মহর্ষিগণ ! এবার আমি তোমাদের রজোগুণের স্বরূপ এবং কার্যের গুণাদির যথাযথ বর্ণনা করব । মন দিয়ে শোনা -- সন্তাপ , রূপ , আরাম , সুখ - দুঃখ , শীত - গ্রীষ্ম , ঐশ্বর্য , বিগ্রহ , সন্ধি , হেতুবাদ , মন অপ্রসন্ন থাকা , বল , শৌর্য , অহংকার রোষ ব্যায়ম , বিবাদ , ঈর্ষা , ইচ্ছা , পরচর্চা , যুদ্ধ করা , মমত্ব বোধ , কুটুম্ব পালন , বধ , বন্ধন , ক্লেশ , ক্রয় - বিক্রয় , অন্যের ক্ষতি করার চেষ্টা , উগ্রতা , নিষ্ঠুরতা , চিৎকার , অন্যের দোষ দেখা , লৌকিক বিষয় চিন্তা করা , অনুতাপ , অসত্যভাষণ , মিথ্যা দান , সংশয়পূর্ণ বিচার , তিরস্কার , নিন্দা , স্তুতি , প্রশংসা , প্রতাপ , জোর খাটানো , স্বার্থের জন্য কাজ , তৃষ্ণা , অপরের আশ্রয়ে থাকা , ব্যবহার কুশলতা , নীতি , প্রমাদ , পরিবার এবং পরিগ্রহ -- এগুলি সবই রজোগুণের কার্য ।
জগতে যে নারী , পুরুষ , ভূত , দ্রব্য এবং গৃহাদির পৃথক পৃথক সংস্কার , অবিশ্বাস , সকামভাবে ব্রত - নিয়মাদি পালন , কাম্যকর্ম , নানাপ্রকারের জলাশয় খনন , স্বাহাকার , নমস্কার , স্বধাকার , বষট্কার , যাজন , অধ্যাপন , যজন , অধ্যায়ন , দান , প্রতিগ্রহ , প্রায়শ্চিত এবং মঙ্গলজনক কর্মকেও রাজস বলে মনে করা হয় ।
" আমার বস্তু প্রাপ্তি হোক , অমুক জিনিস লাভ হোক " - এই প্রকার যার বিষয়াদি পাওয়ার জন্য আসক্তিমূলক উৎকন্ঠা হয় , রজোগুণই তার কারণ ।
দ্রোণ , মায়া , শঠতা , মান , চুরি , হিংসা , ঘৃণা , পরিতাপ , জাগরণ , দম্ভ , দর্প , রাগ , বিষয়প্রেম প্রমোদ , দ্যূতক্রীড়া , ঝগড়া - বিবাদ করা , নারীদের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধি , গান - বাজনা , নৃত্য - গীতে আসক্ত হওয়া - এগুলি সবই রাজস গুণ ।
যারা এই পৃথিবীতে অতীত , বর্তমান ও ভবিষ্যৎ পদার্থের কথা চিন্তা করে , ধর্ম , অর্থ ও কামরূপ ত্রিবর্গের সেবায় ব্যাপৃত থাকে , ইচ্ছমতো আচরণ করে এবং সর্বপ্রকার ভোগের সমৃদ্ধিতে আনন্দিত থাকে , তারা রজোগুণে আবৃত , তাদের অর্বাক্ স্রোতা বলা হয় ।
এরূপ লোক ইহলোকে বারংবার জন্ম নিয়ে বিষয়জনিত আনন্দে মগ্ন থাকে এবং ইহলোকে ও পরলোকে সুখলাভের জন্য চেষ্টা করে । মুনিবরগণ ! আমি তোমাদের নানাপ্রকার রাজসিক গুণ এবং তদনুকূল আচরণের যথাবৎ বর্ণনা করলাম । যেসব মানুষ এই গুণাগুলিকে জানে , তারা সর্বদা এর বন্ধন থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখে ।
মহর্ষিগণ ! এবার আমি তৃতীয় উত্তমগুণ ( সত্ত্বগুণের ) বর্ণনা করছি , এই গুণ জগতের সমস্ত প্রাণীদের হিতকারী এবং সাধুপুরুষদের প্রশংসনীয় ধর্ম । আনন্দ , প্রসন্নতা , উন্নতি , প্রকাশ , সুখ , কৃপণতার অভাব নির্ভয়তা সন্তোষ , শ্রদ্ধা , ক্ষমা , ধৈর্য , অহিংসা , সমতা , সত্য সারল্য , ক্রোধহীনতা , অন্যের দোষ না দেখা , পবিত্রতা , চতুরতা ও পরাক্রম -- এগুলি সত্ত্বগুণের কার্য ।
যারা এই ধর্মের আচরণ করে , তারা পরলোকে সুখভাগী হয় । মমত্ববোধ , অহংকার , আশা পরিত্যাগ করে সর্বত্র সমদৃষ্টি রাখা এবং সর্বতোভাবে নিষ্কাম হওয়াই সাধু পুরুষদের সনাতন ধর্ম ।
বিশ্বাস , লজ্জা , তিতিক্ষা , ত্যাগ , পবিত্রতা , আলস্যবর্জন করা , কোমলতা , মোহগ্রস্থ না হওয়া , প্রাণীদের সঙ্গে সৎ ব্যবহার , পরচর্চা না করা , হর্ষ , সন্তোষ , বিস্ময় , বিনয় , সত্যব্যবহার , শান্তিকর্মে শুদ্ধভাবে প্রবৃত্ত হওয়া , উত্তম বুদ্ধি , আসক্তি মুক্ত হওয়া , জগতের ভোগে উদাসীনতা , ব্রহ্মচর্য , সর্বপ্রকার ত্যাগ , নির্মমতা , ফলের কামনা না করা , নিরন্তর ধর্ম পালন করতে থাকা -- এসবই সত্ত্বগুণের কার্য ।
যারা উপরিউক্ত আচরণ পালনপূর্বক এই জগতে সত্যের আশ্রয় গ্রহণ করে এবং বেদের উৎপত্তির স্থানভূত পরব্রহ্ম পরমাত্মাতে নিষ্ঠা রাখে , তাদেরই ধীর এবং সাধুদর্শী বলে মানা হয় । এই ধীর পুরুষেরা সব পাপ পরিত্যাগ করে শোকরহিত হন এবং স্বর্গলোকে গিয়ে অনেক শরীর সৃষ্টি করেন । সত্ত্বগুণভাবাপন্ন মহাত্মা স্বর্গবাসী দেবতাদের ন্যায় ঈশিত্ব , বশিত্ব এবং লঘিমা ইত্যাদি সিদ্ধি প্রাপ্ত করেন ।
তাঁদের ঊর্ধ্বস্রোতা এবং বৈকারিক দেবতা বলে মানা হয় । ( যোগবলে ) স্বর্গলাভ হলে তাঁদের চিত্ত ভোগজনিত সংস্কার দ্বারা বিকৃত হয় । সেইসময় তাঁরা যা চান , সেই বস্তুই পান এবং দান করেন । আমি তোমাদের সত্ত্বগুণের কার্যাদি বর্ণনা করলাম । যারা এই বিষয়ে ভালোভাবে জানে তারা মনোবাঞ্ছিত বস্তু লাভ করে এবং সেই গুণের সেবনে রত থাকলে তাদের আর বন্ধন প্রাপ্তি হয় না ।
জগতে যে নারী , পুরুষ , ভূত , দ্রব্য এবং গৃহাদির পৃথক পৃথক সংস্কার , অবিশ্বাস , সকামভাবে ব্রত - নিয়মাদি পালন , কাম্যকর্ম , নানাপ্রকারের জলাশয় খনন , স্বাহাকার , নমস্কার , স্বধাকার , বষট্কার , যাজন , অধ্যাপন , যজন , অধ্যায়ন , দান , প্রতিগ্রহ , প্রায়শ্চিত এবং মঙ্গলজনক কর্মকেও রাজস বলে মনে করা হয় ।
" আমার বস্তু প্রাপ্তি হোক , অমুক জিনিস লাভ হোক " - এই প্রকার যার বিষয়াদি পাওয়ার জন্য আসক্তিমূলক উৎকন্ঠা হয় , রজোগুণই তার কারণ ।
দ্রোণ , মায়া , শঠতা , মান , চুরি , হিংসা , ঘৃণা , পরিতাপ , জাগরণ , দম্ভ , দর্প , রাগ , বিষয়প্রেম প্রমোদ , দ্যূতক্রীড়া , ঝগড়া - বিবাদ করা , নারীদের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধি , গান - বাজনা , নৃত্য - গীতে আসক্ত হওয়া - এগুলি সবই রাজস গুণ ।
যারা এই পৃথিবীতে অতীত , বর্তমান ও ভবিষ্যৎ পদার্থের কথা চিন্তা করে , ধর্ম , অর্থ ও কামরূপ ত্রিবর্গের সেবায় ব্যাপৃত থাকে , ইচ্ছমতো আচরণ করে এবং সর্বপ্রকার ভোগের সমৃদ্ধিতে আনন্দিত থাকে , তারা রজোগুণে আবৃত , তাদের অর্বাক্ স্রোতা বলা হয় ।
এরূপ লোক ইহলোকে বারংবার জন্ম নিয়ে বিষয়জনিত আনন্দে মগ্ন থাকে এবং ইহলোকে ও পরলোকে সুখলাভের জন্য চেষ্টা করে । মুনিবরগণ ! আমি তোমাদের নানাপ্রকার রাজসিক গুণ এবং তদনুকূল আচরণের যথাবৎ বর্ণনা করলাম । যেসব মানুষ এই গুণাগুলিকে জানে , তারা সর্বদা এর বন্ধন থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখে ।
মহর্ষিগণ ! এবার আমি তৃতীয় উত্তমগুণ ( সত্ত্বগুণের ) বর্ণনা করছি , এই গুণ জগতের সমস্ত প্রাণীদের হিতকারী এবং সাধুপুরুষদের প্রশংসনীয় ধর্ম । আনন্দ , প্রসন্নতা , উন্নতি , প্রকাশ , সুখ , কৃপণতার অভাব নির্ভয়তা সন্তোষ , শ্রদ্ধা , ক্ষমা , ধৈর্য , অহিংসা , সমতা , সত্য সারল্য , ক্রোধহীনতা , অন্যের দোষ না দেখা , পবিত্রতা , চতুরতা ও পরাক্রম -- এগুলি সত্ত্বগুণের কার্য ।
যারা এই ধর্মের আচরণ করে , তারা পরলোকে সুখভাগী হয় । মমত্ববোধ , অহংকার , আশা পরিত্যাগ করে সর্বত্র সমদৃষ্টি রাখা এবং সর্বতোভাবে নিষ্কাম হওয়াই সাধু পুরুষদের সনাতন ধর্ম ।
বিশ্বাস , লজ্জা , তিতিক্ষা , ত্যাগ , পবিত্রতা , আলস্যবর্জন করা , কোমলতা , মোহগ্রস্থ না হওয়া , প্রাণীদের সঙ্গে সৎ ব্যবহার , পরচর্চা না করা , হর্ষ , সন্তোষ , বিস্ময় , বিনয় , সত্যব্যবহার , শান্তিকর্মে শুদ্ধভাবে প্রবৃত্ত হওয়া , উত্তম বুদ্ধি , আসক্তি মুক্ত হওয়া , জগতের ভোগে উদাসীনতা , ব্রহ্মচর্য , সর্বপ্রকার ত্যাগ , নির্মমতা , ফলের কামনা না করা , নিরন্তর ধর্ম পালন করতে থাকা -- এসবই সত্ত্বগুণের কার্য ।
যারা উপরিউক্ত আচরণ পালনপূর্বক এই জগতে সত্যের আশ্রয় গ্রহণ করে এবং বেদের উৎপত্তির স্থানভূত পরব্রহ্ম পরমাত্মাতে নিষ্ঠা রাখে , তাদেরই ধীর এবং সাধুদর্শী বলে মানা হয় । এই ধীর পুরুষেরা সব পাপ পরিত্যাগ করে শোকরহিত হন এবং স্বর্গলোকে গিয়ে অনেক শরীর সৃষ্টি করেন । সত্ত্বগুণভাবাপন্ন মহাত্মা স্বর্গবাসী দেবতাদের ন্যায় ঈশিত্ব , বশিত্ব এবং লঘিমা ইত্যাদি সিদ্ধি প্রাপ্ত করেন ।
তাঁদের ঊর্ধ্বস্রোতা এবং বৈকারিক দেবতা বলে মানা হয় । ( যোগবলে ) স্বর্গলাভ হলে তাঁদের চিত্ত ভোগজনিত সংস্কার দ্বারা বিকৃত হয় । সেইসময় তাঁরা যা চান , সেই বস্তুই পান এবং দান করেন । আমি তোমাদের সত্ত্বগুণের কার্যাদি বর্ণনা করলাম । যারা এই বিষয়ে ভালোভাবে জানে তারা মনোবাঞ্ছিত বস্তু লাভ করে এবং সেই গুণের সেবনে রত থাকলে তাদের আর বন্ধন প্রাপ্তি হয় না ।
লেখকঃ Joy Shree Radha Madhav
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন