যদি বলেন যে যার জ্ঞান নেই আর যে মূর্খ তারও উদ্ধার হওয়া সম্ভব ? তাহলে বলব অবশ্যই হতে পারে । শ্রীভগবান বলেছেন ---
তেষাং সততযুক্তানাং ভজতাং প্রীতিপূর্বকম্ ।
দদামি বুুদ্ধিযোগং তং যেন মামুপয়ান্তি তে ।। ( গীতা ১০\১০ )
অর্থাৎ " সর্বদা আমার ধ্যানে আসক্ত এবং প্রেমপূর্বক ভজনশীল সেই ভক্তদের আমি তত্ত্বজ্ঞানরূপ যোগ প্রদান করি যাতে তাঁরা আমাকেই লাভ করেন । "
অন্যে ত্বেবমজানন্তঃ শ্রুত্বান্যেভ্য উপাসতে ।
তেহপি চাতিতরন্ত্যেব মৃত্যু শ্রুতিপরায়ণাঃ ।। ( গীতা ১৩\২৫ )
অর্থাৎ " আবার কেউ কেউ যারা অল্পবুদ্ধিসম্পন্ন , তাঁরা এইভাবে আত্মাকে না জানতে পেরে অন্যের কাছে অর্থাৎ তত্ত্বজ্ঞ মহাপুরুষের কাছে শ্রবণে তদনুসারে উপাসনা করেন এবং এইরূপ শ্রবণপরায়াণ ব্যক্তিও মৃত্যুরূপ সংসার সাগর নিঃসংশয়ে অতিক্রম করেন । "
আসল কথা হল কেউ যেমনই অজ্ঞানী অথবা মূর্খ হোক না কেন , যদি যে ঈশ্বরের অনন্যভক্তি করতে শুরু করে বা জ্ঞানী মহাত্মার কাছে গমন করে কিছু শ্রবণ করে আর তদনুসারে আচরণ শুরু করে তাহলে সেও পরমপদ পেতে পারে । মূর্খ হলেও চিন্তা নেই তাকে মহাত্মা বা স্বয়ং ভগবানই জ্ঞান দান করতে পারেন ।
পাপী , মূর্খ হলেও আয়ুর অল্পকাল অবশিষ্ট থাকলেও ভগবানের কৃপার মুক্তি হতে পারে । কেবল একটি কাজ করতে হবে । " ভগবান আছেন " -- এই সুদৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে ওঠা বসা , ক্ষুধা - তৃষ্ণা নিবারণ, চলা - ফেরা , নিদ্রা - জাগরণ সর্বদা মনে করতে হবে -- সতত ভগবানকে স্মরণে রাখতে হবে ।
আপনি বলবেন যে নিদ্রাগমন কালে তো স্মরণ হয় না । তাহলে বলতে হয় যদি দিনে আমাদের স্মরণ - মনন চলে তাহলে রাত্রেও তা অব্যাহত থাকবে কারণ যে কার্য দিনে করা হয় তা রাত্রেও স্বপ্নে আসতে থাকে । কারণ সারাদিন যা নিয়ে চিন্তা করছেন বা যা দেখেছেন তা নিদ্রা না গেলেও যদি দিনেও চোখ বন্ধ করেন তবে তাই দেখতে পাবেন । কেননা যা দেখলাম বা শুনলাম তা মনে থেকে যায় বেশিসময়ের জন্য না হলেও অল্পকাল পর্যন্ত তা মনে থাকে । অতঃপর তাই বারবার সামনে আসতে থাকবে ।
রাত্রিকালে স্মরণ যাতে হয় তার একটা সহজ উপায় আছের । ১০ - ১৫ মিনিট জাগতিক সংকল্প প্রবাহ থেকে দূরে গিয়ে একাগ্র চিত্তে ভগবানের নাম রূপ স্মরণ করে ও তাঁর লীলাসকল মনন করতে করতে ঘুমিয়ে পড়ুন । তাতে রাত্রে ভগবানের স্মরণ হতে থাকবে । যদি মনে বিশ্বাস থাকে তবে আপনি অবশ্যই তা দেখতে পাবেন ।
আসল কথা যে , সতত ভগবানকে মনে রাখুন , কখনো তাঁকে ভুলবেন না । যদি ত্রিভুবনের রাজ্যলাভও হয় সেটিও অতিব নগণ্য মনে করে ত্যাগ করবেন কিন্তু ভগবানের স্মরণ - মনন ত্যাগ করা যাবে না । যদি কখনো ভগবানের বিস্মরণ না হয় আর যার একমাত্র ভগবানই পরমপ্রিয় ও সর্বস্ব , সেই ধন্য ।
শ্রীমদ্ভাগবতে বলা আছে। --
ত্রিভুবনবিভবহেতবেহপ্যকুন্ঠস্মৃতিরজিতাত্মসুরাদিভির্বিমৃগ্যাৎ ।
ন চলতি ভগবৎপদারবিন্দাল্লবনিমিষার্ধমপি যঃ স বৈষ্ণবাগ্র্য়ঃ ।।
বিসৃজতি হৃদয়ং ন যস্য সাক্ষাদ্ধরিরবশাভিহিতোহপ্যঘৌষনাশঃ ।
প্রণয়রশনয়া ধৃতাঙ্ঘ্রি পদ্মঃ স ভবতি ভাগবতপ্রধান উক্তঃ ।। ( ১১ \ ২ \ ৫৩ , ৫৪ )
অর্থাৎ " ত্রিভুবনের রাজ্যবৈভবের জন্য যার ভগবৎচিন্তা বিঘ্নিত হয় না , যে ভগবানেই মন সন্নিবিষ্টকারী দেবতাদি দ্বারা কাঙ্ক্ষিত ভগবৎ চরণকমলের স্মরণে মুহূর্তের জন্যও বিচ্যুত হয় না , সেই ভগবদ্ভক্তদের মধ্যে অগ্রগণ্য হয় । বিবশ হয়ে নাম উচ্চারণকারীরও যদি সম্পূর্ণ পাপ ধ্বংস করেন , সেই সাক্ষাৎ পরব্রহ্ম পরমেশ্বর ভক্তকে কখনো ত্যাগ করতে পারেন না কারণ তাঁর পাদপদ্মে ভক্তের প্রেম রজ্জু ( দড়ি ) দ্বারা আবদ্ধ থাকে । তাকেই ভগবদ্ভক্তদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ বলা হয় ।
ঈশ্বর আমাদের বিবেক , বুদ্ধি ও জ্ঞান দিয়েছেন কেননা তিনি চান যে আমরা তার সদ্ব্যবহার করি । বুুদ্ধিমান ব্যক্তি সেইই , যে নিজের সময়কে সর্বোত্তম কার্যে নিযুক্ত রাখে , এক মুহূর্তও সময় ব্যর্থ কাজে নষ্ট করে না । সে যে কাজের জন্য এসেছে সর্বপ্রথমে সেই কার্যই সম্পূর্ণ করে । কখনো ক্ষত্রিকর কোনো কার্য করে না , সতত মুুক্তি লাভের কার্য করে আর যা সব চেয়ে বেশি দামি হয় অর্থাৎ শীঘ্র উদ্ধারকারী হয় , সেই কার্য করে ; তাকেই বুদ্ধিমান বলা হয় ।
তেষাং সততযুক্তানাং ভজতাং প্রীতিপূর্বকম্ ।
দদামি বুুদ্ধিযোগং তং যেন মামুপয়ান্তি তে ।। ( গীতা ১০\১০ )
অর্থাৎ " সর্বদা আমার ধ্যানে আসক্ত এবং প্রেমপূর্বক ভজনশীল সেই ভক্তদের আমি তত্ত্বজ্ঞানরূপ যোগ প্রদান করি যাতে তাঁরা আমাকেই লাভ করেন । "
অন্যে ত্বেবমজানন্তঃ শ্রুত্বান্যেভ্য উপাসতে ।
তেহপি চাতিতরন্ত্যেব মৃত্যু শ্রুতিপরায়ণাঃ ।। ( গীতা ১৩\২৫ )
অর্থাৎ " আবার কেউ কেউ যারা অল্পবুদ্ধিসম্পন্ন , তাঁরা এইভাবে আত্মাকে না জানতে পেরে অন্যের কাছে অর্থাৎ তত্ত্বজ্ঞ মহাপুরুষের কাছে শ্রবণে তদনুসারে উপাসনা করেন এবং এইরূপ শ্রবণপরায়াণ ব্যক্তিও মৃত্যুরূপ সংসার সাগর নিঃসংশয়ে অতিক্রম করেন । "
আসল কথা হল কেউ যেমনই অজ্ঞানী অথবা মূর্খ হোক না কেন , যদি যে ঈশ্বরের অনন্যভক্তি করতে শুরু করে বা জ্ঞানী মহাত্মার কাছে গমন করে কিছু শ্রবণ করে আর তদনুসারে আচরণ শুরু করে তাহলে সেও পরমপদ পেতে পারে । মূর্খ হলেও চিন্তা নেই তাকে মহাত্মা বা স্বয়ং ভগবানই জ্ঞান দান করতে পারেন ।
পাপী , মূর্খ হলেও আয়ুর অল্পকাল অবশিষ্ট থাকলেও ভগবানের কৃপার মুক্তি হতে পারে । কেবল একটি কাজ করতে হবে । " ভগবান আছেন " -- এই সুদৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে ওঠা বসা , ক্ষুধা - তৃষ্ণা নিবারণ, চলা - ফেরা , নিদ্রা - জাগরণ সর্বদা মনে করতে হবে -- সতত ভগবানকে স্মরণে রাখতে হবে ।
আপনি বলবেন যে নিদ্রাগমন কালে তো স্মরণ হয় না । তাহলে বলতে হয় যদি দিনে আমাদের স্মরণ - মনন চলে তাহলে রাত্রেও তা অব্যাহত থাকবে কারণ যে কার্য দিনে করা হয় তা রাত্রেও স্বপ্নে আসতে থাকে । কারণ সারাদিন যা নিয়ে চিন্তা করছেন বা যা দেখেছেন তা নিদ্রা না গেলেও যদি দিনেও চোখ বন্ধ করেন তবে তাই দেখতে পাবেন । কেননা যা দেখলাম বা শুনলাম তা মনে থেকে যায় বেশিসময়ের জন্য না হলেও অল্পকাল পর্যন্ত তা মনে থাকে । অতঃপর তাই বারবার সামনে আসতে থাকবে ।
রাত্রিকালে স্মরণ যাতে হয় তার একটা সহজ উপায় আছের । ১০ - ১৫ মিনিট জাগতিক সংকল্প প্রবাহ থেকে দূরে গিয়ে একাগ্র চিত্তে ভগবানের নাম রূপ স্মরণ করে ও তাঁর লীলাসকল মনন করতে করতে ঘুমিয়ে পড়ুন । তাতে রাত্রে ভগবানের স্মরণ হতে থাকবে । যদি মনে বিশ্বাস থাকে তবে আপনি অবশ্যই তা দেখতে পাবেন ।
আসল কথা যে , সতত ভগবানকে মনে রাখুন , কখনো তাঁকে ভুলবেন না । যদি ত্রিভুবনের রাজ্যলাভও হয় সেটিও অতিব নগণ্য মনে করে ত্যাগ করবেন কিন্তু ভগবানের স্মরণ - মনন ত্যাগ করা যাবে না । যদি কখনো ভগবানের বিস্মরণ না হয় আর যার একমাত্র ভগবানই পরমপ্রিয় ও সর্বস্ব , সেই ধন্য ।
শ্রীমদ্ভাগবতে বলা আছে। --
ত্রিভুবনবিভবহেতবেহপ্যকুন্ঠস্মৃতিরজিতাত্মসুরাদিভির্বিমৃগ্যাৎ ।
ন চলতি ভগবৎপদারবিন্দাল্লবনিমিষার্ধমপি যঃ স বৈষ্ণবাগ্র্য়ঃ ।।
বিসৃজতি হৃদয়ং ন যস্য সাক্ষাদ্ধরিরবশাভিহিতোহপ্যঘৌষনাশঃ ।
প্রণয়রশনয়া ধৃতাঙ্ঘ্রি পদ্মঃ স ভবতি ভাগবতপ্রধান উক্তঃ ।। ( ১১ \ ২ \ ৫৩ , ৫৪ )
অর্থাৎ " ত্রিভুবনের রাজ্যবৈভবের জন্য যার ভগবৎচিন্তা বিঘ্নিত হয় না , যে ভগবানেই মন সন্নিবিষ্টকারী দেবতাদি দ্বারা কাঙ্ক্ষিত ভগবৎ চরণকমলের স্মরণে মুহূর্তের জন্যও বিচ্যুত হয় না , সেই ভগবদ্ভক্তদের মধ্যে অগ্রগণ্য হয় । বিবশ হয়ে নাম উচ্চারণকারীরও যদি সম্পূর্ণ পাপ ধ্বংস করেন , সেই সাক্ষাৎ পরব্রহ্ম পরমেশ্বর ভক্তকে কখনো ত্যাগ করতে পারেন না কারণ তাঁর পাদপদ্মে ভক্তের প্রেম রজ্জু ( দড়ি ) দ্বারা আবদ্ধ থাকে । তাকেই ভগবদ্ভক্তদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ বলা হয় ।
ঈশ্বর আমাদের বিবেক , বুদ্ধি ও জ্ঞান দিয়েছেন কেননা তিনি চান যে আমরা তার সদ্ব্যবহার করি । বুুদ্ধিমান ব্যক্তি সেইই , যে নিজের সময়কে সর্বোত্তম কার্যে নিযুক্ত রাখে , এক মুহূর্তও সময় ব্যর্থ কাজে নষ্ট করে না । সে যে কাজের জন্য এসেছে সর্বপ্রথমে সেই কার্যই সম্পূর্ণ করে । কখনো ক্ষত্রিকর কোনো কার্য করে না , সতত মুুক্তি লাভের কার্য করে আর যা সব চেয়ে বেশি দামি হয় অর্থাৎ শীঘ্র উদ্ধারকারী হয় , সেই কার্য করে ; তাকেই বুদ্ধিমান বলা হয় ।
লেখকঃ Joy Shree Radha Madhav
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন