পৃথিবীর মানচিত্র প্রথম কে তৈরি করেছেন?
আজ্ঞে হ্যাঁ, পৃথিবীর প্রথম মানচিত্রের ধারণা দিয়েছিল ভারতীয়রাই।
ধারণা করা হয় কলম্বাস ৫২৫ বছর আগে বিশ্বের প্রথম মানচিত্র তৈরি করেছিলেন। তিনি জম্মগ্রহণ করেন ইটালিতে ১৪৫১ সালে এবং মারা যান স্পেনে ১৫০৬ সালে। কলম্বাস ছিলেন একজন নাবিক। তার নেশা ছিল নতুন নতুন ভূ-খণ্ড অবিষ্কার করা।
এখন মূল বিষয়ে আসা যাক। পৃথিবীর বৃহত্তম ও অন্যতম প্রাচীন মহাকাব্য ‘মহাভারত’। সুবিখ্যাত মহাভারত মূলত একটি ইতিহাস নির্ভর মহাকাব্য হলেও এটা যুগ যুগ ধরে ধর্মের শিক্ষা ভারতবাসীকে দিয়ে এসেছে। তাই এটা সনাতনীদের কাছে একটি ধর্মগ্রন্থও বটে। মহাভারত রচিত হয় খ্রিষ্টপূর্ব ৩০০০ বছর আগে।
আজ থেকে ৫০১৫ বছর আগে মহামুনি বেদব্যাস লিখে যান মহাভারত। এই গ্রন্থে ইতিহাস এবং ধর্মের বিষয়গুলো খুব পরিস্কারভাবে ব্যাখা করা হয়েছে। সবচেয়ে শুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি তা হল পৃথিবীর ভৌগলিক গঠনের চিত্র পরিস্কারভাবে বর্ণনা করা হয়েছে মহাভারতে। ভারতীয় হিন্দু সভ্যতাই বিশ্বের মানচিত্র সর্বপ্রথম তৈরি করেছিল। তবে গভীর দৃষ্টিভঙ্গীর অভাব ও প্রচার না হওয়ার কারণে তা অনেকটা অধরা থেকে গেছে মহাভারতের পাঠক ও ভক্তদের কাছে।
বেদব্যাস লিখে গিয়েছিলেন, প্রথিবীর ভূ-প্রকৃতির গঠন এবং মাটির উপর পৃথিবীর ভরের অবস্থান সম্পর্কে। (ছবির আকারে শ্লোকটি দেওয়া হয়েছে)
বেদব্যাস মহাভারতের ভীষ্ম পর্বে বর্ণনা করেছেন, ‘হে সর্বশক্তিমান! এই দ্বীপের নাম হল সুর্দশন চক্র যা গোলাকার। এটা নক্ষত্রমণ্ডলী থেকে দেখা যায়, যেমন মানুষ তার উল্টা প্রতিবিম্ব দেখে দর্পণে। এর দুটো খণ্ডিত অংশ পিপল (অশ্বত্থ) গাছের পাতার মতো দেখতে। অপর দুটো অংশ দেখতে খরগোশের মতো।
যদি আমরা এই খণ্ডিত অংশগুলো একত্রিত করি তাহলে দেখব তা দেখতে পৃথিবীর বর্তমান মানচিত্রের মত।
বেদব্যাস মহাভারতে লিখেছেন, এই দ্বীপকে ডাকা হয় সুদর্শন। এই দ্বীপটি দেখতে গোলাকার। এটা নদী ও অন্যান্য জলাশয়ে পূর্ণ। এখানে পর্বতরাজি রয়েছে মেঘমালার মতো। এখানে অনেক বড় বড় শহর রয়েছে। সুখ-সমৃদ্ধিতে পূর্ণ অনেক রাজ্য রয়েছে এখানে। এই গ্রহ ফল-ফুলে শোভিত বৃক্ষরাজিতে পূর্ণ। বিভিন্ন প্রকার ফসল ও আরও অনেক সম্পদে সমৃদ্ধ এই গ্রহ। এই দ্বীপরাজি সকল দিক থেকে লবণের সাগর দ্বারা বেষ্টিত।
বেদব্যাস আরও উল্লেখ করেছেন পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদ সম্পর্কে। তিনি লিখেছেন, চাঁদ হলো পৃথিবীরই একটা প্রতিরূপ। আয়নায় প্রতিবিম্বিত মানুষের মুখের মতো চাঁদের ভূ-মণ্ডলের গঠনও পৃথিবীর অনুরূপ।
হিন্দু শাস্ত্র থেকে আমরা জানি ‘সপ্তদ্বীপা বসুন্ধরা’। চারিদিকে জল দ্বারা বেষ্টিত এই সাতটি ‘দ্বীপ’ বলতে বর্তমান সময়ের একেকটি মহাদেশকে বোঝানো হয়েছে। পৃথিবীতে সাতটি মহাদেশের কথা সর্বপ্রথম সনাতন ধর্মগ্রন্থেই উল্লেখ পাওয়া যায়।
(C) Feni Sonatoni Songho
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন