্য ধর্মকেও সম্মান দেওয়া। আমাদের লক্ষ্য সনাতন ধর্মের বর্তমান প্রজন্মের মাঝে সনাতনের চেতনা ও নেতৃত্ত্ব ছড়িয়ে দেওয়া। আমরা কুসংষ্কারমুক্ত একটি বৈদিক সনাতন সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এ পথচলায় আপনাদের সকলের সহযোগিতা কাম্য । এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। সনাতন ধর্মের যে কেউ লাইক দিয়ে এর সদস্য হতে পারে।