" ব্রহ্মা বললেন - মহর্ষিগণ ! তিন প্রকার গুণ যখন সাম্যাবস্থা প্রাপ্ত হয় , তখন তাকে বলা হয় অব্যক্ত প্রকৃতি । অব্যক্ত সবই প্রাকৃত কার্যে ব্যাপক , অবিনাশী এবং স্থির স্বভাববিশিষ্ট ।
উপরিউক্ত তিন গুণে যখন বৈষম্য আসে তখন সেটি পঞ্চভূতের রূপ ধারণ করে এবং তার থেকে নবদ্বারসম্পন্ন নগর ( শরীর ) উৎপন্ন হয় । এই নগরে জীবাত্মাকে বিষয়াদির দিকে প্রেরিতকারী একাদশ ইন্দ্রিয় থাকে ।
মনের দ্বারা তার অভিব্যক্তি হয় । বুদ্ধি এই নগরের প্রভু । এতে যে তিনটি স্রোত ( চিত্তরূপ নদীর প্রবাহ ) , তা সর্বদা পূর্ণ থাকে । এগুলি পূর্ণ করার জন্য তিনটি গুণময় নাড়ি আছে । তাদের সত্ত্ব , রজ ও তম বলা হয় । এরা পরস্পর একে অন্যের আশ্রিত এবং একে অপরের সাহায্যে টিকে থাকে ।
যেখানে তমোগুণ বাধা পায় সেখানে রজোগুণ বৃদ্ধি পায় , যেখানে রজোগুণকে দমন করা হয় সেখানে সত্ত্বগুণ বৃদ্ধিলাভ করে । তমকে অন্ধকাররূপ বলে জানতে হবে । এর অপর নাম মোহ । এটি অধর্মের দিকে প্রেরণ করে এবং পাপকারীদের মধ্যে নিশ্চিতরূপে বিদ্যমান থাকে । তমোগুণের এই স্বরূপ অন্যান্য গুণের সঙ্গেও মিশ্রিত দেখা যায় ।
রজোগুণ হল প্রকৃতিরূপ । এটি সৃষ্টির উৎপত্তির কারণ । সমস্ত প্রাণীর মধ্যেই এই প্রবৃত্তি দেখা যায় । এর দ্বারাই দৃশ্য জগতের উৎপত্তি হয়েছে ।
সর্ব প্রাণীতে স্থিত প্রকাশ অহংকারশূন্যতা এবং শ্রদ্ধা - এগুলি সত্ত্বগুণের স্বরূপ । সাধু ব্যক্তিরা নিরহংকারের প্রশংসা করেছেন । এবার আমি যুক্তিপূর্বক , যথোপযুক্তভাবে এই তিন গুণাদির কার্যের যথার্থ বর্ণনা করছি । মন দিয়ে শোনো ।
মোহ , অজ্ঞান , ত্যাগহীনতা , কর্মাদির সম্বন্ধে নির্ণয় করতে না পারা , নিদ্রা , অহংকার , ভয় , লোভ , শোক , শুভ কর্মে দোষ দেখা , স্মরণ - শক্তির অভাব , পরিণাম চিন্তা না করা , নাস্তিকতা , দুশ্চারিত্রা , নির্বিশেষতা ( ভালো - মন্দ বিবেচনার অভাব ) , ইন্দ্রিয়ের শৈথিলা , হিংসাদি নিন্দনীয় দোষে প্রবৃত্ত হওয়া , অকার্যকে কার্য এবং অজ্ঞানকে জ্ঞান বলে মনে করা , শত্রুতা , কাজে মন না দেওয়া , অশ্রদ্ধা , মূর্খের মতো চিন্তা , কুটিলতা , কোনো কিছু বোঝার ক্ষমতা না থাকা , পাপ করা , অজ্ঞান , আলস্য ইত্যাদির জন্য দেহের জড়তা , ভাব - ভক্তি না থাকা , অজিতেন্দ্রিয়তা এবং নীচ কর্মে আসক্তি - এই সবই হল তমোগুণের কাজ ।
এতদ্বাতীত আরও যেসব বিষয় ইহলোকে নিষিদ্ধ বলা হয় , সেগুলিও তমোগুণের কার্য বলে জানবে । দেবতা , ব্রাহ্মণ ও বেদের নিন্দা করা , দান না করা , অভিমান , মোহ , ক্রোধ , অসহশীলতা এবং মাৎসর্য - এসবই তামস আচরণ । ( বিধি এবং শ্রদ্ধারহিত ) বৃথা কার্য শুরু করা , দেশ - কাল - পাত্র বিচার না করে অশ্রদ্ধা এবং অবহেলাপূর্বক দান করা , দেবতা ও অতিথিদের না দিয়ে আহার করাও তামসিক কার্য ।
অতিবাদ , অক্ষমা , মাৎসর্য , অভিমান এবং অশ্রদ্ধাকে তমোগুণের ফল বলে মানা হয় । জগতে এইরূপ আচরণবিশিষ্ট এবং ধর্ম মর্যাদা ভঙ্গকারী যেসব পাপী ব্যক্তি আছে , তাদের সকলকেই তমোগুণী বলা হয় । এরূপ পাপী মানুষদের পরবর্তী জন্মে যে যোনিতে যাওয়া অনিবার্য তার পরিচয় জানাচ্ছি ।
এদের মধ্যে অনেকে নরকগামী হয় , আর কিছু তির্যক যোনিতে জন্মগ্রহণ করে । স্থাবর ( বৃক্ষ - পর্বত ইত্যাদি ) , পশু , , মালবাহী জীব , , রাক্ষস , , সর্প , , কীট - পতঙ্গ , , পক্ষী , , অণ্ডজ প্রাণী , , চতুষ্পদ প্রাণী , , মানসিক ভারসাম্যহীন , , কালা - বোবা ইত্যাদি ও অনন্যা যত পাপময় রোগযুক্ত ( কুষ্ঠ ইত্যাদি ) মানুষ , তারা সকলেই তমোগুণে আচ্ছন্ন রয়েছে । নিজ কর্মানুসারে উপযুক্ত এইসব দুরাচারী জীব সর্বদা দুঃখে নিমজ্জিত থাকে ।
তাদের চিত্তবৃত্তির প্রবাহ নিম্নগামী । তাই তাদের অর্বাক স্রোতা বলা হয় । এরা সকলেই তমোগুণী । তম ( অবিদ্যা ) , মোহ ( অস্মিতা ) , মহামোহ ( রাগ , আসক্তি ) , ক্রোধ নামযুক্ত তামিস্র এবং মৃত্যুরূপ অন্ধতামিস্র - এই পাঁচপ্রকারের তামসী প্রকৃতি বলা হয় । বিপ্রবরগণ ! বর্ণ , গুণ , যোনি এবং তত্ত্ব অনুসারে আমি তমোগুণের সম্পূর্ণ বর্ণনা করলাম ।
যাদের দৃষ্টি অসার তত্ত্বে নিবদ্ধ থাকে - এমন কোন্ ব্যক্তি এই বিষয়কে ভালোভাবে বুঝতে পারবে ? এই বিপরীত দৃষ্টিই তমোগুণের পরিচয় । তমোগুণের স্বরূপ ও তার কার্যাদির নানাপ্রকার গুণের যথাবৎ বর্ণনা করা হল । যে ব্যক্তি এই গুণগুলি ঠিকভাবে জানে , সে তামসিক গুণ থেকে সর্বদা মুক্ত থাকে ।
উপরিউক্ত তিন গুণে যখন বৈষম্য আসে তখন সেটি পঞ্চভূতের রূপ ধারণ করে এবং তার থেকে নবদ্বারসম্পন্ন নগর ( শরীর ) উৎপন্ন হয় । এই নগরে জীবাত্মাকে বিষয়াদির দিকে প্রেরিতকারী একাদশ ইন্দ্রিয় থাকে ।
মনের দ্বারা তার অভিব্যক্তি হয় । বুদ্ধি এই নগরের প্রভু । এতে যে তিনটি স্রোত ( চিত্তরূপ নদীর প্রবাহ ) , তা সর্বদা পূর্ণ থাকে । এগুলি পূর্ণ করার জন্য তিনটি গুণময় নাড়ি আছে । তাদের সত্ত্ব , রজ ও তম বলা হয় । এরা পরস্পর একে অন্যের আশ্রিত এবং একে অপরের সাহায্যে টিকে থাকে ।
যেখানে তমোগুণ বাধা পায় সেখানে রজোগুণ বৃদ্ধি পায় , যেখানে রজোগুণকে দমন করা হয় সেখানে সত্ত্বগুণ বৃদ্ধিলাভ করে । তমকে অন্ধকাররূপ বলে জানতে হবে । এর অপর নাম মোহ । এটি অধর্মের দিকে প্রেরণ করে এবং পাপকারীদের মধ্যে নিশ্চিতরূপে বিদ্যমান থাকে । তমোগুণের এই স্বরূপ অন্যান্য গুণের সঙ্গেও মিশ্রিত দেখা যায় ।
রজোগুণ হল প্রকৃতিরূপ । এটি সৃষ্টির উৎপত্তির কারণ । সমস্ত প্রাণীর মধ্যেই এই প্রবৃত্তি দেখা যায় । এর দ্বারাই দৃশ্য জগতের উৎপত্তি হয়েছে ।
সর্ব প্রাণীতে স্থিত প্রকাশ অহংকারশূন্যতা এবং শ্রদ্ধা - এগুলি সত্ত্বগুণের স্বরূপ । সাধু ব্যক্তিরা নিরহংকারের প্রশংসা করেছেন । এবার আমি যুক্তিপূর্বক , যথোপযুক্তভাবে এই তিন গুণাদির কার্যের যথার্থ বর্ণনা করছি । মন দিয়ে শোনো ।
মোহ , অজ্ঞান , ত্যাগহীনতা , কর্মাদির সম্বন্ধে নির্ণয় করতে না পারা , নিদ্রা , অহংকার , ভয় , লোভ , শোক , শুভ কর্মে দোষ দেখা , স্মরণ - শক্তির অভাব , পরিণাম চিন্তা না করা , নাস্তিকতা , দুশ্চারিত্রা , নির্বিশেষতা ( ভালো - মন্দ বিবেচনার অভাব ) , ইন্দ্রিয়ের শৈথিলা , হিংসাদি নিন্দনীয় দোষে প্রবৃত্ত হওয়া , অকার্যকে কার্য এবং অজ্ঞানকে জ্ঞান বলে মনে করা , শত্রুতা , কাজে মন না দেওয়া , অশ্রদ্ধা , মূর্খের মতো চিন্তা , কুটিলতা , কোনো কিছু বোঝার ক্ষমতা না থাকা , পাপ করা , অজ্ঞান , আলস্য ইত্যাদির জন্য দেহের জড়তা , ভাব - ভক্তি না থাকা , অজিতেন্দ্রিয়তা এবং নীচ কর্মে আসক্তি - এই সবই হল তমোগুণের কাজ ।
এতদ্বাতীত আরও যেসব বিষয় ইহলোকে নিষিদ্ধ বলা হয় , সেগুলিও তমোগুণের কার্য বলে জানবে । দেবতা , ব্রাহ্মণ ও বেদের নিন্দা করা , দান না করা , অভিমান , মোহ , ক্রোধ , অসহশীলতা এবং মাৎসর্য - এসবই তামস আচরণ । ( বিধি এবং শ্রদ্ধারহিত ) বৃথা কার্য শুরু করা , দেশ - কাল - পাত্র বিচার না করে অশ্রদ্ধা এবং অবহেলাপূর্বক দান করা , দেবতা ও অতিথিদের না দিয়ে আহার করাও তামসিক কার্য ।
অতিবাদ , অক্ষমা , মাৎসর্য , অভিমান এবং অশ্রদ্ধাকে তমোগুণের ফল বলে মানা হয় । জগতে এইরূপ আচরণবিশিষ্ট এবং ধর্ম মর্যাদা ভঙ্গকারী যেসব পাপী ব্যক্তি আছে , তাদের সকলকেই তমোগুণী বলা হয় । এরূপ পাপী মানুষদের পরবর্তী জন্মে যে যোনিতে যাওয়া অনিবার্য তার পরিচয় জানাচ্ছি ।
এদের মধ্যে অনেকে নরকগামী হয় , আর কিছু তির্যক যোনিতে জন্মগ্রহণ করে । স্থাবর ( বৃক্ষ - পর্বত ইত্যাদি ) , পশু , , মালবাহী জীব , , রাক্ষস , , সর্প , , কীট - পতঙ্গ , , পক্ষী , , অণ্ডজ প্রাণী , , চতুষ্পদ প্রাণী , , মানসিক ভারসাম্যহীন , , কালা - বোবা ইত্যাদি ও অনন্যা যত পাপময় রোগযুক্ত ( কুষ্ঠ ইত্যাদি ) মানুষ , তারা সকলেই তমোগুণে আচ্ছন্ন রয়েছে । নিজ কর্মানুসারে উপযুক্ত এইসব দুরাচারী জীব সর্বদা দুঃখে নিমজ্জিত থাকে ।
তাদের চিত্তবৃত্তির প্রবাহ নিম্নগামী । তাই তাদের অর্বাক স্রোতা বলা হয় । এরা সকলেই তমোগুণী । তম ( অবিদ্যা ) , মোহ ( অস্মিতা ) , মহামোহ ( রাগ , আসক্তি ) , ক্রোধ নামযুক্ত তামিস্র এবং মৃত্যুরূপ অন্ধতামিস্র - এই পাঁচপ্রকারের তামসী প্রকৃতি বলা হয় । বিপ্রবরগণ ! বর্ণ , গুণ , যোনি এবং তত্ত্ব অনুসারে আমি তমোগুণের সম্পূর্ণ বর্ণনা করলাম ।
যাদের দৃষ্টি অসার তত্ত্বে নিবদ্ধ থাকে - এমন কোন্ ব্যক্তি এই বিষয়কে ভালোভাবে বুঝতে পারবে ? এই বিপরীত দৃষ্টিই তমোগুণের পরিচয় । তমোগুণের স্বরূপ ও তার কার্যাদির নানাপ্রকার গুণের যথাবৎ বর্ণনা করা হল । যে ব্যক্তি এই গুণগুলি ঠিকভাবে জানে , সে তামসিক গুণ থেকে সর্বদা মুক্ত থাকে ।
লেখকঃ Joy Shree Radha Madhav
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন